গণফোরামের কাউন্সিল-নিরপেক্ষ নির্বাচনের কাঠামো তৈরির আহ্বান ড. কামালের
গণফোরামের চতুর্থ জাতীয় কাউন্সিলে জাতীয় সংকট নিরসনের জন্য একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের কাঠামো তৈরির আহ্বান জানিয়েছেন দলের সভাপতি খ্যাতনামা আইনজীবী ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেন, এজন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পাশাপাশি সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) নিয়োগের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনকেও শক্তিশালী করতে হবে।
গতকাল রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এসব দাবি জানান। সকাল ১১টায় জাতীয় সঙ্গীত ও গণসঙ্গীত পরিবেশনার মাধ্যমে কাউন্সিলের উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও বেলুন ওড়ানো হয়।
সভাপতির বক্তব্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার তাগিদ দিয়ে ড. কামাল হোসেন বলেন, জনগণ আজ নিষ্পেষিত। জনগণ গত ৪০ বছরের রাষ্ট্রীয়
নিপীড়ন থেকে মুক্তি চায়। তারা তাদের ক্ষমতার মালিকানা ফিরে পেতে চায়। এজন্য এখনই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। প্রগতিশীল রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
তিনি বলেন, বর্বরোচিত সহিংসতা দমনে সরকার, বিশেষ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যর্থতা আজ সুস্পষ্টরূপে প্রতীয়মান। সল্ফপ্রতি নরসিংদীর জনপ্রিয় মেয়র হত্যা সবাইকে শোকাহত করেছে। টিপাইমুখ বাঁধ প্রসঙ্গে ড. কামাল হোসেন বলেন, বৈদেশিক নীতির উন্নতি সাধনে এই সরকার ব্যর্থ হয়েছে। আঞ্চলিক সহযোগিতা কাঠামোর মধ্যে তিস্তা ও টিপাইমুখ বাঁধের মতো সমস্যার প্রকৃত সমাধান আমাদের বৈদেশিক নীতির উন্নয়নে সহায়ক হতে পারে।
ড. কামাল বলেন সন্ত্রাস, সাম্প্র্রদায়িকতা, রাজনৈতিক অসষ্ণিুতা, দারিদ্র্য এবং বেকারত্বের বিরুদ্ধে সব প্রগতিশীল রাজনৈতিক ও জনগণকে একজোট হতে হবে। এটা এখন সময়ের দাবি। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনী ব্যয়নির্বাহের জন্য নির্বাচন কমিশনকে সরাসরি বাজেটের উৎস প্রদান এবং নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা কর্মচারী নিয়োগ ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা প্রদান করতে হবে। এ ছাড়া তিনি নির্বাচন বিধি ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান ও শাস্তি প্রদানের ক্ষমতা প্রদান করে নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করার দাবি জানান। সব নাগরিক, নাগরিক সংগঠন, আইনজীবী সংগঠন, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, শিক্ষক, সাংবাদিক, শ্রমজীবী ও নারী সংগঠনকে এ ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান বলেছেন, গত ৪০ বছরে কী পেয়েছি আর কী পাইনি তা হিসাব করার সময় এসেছে। দেশে সংঘাতের রাজনীতি ক্রমশ বাড়ছে। তিনি আরও বলেন, দেশে সুশাসনের অভাব বিরাজ করছে। গণতন্ত্রের সংজ্ঞা অনুযায়ী সবাইকে একসঙ্গে দেশ শাসন করার কথা। কিন্তু এখানকার রাজনৈতিক দলগুলো একে অপরকে সহ্য করতে পারে না। তাদের মধ্যে আদর্শের অভাব রয়েছে। আর আদর্শের দীপশিখা ছাড়া কল্যাণ সম্ভব নয়। তিনি বলেন, সংবিধানে একটি রেফারেন্ডাম থাকা দরকার ছিল, যাতে জনগণ চাইলেই সরকার জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকত। তিনি বলেন, দুঃখের কথা হলো বিত্তশালীরা এখন রাজনীতি ডোমিনেট করছে। গণতন্ত্র রক্ষায় যোগ্য ব্যক্তিদের ক্ষমতায় বসানো না গেলে গণতন্ত্র টেকসই হবে না।
কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম বলেন, এখন দেশে কোনো গণতন্ত্র নেই। চাটুকারদের জমানা চলছে। নেতা-নেত্রীর ওপর কেউ কথা বলে না। দেশে এখন রাজনৈতিক কর্মী নেই। সব রাজনৈতিক কর্মচারীতে পরিণত হয়েছে। এখানে সত্য কথার কোনো মূল্য নেই, চাটুকারদের মূল্য আছে। পালাবদলের রাজনীতিতে আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় এলেও জনগণের দুঃখ লাঘব হবে না।
