নির্বাচনের আগের সমস্যা রয়েই গেল by অরূপ দত্ত
কোর্ট হাউস স্ট্রিট সড়কের বেহাল অবস্থা। খানাখন্দে ভরা এই সড়কে একটু বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। ছবিটি গতকাল বিকেলে তোলা l আবদুস সালাম |
তিন
মাস আগে গত ৭ এপ্রিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড
(শাঁখারীবাজার-রাজার দেউড়ি) এলাকা ঘুরে যেসব সমস্যা দেখা গিয়েছিল তার
সমাধান তো হয়ইনি। তিন মাস পর গতকাল রোববার এলাকায় গিয়ে দেখে গেছে অবস্থা
আরও খারাপ হয়েছে।
রাস্তা আরও ভেঙেছে, খাওয়ার পানিতে আসছে ময়লা, হয়ে পড়েছে দুর্গন্ধযুক্ত। বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতায় রাস্তা তলিয়ে আছে। নর্দমার পানি উপচে পড়ছে।
এলাকাবাসীর ভাষায়, ‘একটা বিষয়ে এলাকার উন্নতি হচ্ছে। নির্বাচিত হওয়ার পর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কোতোয়ালি এলাকায় সন্ধ্যা ভবনের পাশে তাঁর কার্যালয়টিকে অনেক টাকায় সৌন্দর্যমণ্ডিত করছেন।’ সেখানে তিনি বসলে এলাকার সমস্যা এবং নানা ধরনের সনদ সংগ্রহের জন্য তাঁরা যেতে পারবেন।
ওয়ার্ড কাউন্সিলর রঞ্জন বিশ্বাস বলেন, ‘দুই মাস ২৯ দিন হয় শপথ নিয়েছি। এখনো ভালো কিছু করতে না পারলেও চেষ্টা করছি। শাঁখারীবাজারের পয়োনিষ্কাশন লাইন ৪২ বছর ধরে যা বন্ধ ছিল। এক থেকে ১৪০ নম্বর বাড়ি পর্যন্ত নিষ্কাশন-ব্যবস্থা সচল করা হয়েছে। এ ছাড়া রাজার দেউড়ি পানির পাম্প চালু হয়েছে।’
এলাকাবাসী বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগেই পয়োব্যবস্থা চালুর কাজ শুরু করেছিল ঢাকা ওয়াসা। আর রাজার দেউড়ি পানির পাম্পটি পাশের ওয়ার্ডের অধীন এলাকায়।
বাস্তবতা হচ্ছে শাঁখারীবাজারের পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা সচল করেও খুব একটা লাভ হয়নি। পানি টোলা, রাজার দেউড়ি, রাধিকা বসাক লেন, আওলাদ হোসেন লেন, উৎসব পোদ্দার লেনে ঘুরে রাস্তায় পয়োপানি ছড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। দুপুরের বৃষ্টির পানি আর পয়োপানি একাকার হয়ে ছড়িয়ে আছে পুরো এলাকায়।
রাজার দেউড়িতে পানির নতুন পাম্প বসানোর পর সরবরাহ বাড়লেও পুরোনো ও ফাটা পাইপলাইনের কারণে আগের মতোই ময়লা পানি আসছে। শাঁখারীবাজারের মুখে শনি মন্দিরের কাছে রাস্তার একটি কল থেকে গতকালও বাসিন্দাদের পানি সংগ্রহ করতে দেখা যায়। পানির কষ্টের বিষয় তুলে ক্ষোভ জানান পানিটোলার বৃদ্ধা বাসন্তী দেবী, রাধিকা বসাক লেনের অভয় মজুমদার এবং রাজার দেউড়ির সুদেব মজুমদার।
