টিপাইমুখ লংমার্চে এরশাদ-বাংলাদেশের ক্ষতি না হওয়ার গ্যারান্টি দিতে হবে by মোশতাক আহমদ
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, যৌথ জরিপের মাধ্যমে বাংলাদেশের সম্মতি ছাড়া টিপাইমুখে বাঁধ নির্মাণ করতে দেওয়া হবে না। ক্ষমতাসীন মহাজোটের অন্যতম শরিক দল জাতীয় পার্টির প্রধান এ বিষয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনায় বসার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, 'দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য নিষ্পত্তি করুন।' এর পরও সুরাহা না হলে আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
ভারতের মণিপুর রাজ্যের টিপাইমুখে বরাক নদের ওপর বাঁধ নির্মাণ 'প্রতিরোধে' জকিগঞ্জ অভিমুখে লংমার্চের অংশ হিসেবে গতকাল শনিবার বিকেলে সিলেটে এক জনসভায় এরশাদ এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, টিপাইমুখ বাঁধ শুধু জাতীয় পার্টির সমস্যা নয়, এটা এখন জাতীয় সমস্যা। তাই এ সমস্যার সমাধানে সব রাজনৈতিক দলকে একত্র হওয়ার বিকল্প নেই।
সাবেক রাষ্ট্রপতি বলেন, 'আমরা জানাতে চাই, দুই দেশ মিলে জরিপ করার পর সেটা জনগণের কাছে প্রকাশ করতে হবে। তারপর আমাদের (বাংলাদেশের) সম্মতি নিয়ে বাঁধ নির্মাণ করা যেতে পারে। তা না হলে এ বাঁধ আমরা মানি না।'
ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়ে এরশাদ বলেন, 'যৌথ সমীক্ষা করে বলুন, আমাদের কোনো ক্ষতি হবে না এবং এ নদীর পানি অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা হবে না। আন্তর্জাতিক চুক্তির মাধ্যমে এর গ্যারান্টি দিতে হবে।'
সকাল সাড়ে ৭টায় রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির কার্যালয় থেকে যাত্রা শুরু করে দুপুরে সিলেট পেঁৗছায় পাঁচ শতাধিক গাড়ির এ লংমার্চ। বিকেলে জনসভা উপলক্ষে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে জড়ো হয় প্রায় ১০ হাজার মানুষ। বিকেল ৪টার দিকে এরশাদ সভাস্থলে উপস্থিত হলে নেতা-কর্মীরা তাঁকে স্বাগত জানান।
বরাক নদের উজানে টিপাইমুখে বাঁধ দিয়ে ভারতের এ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পকে জাতির সামনে এক 'মহাদুর্যোগ' এবং সিলেটবাসীর সামনে 'অশনিসংকেত' হিসেবে উল্লেখ করে এরশাদ বলেন, 'জাতীয় পার্টির ঘোষণা, টিপাইমুখে বাঁধ হতে দেব না। জীবন থাকতে, সিলেটবাসীর স্বার্থে, আমরা জীবন দেব, তবু টিপাইমুখে বাঁধ হতে দেব না।'
বরাক নদের উজানে টিপাইমুখে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার সঙ্গে ভারতের মণিপুর রাজ্য সরকারের বিনিয়োগ চুক্তির খবর গত ১৮ নভেম্বর গণমাধ্যমে আসে। এরপর বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ এ প্রকল্পের বিষয়ে জানতে নয়াদিলি্লতে চিঠি পাঠালে ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বরাক নদের উজানে বাঁধ নির্মাণ করে ১৫০০ মেগাওয়াটের জলবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য পানি প্রত্যাহার করা হবে না। ফলে এতে বাংলাদেশের ওপর কোনো বিরূপ প্রভাবও পড়বে না।
বরাক নদই সিলেট অঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে সুরমা ও কুশিয়ারা নামে দুটি স্রোতধারায় প্রবাহিত হয়ে পরে আবার মিলিত হয়ে মেঘনা নাম নেয়।
এ বাঁধ নির্মাণের প্রতিবাদে প্রধান বিরোধী দল বিএনপিও আন্দোলন করছে। জাতীয় পার্টির লংমার্চ সিলেটে পেঁৗছার আগে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর, নরসিংদীর পাঁচদোনা ও ভেলানগর মোড়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশ্বরোড, হবিগঞ্জের মাধবপুর, শায়েস্তাগঞ্জ মোড় ও আউসকান্দিতে পথসভায় বক্তব্য দেন এরশাদ। এসব পথসভায় ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী অংশ নেন।
