চাকরিক্ষেত্রে যোগ্যতাই হোক একমাত্র মানদণ্ড
নাইরে মামা, নাইরে খালু নাইরে ফুপাজান, এই বাজারে চাকরি আমি কেমনে জোটাইতাম। একটি সময়ে ব্যাঙ্গত্মক এই প্যারোডি গানের কথা বেকার যুবকদের মুখে মুখে ফিরত। তারপর অনেক সময় পেরিয়ে গেলেও পাল্টেনি গানের উপযোগিতা। তবে এখন আর শুধু আত্মীয়তার বন্ধনে চাকরি জোটে না। এর সঙ্গে এখন যুক্ত হয়েছে অন্য অনুষঙ্গও। আর সেটি টাকা। আত্মীয়তার বন্ধনের সঙ্গে সঙ্গে এখন কড়িও ফেলতে হবে। তবেই উপযুক্ত চাকরি মিলবে। রাজনৈতিক দলের তদবির থেকে শুরু করে চাকরিপ্রার্থীদের এখন অনেক কিছুই করতে হয়। আর এই করার মাঝে যারা চাকরি দেয়ার ক্ষমতা রাখেন তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগও বিস্তর। কারণ কড়ি ছাড়া তারা চাকরিতে প্রবেশাধিকার দিতে নাকি রাজি না। আবার কড়ি মিললে চাকরির পরীক্ষার প্রশ্নপত্রও মিলে যাবে আগেভাগে। ফলে শুধু যোগ্যতা দিয়ে এখন চাকরি জোগার করা কঠিন হয়ে পড়েছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের শক্ত অবস্থান এবং প্রচারণার পরেও এ থেকে আমরা মুক্ত হতে পারিনি। চাকরি প্রার্থীদের এখনো দুর্র্নীতির পথ ধরেই চাকরির সন্ধান করতে হয়। দৈনিক মানবকণ্ঠে ৫ জুলাই প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে আবারো এই বিষয়টি উঠে এসেছে। চাকরি প্রার্থীদের বিড়ম্বনা আর চাকরি দাতাদের নানা ফন্দির কথা তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে কারওয়ান বাজারে পরিবার পরিকল্পনা অফিসে অফিস সহায়ক পদে মৌখিক পরীক্ষা চলছে। এই পরীক্ষা এ মাসজুড়েই চলবে। দীর্ঘদিন চলার নেপথ্য কাহিনী হচ্ছে, প্রথম পর্যায়ে প্রভাবশালী মন্ত্রীর প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় টেকেনি। তাই আবার নতুন করে সার্কুলার দিতে হয়েছে। শুধু তাই নয়, এই পরীক্ষা নিয়ে কোনো কোনো প্রার্থী ইতিমধ্যে বেশ কিছু অর্থ জোগান দিয়েছে বলেও প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অফিস সহায়ক পদে নিয়োগ হয়ে গেছে। কিন্তু এই নিয়োগ নিয়ে প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছে নানা প্রশ্ন। একইভাবে প্রতিবেদনটিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চাকরি সম্পর্কে বলা হয়েছে, প্রায় তিন মাস হয়ে গেল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চাকরির যাবতীয় ইন্টারভিউ। অনেকে টাকা-পয়সা নিয়ে দৌড়ঝাঁপ করেছেন এমন দু’জন প্রার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এখনো কোনো খোঁজখবর পাচ্ছেন না। প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়েছে, এখানে নাকি টাকার অঙ্ক এত বেশি যে, চাকরিপ্রার্থীদের সবার পক্ষে হয়তো চাকরি পাওয়া এখন দুঃস্বপ্ন।
চাকরি প্রার্থীদের বিশ্বাস টাকা ছাড়া চাকরি মিলবে না। চাকরি পাবার মাপকাঠি কি শুধুই টাকা? যদি তাই হয়, তাহলে আমাদের পক্ষে কোনোদিনই ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব নয়। কয়েকদিন আগে মানবকণ্ঠের এক প্রতিবেদনেই বলা হয়েছিল, সরকারি কর্মকর্তাদের দক্ষতা বাড়াতে সরকারের পক্ষ থেকে বিদেশে প্রশিক্ষণসহ নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ জন্য ব্যয়ও হচ্ছে প্রচুর। কিন্তু এর সবই বিফলে যাবে যদি না চাকরিক্ষেত্রে প্রকৃতযোগ্যতা বা মেধাকে প্রাধান্য দেয়া না হয়। চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা না থাকে।
চাকরি প্রার্থীদের বিশ্বাস টাকা ছাড়া চাকরি মিলবে না। চাকরি পাবার মাপকাঠি কি শুধুই টাকা? যদি তাই হয়, তাহলে আমাদের পক্ষে কোনোদিনই ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব নয়। কয়েকদিন আগে মানবকণ্ঠের এক প্রতিবেদনেই বলা হয়েছিল, সরকারি কর্মকর্তাদের দক্ষতা বাড়াতে সরকারের পক্ষ থেকে বিদেশে প্রশিক্ষণসহ নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ জন্য ব্যয়ও হচ্ছে প্রচুর। কিন্তু এর সবই বিফলে যাবে যদি না চাকরিক্ষেত্রে প্রকৃতযোগ্যতা বা মেধাকে প্রাধান্য দেয়া না হয়। চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা না থাকে।
No comments