মেসি কী পারবেন নোভাৎনা হতে?
নোভাৎনার কাছ থেকে অনুপ্রেরণা খুঁজতেই পারেন লিওনেল মেসি ছবি: এএফপি |
ইয়ানা
নোভাৎনা নামটি কী একটু অপরিচিত ঠেকছে বর্তমান প্রজন্মের ক্রীড়াপাগল
মানুষদের। যদি তাই হয় তাহলে এই নোভাৎনা সম্পর্কে সবারই একটু জেনে নেওয়া
প্রয়োজন। বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম সেরা তারকা লিওনেল মেসিকে যে এখন এই
নোভাৎনার কাছ থেকেই খুঁজতে হবে অনুপ্রেরণা!
নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে বিশ্ব টেনিসে ঝড় তুলেছিলেন ইয়ানা নোভাৎনা। টেনিস দুনিয়ার অন্যতম প্রতিভাদীপ্ত এই চেক তারকা টেনিসের সবচেয়ে আরাধ্য গ্র্যান্ডস্লাম-উইম্বলডন জিতেছিলেন বহু বছরের চেষ্টার পর। ফ্রেঞ্চ ওপেন, অস্ট্রেলিয়ান ওপেন, ইউএস ওপেন—টেনিসের শীর্ষ এই প্রতিযোগিতাগুলোর শিরোপার খুব কাছাকাছি পৌঁছেছিলেন বেশ কয়েকবার, কিন্তু শিরোপা জিততে পারেননি। ১৯৯৩ সালে উইম্বলডন-শিরোপার খুব কাছে গিয়েও শিরোপা হারিয়েছিলেন। সেবার গ্র্যাবিয়েলা সাবাতিনি ও মার্টিনা নাদ্রাতিলোভার মতো তারকাদের হারিয়ে ফাইনালে ওঠা নোভাৎনা হার স্বীকার করেছিলেন স্টেফিগ্রাফের কাছে। অথচ এই ফাইনালেই একটি সেটে তিনি স্টেফিগ্রাফকে পেছনে ফেলেছিলেন ৫-১ ব্যবধানে। তিরানব্বইয়ের ফাইনালে হারার পর নোভাৎনার অঝোর কান্নার সেই দৃশ্য আজও ছুঁয়ে যায় অনেককেই। অথচ এই নোভাৎনাই ক্যারিয়ারের পড়ন্তবেলায় সারা দুনিয়াকে দেখিয়ে দিয়েছিলেন উইম্বলডনের শিরোপা জিতে। ১৯৯৮ সালে তাঁর উইম্বলডন শিরোপা জয়ও ছুঁয়ে গিয়েছিল অনেককেই।
মেসির প্রসঙ্গে নোভাৎনাকে কেন টেনে আনা হচ্ছে এতক্ষণে নিশ্চয়ই ধরতে পেরেছেন পাঠকেরা। আর্জেন্টিনার হয়ে তিনটি বড় ফাইনাল খেলেও প্রতিবারই ব্যর্থ হওয়া মেসি এই নোভাৎনার কাছ থেকে অনুপ্রেরণা নেবেন না তো কার কাছ থেকে নেবেন! মেসির সঙ্গে এই মুহূর্তেই নোভাৎনার দেখা হওয়া বড্ড প্রয়োজন।
মাত্র এক বছরের ব্যবধানে দেশকে দুটো শিরোপা এনে দিতে পারতেন মেসি। গত বছর বিশ্বকাপ, এ বছর কোপা। এই দুটো শিরোপা ঘরে আনলে মেসি স্থান পেয়ে যেতেন সর্বকালের সেরাদের কাতারে! ম্যারাডোনা বলুন, কিংবা পেলে। নিকট অতীতের জিনেদিন জিদান অথবা ব্রাজিলীয় রোনালদো, মেসি হয়তো জায়গা নিতেন সবার ওপরেই। কিন্তু এর কিছুই হয়নি। বিশ্বকাপের শিরোপা ধরতে গিয়েও পারেননি, কোপাতেও হলেন ব্যর্থ—সারা দুনিয়ায় প্রশ্নটা উঠে গেছে