ভাঙা রাস্তায় জলাবদ্ধতা: জেলা প্রশাসন কার্যালয়, পুলিশ সুপার কার্যালয় এবং জজ কোর্টের পেছনে কোর্ট হাউস স্ট্রিট এলাকার রাস্তা গতকাল বেলা আড়াইটার দিকে বৃষ্টির পানিতে প্রায় তলিয়ে যায়। পানির নিচেই ভাঙাচোরা রাস্তা। এর মধ্যেই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছিলেন রিকশা-অটোরিকশার যাত্রী আর পথচারী। রাজার দেউড়ি এলাকার বাসিন্দা অরুণ ঘোষ বলেন, ‘নির্বাচনের আগে আশা করেছিলাম জয়ী কাউন্সিলর অন্তত রাস্তা মেরামত ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার পরিবর্তন করবেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত উদ্যোগই নেওয়া হয়নি।’
ময়লা পানি মাড়িয়ে কোচিং সেন্টার থেকে ফিরছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি-ইচ্ছুক আলেয়া রহমান। বললেন, ‘রিকশার টায়ার ফেটে যাওয়ার পর শাঁখারীবাজার মোড়েই নামতে হয়েছে।’
ফলের দোকানি আবদুর রশিদ বলেন, জায়গাটি গুরুত্বপূর্ণ হলেও কোর্ট হাউস স্ট্রিটের রাস্তা কখনোই মেরামত করা হয়নি।
তিন মাস আগে ওয়ার্ডের রাস্তার বেহাল দশা দেখা গিয়েছিল গারদখানার গলি, রাধিকা মোহন বসাক লেন, হরিপ্রসন্ন মিত্র রোড, সৈয়দ আওলাদ হোসেন লেন, প্রসন্ন পোদ্দার লেনে। গতকাল দেখা গেল ওই রাস্তাগুলোর সবই এখন চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। শাঁখারীবাজার প্রধান রাস্তা খোঁড়া হয়েছিল প্রায় এক মাস আগে। এখনো ঠিক না করায় ১০ ফুটের রাস্তা আরও ছোট হয়েছে।
কাউন্সিলর বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের প্রকৌশলীরা হিসাব দেবেন বিভিন্ন এলাকার রাস্তা মেরামতে কত টাকা খরচ হতে পারে। তার ভিত্তিতেই কাজ ধরা হবে।’
আবর্জনার স্তূপ : শাঁখারীবাজারের মুখে, কালী মন্দিরের বিপরীত দিকের গলিতে, প্রসন্ন পোদ্দার লেনে আবর্জনার স্তূপ আগের তুলনায় আরও বেড়েছে। এসব এলাকার বাসিন্দারা জানান, সিটি করপোরেশনের ওপর ভরসা না করে পাড়ায় পাড়ায় ময়লাবাহী ভ্যানগাড়ি হয়েছে। মাসে ৬০ টাকা করে চাঁদা দিতে হয়। সেই ময়লা নিয়ে রাখা হয় রাস্তার মোড়ে মোড়ে। সিটি করপোরেশন অনেক সময় তিন দিনেও সরিয়ে নেয় না।
এ বিষয়ে ডিএসসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান রকিব উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘ডিএসসিসির পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা নিয়মিতই ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করে থাকে। তবে নির্ধারিত কনটেইনারে আবর্জনা না ফেলে যেখানে-সেখানে ফেললে সমস্যা হয়।’
এক ফুটের নর্দমা: শাঁখারীবাজারসহ ওয়ার্ডের বেশির ভাগ এলাকার সব নর্দমার গভীরতা সর্বোচ্চ এক ফুট। বৃষ্টি না হলেও উপচে পড়ে ময়লা পানি। রাখাল চন্দ্র বসাক লেন, বাঁশি চরণ সেন পোদ্দার লেন, ইসলামপুরের একাংশ, কৈলাস ঘোষ লেনসহ কিছু এলাকার নর্দমাতো বন্ধই হয়ে গেছে। সেখানে গৃহস্থালির বর্জ্যও ফেলা হয়। তার ওপর এলাকার গ্যাস-সংযোগের লাইন গেছে খোলা নর্দমার ভেতর দিয়েই।