ফারাক্কা বাঁধের ফলে পদ্মা নদীসহ উত্তরাঞ্চলে পানিশূন্যতা সৃষ্টির কথা উল্লেখ করে সিলেটের জনসভায় এরশাদ বলেন, 'ফারাক্কা বাঁধ দিয়ে উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলা মরুভূমি করা হয়েছে। এখন টিপাইমুখে বাঁধ দিয়ে সিলেট অঞ্চল মরুভূমি করার চেষ্টা চলছে।'
মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের আন্তরিক সহায়তার বিষয়টি স্মরণ করে প্রতিবেশী দেশটির উদ্দেশে জাতীয় পার্টির প্রধান বলেন, 'এখন এমন কিছু করবেন না, যাতে বাংলাদেশের ক্ষতি হয়। আপনারা অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন; কিন্তু এর বাস্তবায়ন করেননি। আসুন, বাংলাদেশের সঙ্গে বসুন। প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করুন।'
বাঁধ নির্মাণের বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য ভারতের প্রতি আহ্বান জানান এরশাদ। তবে তা না হলে এ বাঁধ নির্মাণের প্রতিবাদে দলমতের পার্থক্য ভুলে সবাইকে আন্দোলনে যোগ দেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন সাবেক এ রাষ্ট্রপতি। সমবেত জনতার উদ্দেশে তিনি বলেন, 'হাত তুলে বলেন, টিপাইমুখের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ করতে পারবেন কি না?' এ সময় উপস্থিত জনতা হাত তুলে চিৎকার করে তাদের সম্মতির কথা জানায়।
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়ক আতিকুর রহমান আতিকের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর আহমদ, ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, ড. ফজলে রাবি্ব এমপি, সাবেক মন্ত্রী কাজী ফিরোজ রশীদ, গোলাম হাবিব দুলাল, সাইদুর রহমান টেপা, অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক চুন্নু, নুরে হাসনা লিলি চৌধুরী এমপি, দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক বেগম সালমা ইসলাম এমপি, ঢাকা উত্তর জাতীয় পার্টির সভাপতি ফয়সাল চিশতি প্রমুখ।
গতকাল সিলেটে রাত যাপনের পর আজ রবিবার সকালে লংমার্চের দ্বিতীয় দিনে এরশাদের নেতৃত্বে গাড়িবহর রওনা হবে জকিগঞ্জের উদ্দেশে। বিকেল ৩টায় সেখানেই লংমার্চের শেষ জনসভায় বক্তব্য দেবেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান।
গাড়িবহরে থাকা জাতীয় পার্টির নেতাদের মধ্যে আরো আছেন এম এ হান্নান, এম এ সাত্তার, সালমা ইসলাম, গোলাম মশিহ, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, কাজী ফিরোজ রশীদ, জাফর ইকবাল, মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।
সাবেক রাষ্ট্রপতি বলেন, 'আমরা জানাতে চাই, দুই দেশ মিলে জরিপ করার পর সেটা জনগণের কাছে প্রকাশ করতে হবে। তারপর আমাদের (বাংলাদেশের) সম্মতি নিয়ে বাঁধ নির্মাণ করা যেতে পারে। তা না হলে এ বাঁধ আমরা মানি না।'
ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়ে এরশাদ বলেন, 'যৌথ সমীক্ষা করে বলুন, আমাদের কোনো ক্ষতি হবে না এবং এ নদীর পানি অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা হবে না। আন্তর্জাতিক চুক্তির মাধ্যমে এর গ্যারান্টি দিতে হবে।'
সকাল সাড়ে ৭টায় রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির কার্যালয় থেকে যাত্রা শুরু করে দুপুরে সিলেট পেঁৗছায় পাঁচ শতাধিক গাড়ির এ লংমার্চ। বিকেলে জনসভা উপলক্ষে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে জড়ো হয় প্রায় ১০ হাজার মানুষ। বিকেল ৪টার দিকে এরশাদ সভাস্থলে উপস্থিত হলে নেতা-কর্মীরা তাঁকে স্বাগত জানান।
বরাক নদের উজানে টিপাইমুখে বাঁধ দিয়ে ভারতের এ জলবিদ্যুৎ প্রকল্পকে জাতির সামনে এক 'মহাদুর্যোগ' এবং সিলেটবাসীর সামনে 'অশনিসংকেত' হিসেবে উল্লেখ করে এরশাদ বলেন, 'জাতীয় পার্টির ঘোষণা, টিপাইমুখে বাঁধ হতে দেব না। জীবন থাকতে, সিলেটবাসীর স্বার্থে, আমরা জীবন দেব, তবু টিপাইমুখে বাঁধ হতে দেব না।'
