ময়মনসিংহ বিএনপির রাজনীতি: কোন্দলে কাবু উত্তর, দক্ষিণে হতাশা
৫ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচন প্রতিহত এবং সরকার পতনের আন্দোলন দুই দফা ব্যর্থ হওয়ার পর হতাশা ভর করেছে ময়মনসিংহ বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর। তার ওপর অভ্যন্তরীণ কোন্দল উত্তর জেলা বিএনপিকে সাংগঠনিকভাবে আরও দুর্বল করে ফেলেছে। আর দক্ষিণ জেলায় কিছুটা অন্তর্দ্বন্দ্ব থাকলেও সেখানে নেতা-কর্মীদের নিষ্ক্রিয়তার মূল কারণ হতাশা বলে দলটির বিভিন্ন পর্যায়ে কথা বলে জানা গেছে। সরকারবিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে বিভিন্ন মামলার আসামি হয়ে এখানকার নেতা-কর্মীদের অনেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন, অনেকে আছেন কারাগারে।
ময়মনসিংহে উত্তর জেলা ও দক্ষিণ জেলা নামে বিএনপির দুটি সাংগঠনিক কমিটি রয়েছে। হালুয়াঘাট, ফুলপুর, ধোবাউড়া, তারাকান্দা, গৌরীপুর, ঈশ্বরগঞ্জ ও নান্দাইল উপজেলা নিয়ে গঠিত উত্তর জেলা কমিটি। আর ময়মনসিংহ সদর, গফরগাঁও, মুক্তাগাছা, ত্রিশাল, ভালুকা, ফুলবাড়িয়া উপজেলা নিয়ে দক্ষিণ জেলা কমিটি।
উত্তর জেলা: ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভরাডুবির পর ২০০৯ সালে অন্যান্য জেলা কমিটির মতো ময়মনসিংহের দুটি সাংগঠনিক জেলা কমিটিও ভেঙে দেয় বিএনপি। এরপর অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে ছয় বছরেও সম্মেলন করে নতুন কমিটি দেওয়া সম্ভব হয়নি। গত বছর এপ্রিলে কেন্দ্র থেকে খুররম খান চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে উত্তর জেলা কমিটি করে দেওয়া হয়।
দলীয় সূত্রগুলো বলছে, এই আহ্বায়ক কমিটি দুটি উপদলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। আহ্বায়ক খুররম খান একদিকে আর তিন যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার, আবুল বাশার আকন্দ ও আহমেদ তায়েবুর রহমান আরেক দিকে। যুগ্ম আহ্বায়কদের সঙ্গে আলোচনা না করে আহ্বায়ক একক ইচ্ছায় বিভিন্ন উপজেলা কমিটি গঠন করায় নতুন করে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এ কারণে এখানকার সাংগঠনিক অবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে।
যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, উপজেলার কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে আহ্বায়ক ও প্রথম যুগ্ম আহ্বায়কের যৌথ অনুমোদনের নিয়ম থাকলেও খুররম খান সে নিয়ম না মেনে ফুলপুর, ধোবাউড়া, নান্দাইল ও ঈশ্বরগঞ্জে নিজের পছন্দের নেতাদের দিয়ে একক সিদ্ধান্তে কমিটি করেছেন।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সম্মেলনে সাবেক সাংসদ শাহ নুরুল কবীর শাহীনকে সভাপতি করে কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু খুররম খান সেই কমিটিকে না মেনে ২৪ সেপ্টেম্বর আবার সম্মেলন করে লুৎফুল মাজেদকে সভাপতি করে কমিটি ঘোষণা করেন।
স্থানীয় নেতাদের অভিযোগ, খুররম খান তাঁর ছেলেকে রাজনীতিতে আনতে নুরুল কবীরকে ওই উপজেলায় মানুষের কাছে হেয় করতে এটা করেছেন। তা ছাড়া মাজেদ একসময় জাতীয় পার্টি করতেন বলেও তাঁরা অভিযোগ করেন।
আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল বাশার আকন্দ দাবি করেন, খুররম খান জাতীয় পার্টি থেকে বিএনপিতে এসেছেন। তাই স্বৈরাচারী মনোভাব নিয়ে উপজেলা কমিটি গঠন করছেন।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে খুররম খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাকে বিএনপির চেয়ারপারসন দায়িত্ব দিয়েছেন। তাঁর নির্দেশে কাজ করছি। যাঁরা দলকে বিক্রি করে বাণিজ্য করতে পারছেন না, তাঁরাই এসব অপপ্রচার চালাচ্ছেন।’ তিনি বলেন, তাঁর ছেলে যদি যোগ্য হয় তাহলে রাজনীতি করবে।
দক্ষিণ জেলা
উত্তরের মতো প্রকট না হলেও দক্ষিণ জেলা বিএনপিতেও দুটি ধারা রয়েছে। ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি গঠন করা নিয়ে ২০১২ সালের শুরুর দিকে এ দুটি ধারা তৈরি হয়। একটি ধারার নেতৃত্বে আছেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন। অন্য ধারার নেতৃত্ব দেন জেলার সাধারণ সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ।
অবশ্য এ কে এম মোশাররফ হোসেন দাবি করেন, বিএনপিতে কোনো কোন্দল নেই। অঙ্গসংগঠনের কমিটি নিয়ে কিছু বিরোধ থাকতে পারে। সেটাকে কোন্দল বলা যাবে না, বড় দলে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে প্রতিযোগিতা থাকে।
বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, টানা তিন মাসের সরকার পতনের আন্দোলন চালিয়ে ব্যর্থ হওয়ার পর এখানকার সাংগঠনিক কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়েছে। মামলায় পড়ে অনেকে আত্মগোপনে। অনেকে কারাগারে। কেউ কেউ সরকারদলীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে সমঝোতা করে এলাকায় থাকছেন। আবার ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কিছু গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে মূল্যায়ন না করে দলছুট কিছু নেতাকে নেতৃত্বে নিয়ে আসা এবং কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো কর্মসূচি না থাকায় কর্মীদের মধ্যে কিছুটা হতাশা জন্মেছে বলে মনে করেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াহাব আকন্দ।
অবশ্য ময়মনসিংহ শহর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম মাহবুবুল আলমের মতে, আবার আন্দোলন শুরু হলে নেতা-কর্মীদের হতাশা কেটে যাবে।
ময়মনসিংহে উত্তর জেলা ও দক্ষিণ জেলা নামে বিএনপির দুটি সাংগঠনিক কমিটি রয়েছে। হালুয়াঘাট, ফুলপুর, ধোবাউড়া, তারাকান্দা, গৌরীপুর, ঈশ্বরগঞ্জ ও নান্দাইল উপজেলা নিয়ে গঠিত উত্তর জেলা কমিটি। আর ময়মনসিংহ সদর, গফরগাঁও, মুক্তাগাছা, ত্রিশাল, ভালুকা, ফুলবাড়িয়া উপজেলা নিয়ে দক্ষিণ জেলা কমিটি।
উত্তর জেলা: ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভরাডুবির পর ২০০৯ সালে অন্যান্য জেলা কমিটির মতো ময়মনসিংহের দুটি সাংগঠনিক জেলা কমিটিও ভেঙে দেয় বিএনপি। এরপর অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে ছয় বছরেও সম্মেলন করে নতুন কমিটি দেওয়া সম্ভব হয়নি। গত বছর এপ্রিলে কেন্দ্র থেকে খুররম খান চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে উত্তর জেলা কমিটি করে দেওয়া হয়।
দলীয় সূত্রগুলো বলছে, এই আহ্বায়ক কমিটি দুটি উপদলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। আহ্বায়ক খুররম খান একদিকে আর তিন যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার, আবুল বাশার আকন্দ ও আহমেদ তায়েবুর রহমান আরেক দিকে। যুগ্ম আহ্বায়কদের সঙ্গে আলোচনা না করে আহ্বায়ক একক ইচ্ছায় বিভিন্ন উপজেলা কমিটি গঠন করায় নতুন করে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এ কারণে এখানকার সাংগঠনিক অবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে।
যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, উপজেলার কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে আহ্বায়ক ও প্রথম যুগ্ম আহ্বায়কের যৌথ অনুমোদনের নিয়ম থাকলেও খুররম খান সে নিয়ম না মেনে ফুলপুর, ধোবাউড়া, নান্দাইল ও ঈশ্বরগঞ্জে নিজের পছন্দের নেতাদের দিয়ে একক সিদ্ধান্তে কমিটি করেছেন।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সম্মেলনে সাবেক সাংসদ শাহ নুরুল কবীর শাহীনকে সভাপতি করে কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু খুররম খান সেই কমিটিকে না মেনে ২৪ সেপ্টেম্বর আবার সম্মেলন করে লুৎফুল মাজেদকে সভাপতি করে কমিটি ঘোষণা করেন।
স্থানীয় নেতাদের অভিযোগ, খুররম খান তাঁর ছেলেকে রাজনীতিতে আনতে নুরুল কবীরকে ওই উপজেলায় মানুষের কাছে হেয় করতে এটা করেছেন। তা ছাড়া মাজেদ একসময় জাতীয় পার্টি করতেন বলেও তাঁরা অভিযোগ করেন।
আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল বাশার আকন্দ দাবি করেন, খুররম খান জাতীয় পার্টি থেকে বিএনপিতে এসেছেন। তাই স্বৈরাচারী মনোভাব নিয়ে উপজেলা কমিটি গঠন করছেন।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে খুররম খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাকে বিএনপির চেয়ারপারসন দায়িত্ব দিয়েছেন। তাঁর নির্দেশে কাজ করছি। যাঁরা দলকে বিক্রি করে বাণিজ্য করতে পারছেন না, তাঁরাই এসব অপপ্রচার চালাচ্ছেন।’ তিনি বলেন, তাঁর ছেলে যদি যোগ্য হয় তাহলে রাজনীতি করবে।
দক্ষিণ জেলা
উত্তরের মতো প্রকট না হলেও দক্ষিণ জেলা বিএনপিতেও দুটি ধারা রয়েছে। ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি গঠন করা নিয়ে ২০১২ সালের শুরুর দিকে এ দুটি ধারা তৈরি হয়। একটি ধারার নেতৃত্বে আছেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন। অন্য ধারার নেতৃত্ব দেন জেলার সাধারণ সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ।
অবশ্য এ কে এম মোশাররফ হোসেন দাবি করেন, বিএনপিতে কোনো কোন্দল নেই। অঙ্গসংগঠনের কমিটি নিয়ে কিছু বিরোধ থাকতে পারে। সেটাকে কোন্দল বলা যাবে না, বড় দলে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে প্রতিযোগিতা থাকে।
বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, টানা তিন মাসের সরকার পতনের আন্দোলন চালিয়ে ব্যর্থ হওয়ার পর এখানকার সাংগঠনিক কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়েছে। মামলায় পড়ে অনেকে আত্মগোপনে। অনেকে কারাগারে। কেউ কেউ সরকারদলীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে সমঝোতা করে এলাকায় থাকছেন। আবার ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের কিছু গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে মূল্যায়ন না করে দলছুট কিছু নেতাকে নেতৃত্বে নিয়ে আসা এবং কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো কর্মসূচি না থাকায় কর্মীদের মধ্যে কিছুটা হতাশা জন্মেছে বলে মনে করেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াহাব আকন্দ।
অবশ্য ময়মনসিংহ শহর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এ কে এম মাহবুবুল আলমের মতে, আবার আন্দোলন শুরু হলে নেতা-কর্মীদের হতাশা কেটে যাবে।
No comments