কাউন্সিলর রঞ্জন বিশ্বাস বলেন, এলাকাবাসীকে নর্দমায় গৃহস্থালির বর্জ্য না ফেলতে অনুরোধ করেছেন। আগে পুরো ওয়ার্ডে ১০ হাজার লোক বাস করতেন। এখন বাস করেন লক্ষাধিক। নর্দমাকে অন্তত তিন ফুট গভীর করতে হবে। এ ছাড়াও পুরো ড্রেনেজ ব্যবস্থার পরিবর্তন করতে হবে। এ জন্য প্রচুর তহবিলের প্রয়োজন।
রাস্তা আরও ভেঙেছে, খাওয়ার পানিতে আসছে ময়লা, হয়ে পড়েছে দুর্গন্ধযুক্ত। বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতায় রাস্তা তলিয়ে আছে। নর্দমার পানি উপচে পড়ছে।
এলাকাবাসীর ভাষায়, ‘একটা বিষয়ে এলাকার উন্নতি হচ্ছে। নির্বাচিত হওয়ার পর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কোতোয়ালি এলাকায় সন্ধ্যা ভবনের পাশে তাঁর কার্যালয়টিকে অনেক টাকায় সৌন্দর্যমণ্ডিত করছেন।’ সেখানে তিনি বসলে এলাকার সমস্যা এবং নানা ধরনের সনদ সংগ্রহের জন্য তাঁরা যেতে পারবেন।
ওয়ার্ড কাউন্সিলর রঞ্জন বিশ্বাস বলেন, ‘দুই মাস ২৯ দিন হয় শপথ নিয়েছি। এখনো ভালো কিছু করতে না পারলেও চেষ্টা করছি। শাঁখারীবাজারের পয়োনিষ্কাশন লাইন ৪২ বছর ধরে যা বন্ধ ছিল। এক থেকে ১৪০ নম্বর বাড়ি পর্যন্ত নিষ্কাশন-ব্যবস্থা সচল করা হয়েছে। এ ছাড়া রাজার দেউড়ি পানির পাম্প চালু হয়েছে।’
এলাকাবাসী বলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগেই পয়োব্যবস্থা চালুর কাজ শুরু করেছিল ঢাকা ওয়াসা। আর রাজার দেউড়ি পানির পাম্পটি পাশের ওয়ার্ডের অধীন এলাকায়।
বাস্তবতা হচ্ছে শাঁখারীবাজারের পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা সচল করেও খুব একটা লাভ হয়নি। পানি টোলা, রাজার দেউড়ি, রাধিকা বসাক লেন, আওলাদ হোসেন লেন, উৎসব পোদ্দার লেনে ঘুরে রাস্তায় পয়োপানি ছড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। দুপুরের বৃষ্টির পানি আর পয়োপানি একাকার হয়ে ছড়িয়ে আছে পুরো এলাকায়।
রাজার দেউড়িতে পানির নতুন পাম্প বসানোর পর সরবরাহ বাড়লেও পুরোনো ও ফাটা পাইপলাইনের কারণে আগের মতোই ময়লা পানি আসছে। শাঁখারীবাজারের মুখে শনি মন্দিরের কাছে রাস্তার একটি কল থেকে গতকালও বাসিন্দাদের পানি সংগ্রহ করতে দেখা যায়। পানির কষ্টের বিষয় তুলে ক্ষোভ জানান পানিটোলার বৃদ্ধা বাসন্তী দেবী, রাধিকা বসাক লেনের অভয় মজুমদার এবং রাজার দেউড়ির সুদেব মজুমদার।
ভাঙা রাস্তায় জলাবদ্ধতা: জেলা প্রশাসন কার্যালয়, পুলিশ সুপার কার্যালয় এবং জজ কোর্টের পেছনে কোর্ট হাউস স্ট্রিট এলাকার রাস্তা গতকাল বেলা আড়াইটার দিকে বৃষ্টির পানিতে প্রায় তলিয়ে যায়। পানির নিচেই ভাঙাচোরা রাস্তা। এর মধ্যেই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছিলেন রিকশা-অটোরিকশার যাত্রী আর পথচারী। রাজার দেউড়ি এলাকার বাসিন্দা অরুণ ঘোষ বলেন, ‘নির্বাচনের আগে আশা করেছিলাম জয়ী কাউন্সিলর অন্তত রাস্তা মেরামত ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার পরিবর্তন করবেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত উদ্যোগই নেওয়া হয়নি।’
