নারীর প্রতি জৈবিক লালসা ১ ॥ সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়ে বেড়েছে ধর্ষণ!- ভারতের ভার্মা কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের তাগিদ মহিলা পরিষদের by তৌহিদুর রহমান
ঢাকা-মানিকগঞ্জ রুটের শুভযাত্রা পরিবহনের
একটি বাসে পোশাক শ্রমিককে (১৯) ধর্ষণ করে দুর্বৃত্তরা। গত ২৪ জানুয়ারি
মেয়েটি ধর্ষণের শিকার হয়। ধর্ষণের পরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি
মামলা করা হয়।
দুপুর দেড়টার দিকে মেয়েটি পাটুরিয়া যাওয়ার
জন্য নবীনগর থেকে শুভযাত্রা পরিবহনের বাসটিতে ওঠে। সে জানত না যে বাসটি
পাটুরিয়া যাবে না। মানিকগঞ্জ পৌঁছার পর বাসের সব যাত্রী নেমে গেলেও
বসেছিল। তখন চালক ও তার হেলপার পাটুরিয়া ঘাটে পৌঁছে দেয়ার কথা বলে বাসটি
চালাতে থাকে। চলন্ত গাড়িতে প্রথমে হেলপার কাশেম এবং পরে চালক দিপু মেয়েটিকে
ধর্ষণ করে।
অপরদিকে গত ৩১ ডিসেম্বর পঞ্চগড় জেলার সদর ইউনিয়নের দাড়িয়াপাড়া গ্রামে সাত বছরের শিশু ধর্ষণের শিকার হয়। সে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পুলিশ ও শিশুটির মা জানান, ঘটনার দিন বিকেলে বাড়ির পাশে ইউক্যালিপটাস বাগানে সে পাতা কুড়াতে যায়। এ সময় একই গ্রামের আসলাম (৩৫) তাকে একা পেয়ে মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করে।
এভাবে দেশের আনাচে-কানাচে প্রতিদিনই ঘটছে ধর্ষণের ঘটনা। তিন বছরের শিশু থেকে ৭০ বছরের বৃদ্ধাও ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। ঘরের বাইরে বের হলেই যেন শিশু-তরুণী-মহিলা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে পড়ছেন। সারাদেশে প্রতিদিনই কোন না কোন স্থানে ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে।
সামাজিক-রাজনৈতিক অবক্ষয়, গণসচেতনতার অভাব, নৈতিক মূল্যবোধ কমে যাওয়া, আইন প্রয়োগের অভাব, আইনের দীর্ঘসূত্রতা ইত্যাদি কারণে ধর্ষণের ঘটনা বাড়ছে বলে সমাজ বিশেষজ্ঞরা অভিমত দিয়েছেন। তাঁরা আরও বলছেন, ধর্ষণ রোধে এখনই প্রয়োজন দ্রুত বিচার আদালত। কেননা বর্তমানে হঠাৎ বেড়েছে ধর্ষণ। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না দিলে অপরাধীদের শিক্ষা হবে না। আর ধর্ষণও কমবে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানম জনকণ্ঠকে বলেন, আমাদের দেশে আইনের একটি দুর্বলতা রয়েছে যে, ধর্ষিতাকেই প্রমাণ করতে হবে তিনি ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। তবে অনেক দেশেই বিধান রয়েছে, যে ধর্ষিতাকে নয়, ধর্ষণকারীকেই প্রমাণ করতে হয় সে নির্দোষ।
তিনি বলেন, জেলায় জেলায় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করাও প্রয়োজন। দ্রুত বিচার না হলে ধর্ষণ কমবে না। তিনি বলেন, আইন রয়েছে, তবে অনেক জায়গায়ই আইনের প্রয়োগ নেই। আইন প্রয়োগ করতে হবে। এ ছাড়া পরিবার, সমাজে গণসচেতনতা বাড়াতে হবে। ধর্ষণের বিরুদ্ধে সর্বস্তরে এখন জনসচেতনতা প্রয়োজন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. নেহাল করিম জনকণ্ঠকে বলেন, ধর্ষণ বিশ্বের সব দেশেই কম-বেশি আছে। সৌদি আরবেও আছে। তবে ধর্ষণের বিরুদ্ধে গণসচেতনতা প্রয়োজন। সেটা এখানে নেই। সামাজিক ও নৈতিক মূল্যবোধ বাড়াতে হবে। এ ছাড়া আইনের যথাযথ প্রয়োগও প্রয়োজন। তিনি বলেন, গণমাধ্যমে লেখালেখির পরেও ধর্ষণ বাড়ছে। তার কারণ নিম্ন শ্রেণীর মানুষ যারা ধর্ষণ করেন, তারা গণমাধ্যমের খবর রাখে না। বিগত বছরগুলোর ন্যায় গত বছরও ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। ধর্ষণের ঘটনায় বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা এবং ঘটনা নিরসনে সরকারের যথাযথ ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করার ফলে ধর্ষণের সংখ্যা ও ভয়াবহতা বেড়েই চলেছে। একটি বেসরকারী সংস্থার হিসাবে দেখা গেছে, গত বছরে ধর্ষণের শিকার হন প্রায় ১১৪৯ নারী ও শিশু। যার মধ্যে ৭৯ জন ধর্ষণপরবর্তী হত্যার শিকার হন এবং ১৪ জন আত্মহত্যা করেন।
