চাঁদকে কাল ঢেকে দিয়েছিল পৃথিবী

বাংলাদেশের মানুষ গতকাল শনিবার গভীর আগ্রহ নিয়ে দেখেছে পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণের অপরূপ দৃশ্য। সন্ধ্যা থেকে ধীরে ধীরে চাঁদ পৃথিবীর ছায়ায় ঢাকা পড়ে যায়। কক্ষপথ পরিক্রমায় সূর্য ও চাঁদের মাঝখানে একই সমতলে এবং একই সরল রেখায় পৃথিবী অবস্থান নেওয়ায় এ গ্রহণ সংঘটিত হয়। বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৫টা ২৬ মিনিটে শুরু হয় গ্রহণের উপচ্ছায়া পর্যায়। ছায়াগ্রহণ শুরু হয় সন্ধ্যা ৬টা ৪৭ মিনিটে। চন্দ্রগ্রহণের পূর্ণতা পায় ৮টা ৭ মিনিটে।


রাত ৮টা ৫৮ মিনিট পর্যন্ত তা চলে। রাত ১১টা ২৮ মিনিটে শেষ হয় এর উপচ্ছায়া পর্যায়।\গতকাল দেশের বিভিন্ন স্থানে মানুষ জটলা বেঁধে আকাশের দিকে তাকিয়ে থেকেছে এ দৃশ্য দেখার জন্য। ঢাকাসহ দেশের কয়েকটি জেলা শহরের মাঠে টেলিস্কোপে চন্দ্রগ্রহণ দেখার আয়োজন করেছিল কয়েকটি বিজ্ঞান সংস্থা। রাজধানীতে বাসা-বাড়ির ছাদে উঠেও আকাশের দিকে অপলক তাকিয়ে থাকতে দেখা গেছে নারী-পুরুষ-শিশুদের।
বাংলাদেশ থেকে এ রকম পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ আবার দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে ২০১৮ সালের ২৭ জুলাই পর্যন্ত।
বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সহায়তায় ঢাকার ধানমণ্ডি ক্লাব মাঠ প্রাঙ্গণে টেলিস্কোপের মাধ্যমে পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ দেখার আয়োজন করা হয়। এখানে ছিল শত শত মানুষের ভিড়। এ ছাড়া অনুসন্ধিৎসু চক্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্রসংলগ্ন মাঠে শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টা থেকে চন্দ্রগ্রহণ দেখার ক্যাম্প করে। এ ছাড়া মিরপুরের হারুন মোল্লা ঈদগাহ এবং বরিশাল, ঠাকুরগাঁও ও সিলেটেও বিজ্ঞান ক্লাবগুলো চন্দ্রগ্রহণ দেখানোর ব্যবস্থা করে।
পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণের সময় আকাশের দৃশ্যপট থেকে চাঁদের অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার ঘটনাকে প্রাচীনকালের মানুষ প্রাকৃতিক বিপর্যয় বলে ধারণা করত। তারা মনে করত, এ সবই শয়তানের কারসাজি। এ রকম বিরল প্রাকৃতিক ঘটনা যুগে যুগে মানুষের মনে সৃষ্টি করে প্রচণ্ড কৌতূহল।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের মত, পৃথিবী এর কক্ষপথে ঘুরতে ঘুরতে সূর্য ও চাঁদের মাঝখানে একই সমতলে একই সরল রেখায় উপস্থিত হলে সূর্যের আলো কিছু সময়ের জন্য চাঁদের পিঠে পেঁৗছতে পারে না। আর এ সময়টিতেই পৃথিবী থেকে চাঁদ দেখা যায় না, যা জ্যোতির্বিজ্ঞানের ভাষায় চন্দ্রগ্রহণ।
পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ বাংলাদেশের সব জায়গা থেকে দেখা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্র নাসার তথ্য অনুযায়ী এটি এ বছরের দ্বিতীয় এবং শেষ পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ। বিরল এই পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ টেলিস্কোপের মাধ্যমে দেখানোর আয়োজন করা হয়েছে। এ পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ বাংলাদেশ ছাড়াও মধ্য এশিয়া এবং নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া থেকে দেখা গেছে।

No comments

Powered by Blogger.