আশা ছাড়া আছেই বা কি!

শীতের দুপুর, মিঠে রোদ, খোলা মাঠ_ এসব বসে বসে শুনতে বেশ লাগে। এই দুপুরেই চড়চড় করে যখন দেড় দিন ধরে ফিল্ডিং করতে হয়। এই মিঠে রোদটাই তিতে মনে হয় যখন ১২৮ ওভার বোলিং করতে হয়। এই খোলা মাঠটাই মরুভূমি লাগে যখন প্রতিপক্ষের মাত্র চারটি উইকেট ফেলানো যায়। চট্টগ্রাম টেস্টে ক্রিকেটারদের চোখে শুধু ক্লান্তি নয়, হতাশায় বাঁধা পড়েছে। মাথা পেতে সবাই মেনে নিয়েছে, প্রথম ইনিংসের প্রায়শ্চিত্ত করতে হচ্ছে দেড় দিন গায়ে খেটে।


যেখানে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানরা ক্রিজে দাঁড়িয়ে চুইংগাম চিবোতে চিবোতে ব্যাটিং করছেন, সেখানেই কি-না একদিন আগে ১৩৫ রান করে লজ্জায় মুখ ঢেকেছেন। এ উইকেটে ব্যাটিং করাটা যে কতটা সহজ, এদিন ২৮৩ রান তুলেই পাকিস্তানিরা তা বুঝিয়ে দিয়েছেন। বাংলাদেশিরা যে স্পিন স্পিন করে কপাল খেয়েছিল_ ২৯ ওভারে সাকিবের একটি উইকেটও না পাওয়ায় সেটি প্রমাণ করেছে, বোলিংও ভালো হয়নি আমাদের। আর ফিল্ডিংয়ে দুটি ক্যাচ ফসকানোটাও বলে দেয়, কিছুই বলার মতো নেই। তারপরও দিন শেষে সাংবাদিকদের সামনে আসতে হয়, তাই এসেছিলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। বলেছিলেন, 'উইকেটে টার্ন না থাকায় স্পিন কাজ করেনি। আর স্পিন কাজে না আসায় আমরা উইকেটও নিতে পারিনি।' রিয়াদের মুখে উইকেটের কথা শুনে অনেকেই চটে যেতে পারেন; কিন্তু রিয়াদ এটাও বলেছেন, 'পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানরা যেভাবে ডিসিপ্লিন ব্যাটিং করেছেন, সেটা থেকে আমরা শিখতে পারি। তারা মারার বলটিই মেরেছেন, এটিও আমরা দ্বিতীয় ইনিংসে কাজে লাগাতে পারি। এ মুহূর্তে আশা করা ছাড়া আর কিই-বা বলার আছে আমাদের।'
রিয়াদের এ কথা শোনার পর মনে হতেই পারে, সারাদিন মাঠে ফিল্ডিং করাটা বৃথা যায়নি, অন্তত কাছ থেকে হাফিজ, ইউনিস, তৌফিকদের ব্যাটিং দেখে আত্মবিশ্বাসী হয়েছেন। 'উইকেট ব্যাটিং সহায়ক, আমরা চেষ্টা করব কাল ওদের অল আউট করতে। যদিও কাজটা কঠিন। তবে আমাদের কাছে এখন সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ দ্বিতীয় ইনিংস। সেখানে আমরা যদি বড় একটা স্কোর করতে পারি, কেউ যদি লম্বা একটা ইনিংস খেলতে পারে, তাহলে পুরো দলের আত্মবিশ্বাস ফিরে আসবে।' অসহায়ের ভঙ্গিতে দ্বিতীয় ইনিংসের প্রেরণার কথা বেরিয়ে এসেছিল রিয়াদের মধ্যে থেকে। যিনি স্বীকার করেছেন মনস্তাত্তি্বক কারণেই প্রথম ইনিংসটা অমন হয়েছে। তবে সেটা কেটে যাবে যদি দ্বিতীয় ইনিংসে পাকিস্তানিদের মতো ধৈর্য ধরে খেলতে পারেন তারা।

No comments

Powered by Blogger.