গ্রিস উদ্ধার পাবে কীভাবে?
বেইল আউট প্রস্তাব নিয়ে গতকাল গ্রিসের গণভোটে জয়ী হয়েছে ‘না’ ভোট। এর অর্থ ইউরোজোন থেকে বের হয়ে যেতে হতে পারে গ্রিসকে। ফলাফলের পর এথেন্সে ‘না’ ভোটের সমর্থকদের উল্লাস। ছবি: রয়টার্স |
নানা
সমস্যায় জর্জরিত গ্রিস। ঋণসংকট নিয়ে দেশটির অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি এখন
টালমাটাল। গতকাল রোববার ঋণদাতাদের দেওয়া কঠোর কৃচ্ছ্রসাধনের শর্তসংবলিত
অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের প্রস্তাব বা বেইলআউট নিয়ে গণভোটে ‘না’ জয়ী হয়েছে।
অর্থাৎ, বেইলআউট প্রস্তাব গ্রহণ করছে না গ্রিস। এই প্রত্যাখ্যানের ফলে
গ্রিসকে হয়তো ইউরোজোন (যেসব দেশে ইউরো প্রচলিত) থেকে বিদায় নিতে হবে। এই
পরিস্থিতিতে সংকটের সমাধান খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।
এ পরিস্থিতিতে দেশটির অর্থনীতিকে কীভাবে আবার সচল করা যায়, তা নিয়ে ভেবে কূল পাচ্ছেন না বিশ্লেষক ও গবেষকেরা। এসব টানাপোড়েনের মধ্যে গ্রিস কীভাবে উদ্ধার পাবে, সেটিই এখন ভাবনার বিষয়। তাঁদের মতে, সবার আগে গ্রিসকে একই সংকটের কারণ খুঁজে বের করতে হবে। সমস্যার মূলে কী, তা শনাক্ত করে সমাধানের পথ খুঁজতে হবে। সবচেয়ে আগে দরকার অবসরভাতা নিয়ে জটিলতার কারণ খুঁজে বের করা, করকাঠামোর সমস্যা শনাক্ত করা, বিদেশি বিনিয়োগের প্রবাহ বাড়ানো, রপ্তানি খাতে গতিশীলতা আনা, অর্থনীতির বহুমুখীকরণ, দারিদ্র্য ও বেকারত্ব দূরীকরণ।
অবসরভাতা নিয়ে জটিলতা দূর করা
অর্থনীতিবিষয়ক বিশ্লেষক অলিভার প্যাসেট বলেন, ব্যাংক বন্ধ থাকার কারণে গ্রিসের অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা অবসরভাতা তুলতে পারছেন না। তাই অবসরভাতা নিয়ে যে জটিলতা চলছে, তা দূর করা দরকার। এই সমস্যাকে গ্রিসে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। সমাধান করা না হলে অবসরভাতা নিয়ে জটিলতার কারণে ২০৩০ সালের মধ্যে গ্রিসের জিডিপি ৭ থেকে ৮ শতাংশ ঘাটতির মুখে পড়বে। তবে বেইলআউট প্রস্তাব গ্রহণ করায় গ্রিসকে যদি ইউরোজোন থেকে বের হয়ে যেতে হয়, তাহলে দেশটি অবসরভাতা নিয়ে নতুন জটিলতায় পড়বে। সমস্যার সমাধানও কঠিন হয়ে পড়বে।
করকাঠামো পরিবর্তন
আর্থিক অবস্থায় ভারসাম্য ফেরাতে করকাঠামো চাঙা করতে হবে। প্যারিসের ফ্রেঞ্চ ইকোনমিক অবজারভেটরির গবেষণাবিষয়ক পরিচালক হাভিয়ার টিমবো বলেন, গ্রিসের কর আদায় অপর্যাপ্ত। এর কারণ খুঁজে বের করতে হবে। গ্রিসের কর নিরীক্ষণ সংস্থার পরিচালক নিকোস লেকাস ২০১২ সালের এক হিসাবে দেখিয়েছেন, প্রতিবছর গ্রিসে কর খাত থেকে প্রাপ্ত আয় ক্ষতির মধ্যে রয়েছে। এই ক্ষতির পরিমাণ ৪০ থেকে ৪৫ বিলিয়ন ডলার। গ্রিসের জিডিপিতে এই ক্ষতির হার ১২ থেকে ১৫ শতাংশ। গ্রিসকে এ থেকে উত্তরণের পথ খুঁজে বের করতে হবে।
বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করা
গ্রিসে বিদেশি বিনিয়োগের হার দিন দিন কমে যাচ্ছে। এই সমস্যা সমাধান করতে গ্রিসের প্রশাসনব্যবস্থাকে আরও সহজ করতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যবসায় বিনিয়োগ বাড়াতে গ্রিস প্রশাসনে আরও স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি আনা দরকার। এতে বিদেশিরা বিনিয়োগের জন্য গ্রিসকে নিরাপদ মনে করবে। প্যারিসের ফ্রেঞ্চ ইকোনমিক অবজারভেটরির গবেষণাবিষয়ক পরিচালক হাভিয়ার টিমবো বলেন, স্থিতিশীলতা ছাড়া বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করা সম্ভব নয়।
অর্থনীতি বহুমুখী করা
টুলুস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গাব্রিয়েল কলেটিসের মতে, গ্রিসের প্রধান সমস্যা হলো দেশটির অর্থনীতি বহুমুখী নয়। গ্রিসে অর্থনীতির বেশ কিছু সম্ভাবনাময় খাত রয়েছে। এসবের মধ্যে রয়েছে পর্যটন, কৃষি, বন্দর খাত। কিন্তু তা সত্ত্বেও এসব খাত নির্ভরশীল অনেক প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হয়ে পড়েছে। অর্থনীতির সম্ভাবনাময় খাতগুলোতে মন্দা চলছে। অর্থনীতিবিষয়ক বিশ্লেষক অলিভার প্যাসেট বলেন, গ্রিসের অর্থনৈতিক অবস্থা পুনরুদ্ধারের জন্য এই সম্ভাবনাময় খাতগুলোকে শক্তিশালী করা দরকার। গ্রিস নানা সম্পদে সমৃদ্ধ। বিশেষ করে জ্বালানি ও সৌর সম্পদে ভরপুর। এসব সম্পদ কাজে লাগিয়ে দেশটির বিদ্যুৎ ও জ্বালানির ৭০ শতাংশ চাহিদা মেটানো সম্ভব।
রপ্তানি বাড়ানো
আন্তর্জাতিক বাজারে গ্রিসের প্রতিষ্ঠানগুলোর চাহিদা কমে যাচ্ছে। জেনেভার গ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিকসের অধ্যাপক চার্লস ওয়াইপ্লজ বলেন, গ্রিস খুব কম রপ্তানি করে। দেশটির রপ্তানি খাত অত্যন্ত দুর্বল। বাণিজ্য খাতে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হলে ও আন্তর্জাতিক বাজারে গ্রিসের প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রবেশাধিকার সহজ করলে এ অবস্থা থেকে বের হয়ে আসা সম্ভব। গ্রিসের রপ্তানি খাতের দুর্বলতার উদাহরণ হিসেবে অর্থনীতিবিষয়ক বিশ্লেষক অলিভার প্যাসেট বলেন, ইউরোপের সব জায়গায় ইতালিয়ান ও স্প্যানিশ অলিভ অয়েল পাওয়া যায়। কিন্তু গ্রিসে পাওয়া যায় না। এর অর্থ হলো গ্রিসে বাণিজ্যের সম্প্রসারণ যথাযথভাবে হচ্ছে না। বাণিজ্যের প্রসার ঘটাতে সীমিত গণ্ডি থেকে গ্রিসকে বেরিয়ে আসতে হবে।
এ পরিস্থিতিতে দেশটির অর্থনীতিকে কীভাবে আবার সচল করা যায়, তা নিয়ে ভেবে কূল পাচ্ছেন না বিশ্লেষক ও গবেষকেরা। এসব টানাপোড়েনের মধ্যে গ্রিস কীভাবে উদ্ধার পাবে, সেটিই এখন ভাবনার বিষয়। তাঁদের মতে, সবার আগে গ্রিসকে একই সংকটের কারণ খুঁজে বের করতে হবে। সমস্যার মূলে কী, তা শনাক্ত করে সমাধানের পথ খুঁজতে হবে। সবচেয়ে আগে দরকার অবসরভাতা নিয়ে জটিলতার কারণ খুঁজে বের করা, করকাঠামোর সমস্যা শনাক্ত করা, বিদেশি বিনিয়োগের প্রবাহ বাড়ানো, রপ্তানি খাতে গতিশীলতা আনা, অর্থনীতির বহুমুখীকরণ, দারিদ্র্য ও বেকারত্ব দূরীকরণ।