টিপাইমুখে বাঁধ নির্মাণে ভারতের উদ্যোগের সমালোচনা করে প্রাক্তন ছাত্রলীগ ফাউন্ডেশনের সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, আমরা এক মুহূর্তের জন্যও ভারতের প্রভুত্ব মেনে নেব না। প্রাণ যাবে তবুও এ দেশের মানুষ টিপাইমুখ বাঁধ মেনে নেবে না। তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, আমাদের স্বাধীনতা ও জীবন-মরণ সমস্যা সত্ত্বেও কেন এ বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ হতে পারি না। ক্ষমতাই মুখ্য উদ্দেশ্য হওয়ায় এমনটি হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এখন সর্বত্র তোষামোদি চলছে। রাষ্ট্রপতি এক অনুষ্ঠানে ১২ মিনিটের বক্তব্যে ১৪ বার মহান নেত্রীর কথা বলেছেন। দুদক চেয়ারম্যান গোলাম রহমানের সমালোচনা করে তিনি বলেন, তিনি এক বছরের মাথায় বলেছিলেন দুদক একটি দন্তহীন বাঘ। এখন বলছেন আগামী তিন বছরের মধ্যে দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করবেন। চামচামির এমন নজির কমই আছে।
বাসদ সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, আজ দেশে যে সংবিধান আছে সেটি পাকিস্তানী না বাংলাদেশি তা বোঝা যায় না। এ সংবিধানে বিসমিল্লাহ জুড়ে দেওয়া হয়েছে, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে স্বৈরাচারী আইয়ুব-ইয়াহিয়া আমলের মতো এখানে মানুষ হত্যা ও গুম করা হচ্ছে।
জাসদের কার্যকরী সভাপতি মাঈনউদ্দিন খান বাদল এমপি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষ ও বিপক্ষের শক্তি নিয়ে সৃষ্ট বিতর্কের নিষ্পত্তি করতে হবে। তাহলে সুস্থ রাজনীতির চর্চা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, সংসদে স্পিকার সময় দেন পাঁচ মিনিট। এর মধ্যে আড়াই মিনিট ভজন গাইতে গাইতে চলে যায়।
অন্যদের মধ্যে সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী, গণফোরাম নেতা অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, গণফোরাম প্রেসিডিয়ামের সদস্য কমান্ডার আবদুর রউফ, আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা এসএম আকরাম প্রমুখ বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন গণফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু।
সভাপতির বক্তব্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার তাগিদ দিয়ে ড. কামাল হোসেন বলেন, জনগণ আজ নিষ্পেষিত। জনগণ গত ৪০ বছরের রাষ্ট্রীয়
নিপীড়ন থেকে মুক্তি চায়। তারা তাদের ক্ষমতার মালিকানা ফিরে পেতে চায়। এজন্য এখনই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। প্রগতিশীল রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
তিনি বলেন, বর্বরোচিত সহিংসতা দমনে সরকার, বিশেষ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যর্থতা আজ সুস্পষ্টরূপে প্রতীয়মান। সল্ফপ্রতি নরসিংদীর জনপ্রিয় মেয়র হত্যা সবাইকে শোকাহত করেছে। টিপাইমুখ বাঁধ প্রসঙ্গে ড. কামাল হোসেন বলেন, বৈদেশিক নীতির উন্নতি সাধনে এই সরকার ব্যর্থ হয়েছে। আঞ্চলিক সহযোগিতা কাঠামোর মধ্যে তিস্তা ও টিপাইমুখ বাঁধের মতো সমস্যার প্রকৃত সমাধান আমাদের বৈদেশিক নীতির উন্নয়নে সহায়ক হতে পারে।
