রাজধানীবাসীর দুর্ভোগ-কাউন্সিলরের দায়িত্ব কে সামলাবে?
ঢাকা সিটি করপোরেশন দ্বিধাবিভক্ত হওয়ার পর মেয়রের সঙ্গে সঙ্গে কাউন্সিলররাও ক্ষমতা হারান। এদিকে কাউন্সিলরদের দায়িত্ব কারা সামলাবেন সে ব্যাপারে সরকারি কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ফলে নগরবাসী বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন বলে গত শুক্রবার সমকালের প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশিত এ সংক্রান্ত এক রিপোর্টে তুলে ধরা হয়েছে। রিপোর্টে দেখা যায়, রাজধানীতে বসবাসকারী অনেক মানুষ কাউন্সিলর অফিসগুলো থেকে প্রাপ্য সেবা পাচ্ছেন না।
এতে অতিপ্রয়োজনীয় জাতীয়তা ও নাগরিকত্ব সনদ, জম্মনিবন্ধন সনদ, ওয়ারিশ সনদসহ প্রয়োজনীয় সেবার জন্য নাগরিকরা বিভিন্ন স্থানে ধরনা দিয়ে হয়রান হচ্ছেন। সম্ভবত আমলাতান্ত্রিক কায়দায় বিভক্তির কাজগুলো করা হয়েছে বলেই এ ধরনের প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। আর যেহেতু দুটি সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব এখন দুই আমলা প্রশাসকের ওপর ন্যস্ত, তাই নির্বাচন পর্যন্ত হয়তো আরও অনেক ধরনের সমস্যায় নগরবাসী আক্রান্ত হবেন। এটা স্বতঃসিদ্ধ যে, নগরবাসী তাদের বিভিন্ন ধরনের সেবা পাওয়ার জন্য কাউন্সিলর অফিসগুলোর মুখাপেক্ষী থাকেন। কাউন্সিলররা যেহেতু নির্দিষ্ট ওয়ার্ডের জনগণের ভোটে নির্বাচিত তাই তাদেরও জনগণের খেদমত করার কাজে সময় দিতে হয়। কিন্তু আমলাদের নির্দিষ্ট সময় অন্তর ভোটের জন্য জনগণের দ্বারস্থ হতে হয় না। তাই তাদের জনসেবা বিলম্বের কারণে লাভক্ষতি হিসাব করার মতো ফুরসত নেই। ওপরওয়ালাকে খুশি করতে পারলেই তাদের চলে। সে কারণে নির্বাচন হওয়া পর্যন্ত রাজধানীর উত্তর এবং দক্ষিণ_ দুটি সিটি করপোরেশনের সেবাসহ বিভিন্ন কাজে স্থবিরতা সৃষ্টি হতে পারে। তবে এখন জরুরি ভিত্তিতে কাউন্সিলরদের দায়িত্ব অন্তর্বর্তীকালীন কারা সামলাবেন সেটা নির্ধারণ ও সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে তদারকির ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করলে সাময়িক সুফল মিলতে পারে। রাজধানীর দুটি সিটি করপোরেশনে নির্বাচনের মাধ্যমে মেয়র ও কাউন্সিলর নির্বাচিত না হওয়া পর্যন্ত সরকার রাজধানী থেকে নির্বাচিত সাংসদ ও প্রশাসকের কার্যালয়, জোনাল অফিস এবং ওয়ার্ডের সচিবদের সমন্বিত উদ্যোগে জনসেবার মতো অতিপ্রয়োজনীয় কাজগুলো সম্পন্ন করার ব্যবস্থা নিতে পারে। কেবল আমলাতন্ত্রের ওপর নির্ভর করলে সুফল মিলবে না।
No comments