অবসরভাতা নিয়ে জটিলতা দূর করা
অর্থনীতিবিষয়ক বিশ্লেষক অলিভার প্যাসেট বলেন, ব্যাংক বন্ধ থাকার কারণে গ্রিসের অবসরপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা অবসরভাতা তুলতে পারছেন না। তাই অবসরভাতা নিয়ে যে জটিলতা চলছে, তা দূর করা দরকার। এই সমস্যাকে গ্রিসে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। সমাধান করা না হলে অবসরভাতা নিয়ে জটিলতার কারণে ২০৩০ সালের মধ্যে গ্রিসের জিডিপি ৭ থেকে ৮ শতাংশ ঘাটতির মুখে পড়বে। তবে বেইলআউট প্রস্তাব গ্রহণ করায় গ্রিসকে যদি ইউরোজোন থেকে বের হয়ে যেতে হয়, তাহলে দেশটি অবসরভাতা নিয়ে নতুন জটিলতায় পড়বে। সমস্যার সমাধানও কঠিন হয়ে পড়বে।
করকাঠামো পরিবর্তন
আর্থিক অবস্থায় ভারসাম্য ফেরাতে করকাঠামো চাঙা করতে হবে। প্যারিসের ফ্রেঞ্চ ইকোনমিক অবজারভেটরির গবেষণাবিষয়ক পরিচালক হাভিয়ার টিমবো বলেন, গ্রিসের কর আদায় অপর্যাপ্ত। এর কারণ খুঁজে বের করতে হবে। গ্রিসের কর নিরীক্ষণ সংস্থার পরিচালক নিকোস লেকাস ২০১২ সালের এক হিসাবে দেখিয়েছেন, প্রতিবছর গ্রিসে কর খাত থেকে প্রাপ্ত আয় ক্ষতির মধ্যে রয়েছে। এই ক্ষতির পরিমাণ ৪০ থেকে ৪৫ বিলিয়ন ডলার। গ্রিসের জিডিপিতে এই ক্ষতির হার ১২ থেকে ১৫ শতাংশ। গ্রিসকে এ থেকে উত্তরণের পথ খুঁজে বের করতে হবে।
বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করা
গ্রিসে বিদেশি বিনিয়োগের হার দিন দিন কমে যাচ্ছে। এই সমস্যা সমাধান করতে গ্রিসের প্রশাসনব্যবস্থাকে আরও সহজ করতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যবসায় বিনিয়োগ বাড়াতে গ্রিস প্রশাসনে আরও স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি আনা দরকার। এতে বিদেশিরা বিনিয়োগের জন্য গ্রিসকে নিরাপদ মনে করবে। প্যারিসের ফ্রেঞ্চ ইকোনমিক অবজারভেটরির গবেষণাবিষয়ক পরিচালক হাভিয়ার টিমবো বলেন, স্থিতিশীলতা ছাড়া বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করা সম্ভব নয়।
অর্থনীতি বহুমুখী করা
টুলুস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গাব্রিয়েল কলেটিসের মতে, গ্রিসের প্রধান সমস্যা হলো দেশটির অর্থনীতি বহুমুখী নয়। গ্রিসে অর্থনীতির বেশ কিছু সম্ভাবনাময় খাত রয়েছে। এসবের মধ্যে রয়েছে পর্যটন, কৃষি, বন্দর খাত। কিন্তু তা সত্ত্বেও এসব খাত নির্ভরশীল অনেক প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হয়ে পড়েছে। অর্থনীতির সম্ভাবনাময় খাতগুলোতে মন্দা চলছে। অর্থনীতিবিষয়ক বিশ্লেষক অলিভার প্যাসেট বলেন, গ্রিসের অর্থনৈতিক অবস্থা পুনরুদ্ধারের জন্য এই সম্ভাবনাময় খাতগুলোকে শক্তিশালী করা দরকার। গ্রিস নানা সম্পদে সমৃদ্ধ। বিশেষ করে জ্বালানি ও সৌর সম্পদে ভরপুর। এসব সম্পদ কাজে লাগিয়ে দেশটির বিদ্যুৎ ও জ্বালানির ৭০ শতাংশ চাহিদা মেটানো সম্ভব।
