ক্যাপ্টাগন বড়ি খেয়ে যুদ্ধ করছে আইএস
সিরিয়ায় জিহাদিরা ছোট্ট একটি বড়ি খেয়ে দিনরাত যুদ্ধ করছে বলে বিশেষজ্ঞরা সন্দেহ করছেন। আর ওই বড়ির নাম ক্যাপ্টাগন। এ বড়িটি শুধু সিরিয়াতেই উৎপাদিত হয়। আর পাওয়া যায় পুরো মধ্যপ্রাচ্যে। প্রচণ্ড নেশা সৃষ্টিকারী ও যৌন শক্তিবর্ধক এ বড়ি বিক্রি করে পাওয়া কোটি কোটি ডলার চলে যায় যুদ্ধকবলিত সিরিয়ার কালোবাজারে। এসব অর্থ দিয়ে জিহাদি যোদ্ধারা বিশেষত আইএস, আল কায়দা নতুন নতুন অস্ত্র কিনতে পারছে, আর জিইয়ে রাখতে পারছে যুদ্ধকেও। যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকায় সম্প্রতি এ খবর প্রকাশিত হয়েছে। বলা হচ্ছে, ক্যাপ্টাগন নামের শক্তিশালী এ ড্রাগ খুব দ্রুত কাজ করে এবং এটি খেয়েই সিরিয়ার যোদ্ধারা ঘুম-বিশ্রাম ফেলে দিনরাত সর্বক্ষণ যুদ্ধ করতে পারছে। বলা হচ্ছে, নেশা সৃষ্টিকারী এ বড়ি খাওয়ার কারণেই জিহাদিরা কোনো ধরনের বিচার-বিবেচনা ছাড়াই নির্বিচারে হত্যাকাণ্ড চালাতে পারছে। এ ট্যাবলেট গ্রহণ করেন লেবাননে এরকম একজন বলেছেন, এ ড্রাগটি নিলে আপনি ঘুমাতে তো দূরের কথা, চোখও বন্ধ করতে পারবেন না। বিবিসির একটি তথ্যচিত্রে আরেকজন গ্রহণকারী বলেছেন, এ ট্যাবলেট একবার খেলে আপনি আর কিছুতেই এটা খাওয়া বন্ধ করতে পারবেন না। ‘মনে হবে আমি পৃথিবীর শীর্ষে অবস্থান করছি।
আমার যে ক্ষমতা তা আর কারও নেই।’ বলেন তিনি। আরেকজন বলেছেন, ‘ওই বড়ি খাওয়ার পর মনে হয়েছে এই পৃথিবীর আর কেউ আমাকে আক্রমণ করতে পারবে না।’ রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সিরিয়া এখন ড্রাগ ভূমি’। যুদ্ধের কারণে সিরিয়া এখন ক্যাপ্টাগনের ড্রাগের সবচে বড়ো উৎপাদনকারী ও ভোক্তা দেশে পরিণত হয়েছে। ১৯৬০ সাল থেকেই পশ্চিমা দেশগুলোতে ক্যাপ্টাগন পাওয়া যায়। বিষণ্ণতা কাটাতে তারা এ ওষুধ গ্রহণ করত। তবে পরে এটা নেশা সৃষ্টিকারী ড্রাগ হিসেবে ব্যবহৃত হতে শুরু করলে ১৯৮০ সালে বেশিরভাগ দেশেই এটা নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু এখনও এ ড্রাগ পুরোপুরি উধাও হয়ে যায়নি। পশ্চিমা বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, ইসলামিক স্টেটের যোদ্ধারা এ ড্রাগ প্রচুর পরিমাণে ব্যবহার করছে। সৌদি আরবেও এর ব্যাপক ব্যবহার আছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌদি আরবে প্রতি বছর ৪০ থেকে ৫০ হাজার মানুষ এ নেশার জন্য চিকিৎসা নিয়ে থাকে। পরে এ ড্রাগের উৎস হয়ে ওঠে সিরিয়া এবং সেখান থেকে এ ড্রাগটি ইউরোপসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পাচার হয়ে থাকে। সিরিয়ায় রাষ্ট্র ব্যবস্থা ভেঙে পড়া, সশস্ত্র বিভিন্ন গ্র“পের মধ্যে সংঘর্ষ বেড়ে যাওয়া ও সীমান্ত এলাকায় নিয়ন্ত্রণ নাজুক হয়ে যাওয়ার পর এ ড্রাগ ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। এর আগে এটা উৎপাদিত হতো লেবাননের বেকা উপত্যকায় আর এখন সেটা হচ্ছে সিরিয়ায়। চিকিৎসকরা বলছেন, মস্তিষ্কের ক্ষতি হওয়ার মতো এ ড্রাগের মারাত্মক কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। বিবিসি।
No comments