বড় বাজেভাবেই, তবে কি জাতীয় দলের জার্সিতে ‘কিছুই না পাওয়া’দের দলেই থাকতে যাচ্ছেন মেসি? অনেকে তো রসিকতা করে এমন কথাও বলা শুরু করেছেন মেসির সঙ্গে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর বন্ধুত্ব ভেতরে-ভেতরে এতটাই প্রগাঢ় যে ‘বন্ধুর’ সম্মানে জাতীয় দলের হয়ে কিছু জিতছেন না মেসি। এটা তো সবাই জানে, সিআর-সেভেন যত যা-ই হন, দেশের হয়ে খুব বেশি কিছু জেতার সম্ভাবনা তাঁর আপাতত নেই।
বলাই বাহুল্য, মেসির এই ব্যর্থতার সঙ্গে রোনালদো-বন্ধুতার গন্ধ অনুসন্ধান নিন্দুকদেরই আবিষ্কার। কিন্তু মেসির এই না পাওয়ার ব্যাপারটি কিন্তু ভাবিয়ে তুলেছে হাল-আমলের নিরপেক্ষ প্রায় সব ফুটবল-বোদ্ধাদেরই। সব কিছুই তাঁর পক্ষে। এই মুহূর্তে বিশ্ব সেরা ফুটবলার হিসেবে তাঁকে চ্যালেঞ্জ জানানোর সাহস খুব বেশি জনের নেই। ক্লাব বার্সার হয়ে জিতেছেন সম্ভব-অসম্ভব প্রায় সব শিরোপাই। কিন্তু পেলে-ম্যারাডোনাদের কাতারে যেতে যে ব্যাপারটির দরকার মেসি হারিয়ে খুঁজছেন ঠিক সেটাই।
২০০৭ সালের কোপা আমেরিকা প্রতিযোগিতার ফাইনালে মেসির আর্জেন্টিনা হেরেছিল ব্রাজিলের কাছে। ২০১০ বিশ্বকাপ আর ২০১১ কোপার কোয়ার্টার ফাইনালের বেশি যাওয়া হয়নি আর্জেন্টাইনদের। ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালের অতিরিক্ত সময়ে মারিও গোটশে নামের এক জার্মান তরুণের কাছে স্বপ্নভঙ্গ! এবার কোপা তীরে এসে তরী ডোবা—এসবই জাতীয় দলের জার্সিতে মেসির দীর্ঘশ্বাসলব্ধ যন্ত্রণার আখ্যান। এই যন্ত্রণার ইতি কী তাঁর ক্যারিয়ারে কোনো দিনই ঘটবে না? ইতিমধ্যেই তিনটি বিশ্বকাপ আর তিনটি কোপা প্রতিযোগিতা খেলে ফেলা মেসির জীবনের ঘরবসতি এখন এমন প্রশ্নের মাঝেই।
সাধারণ হিসেব বলছে, মেসির সামনে এখনো অনেক সময় পড়ে আছে। বয়সটা যেহেতু মাত্র ২৮, তাই চোখ বন্ধ করেও আরও একটি বিশ্বকাপ তিনি খেলতেই পারবেন। একটু আশাবাদীরা মনে করেন মেসির সামনে এখনো বিশ্বকাপ আছে দুটি। ৩১ ও ৩৫ বছর বয়স কী বিশ্বকাপের লক্ষ্যে ঝাঁপানোর জন্য খুব বেশি? তবে এসব জল্পনা এক পাশে সরিয়ে রেখে কিন্তু বলে দেওয়া যেতে পারে, ম্যারাডোনা-পেলেদের কাতারে যাওয়ার সুযোগটা নেওয়ার সময় খুব দ্রুতই ফুরিয়ে আসছে মেসির জন্য। শেষ সুযোগগুলো কাজে লাগাতে না পারলে তাঁর ফুটবলশৈলী ছাপিয়েও অনাগত প্রজন্মের কাছে তিনি পরিচিত হবেন একজন ‘চোকার’ হিসেবেই।
সবার প্রার্থনা, মেসি একজন নোভাৎনাই হন!
নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে বিশ্ব টেনিসে ঝড় তুলেছিলেন ইয়ানা নোভাৎনা। টেনিস দুনিয়ার অন্যতম প্রতিভাদীপ্ত এই চেক তারকা টেনিসের সবচেয়ে আরাধ্য গ্র্যান্ডস্লাম-উইম্বলডন জিতেছিলেন বহু বছরের চেষ্টার পর। ফ্রেঞ্চ ওপেন, অস্ট্রেলিয়ান ওপেন, ইউএস ওপেন—টেনিসের শীর্ষ এই প্রতিযোগিতাগুলোর শিরোপার খুব কাছাকাছি পৌঁছেছিলেন বেশ কয়েকবার, কিন্তু শিরোপা জিততে পারেননি। ১৯৯৩ সালে উইম্বলডন-শিরোপার খুব কাছে গিয়েও শিরোপা হারিয়েছিলেন। সেবার গ্র্যাবিয়েলা সাবাতিনি ও মার্টিনা নাদ্রাতিলোভার মতো তারকাদের হারিয়ে ফাইনালে ওঠা নোভাৎনা হার স্বীকার করেছিলেন স্টেফিগ্রাফের কাছে। অথচ এই ফাইনালেই একটি সেটে তিনি স্টেফিগ্রাফকে পেছনে ফেলেছিলেন ৫-১ ব্যবধানে। তিরানব্বইয়ের ফাইনালে হারার পর নোভাৎনার অঝোর কান্নার সেই দৃশ্য আজও ছুঁয়ে যায় অনেককেই। অথচ এই নোভাৎনাই ক্যারিয়ারের পড়ন্তবেলায় সারা দুনিয়াকে দেখিয়ে দিয়েছিলেন উইম্বলডনের শিরোপা জিতে। ১৯৯৮ সালে তাঁর উইম্বলডন শিরোপা জয়ও ছুঁয়ে গিয়েছিল অনেককেই।
মেসির প্রসঙ্গে নোভাৎনাকে কেন টেনে আনা হচ্ছে এতক্ষণে নিশ্চয়ই ধরতে পেরেছেন পাঠকেরা। আর্জেন্টিনার হয়ে তিনটি বড় ফাইনাল খেলেও প্রতিবারই ব্যর্থ হওয়া মেসি এই নোভাৎনার কাছ থেকে অনুপ্রেরণা নেবেন না তো কার কাছ থেকে নেবেন! মেসির সঙ্গে এই মুহূর্তেই নোভাৎনার দেখা হওয়া বড্ড প্রয়োজন।
মাত্র এক বছরের ব্যবধানে দেশকে দুটো শিরোপা এনে দিতে পারতেন মেসি। গত বছর বিশ্বকাপ, এ বছর কোপা। এই দুটো শিরোপা ঘরে আনলে মেসি স্থান পেয়ে যেতেন সর্বকালের সেরাদের কাতারে! ম্যারাডোনা বলুন, কিংবা পেলে। নিকট অতীতের জিনেদিন জিদান অথবা ব্রাজিলীয় রোনালদো, মেসি হয়তো জায়গা নিতেন সবার ওপরেই। কিন্তু এর কিছুই হয়নি। বিশ্বকাপের শিরোপা ধরতে গিয়েও পারেননি, কোপাতেও হলেন ব্যর্থ—সারা দুনিয়ায় প্রশ্নটা উঠে গেছে বড় বাজেভাবেই, তবে কি জাতীয় দলের জার্সিতে ‘কিছুই না পাওয়া’দের দলেই থাকতে যাচ্ছেন মেসি? অনেকে তো রসিকতা করে এমন কথাও বলা শুরু করেছেন মেসির সঙ্গে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর বন্ধুত্ব ভেতরে-ভেতরে এতটাই প্রগাঢ় যে ‘বন্ধুর’ সম্মানে জাতীয় দলের হয়ে কিছু জিতছেন না মেসি। এটা তো সবাই জানে, সিআর-সেভেন যত যা-ই হন, দেশের হয়ে খুব বেশি কিছু জেতার সম্ভাবনা তাঁর আপাতত নেই।