রপ্তানি বাড়ানো
আন্তর্জাতিক বাজারে গ্রিসের প্রতিষ্ঠানগুলোর চাহিদা কমে যাচ্ছে। জেনেভার গ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিকসের অধ্যাপক চার্লস ওয়াইপ্লজ বলেন, গ্রিস খুব কম রপ্তানি করে। দেশটির রপ্তানি খাত অত্যন্ত দুর্বল। বাণিজ্য খাতে বিশেষ সুবিধা দেওয়া হলে ও আন্তর্জাতিক বাজারে গ্রিসের প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রবেশাধিকার সহজ করলে এ অবস্থা থেকে বের হয়ে আসা সম্ভব। গ্রিসের রপ্তানি খাতের দুর্বলতার উদাহরণ হিসেবে অর্থনীতিবিষয়ক বিশ্লেষক অলিভার প্যাসেট বলেন, ইউরোপের সব জায়গায় ইতালিয়ান ও স্প্যানিশ অলিভ অয়েল পাওয়া যায়। কিন্তু গ্রিসে পাওয়া যায় না। এর অর্থ হলো গ্রিসে বাণিজ্যের সম্প্রসারণ যথাযথভাবে হচ্ছে না। বাণিজ্যের প্রসার ঘটাতে সীমিত গণ্ডি থেকে গ্রিসকে বেরিয়ে আসতে হবে।
ঋণ সমস্যায় জর্জরিত গ্রিস। দেশটির ব্যাংকগুলোর এটিএম বুথ থেকে সীমিত আকারে টাকা তুলতে পারছেন নাগরিকেরা। একটি বুথের সামনে লম্বা লাইন। ছবি: এএফপি |
দারিদ্র্য ও বেকারত্ব দূর করা
গ্রিসের কর্মক্ষম জনশক্তির বিরাট একটা অংশ বেকার। ৫০ শতাংশেরও বেশি বেকার তরুণ-তরুণীরা কাজের খোঁজে ইউরোপের অন্যান্য দেশে চলে যাচ্ছেন। প্যারিসের ফ্রেঞ্চ ইকোনমিক অবজারভেটরির গবেষণাবিষয়ক পরিচালক হাভিয়ার টিমবো মনে করেন, গ্রিস দারিদ্র্যের সাগরে ডুবে যাচ্ছে। এটি কেবল অর্থনৈতিক নয় সামাজিক সমস্যাও। দেশের তরুণদের একটা বড় অংশ অভিবাসনপ্রত্যাশী হওয়ায় বেকারত্বের সমস্যা কিছুটা কমবে। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে এটি দেশের জন্য ক্ষতিকর। এতে করে দেশ মেধাবী তরুণ-তরুণীদের হারাবে। এই সমস্যা সমাধানে গ্রিসকে আরও বেশি উৎপাদনমুখী হতে হবে। কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।
আসলে গ্রিসের আজকের যে সংকট, এর শুরু পাঁচ বছর আগে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আইএমএফের কাছে পরের বছরের এপ্রিলে সাহায্যের আবেদন করে এথেন্স। ওই বছরের মে মাসে ইউরোজোনের প্রথম দেশ হিসেবে গ্রিস ইইউ ও আইএমএফের কাছ থেকে আর্থিক পুনরুদ্ধার (বেইলআউট) প্যাকেজ গ্রহণ করে। তারা এথেন্সকে ১১০ বিলিয়ন ইউরো দেয়। বিনিময়ে এথেন্স বেতন কর্তন ও কর বৃদ্ধির মতো যেসব পদক্ষেপ নেয়, তার চড়া মূল্য দিতে হয় জনগণকে।