এদিকে ধর্ষণ মামলায় আসামি হওয়ার পরে জামিনে মুক্তি পেয়ে আবারও একই ধরনের ঘটনারও উদাহরণ রয়েছে। গত ১৩ জানুয়ারি রাজবাড়ীতে ধর্ষণ চেষ্টা মামলায় জামিনে মুক্তি পেয়েই এক তরুণ একই শিশুকে ধর্ষণ এবং হত্যা করেছে। রাজবাড়ী জেলায় পাঁচ বছর বয়সী শিশুটিকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে মামলায় এক তরুণকে জেলে পাঠানো হচ্ছিল। ছয় মাসের মতো জেল খেটে জামিনে মুক্তি পেয়ে ওই তরুণ একই শিশুকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। দিনমজুর বাবার সংসারে শিশু কন্যাটি স্কুলে যাওয়া শুরু করেছিল মাত্র। তবে শিশুটিকে বাঁচতে দেয়া হয়নি। ধর্ষণের পরে তাকে মেরে ফেলা হয়। ওই ধর্ষক তরুণের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আগের মামলা রয়েছেই। আবার নতুন করে ধর্ষণ এবং হত্যা মামলা করা হয়েছে। এভাবে দেখা যায়, অনেক ধর্ষকই জামিনে বেরিয়ে এসে পুনরায় একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটায়। ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটার পরে জামিনে বেরিয়ে এসে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে তা নিয়ে অনেকের মাঝেই প্রশ্ন রয়েছে।
দেশের নারী নির্যাতন প্রতিরোধ আইন-২০০৩ অনুযায়ী ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ-। তবে সম্প্রতি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে ধর্ষণকারীর মৃত্যুদ- নয়, আমৃত্যু কারাদ-ের সুপারিশ করেছে একটি বিশেষ কমিশন। ধর্ষণের ঘটনা ও আইন সংশোধনের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বিচারপতি জে এস ভার্মার নেতৃত্বাধীন এই কমিশন নারী নির্যাতনের মামলাগুলো দ্রুত বিচার আদালতে স্থানান্তরেরও সুপারিশ করে। কমিশন করার ২৯ দিনের মাথায় গত ২৩ জানুয়ারি ভারতীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দেয় ভার্মা কমিশন। তবে মৃত্যুদ-ের দাবির সঙ্গে একমত না হয়ে ভার্মা কমিশন বলেছে, ভারতের প্রচলিত আইন কার্যকর করতে পারলেই নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যথেষ্ট উন্নতি সম্ভব। আইনে নয়, গলদ আইনের শাসন বাস্তবায়নে। এ ধরনের মামলায় পুলিশ ও প্রশাসনের মানসিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সাবেক প্রধান বিচারপতি জে এস ভার্মা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশের একটি বড় অংশ সমাজকে সঙ্কীর্ণ পিতৃতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখেন। এ জন্য পুলিশ ব্যবস্থার সংস্কার করে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থেকে কাজ করতে পারার পরিবেশ তৈরির সুপারিশ করেছে কমিশন। মৃত্যুদণ্ডের বদলে ধর্ষণের ঘটনায় সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে আমৃত্যু কারাদ-ের পক্ষে মত দিয়েছেন কমিশনের সদস্যরা। তবে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় প্রচলিত আইন অনুযায়ী শুধু মৃত্যুদ- হতে পারে।
অপরদিকে সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ার একটি আদালত ধর্ষণের দায়ে এক ব্যক্তিকে পুরুষত্বহীন করে দেয়ার আদেশ দিয়েছে। রাসায়নিক ইঞ্জেকশন প্রয়োগ করে দোষী সাব্যস্ত ওই অপরাধীর পুরুষাঙ্গ বাকি জীবনের মতো অকেজো ও নিষ্ক্রিয় করারও নির্দেশ দেয় আদালত।
