আলোচনায় ফিরছে হতবাক ইউরোপ: সরে দাঁড়ালেন গ্রিসের অর্থমন্ত্রী
গ্রিসের
গণভোটের রায়ে হতবাক ইউরোপ এবং প্রবল পরাক্রমশালী ঋণদাতা সংস্থাগুলো। এ
রায়ে হতভম্ব ঋণদাতারা যেমন নড়েচড়ে বসেছে, তেমনি অজানা ভবিষ্যতের শঙ্কায়
পড়েছে গ্রিসবাসী। গণভোটের ২৪ ঘণ্টা না পেরোতেই ইউরোপের প্রধান দুই
অর্থনীতির দেশ জার্মানি ও ফ্রান্সের দুই শীর্ষ নেতা গতকাল সোমবার বৈঠকে
বসেছেন। ইউরোজোনের অর্থমন্ত্রীদের শীর্ষ বৈঠক ডাকা হয়েছে আজ মঙ্গলবার।
গণভোটের পর বৈশ্বিক মুদ্রা ও পুঁজিবাজারে শুরু হয়েছে অস্থিরতা। খবর এএফপি,
রয়টার্স ও বিবিসির।
রোববারের নির্বাচন যদি হয় এক বড় ভূমিকম্প, তবে এর এক পরাঘাত (আফটার শক) হলো গ্রিসের ‘নাছোড়’ অর্থমন্ত্রী ইয়ানিস ভারোফাকিসের পদত্যাগ। নির্বাচনের আগে বলেই রেখেছিলেন, ‘হ্যাঁ’ জয়ী হলে পদত্যাগ করবেন তিনি। তবে বিপুল বিজয়ে পদত্যাগ কেন? নিজের ব্লগে এর উত্তর দিয়েছেন ভারোফাকিস। বলেছেন, তাঁর মনে হয়েছে তাঁর পদত্যাগে দেশটির ঋণ সমস্যার সমাধানের পথ সহজ হতে পারে। বলেছেন, ‘ইউরোজোনের অন্যরা চায়, আমি পদে না থাকি। তাতেই এই পদত্যাগ।’
ইউরোজোনের অন্য দেশগুলোর বিষয়ে তাঁর বিতৃষ্ণার কথা খোলাখুলিই বলেছেন। গণভোটের আগে ‘ঋণদাতারা সন্ত্রাস’ করছে বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। তাঁর কাছে ঋণদাতাদের কৃচ্ছ্রসাধনের প্রস্তাব হলো ‘অসুস্থ গাভির দুধ দোয়ানোর চেষ্টার মতো।’
ঋণদাতাদের এই চাওয়াকে মেনে নেননি ভারোফাকিস, সেই সঙ্গে গ্রিসের সরকার। বিপুল ঋণ থেকে গ্রিসের অর্থনীতিকে উদ্ধার করতে কঠোর শর্ত দিয়ে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার (বেইল আউট) ঘোষণা করে ঋণদাতারাই। এই অর্থ পেতে শর্ত জুড়ে দেয়। সেগুলো ছিল বিক্রয়মূল্যের ওপর কর বাড়ানো, পেনশনে কাটছাঁট ও প্রতিরক্ষা ব্যয় কমানো। ২০০৮ সাল থেকে শুরু হওয়া আর্থিক সংকট কাটিয়ে উঠতে সে সময় থেকে দফায় দফায় ঋণ নিয়েছিল গ্রিস। এর পরিমাণ ১৬৯ বিলিয়ন ইউরো। ঋণদাতাদের কৃচ্ছ্রসাধনের এসব প্রস্তাব নিয়ে কয়েক মাসের আলোচনা নিষ্ফল হয়ে যায়। এর মধ্যে একপর্যায়ে এসে গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সিস সিপ্রাস ঘোষণা দেন, বেইল আউট কর্মসূচি নিয়ে গণরায় চান তিনি। ৫ জুলাইয়ের নির্বাচনের আগেই গত ৩০ জুন শেষ হয়ে যায় ঋণদাতা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ১৬০ কোটি ইউরো ফেরত দেওয়ার সময়সীমা। রোববারের নির্বাচনে মোট ভোটারের ৬৩ শতাংশ অংশ নেয়। ৬১.৩১ শতাংশ গ্রিসবাসী জানিয়ে দেয়, দাতাদের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে তারা। প্রস্তাবের পক্ষে সমর্থন দেন ৩৯ শতাংশ ভোটার। এই রায়কে ‘অত্যন্ত সাহসী ইচ্ছার প্রতিফলন’ বলে অভিনন্দিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী সিপ্রাস। তিনি বলেছেন, ‘আপনাদের দেওয়া রায়ের অর্থ এই নয় যে আমরা ইউরোপ থেকে বের হয়ে যাব। এই বিজয়ের অর্থ, সমস্যার ন্যায্য সমাধানে আমাদের দর-কষাকষির ক্ষমতা বাড়াল।’