২০১১ সালের অক্টোবরে অর্থনৈতিক অবস্থার আরও অবনতি হওয়ায় ১৩০ বিলিয়ন ইউরোর দ্বিতীয় বেইলআউট প্যাকেজ প্রস্তাব ঘোষণা করে ইউরোজোন। যেসব শর্তে ইইউ ও আইএমএফ ঋণ দিয়েছিল, তা পুনর্বিবেচনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারিতে পার্লামেন্ট নির্বাচনে বড় জয় পায় আলেক্সিস সিপ্রাসের নেতৃত্বাধীন ব্যয়-সংকোচনবিরোধী সিরিজা পার্টি। এরপর ফেব্রুয়ারিতে গ্রিস ও ঋণদাতাদের মধ্যে মতৈক্য হয় যে জুন পর্যন্ত ঋণসহায়তা অব্যাহত রাখা হবে। বিনিময়ে বিভিন্ন সংস্কার পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় এথেন্স।
গত ২ জুন সংস্কার প্রশ্নে গ্রিসকে চূড়ান্ত প্রস্তাব দেয় ঋণদাতারা। প্রধানমন্ত্রী সিপ্রাস তা প্রত্যাখ্যান করেন। গতকালের গণভোটেও তারই প্রতিফলন ঘটল। এখন কীভাবে এই অবস্থা থেকে গ্রিস উদ্ধার পাবে, সেটিই দেখার বিষয়। এএফপি অবলম্বনে
গ্রিসের কর্মক্ষম জনশক্তির বিরাট একটা অংশ বেকার। ৫০ শতাংশেরও বেশি বেকার তরুণ-তরুণীরা কাজের খোঁজে ইউরোপের অন্যান্য দেশে চলে যাচ্ছেন। প্যারিসের ফ্রেঞ্চ ইকোনমিক অবজারভেটরির গবেষণাবিষয়ক পরিচালক হাভিয়ার টিমবো মনে করেন, গ্রিস দারিদ্র্যের সাগরে ডুবে যাচ্ছে। এটি কেবল অর্থনৈতিক নয় সামাজিক সমস্যাও। দেশের তরুণদের একটা বড় অংশ অভিবাসনপ্রত্যাশী হওয়ায় বেকারত্বের সমস্যা কিছুটা কমবে। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে এটি দেশের জন্য ক্ষতিকর। এতে করে দেশ মেধাবী তরুণ-তরুণীদের হারাবে। এই সমস্যা সমাধানে গ্রিসকে আরও বেশি উৎপাদনমুখী হতে হবে। কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।
আসলে গ্রিসের আজকের যে সংকট, এর শুরু পাঁচ বছর আগে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আইএমএফের কাছে পরের বছরের এপ্রিলে সাহায্যের আবেদন করে এথেন্স। ওই বছরের মে মাসে ইউরোজোনের প্রথম দেশ হিসেবে গ্রিস ইইউ ও আইএমএফের কাছ থেকে আর্থিক পুনরুদ্ধার (বেইলআউট) প্যাকেজ গ্রহণ করে। তারা এথেন্সকে ১১০ বিলিয়ন ইউরো দেয়। বিনিময়ে এথেন্স বেতন কর্তন ও কর বৃদ্ধির মতো যেসব পদক্ষেপ নেয়, তার চড়া মূল্য দিতে হয় জনগণকে।
২০১১ সালের অক্টোবরে অর্থনৈতিক অবস্থার আরও অবনতি হওয়ায় ১৩০ বিলিয়ন ইউরোর দ্বিতীয় বেইলআউট প্যাকেজ প্রস্তাব ঘোষণা করে ইউরোজোন। যেসব শর্তে ইইউ ও আইএমএফ ঋণ দিয়েছিল, তা পুনর্বিবেচনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারিতে পার্লামেন্ট নির্বাচনে বড় জয় পায় আলেক্সিস সিপ্রাসের নেতৃত্বাধীন ব্যয়-সংকোচনবিরোধী সিরিজা পার্টি। এরপর ফেব্রুয়ারিতে গ্রিস ও ঋণদাতাদের মধ্যে মতৈক্য হয় যে জুন পর্যন্ত ঋণসহায়তা অব্যাহত রাখা হবে। বিনিময়ে বিভিন্ন সংস্কার পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় এথেন্স।
গত ২ জুন সংস্কার প্রশ্নে গ্রিসকে চূড়ান্ত প্রস্তাব দেয় ঋণদাতারা। প্রধানমন্ত্রী সিপ্রাস তা প্রত্যাখ্যান করেন। গতকালের গণভোটেও তারই প্রতিফলন ঘটল। এখন কীভাবে এই অবস্থা থেকে গ্রিস উদ্ধার পাবে, সেটিই দেখার বিষয়। এএফপি অবলম্বনে
No comments