ভারতের ওই কমিশনের প্রস্তাব ও বিভিন্ন দেশের আইন খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানম এ বিষয়ে জনকণ্ঠকে বলেন, ধর্ষণ প্রতিরোধে ভারতসহ অন্যান্য দেশের আইন পর্যালোচনা করে প্রয়োজনে যুগোপযোগী করতে হবে। ধর্ষণের শাস্তি হিসেবে আমৃত্যু কারাদ- যে সুপারিশ ভার্মা কমিশন করেছে সেটা আমাদের দেশেও কার্যকর করা প্রয়োজন।
অপরদিকে গত ৩১ ডিসেম্বর পঞ্চগড় জেলার সদর ইউনিয়নের দাড়িয়াপাড়া গ্রামে সাত বছরের শিশু ধর্ষণের শিকার হয়। সে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পুলিশ ও শিশুটির মা জানান, ঘটনার দিন বিকেলে বাড়ির পাশে ইউক্যালিপটাস বাগানে সে পাতা কুড়াতে যায়। এ সময় একই গ্রামের আসলাম (৩৫) তাকে একা পেয়ে মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করে।
এভাবে দেশের আনাচে-কানাচে প্রতিদিনই ঘটছে ধর্ষণের ঘটনা। তিন বছরের শিশু থেকে ৭০ বছরের বৃদ্ধাও ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন। ঘরের বাইরে বের হলেই যেন শিশু-তরুণী-মহিলা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে পড়ছেন। সারাদেশে প্রতিদিনই কোন না কোন স্থানে ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে।
সামাজিক-রাজনৈতিক অবক্ষয়, গণসচেতনতার অভাব, নৈতিক মূল্যবোধ কমে যাওয়া, আইন প্রয়োগের অভাব, আইনের দীর্ঘসূত্রতা ইত্যাদি কারণে ধর্ষণের ঘটনা বাড়ছে বলে সমাজ বিশেষজ্ঞরা অভিমত দিয়েছেন। তাঁরা আরও বলছেন, ধর্ষণ রোধে এখনই প্রয়োজন দ্রুত বিচার আদালত। কেননা বর্তমানে হঠাৎ বেড়েছে ধর্ষণ। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না দিলে অপরাধীদের শিক্ষা হবে না। আর ধর্ষণও কমবে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানম জনকণ্ঠকে বলেন, আমাদের দেশে আইনের একটি দুর্বলতা রয়েছে যে, ধর্ষিতাকেই প্রমাণ করতে হবে তিনি ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। তবে অনেক দেশেই বিধান রয়েছে, যে ধর্ষিতাকে নয়, ধর্ষণকারীকেই প্রমাণ করতে হয় সে নির্দোষ।
তিনি বলেন, জেলায় জেলায় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করাও প্রয়োজন। দ্রুত বিচার না হলে ধর্ষণ কমবে না। তিনি বলেন, আইন রয়েছে, তবে অনেক জায়গায়ই আইনের প্রয়োগ নেই। আইন প্রয়োগ করতে হবে। এ ছাড়া পরিবার, সমাজে গণসচেতনতা বাড়াতে হবে। ধর্ষণের বিরুদ্ধে সর্বস্তরে এখন জনসচেতনতা প্রয়োজন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. নেহাল করিম জনকণ্ঠকে বলেন, ধর্ষণ বিশ্বের সব দেশেই কম-বেশি আছে। সৌদি আরবেও আছে। তবে ধর্ষণের বিরুদ্ধে গণসচেতনতা প্রয়োজন। সেটা এখানে নেই। সামাজিক ও নৈতিক মূল্যবোধ বাড়াতে হবে। এ ছাড়া আইনের যথাযথ প্রয়োগও প্রয়োজন। তিনি বলেন, গণমাধ্যমে লেখালেখির পরেও ধর্ষণ বাড়ছে। তার কারণ নিম্ন শ্রেণীর মানুষ যারা ধর্ষণ করেন, তারা গণমাধ্যমের খবর রাখে না। বিগত বছরগুলোর ন্যায় গত বছরও ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। ধর্ষণের ঘটনায় বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা এবং ঘটনা নিরসনে সরকারের যথাযথ ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করার ফলে ধর্ষণের সংখ্যা ও ভয়াবহতা বেড়েই চলেছে। একটি বেসরকারী সংস্থার হিসাবে দেখা গেছে, গত বছরে ধর্ষণের শিকার হন প্রায় ১১৪৯ নারী ও শিশু। যার মধ্যে ৭৯ জন ধর্ষণপরবর্তী হত্যার শিকার হন এবং ১৪ জন আত্মহত্যা করেন।
