নাজিব রাজাকের বিরুদ্ধে ৭০ কোটি ডলার দুর্নীতির অভিযোগ
মালয়েশিয়ার
প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের পিছু ছাড়ছে না অর্থ কেলেঙ্কারি। অভিযোগ উঠেছে
‘ওয়ান মালয়েশিয়া ডেভেলপমেন্ট বেরহাদ’ (১ এমডিবি) তহবিল থেকে তার ব্যক্তিগত
অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছে ৭০ কোটি ডলার। তার বিরুদ্ধে এ কেলেঙ্কারি প্রমাণিত
হোক বা না হোক, তার টিকে থাকা কঠিন হবে। এমন মন্তব্য করে প্রভাবশালী
ম্যাগাজিন ফোরবস একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এ নিয়ে ‘ক্যান নাজিব রাজাক
সারভাইভ ১এমডিবি স্ক্যান্ডাল’ শীর্ষক একটি মন্তব্য প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে
ওই ম্যাগাজিন। তাতে বলা হয়েছে, যদি অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয় তাহলেও
নাজিবের সামনের সময়টা হবে কঠিন। কারণ, আগামী নির্বাচনে তিনি দলের জন্য
গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে পরিগণিত না-ও হতে পারেন। দলের ভেতরেই বিভক্তি দেখা
দিতে পারে তাকে নিয়ে। অধিক প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক রাজনৈতিক জোটকে তিনি হয়তো
দলের জন্য জয় অর্জন করতে পারবেন না। এমনটা ভাবা হতে পারে। ফোরবস ম্যাগাজিন
অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল গনি পাতাইলকে উদ্ধৃত করে এ দুর্নীতির তথ্য প্রকাশ
করেছে। আবদুল পাতাইল নিশ্চিত করে বলেছেন, ১এমডিবি দুর্নীতিতে নাজিব রাজাক
জড়িত থাকার তথ্যপ্রমাণ তারা পেয়েছেন। একই সঙ্গে এর ভিত্তিতে নাজিব রাজাকের
বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ আনার মতো সামর্থ্য আছে এসব ডকুমেন্টের। ফোরবস
ম্যাগাজিন লিখেছে, ২০০৯ সাল থেকে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক।
তিনি তার নেতৃত্বের সময়কালে সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছেন।
এক্ষেত্রে তিনি ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন। মালয়েশিয়া এমন
একটি দেশ যেখানে সুনাম, সুখ্যাতিকে বড় করে দেখা হয়। এতে লেখা হয়েছে,
অ্যাটর্নি জেনারেল যদি মনে করেন যে, তিনি বিচার করার জন্য যথেষ্ট শক্তিশালী
তথ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করতে পারবেন না তবুও তীব্র একটি ধারণা আছে যে, নাজিব
রাজাকের অবস্থা দুর্বল হয়ে পড়বে। শুধু ১এমডিবি কেলেঙ্কারি নয় নাজিবের
অবস্থাকে দুর্বল করে দিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ। তিনি
নাজিবের পদত্যাগ দাবি করেছেন কৌশলগত প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ নিয়ে তার
কর্মকাণ্ড নিয়ে। প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব একই সঙ্গে পালন
করছেন নাজিব রাজাক। একই সঙ্গে তিনি ১এমডিবির উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যানও।
৪২০০ কোটি মালয়েশিয়ান রিঙ্গিতের ঋণ তহবিল নিয়ে তার বিরুদ্ধে সমালোচনা
তীব্র হয়েছে। কিন্তু সর্বশেষ যে ৭০ কোটি ডলারের কেলেঙ্কারি তাকে আঘাত করেছে
সেটা ব্যক্তি নাজিবের বিরুদ্ধে। কারণ, অভিযোগে বলা হয়েছে ওই অর্থ ২০১৩
সালের মে মাসে ১৩তম জাতীয় নির্বাচনের আগে তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে চলে
গেছে। গত বৃহস্পতিবার ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল ও যুক্তরাজ্য ভিত্তিক ওয়েবসাইট
সারাওয়াক তথ্য ফাঁস করেছে যে, ৭০ কোটি ডলার অ্যামব্যাংকে নাজিবের নামে দুটি
ব্যাংক অ্যাকাউন্টে চলে গেছে। তবে নাজিব রাজাক এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান
করেছেন। বলেছেন, তিনি ব্যক্তিগত সুবিধার জন্য ১এমডিবি থেকে কোন অর্থ নেন
নি। উল্টো তিনি এ রিপোর্টের জন্য দায় চাপান মাহাথির মোহাম্মদের ওপর।
No comments