বরাক নদের উজানে টিপাইমুখে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার সঙ্গে ভারতের মণিপুর রাজ্য সরকারের বিনিয়োগ চুক্তির খবর গত ১৮ নভেম্বর গণমাধ্যমে আসে। এরপর বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ এ প্রকল্পের বিষয়ে জানতে নয়াদিলি্লতে চিঠি পাঠালে ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বরাক নদের উজানে বাঁধ নির্মাণ করে ১৫০০ মেগাওয়াটের জলবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য পানি প্রত্যাহার করা হবে না। ফলে এতে বাংলাদেশের ওপর কোনো বিরূপ প্রভাবও পড়বে না।
বরাক নদই সিলেট অঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে সুরমা ও কুশিয়ারা নামে দুটি স্রোতধারায় প্রবাহিত হয়ে পরে আবার মিলিত হয়ে মেঘনা নাম নেয়।
এ বাঁধ নির্মাণের প্রতিবাদে প্রধান বিরোধী দল বিএনপিও আন্দোলন করছে। জাতীয় পার্টির লংমার্চ সিলেটে পেঁৗছার আগে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর, নরসিংদীর পাঁচদোনা ও ভেলানগর মোড়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিশ্বরোড, হবিগঞ্জের মাধবপুর, শায়েস্তাগঞ্জ মোড় ও আউসকান্দিতে পথসভায় বক্তব্য দেন এরশাদ। এসব পথসভায় ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী অংশ নেন।
ফারাক্কা বাঁধের ফলে পদ্মা নদীসহ উত্তরাঞ্চলে পানিশূন্যতা সৃষ্টির কথা উল্লেখ করে সিলেটের জনসভায় এরশাদ বলেন, 'ফারাক্কা বাঁধ দিয়ে উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলা মরুভূমি করা হয়েছে। এখন টিপাইমুখে বাঁধ দিয়ে সিলেট অঞ্চল মরুভূমি করার চেষ্টা চলছে।'
মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের আন্তরিক সহায়তার বিষয়টি স্মরণ করে প্রতিবেশী দেশটির উদ্দেশে জাতীয় পার্টির প্রধান বলেন, 'এখন এমন কিছু করবেন না, যাতে বাংলাদেশের ক্ষতি হয়। আপনারা অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন; কিন্তু এর বাস্তবায়ন করেননি। আসুন, বাংলাদেশের সঙ্গে বসুন। প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করুন।'
বাঁধ নির্মাণের বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য ভারতের প্রতি আহ্বান জানান এরশাদ। তবে তা না হলে এ বাঁধ নির্মাণের প্রতিবাদে দলমতের পার্থক্য ভুলে সবাইকে আন্দোলনে যোগ দেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন সাবেক এ রাষ্ট্রপতি। সমবেত জনতার উদ্দেশে তিনি বলেন, 'হাত তুলে বলেন, টিপাইমুখের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ করতে পারবেন কি না?' এ সময় উপস্থিত জনতা হাত তুলে চিৎকার করে তাদের সম্মতির কথা জানায়।
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়ক আতিকুর রহমান আতিকের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন পার্টির মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফর আহমদ, ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, ড. ফজলে রাবি্ব এমপি, সাবেক মন্ত্রী কাজী ফিরোজ রশীদ, গোলাম হাবিব দুলাল, সাইদুর রহমান টেপা, অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক চুন্নু, নুরে হাসনা লিলি চৌধুরী এমপি, দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক বেগম সালমা ইসলাম এমপি, ঢাকা উত্তর জাতীয় পার্টির সভাপতি ফয়সাল চিশতি প্রমুখ।
গতকাল সিলেটে রাত যাপনের পর আজ রবিবার সকালে লংমার্চের দ্বিতীয় দিনে এরশাদের নেতৃত্বে গাড়িবহর রওনা হবে জকিগঞ্জের উদ্দেশে। বিকেল ৩টায় সেখানেই লংমার্চের শেষ জনসভায় বক্তব্য দেবেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান।
গাড়িবহরে থাকা জাতীয় পার্টির নেতাদের মধ্যে আরো আছেন এম এ হান্নান, এম এ সাত্তার, সালমা ইসলাম, গোলাম মশিহ, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, কাজী ফিরোজ রশীদ, জাফর ইকবাল, মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।
No comments