এদিকে ধর্ষণ মামলায় আসামি হওয়ার পরে জামিনে মুক্তি পেয়ে আবারও একই ধরনের ঘটনারও উদাহরণ রয়েছে। গত ১৩ জানুয়ারি রাজবাড়ীতে ধর্ষণ চেষ্টা মামলায় জামিনে মুক্তি পেয়েই এক তরুণ একই শিশুকে ধর্ষণ এবং হত্যা করেছে। রাজবাড়ী জেলায় পাঁচ বছর বয়সী শিশুটিকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে মামলায় এক তরুণকে জেলে পাঠানো হচ্ছিল। ছয় মাসের মতো জেল খেটে জামিনে মুক্তি পেয়ে ওই তরুণ একই শিশুকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। দিনমজুর বাবার সংসারে শিশু কন্যাটি স্কুলে যাওয়া শুরু করেছিল মাত্র। তবে শিশুটিকে বাঁচতে দেয়া হয়নি। ধর্ষণের পরে তাকে মেরে ফেলা হয়। ওই ধর্ষক তরুণের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আগের মামলা রয়েছেই। আবার নতুন করে ধর্ষণ এবং হত্যা মামলা করা হয়েছে। এভাবে দেখা যায়, অনেক ধর্ষকই জামিনে বেরিয়ে এসে পুনরায় একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটায়। ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটার পরে জামিনে বেরিয়ে এসে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে তা নিয়ে অনেকের মাঝেই প্রশ্ন রয়েছে।
দেশের নারী নির্যাতন প্রতিরোধ আইন-২০০৩ অনুযায়ী ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদ-। তবে সম্প্রতি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে ধর্ষণকারীর মৃত্যুদ- নয়, আমৃত্যু কারাদ-ের সুপারিশ করেছে একটি বিশেষ কমিশন। ধর্ষণের ঘটনা ও আইন সংশোধনের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বিচারপতি জে এস ভার্মার নেতৃত্বাধীন এই কমিশন নারী নির্যাতনের মামলাগুলো দ্রুত বিচার আদালতে স্থানান্তরেরও সুপারিশ করে। কমিশন করার ২৯ দিনের মাথায় গত ২৩ জানুয়ারি ভারতীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দেয় ভার্মা কমিশন। তবে মৃত্যুদ-ের দাবির সঙ্গে একমত না হয়ে ভার্মা কমিশন বলেছে, ভারতের প্রচলিত আইন কার্যকর করতে পারলেই নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যথেষ্ট উন্নতি সম্ভব। আইনে নয়, গলদ আইনের শাসন বাস্তবায়নে। এ ধরনের মামলায় পুলিশ ও প্রশাসনের মানসিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সাবেক প্রধান বিচারপতি জে এস ভার্মা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশের একটি বড় অংশ সমাজকে সঙ্কীর্ণ পিতৃতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখেন। এ জন্য পুলিশ ব্যবস্থার সংস্কার করে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থেকে কাজ করতে পারার পরিবেশ তৈরির সুপারিশ করেছে কমিশন। মৃত্যুদণ্ডের বদলে ধর্ষণের ঘটনায় সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে আমৃত্যু কারাদ-ের পক্ষে মত দিয়েছেন কমিশনের সদস্যরা। তবে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় প্রচলিত আইন অনুযায়ী শুধু মৃত্যুদ- হতে পারে।
অপরদিকে সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ার একটি আদালত ধর্ষণের দায়ে এক ব্যক্তিকে পুরুষত্বহীন করে দেয়ার আদেশ দিয়েছে। রাসায়নিক ইঞ্জেকশন প্রয়োগ করে দোষী সাব্যস্ত ওই অপরাধীর পুরুষাঙ্গ বাকি জীবনের মতো অকেজো ও নিষ্ক্রিয় করারও নির্দেশ দেয় আদালত।
ভারতের ওই কমিশনের প্রস্তাব ও বিভিন্ন দেশের আইন খতিয়ে দেখার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানম এ বিষয়ে জনকণ্ঠকে বলেন, ধর্ষণ প্রতিরোধে ভারতসহ অন্যান্য দেশের আইন পর্যালোচনা করে প্রয়োজনে যুগোপযোগী করতে হবে। ধর্ষণের শাস্তি হিসেবে আমৃত্যু কারাদ- যে সুপারিশ ভার্মা কমিশন করেছে সেটা আমাদের দেশেও কার্যকর করা প্রয়োজন।
No comments