বলাই বাহুল্য, মেসির এই ব্যর্থতার সঙ্গে রোনালদো-বন্ধুতার গন্ধ অনুসন্ধান নিন্দুকদেরই আবিষ্কার। কিন্তু মেসির এই না পাওয়ার ব্যাপারটি কিন্তু ভাবিয়ে তুলেছে হাল-আমলের নিরপেক্ষ প্রায় সব ফুটবল-বোদ্ধাদেরই। সব কিছুই তাঁর পক্ষে। এই মুহূর্তে বিশ্ব সেরা ফুটবলার হিসেবে তাঁকে চ্যালেঞ্জ জানানোর সাহস খুব বেশি জনের নেই। ক্লাব বার্সার হয়ে জিতেছেন সম্ভব-অসম্ভব প্রায় সব শিরোপাই। কিন্তু পেলে-ম্যারাডোনাদের কাতারে যেতে যে ব্যাপারটির দরকার মেসি হারিয়ে খুঁজছেন ঠিক সেটাই।
২০০৭ সালের কোপা আমেরিকা প্রতিযোগিতার ফাইনালে মেসির আর্জেন্টিনা হেরেছিল ব্রাজিলের কাছে। ২০১০ বিশ্বকাপ আর ২০১১ কোপার কোয়ার্টার ফাইনালের বেশি যাওয়া হয়নি আর্জেন্টাইনদের। ২০১৪ বিশ্বকাপের ফাইনালের অতিরিক্ত সময়ে মারিও গোটশে নামের এক জার্মান তরুণের কাছে স্বপ্নভঙ্গ! এবার কোপা তীরে এসে তরী ডোবা—এসবই জাতীয় দলের জার্সিতে মেসির দীর্ঘশ্বাসলব্ধ যন্ত্রণার আখ্যান। এই যন্ত্রণার ইতি কী তাঁর ক্যারিয়ারে কোনো দিনই ঘটবে না? ইতিমধ্যেই তিনটি বিশ্বকাপ আর তিনটি কোপা প্রতিযোগিতা খেলে ফেলা মেসির জীবনের ঘরবসতি এখন এমন প্রশ্নের মাঝেই।
সাধারণ হিসেব বলছে, মেসির সামনে এখনো অনেক সময় পড়ে আছে। বয়সটা যেহেতু মাত্র ২৮, তাই চোখ বন্ধ করেও আরও একটি বিশ্বকাপ তিনি খেলতেই পারবেন। একটু আশাবাদীরা মনে করেন মেসির সামনে এখনো বিশ্বকাপ আছে দুটি। ৩১ ও ৩৫ বছর বয়স কী বিশ্বকাপের লক্ষ্যে ঝাঁপানোর জন্য খুব বেশি? তবে এসব জল্পনা এক পাশে সরিয়ে রেখে কিন্তু বলে দেওয়া যেতে পারে, ম্যারাডোনা-পেলেদের কাতারে যাওয়ার সুযোগটা নেওয়ার সময় খুব দ্রুতই ফুরিয়ে আসছে মেসির জন্য। শেষ সুযোগগুলো কাজে লাগাতে না পারলে তাঁর ফুটবলশৈলী ছাপিয়েও অনাগত প্রজন্মের কাছে তিনি পরিচিত হবেন একজন ‘চোকার’ হিসেবেই।
সবার প্রার্থনা, মেসি একজন নোভাৎনাই হন!
No comments