‘বিভাজন ভুলে ঐক্য গড়ে তুলুন’ -খালেদা জিয়া
রাজনৈতিক
দলগুলোকে সকল ভেদাভেদ ও বিভাজন ভুলে ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন
বিএনপি চেয়ারপারসন ও ২০ দলীয় জোটের শীর্ষনেতা খালেদা জিয়া। রাজধানীর
লেকসোর হোটেলে রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সম্মানে
বিকল্পধারা আয়োজিত ইফতার মাহফিলে অংশ নিয়ে তিনি এ আহ্বান জানান। খালেদা
জিয়া বলেন, সত্যিকারভাবে সকলের অংশগ্রহণে একটা সুষ্ঠু নিবার্চন হতে হবে।
সেখানে যারাই জিতবে, তারাই সরকার গঠন করবে। এখানে বিভেদ-বিভাজন নয়, সকল
শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করলেই আমরা দেশটাকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে পারবো। তখনই
মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদদের প্রতি আমরা সম্মান দেখাতে পারবো,
মুক্তিযুদ্ধে চেতনা বাস্তবায়ন করতে পারবো। সংসদে নারীদের অসম্মান করা
হচ্ছে মন্তব্য করে বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, বতর্মান অগণতান্ত্রিক ও
অনির্বাচিত সরকারের আমলে মহিলারা প্রতিনিয়ত নির্যাতিত ও অত্যাচারিত হচ্ছে ।
জাতীয় সংসদে মহিলারা অপমানিত হচ্ছে। ‘মহিলারা শোপিস’ সংসদে এইচএম এরশাদের
মন্তব্যের সমালোচনা তিনি বলেন, স্বঘোষিত বিরোধী দল, তাদের নেতা। যার বউ
হয়েছেন লিডার অব দ্য অপজিশন। বিনা নির্বাচনে লিডার অব দ্য হাউজ কিংবা
বিরোধী দলীয় নেতা দুইজনই মহিলা। সেই সংসদে যদি বলা হয়, মহিলা সব শোপিস।
যেখানে জনসংখ্যার ৫০ ভাগ মহিলা রয়েছেন। যে সংসদে আমাদের মা-বোনদের এভাবে
অসম্মান করা হয়, যে লোক মহিলাদের সম্মান দিতে জানে না, তাদের নিয়ে যারা দল
করে, তারা কোন দিনও মানুষকে সম্মান দিতে পারবে না, গণতন্ত্রও আনতে পারবে
না। তারা কোনদিন গণতন্ত্র আনেনি বরং হরণ করেছে। সঙ্কট উত্তরণে সুষ্ঠু
নির্বাচন দাবি করে খালেদা জিয়া বলেন, আজ সুষ্ঠু নিবার্চন প্রয়োজন। আমরা বলি
না, মারামারি, খুনোখুনি, ব্যালট বাক্স ছিনতাই করে ক্ষমতায় যাবো, জিতবো।
আমরা অমুক হবো, তমুক হবো। সেটা নয়। সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বিকল্পধারার সভাপতি
প্রফেসর বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, আজ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নাম
মনে করতেই হবে। যে মানুষটি গ্রামে-গঞ্জে শত শত মাইল হেঁটেছেন, ১২০০ খাল খনন
করেছেন, কৃষি বিপ্লবের সূচনা করেছেন, গণশিক্ষার বিপ্লবে ৩০ লাখ মানুষকে
স্বাক্ষর করিয়েছেন, কোটি মানুষকে বিদ্যুৎস্পৃষ্টের মতো জাগিয়েছেন সেই
মানুষটির নাম জিয়াউর রহমান। তিনি বলেন, রমজানে ত্যাত-তিতিক্ষায় ভাস্বর
মুত্তাকী হওয়ার পরীক্ষায় আমরা যখন এগিয়ে যাচ্ছি তখন আমাদের সুন্দর ভবিষ্যৎ
রচনায় এক হতে হবে। ক্ষুদ্র ভুলভ্রান্তি ভুলে এগিয়ে যেতে হবে। মনে রাখতে
হবেÑ শ্রদ্ধা করে কেউ কখনও ছোট হয় না, আর হিংসা করে কেউ কখনও বড় হয় না।
প্রেসিডেন্ট জিয়া বলতেনÑ রাজনীতি করতে হলে হৃদয়টাকে বড় করতে হবে। আজকের
রাজনীতি থেকে উত্তরণে এটাই হোক মহামন্ত্র। খালেদা জিয়ার সঙ্গে এক টেবিলে
বসে বদরুদ্দোজা চৌধুরী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় পার্টির (একাংশ) কাজী
জাফর আহমদ, জাসদ (একাংশ) সভাপতি আসম আবদুর রব, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান
মে. জে. (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতীক, বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর
(অব.) আবদুল মান্নান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমীর খসরু মাহমুদ
চৌধুরী ও গণফোরামের নির্বাহী কমিটির সদস্য সুব্রত চৌধুরী ইফতার করেন। এছাড়া
ইফতার মাহফিলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নরুল ইসলাম খান, ভাইস
চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, রাবেয়া সিরাজ, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা
এজেডএম জাহিদ হোসেন, প্রবীণ সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ, সাবেক পররাষ্ট্র
প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী, অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ, ঢাকাস্থ বৃটিশ
ডেপুটি হাইকমিশনার মার্ক ক্লেটন, ঢাকা উত্তরের মেয়রপদে
প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী তাবিথ আউয়াল, মুসলিম লীগের (একাংশ) সভাপতি নুরুল হক
মজুমদার, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, সাম্যবাদী দলের
সাঈদ আহমেদ, ইসলামী ঐক্যজোটের মুফতি ফয়জুল্লাহ, বিএনপির নির্বাহী কমিটির
সদস্য এবিএম আশরাফউদ্দিন নিজান, শিরিন সুলতানা, শামা ওবায়েদ, ব্যারিস্টার
রুহিন ফারহানা প্রমুখ অংশ নেন।
No comments