তবে গণভোটের আগে নাখোশ ইউরোপীয় প্রতিপক্ষরা বলেই ফেলেছিল, নির্বাচনে ‘হ্যাঁ’ এর অর্থ ইউরোজোন থেকে গ্রিসের নিশ্চিত বিদায়। তবে সিপ্রাস বলেছেন, তিনি আলোচনার টেবিলে আবার ফেরত যেতে চান। তিনি যে আলোচনার দরজা বন্ধ করেননি, তা জানান দিয়ে ফোন করে কথা বলেন গ্রিসের ওপর চরম বিরক্ত জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল, ঋণদাতা সংস্থা ইউরোপীয় সেন্ট্রাল ব্যাংকের (ইসিবি) প্রধান মারিও দ্রাগিম ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে। সিপ্রাস একাই নন, গ্রিসের প্রেসিডেন্ট প্রোকোপিস পাভলোপউলোস কথা বলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদের সঙ্গেও।
ম্যার্কেলের সঙ্গে সিপ্রাসের ফোনালাপে সাব্যস্ত হয়, আজ মঙ্গলবার ইউরোজোনের অর্থমন্ত্রীদের বৈঠকে নতুন প্রস্তাব জার্মানির কাছে তুলে ধরবেন গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী।
এখন গ্রিসের ব্যাংকিং খাত বাঁচাতে একমাত্র ভরসা ইসিবির পরিচালনা পরিষদও গতকাল বৈঠক সারে। এদিকে গ্রিসের জনরায়ের পর স্পেন জানিয়ে দিয়েছে, গ্রিসের নতুন কোনো প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় তারা রাজি। দেশটির আর্থিক খাতবিষয়ক মন্ত্রী লুয়েস দ্য গুন্দেজ বলেন, ‘নতুন কোনো প্রস্তাব চাওয়ার অধিকার আছে স্পেনের।’
গ্রিসের এই বিজয়ে ঋণদাতারা শঙ্কিত নয়, এমনটাই বলেছেন ইউরোপিয়ান কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ভালদিজ দমব্রোভসকিস। তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি সামলানোর মতো সবকিছুই আমাদের আছে।’
ঋণগ্রস্ত গ্রিস আর ঋণদাতাদের মধ্যে কার্যকর কোনো আলোচনা হবে কি না, এর ফল কী হবে—এসব প্রশ্নের উত্তর দেবে ভবিষ্যৎ। সেই ভবিষ্যতের পথনির্দেশে গ্রিসের নির্বাচন বিরাট মোড় পরিবর্তনকারী ঘটনা। নির্বাচনের আনন্দের বিজয় অজানা ভবিষ্যতের শঙ্কায় ম্লান হয়ে গেছে যদিও। তবে সদ্য পদত্যাগী অর্থমন্ত্রী ভারফোকিস যেমনটা বলেছেন, ‘এ নির্বাচন ঋণের প্রবল বাধার বিরুদ্ধে ছোট ইউরোপীয় একটি জাতির প্রতিরোধের একটি মুহূর্ত হিসেবে ইতিহাসে স্থান পাবে।’
রোববারের নির্বাচন যদি হয় এক বড় ভূমিকম্প, তবে এর এক পরাঘাত (আফটার শক) হলো গ্রিসের ‘নাছোড়’ অর্থমন্ত্রী ইয়ানিস ভারোফাকিসের পদত্যাগ। নির্বাচনের আগে বলেই রেখেছিলেন, ‘হ্যাঁ’ জয়ী হলে পদত্যাগ করবেন তিনি। তবে বিপুল বিজয়ে পদত্যাগ কেন? নিজের ব্লগে এর উত্তর দিয়েছেন ভারোফাকিস। বলেছেন, তাঁর মনে হয়েছে তাঁর পদত্যাগে দেশটির ঋণ সমস্যার সমাধানের পথ সহজ হতে পারে। বলেছেন, ‘ইউরোজোনের অন্যরা চায়, আমি পদে না থাকি। তাতেই এই পদত্যাগ।’
ইউরোজোনের অন্য দেশগুলোর বিষয়ে তাঁর বিতৃষ্ণার কথা খোলাখুলিই বলেছেন। গণভোটের আগে ‘ঋণদাতারা সন্ত্রাস’ করছে বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। তাঁর কাছে ঋণদাতাদের কৃচ্ছ্রসাধনের প্রস্তাব হলো ‘অসুস্থ গাভির দুধ দোয়ানোর চেষ্টার মতো।’
ঋণদাতাদের এই চাওয়াকে মেনে নেননি ভারোফাকিস, সেই সঙ্গে গ্রিসের সরকার। বিপুল ঋণ থেকে গ্রিসের অর্থনীতিকে উদ্ধার করতে কঠোর শর্ত দিয়ে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার (বেইল আউট) ঘোষণা করে ঋণদাতারাই। এই অর্থ পেতে শর্ত জুড়ে দেয়। সেগুলো ছিল বিক্রয়মূল্যের ওপর কর বাড়ানো, পেনশনে কাটছাঁট ও প্রতিরক্ষা ব্যয় কমানো। ২০০৮ সাল থেকে শুরু হওয়া আর্থিক সংকট কাটিয়ে উঠতে সে সময় থেকে দফায় দফায় ঋণ নিয়েছিল গ্রিস। এর পরিমাণ ১৬৯ বিলিয়ন ইউরো। ঋণদাতাদের কৃচ্ছ্রসাধনের এসব প্রস্তাব নিয়ে কয়েক মাসের আলোচনা নিষ্ফল হয়ে যায়। এর মধ্যে একপর্যায়ে এসে গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সিস সিপ্রাস ঘোষণা দেন, বেইল আউট কর্মসূচি নিয়ে গণরায় চান তিনি। ৫ জুলাইয়ের নির্বাচনের আগেই গত ৩০ জুন শেষ হয়ে যায় ঋণদাতা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ১৬০ কোটি ইউরো ফেরত দেওয়ার সময়সীমা। রোববারের নির্বাচনে মোট ভোটারের ৬৩ শতাংশ অংশ নেয়। ৬১.৩১ শতাংশ গ্রিসবাসী জানিয়ে দেয়, দাতাদের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে তারা। প্রস্তাবের পক্ষে সমর্থন দেন ৩৯ শতাংশ ভোটার। এই রায়কে ‘অত্যন্ত সাহসী ইচ্ছার প্রতিফলন’ বলে অভিনন্দিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী সিপ্রাস। তিনি বলেছেন, ‘আপনাদের দেওয়া রায়ের অর্থ এই নয় যে আমরা ইউরোপ থেকে বের হয়ে যাব। এই বিজয়ের অর্থ, সমস্যার ন্যায্য সমাধানে আমাদের দর-কষাকষির ক্ষমতা বাড়াল।’
তবে গণভোটের আগে নাখোশ ইউরোপীয় প্রতিপক্ষরা বলেই ফেলেছিল, নির্বাচনে ‘হ্যাঁ’ এর অর্থ ইউরোজোন থেকে গ্রিসের নিশ্চিত বিদায়। তবে সিপ্রাস বলেছেন, তিনি আলোচনার টেবিলে আবার ফেরত যেতে চান। তিনি যে আলোচনার দরজা বন্ধ করেননি, তা জানান দিয়ে ফোন করে কথা বলেন গ্রিসের ওপর চরম বিরক্ত জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল, ঋণদাতা সংস্থা ইউরোপীয় সেন্ট্রাল ব্যাংকের (ইসিবি) প্রধান মারিও দ্রাগিম ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে। সিপ্রাস একাই নন, গ্রিসের প্রেসিডেন্ট প্রোকোপিস পাভলোপউলোস কথা বলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদের সঙ্গেও।
ম্যার্কেলের সঙ্গে সিপ্রাসের ফোনালাপে সাব্যস্ত হয়, আজ মঙ্গলবার ইউরোজোনের অর্থমন্ত্রীদের বৈঠকে নতুন প্রস্তাব জার্মানির কাছে তুলে ধরবেন গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী।
এখন গ্রিসের ব্যাংকিং খাত বাঁচাতে একমাত্র ভরসা ইসিবির পরিচালনা পরিষদও গতকাল বৈঠক সারে। এদিকে গ্রিসের জনরায়ের পর স্পেন জানিয়ে দিয়েছে, গ্রিসের নতুন কোনো প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় তারা রাজি। দেশটির আর্থিক খাতবিষয়ক মন্ত্রী লুয়েস দ্য গুন্দেজ বলেন, ‘নতুন কোনো প্রস্তাব চাওয়ার অধিকার আছে স্পেনের।’
গ্রিসের এই বিজয়ে ঋণদাতারা শঙ্কিত নয়, এমনটাই বলেছেন ইউরোপিয়ান কমিশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ভালদিজ দমব্রোভসকিস। তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি সামলানোর মতো সবকিছুই আমাদের আছে।’
ঋণগ্রস্ত গ্রিস আর ঋণদাতাদের মধ্যে কার্যকর কোনো আলোচনা হবে কি না, এর ফল কী হবে—এসব প্রশ্নের উত্তর দেবে ভবিষ্যৎ। সেই ভবিষ্যতের পথনির্দেশে গ্রিসের নির্বাচন বিরাট মোড় পরিবর্তনকারী ঘটনা। নির্বাচনের আনন্দের বিজয় অজানা ভবিষ্যতের শঙ্কায় ম্লান হয়ে গেছে যদিও। তবে সদ্য পদত্যাগী অর্থমন্ত্রী ভারফোকিস যেমনটা বলেছেন, ‘এ নির্বাচন ঋণের প্রবল বাধার বিরুদ্ধে ছোট ইউরোপীয় একটি জাতির প্রতিরোধের একটি মুহূর্ত হিসেবে ইতিহাসে স্থান পাবে।’
No comments