ময়লা পানি মাড়িয়ে কোচিং সেন্টার থেকে ফিরছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি-ইচ্ছুক আলেয়া রহমান। বললেন, ‘রিকশার টায়ার ফেটে যাওয়ার পর শাঁখারীবাজার মোড়েই নামতে হয়েছে।’
ফলের দোকানি আবদুর রশিদ বলেন, জায়গাটি গুরুত্বপূর্ণ হলেও কোর্ট হাউস স্ট্রিটের রাস্তা কখনোই মেরামত করা হয়নি।
তিন মাস আগে ওয়ার্ডের রাস্তার বেহাল দশা দেখা গিয়েছিল গারদখানার গলি, রাধিকা মোহন বসাক লেন, হরিপ্রসন্ন মিত্র রোড, সৈয়দ আওলাদ হোসেন লেন, প্রসন্ন পোদ্দার লেনে। গতকাল দেখা গেল ওই রাস্তাগুলোর সবই এখন চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। শাঁখারীবাজার প্রধান রাস্তা খোঁড়া হয়েছিল প্রায় এক মাস আগে। এখনো ঠিক না করায় ১০ ফুটের রাস্তা আরও ছোট হয়েছে।
কাউন্সিলর বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের প্রকৌশলীরা হিসাব দেবেন বিভিন্ন এলাকার রাস্তা মেরামতে কত টাকা খরচ হতে পারে। তার ভিত্তিতেই কাজ ধরা হবে।’
আবর্জনার স্তূপ : শাঁখারীবাজারের মুখে, কালী মন্দিরের বিপরীত দিকের গলিতে, প্রসন্ন পোদ্দার লেনে আবর্জনার স্তূপ আগের তুলনায় আরও বেড়েছে। এসব এলাকার বাসিন্দারা জানান, সিটি করপোরেশনের ওপর ভরসা না করে পাড়ায় পাড়ায় ময়লাবাহী ভ্যানগাড়ি হয়েছে। মাসে ৬০ টাকা করে চাঁদা দিতে হয়। সেই ময়লা নিয়ে রাখা হয় রাস্তার মোড়ে মোড়ে। সিটি করপোরেশন অনেক সময় তিন দিনেও সরিয়ে নেয় না।
এ বিষয়ে ডিএসসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান রকিব উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘ডিএসসিসির পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা নিয়মিতই ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করে থাকে। তবে নির্ধারিত কনটেইনারে আবর্জনা না ফেলে যেখানে-সেখানে ফেললে সমস্যা হয়।’
এক ফুটের নর্দমা: শাঁখারীবাজারসহ ওয়ার্ডের বেশির ভাগ এলাকার সব নর্দমার গভীরতা সর্বোচ্চ এক ফুট। বৃষ্টি না হলেও উপচে পড়ে ময়লা পানি। রাখাল চন্দ্র বসাক লেন, বাঁশি চরণ সেন পোদ্দার লেন, ইসলামপুরের একাংশ, কৈলাস ঘোষ লেনসহ কিছু এলাকার নর্দমাতো বন্ধই হয়ে গেছে। সেখানে গৃহস্থালির বর্জ্যও ফেলা হয়। তার ওপর এলাকার গ্যাস-সংযোগের লাইন গেছে খোলা নর্দমার ভেতর দিয়েই।
কাউন্সিলর রঞ্জন বিশ্বাস বলেন, এলাকাবাসীকে নর্দমায় গৃহস্থালির বর্জ্য না ফেলতে অনুরোধ করেছেন। আগে পুরো ওয়ার্ডে ১০ হাজার লোক বাস করতেন। এখন বাস করেন লক্ষাধিক। নর্দমাকে অন্তত তিন ফুট গভীর করতে হবে। এ ছাড়াও পুরো ড্রেনেজ ব্যবস্থার পরিবর্তন করতে হবে। এ জন্য প্রচুর তহবিলের প্রয়োজন।
No comments