দুর্গম এলাকা আলোকিত করবে বিদ্যুৎবিহীন বোতল বাল্ব প্রযুক্তি by নজরুল ইসলাম লাভলু

বিদ্যুৎ ছাড়াই দুর্গম এলাকা আলোকিত করবে বোতল বাল্ব প্রযুক্তি। প্রযুক্তিটি উদ্ভাবন করেছে কাপ্তাই সেনা জোন। এতে একদিকে বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে, অন্যদিকে দূর হবে দুর্গম এলাকার অন্ধকার। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রথমে একটি এক বা দেড় লিটারের প্লাস্টিক কিংবা কাচের বোতল নিতে হবে। যা বাতি হিসেবে কাজ করবে। বোতলটিতে বিশুদ্ধ পানি ভর্তি করে তিন চামচ বি্লচ কিংবা তরল ক্লোরিন মিশিয়ে বোতলের মুখ ভালোভাবে গালা দিয়ে বন্ধ করতে হবে।


এরপর এক বর্গফুট আয়তনের একটি টিন ছিদ্র করে বোতলের গায়ে লাগাতে হবে। ছাদের টিন বোতলের মাপ অনুযায়ী ছিদ্র করে ওই স্থানে স্থাপন করতে হবে। এটি স্থাপনের সময় বোতলের এক-তৃতীয়াংশ টিনের উপরিভাগে এবং দুই-তৃতীয়াংশ ঘরের ভেতর রেখে বোতলটি বসাতে হবে। বৃষ্টির পানি ঘরে প্রবেশ না করার জন্য বোতলের চারদিকে গালা দিয়ে শক্ত করে আটকে দিতে হবে। দিনের বেলায় সূর্যের আলো বোতলের ওপরের অংশে পড়লে সেটি প্রতিফলিত হয়ে বোতলের পানির সাহায্যে ঘরের ভেতর সমানভাবে আলো ছড়িয়ে পড়বে। যা ৫৫ ওয়াটের একটি এনার্জি বাল্বের আলোর সমান। রাতের বেলায় বোতলে সড়কের কোনো বাতির আলো পড়লে তাও প্রতিফলিত হয়ে ঘর আলোকিত করবে। বোতলে ক্লোরিন অথবা বি্লচ মিশ্রিত পানি পাঁচ বছর পর্যন্ত বদলাতে হবে না। পাঁচ বছর পর্যন্ত এটি নিয়মিত আলো দিয়ে যাবে। এটি ব্যবহারে বিদ্যুৎ খরচ নেই এবং এ প্রযুক্তির প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোও সস্তা। এটি পরিবেশবান্ধব এবং এতে দুর্ঘটনার কোনো ঝুঁকিও নেই।
এদিকে উদ্ভাবনকৃত বোতল বাল্ব প্রযুক্তি দুর্গম এলাকার দুস্থ জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দিতে গত ২৭ নভেম্বর কাপ্তাই ৭ আরই সেনা জোন কর্তৃপক্ষ এক প্রদর্শনীর আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন রাঙামাটি সেনা রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ সামসুজ্জামান পিএসসি। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কাপ্তাই জোন কমান্ডার লে. কর্নেল মোঃ ইলিয়াছ হোসেন পিএসি, বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল আখতার শহিদ, মেজর সাখাওয়াত, মেজর রেজাউর রহমান, মেজর তারিক, ৫ আনসার অধিনায়ক জিয়া, কাপ্তাই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুই ছাইন চৌধুরী, রাজস্থলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান থোয়াই সুইখই মারমা, পিডিবি ম্যানেজার ফেরদাউস আলী, ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ ও নতুন বাজার বণিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি প্রশান্ত ধর।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ সামসুজ্জামান বলেন, দুর্গম এলাকার দুস্থ মানুষের চাহিদা এবং দেশের বিদ্যুৎ ঘাটতি পূরণে এ প্রযুক্তি সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। বিশেষ করে পার্বত্য এলাকায় এ প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

No comments

Powered by Blogger.