ড. কামাল বলেন সন্ত্রাস, সাম্প্র্রদায়িকতা, রাজনৈতিক অসষ্ণিুতা, দারিদ্র্য এবং বেকারত্বের বিরুদ্ধে সব প্রগতিশীল রাজনৈতিক ও জনগণকে একজোট হতে হবে। এটা এখন সময়ের দাবি। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনী ব্যয়নির্বাহের জন্য নির্বাচন কমিশনকে সরাসরি বাজেটের উৎস প্রদান এবং নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা কর্মচারী নিয়োগ ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা প্রদান করতে হবে। এ ছাড়া তিনি নির্বাচন বিধি ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান ও শাস্তি প্রদানের ক্ষমতা প্রদান করে নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করার দাবি জানান। সব নাগরিক, নাগরিক সংগঠন, আইনজীবী সংগঠন, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, শিক্ষক, সাংবাদিক, শ্রমজীবী ও নারী সংগঠনকে এ ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান বলেছেন, গত ৪০ বছরে কী পেয়েছি আর কী পাইনি তা হিসাব করার সময় এসেছে। দেশে সংঘাতের রাজনীতি ক্রমশ বাড়ছে। তিনি আরও বলেন, দেশে সুশাসনের অভাব বিরাজ করছে। গণতন্ত্রের সংজ্ঞা অনুযায়ী সবাইকে একসঙ্গে দেশ শাসন করার কথা। কিন্তু এখানকার রাজনৈতিক দলগুলো একে অপরকে সহ্য করতে পারে না। তাদের মধ্যে আদর্শের অভাব রয়েছে। আর আদর্শের দীপশিখা ছাড়া কল্যাণ সম্ভব নয়। তিনি বলেন, সংবিধানে একটি রেফারেন্ডাম থাকা দরকার ছিল, যাতে জনগণ চাইলেই সরকার জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকত। তিনি বলেন, দুঃখের কথা হলো বিত্তশালীরা এখন রাজনীতি ডোমিনেট করছে। গণতন্ত্র রক্ষায় যোগ্য ব্যক্তিদের ক্ষমতায় বসানো না গেলে গণতন্ত্র টেকসই হবে না।
কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম বলেন, এখন দেশে কোনো গণতন্ত্র নেই। চাটুকারদের জমানা চলছে। নেতা-নেত্রীর ওপর কেউ কথা বলে না। দেশে এখন রাজনৈতিক কর্মী নেই। সব রাজনৈতিক কর্মচারীতে পরিণত হয়েছে। এখানে সত্য কথার কোনো মূল্য নেই, চাটুকারদের মূল্য আছে। পালাবদলের রাজনীতিতে আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় এলেও জনগণের দুঃখ লাঘব হবে না।
টিপাইমুখে বাঁধ নির্মাণে ভারতের উদ্যোগের সমালোচনা করে প্রাক্তন ছাত্রলীগ ফাউন্ডেশনের সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, আমরা এক মুহূর্তের জন্যও ভারতের প্রভুত্ব মেনে নেব না। প্রাণ যাবে তবুও এ দেশের মানুষ টিপাইমুখ বাঁধ মেনে নেবে না। তিনি রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, আমাদের স্বাধীনতা ও জীবন-মরণ সমস্যা সত্ত্বেও কেন এ বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ হতে পারি না। ক্ষমতাই মুখ্য উদ্দেশ্য হওয়ায় এমনটি হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এখন সর্বত্র তোষামোদি চলছে। রাষ্ট্রপতি এক অনুষ্ঠানে ১২ মিনিটের বক্তব্যে ১৪ বার মহান নেত্রীর কথা বলেছেন। দুদক চেয়ারম্যান গোলাম রহমানের সমালোচনা করে তিনি বলেন, তিনি এক বছরের মাথায় বলেছিলেন দুদক একটি দন্তহীন বাঘ। এখন বলছেন আগামী তিন বছরের মধ্যে দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করবেন। চামচামির এমন নজির কমই আছে।
বাসদ সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, আজ দেশে যে সংবিধান আছে সেটি পাকিস্তানী না বাংলাদেশি তা বোঝা যায় না। এ সংবিধানে বিসমিল্লাহ জুড়ে দেওয়া হয়েছে, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে স্বৈরাচারী আইয়ুব-ইয়াহিয়া আমলের মতো এখানে মানুষ হত্যা ও গুম করা হচ্ছে।
জাসদের কার্যকরী সভাপতি মাঈনউদ্দিন খান বাদল এমপি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষ ও বিপক্ষের শক্তি নিয়ে সৃষ্ট বিতর্কের নিষ্পত্তি করতে হবে। তাহলে সুস্থ রাজনীতির চর্চা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, সংসদে স্পিকার সময় দেন পাঁচ মিনিট। এর মধ্যে আড়াই মিনিট ভজন গাইতে গাইতে চলে যায়।
অন্যদের মধ্যে সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী, গণফোরাম নেতা অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, গণফোরাম প্রেসিডিয়ামের সদস্য কমান্ডার আবদুর রউফ, আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা এসএম আকরাম প্রমুখ বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন গণফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু।
No comments