রওশনের ক্ষমা চাওয়ার অধিকার নেই- এরশাদ
সংসদে
দাঁড়িয়ে বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদকে একহাত নিলেন জাতীয় পার্টির
চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ। তার বক্তব্য নিয়ে বিরোধী দলের নেতার ‘দুঃখ
প্রকাশ’কে এখতিয়ারবহির্ভূত উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার বক্তব্যের জন্য অন্য
কারও ক্ষমা চাওয়ার অধিকার নেই। গতকাল সোমবার স্পিকার ড. শিরীন শারমিন
চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে আলোচনার সুযোগ নিয়ে
তিনি একথা বলেন। এর আগে গত সপ্তাহে প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনাকালে
নারীদের ‘শো-পিস’ বলায় ক্ষোভ-বিক্ষোভ এবং তা নিয়ে দুঃখপ্রকাশ করার ঘটনা
নিয়ে কথা বলেন এইচ এম এরশাদ। তবে এ সময় তার সহধর্মিণী বিরোধী দলের নেতা
রওশন এরশাদ সংসদে অনুপস্থিত ছিলেন। অনির্ধারিত আলোচনায় এরশাদ বলেন,
প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে নারীর ক্ষমতায়ন বিষয়ে একটি
কথা বলেছিলাম। পরে আমি শব্দটি প্রত্যাহার করে নিয়েছিলাম। আমার বক্তব্যের
পর বিরোধী দলের নেতা আমার বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন, এটা তিনি পারেন
না। আর শব্দগুলো এক্সপাঞ্চ করা হয়েছিলো। অবশ্য প্রত্যাহার করা শব্দ
এক্সপাঞ্জ করা যায় না। এসময় স্পিকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আমি যে
শব্দটি ব্যবহার করেছিলাম তা অসংসদীয় ছিল না। তারপরেও আমি তা প্রত্যাহার
করেছিলাম। আমি নিজে প্রত্যাহার করে নিয়েছি, এরপরও কী এক্সপাঞ্জ করা যায়?
এক্সপাঞ্জ করায় আমি মনে দুঃখ পেয়েছি। কিন্তু কিছু করার নাই। যেহেতু
এক্সপাঞ্জ করা হয়েছে, তাই আমাকে দুঃখ নিয়েই মরতে হবে। নিজের বক্তব্যের
ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর এই বিশেষ দূত বলেন, আমরা নারীর
ক্ষমতায়নের কথা বলি। কিন্তু আমাদের নারীরা কী ক্ষমতা অর্ধেক ভোগ করেন? আমরা
কী নারীর নিরাপত্তা দিতে পেরেছি? বাস্তবে এখনও বৈষম্য রয়েছে। তারা সমান
সুযোগ পাচ্ছে না। নারী শ্রমিকরা পুরুষের সমান কাজ করেও সমান পারিশ্রমিক পান
না। নারীরা নির্যাতনের শিকার হয়, লাঞ্ছনার শিকার হয়, পুলিশের কাছে বিচার
না পেয়ে আত্মহত্যা পর্যন্ত করে। তিনি আরও বলেন, এই সংসদে ৫০ জন সংরক্ষিত
নারী সদস্য রয়েছেন। তারা কী সমান সুযোগ পান? বাস্তবে পান না। আমরা যে
বরাদ্দ পাই তারা তা পান না। বিভাজন দূর করতে হলে এখান থেকেই করতে হবে।
নারীদের সমান বরাদ্দ দেয়ার দাবি করেন তিনি। এসময় অনেক নারী সদস্য তার
বক্তব্যকে টেবিল চাপড়িয়ে অভিনন্দন জানান। উল্লেখ্য, এর আগে গত ৩০শে জুন
বাজেট পাসের আগে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে
নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে এরশাদ বলেন, নারীর ক্ষমতার কথা বলা হয়। আসলে নারীরা
শো-পিস, এরা হলো শো-পিস। অধিবেশন কক্ষের প্রতিবাদের মুখে তিনি ওই বক্তব্য
প্রত্যাহার করেন। এরপর তার পাশে বসা বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ
বক্তব্য দেয়ার সময় ওই বক্তব্যের জন্য সংসদে দুঃখ প্রকাশ করেন।
No comments