স্থবির ব্রিটেনের অর্থনীতি
একটা সময় ছিল যখন সারা বিশ্বের
অর্ধেকাংশেই একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল ব্রিটেনের। ঔপনিবেশিকতার বেড়াজালে
বিশ্বব্যাপী ছড়ি ঘোরাত ব্রি্েটন। কিন্তু সময়ের আর্বতে সেই অবস্থায় পরিবর্তন
এসেছে।
বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক পটপরির্বতনের মধ্য দিয়ে
ব্রিটেনের আধিপত্য খর্ব হতে থাকে। আর এই জায়গাটি দখল করে নেয় আমেরিকা।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান, জামার্নি অর্থনৈতিকভাবে সবচেয়ে
শক্তিশালী দেশ হিসেবে বিবেচিত। যেই ব্রিটেন একটা সময় ছিল অর্থনৈতিক ও
রাজনৈতিক পরাশক্তি সেই দেশটির অর্থনীতিতে এখন বিরাজ করছে স্থবিরতা। ইউরোপীয়
ইউনিয়নের মধ্যে এখনও ব্রিটেনের র্অথনৈতিক অবস্থা অনেক শক্তিশালী বিবেচিত
হলেও প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিক স্থবিরতা এই অবস্থান থেকেও ব্রিটেনকে সরিয়ে দিতে
পারে। ২০১১ সালে ব্রিটেনের প্রবৃদ্ধির যে গতি পরিলক্ষিত হয়েছিল ২০১২ সালেও
সেই গতিই বিরাজমান ছিল। আগের বারের তুলনায় গত বছরের অর্থনীতিতে খুব বড় কোন
পরিবর্তন আসেনি। প্রবৃদ্ধির এই স্থবিরতা ব্রিটেনের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত
চিন্তার বিষয়। দেশটির প্রবৃদ্ধি এখন শূন্য অথবা এর থেকে সামান্য বেশি
অবস্থায় রয়েছে। বিশ্বমন্দা, ইউরো সংকট, ঋণ সমস্যায় জর্জরিত পুরো ইউরোপে যে
মন্দার হাওয়া বয়েছে তার আঁচড় লেগেছিল ব্রিটেনের অর্থনীতিতেও। শিল্প উৎপাদন
কমে যাওয়া, বেকারত্ব বৃদ্ধি, রফতানি কমে যাওয়াসহ নানামুখী কারণে ব্রিটেনের
অর্থনীতিতে স্থবিরতা দেখা দেয়।
দেশটির অর্থনীতিতে নির্মাণ খাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও সম্প্রতি খাতটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। মূলত ২০১১ সাল থেকেই এ খাতের অবস্থা নাজুক। এ পর্যন্ত উৎপাদন কমেছে ১১ শতাংশ । অর্থনীতিতে খনি ও খনিজ সম্পদ উত্তোলন খাতের অবদান ৩ শতাংশ থাকলেও নর্থ সিতে তেল উত্তোলনজনিত সমস্যা থাকার কারণে গত বছরটি ছিল এ খাতের নাজুক সময় । ২০০৮-০৯ সালের অর্থমন্দার পর তাৎক্ষণিকভাবে দেশটির শিল্পকারখানাগুলো ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করলেও ২০১১ সালের মাঝামাঝি থেকে তা আবার কমতে থাকে। এ সময় ইউরো অঞ্চলের সঙ্কট শুরু“ হয়। আর এর প্রভাব পড়া শুরু করে ব্রিটেনের অর্থনীতিতে। কমতে থাকে শিল্প উৎপাদন। হ্রাস পেতে থাকে বৈদেশিক বাণিজ্য। বাণিজ্য অংশীদার দেশগুলোর আর্থিক সমস্যার কারণে ব্রিটেনের রফতানি কমে যায়। ফলে দেশটির রফতানিকারকরা মার্কেট শেয়ার হারাতে থাকে। আর এর ফলে ব্রিটেনের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির গতি থাকে অনেকটাই স্থির।
দেশটির অর্থনীতিতে চার থেকে পাঁচ শতাংশ অবদান রাখা সেবা খাতেও স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। গত বছরের পুরো সময়ে সেবা খাত প্রসারিত হয়েছে ১ দশমিক ৪ শতাংশ। মূলত চতুর্থ প্রান্তিকে অলিম্পিককে বেশি গুরুত্ব দেয়ার কারণেই এ খাতে স্থবিরতা সৃষ্টি হয়। অলিম্পিক ও রানীর ক্ষমতায় আরোহণের হীরক জয়ন্তীর মতো অনুষ্ঠানেও সেবা খাতের দুর্বল চিত্র দেখা গেছে। তবে অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, গত বছরের তুলনায় এ বছরটা অপেক্ষাকৃত ভাল যাবে। অর্থনীতি প্রসারিত হবে, দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক বন্ধকী ঋণ প্রকল্প চালু করায় পরে ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার পরিমাণ বেড়ে যাবে যার ফলে বন্ধকী সুদের পরিমাণও কমে আসবে। আরেকটি উল্লেখযোগ্য ইতিবাচক দিক হচ্ছে এক বছর আগের তুলনায় পাঁচ লাখেরও বেশি লোকের কর্মসংস্থান করা সম্ভব হয়েছে। তবে উৎপাদন খাতে স্থবিরতা চলার কারণে জনপ্রতি শ্রমিকের কাজও কমেছে। অর্থনীতিবিদ ও মুদ্রানীতি নির্ধারকদের মতবিরোধের কারণে ব্রিটেন তৃতীয় দফায় অর্থমন্দায় পড়তে যাচ্ছে কিনা, তা নিয়েও মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। ব্রিটেনের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির স্থবিরতা যদি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব না হয় তবে ব্রিটেনকে আগামী দিনে পার করতে হবে কঠিন সময়। এই সমস্যা থেকে উত্তোরণের জন্য রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী সহ অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের উপযুক্ত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরী হয়ে পড়েছে।
মোঃ আরিফুর রহমান
দেশটির অর্থনীতিতে নির্মাণ খাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও সম্প্রতি খাতটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। মূলত ২০১১ সাল থেকেই এ খাতের অবস্থা নাজুক। এ পর্যন্ত উৎপাদন কমেছে ১১ শতাংশ । অর্থনীতিতে খনি ও খনিজ সম্পদ উত্তোলন খাতের অবদান ৩ শতাংশ থাকলেও নর্থ সিতে তেল উত্তোলনজনিত সমস্যা থাকার কারণে গত বছরটি ছিল এ খাতের নাজুক সময় । ২০০৮-০৯ সালের অর্থমন্দার পর তাৎক্ষণিকভাবে দেশটির শিল্পকারখানাগুলো ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করলেও ২০১১ সালের মাঝামাঝি থেকে তা আবার কমতে থাকে। এ সময় ইউরো অঞ্চলের সঙ্কট শুরু“ হয়। আর এর প্রভাব পড়া শুরু করে ব্রিটেনের অর্থনীতিতে। কমতে থাকে শিল্প উৎপাদন। হ্রাস পেতে থাকে বৈদেশিক বাণিজ্য। বাণিজ্য অংশীদার দেশগুলোর আর্থিক সমস্যার কারণে ব্রিটেনের রফতানি কমে যায়। ফলে দেশটির রফতানিকারকরা মার্কেট শেয়ার হারাতে থাকে। আর এর ফলে ব্রিটেনের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির গতি থাকে অনেকটাই স্থির।
দেশটির অর্থনীতিতে চার থেকে পাঁচ শতাংশ অবদান রাখা সেবা খাতেও স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। গত বছরের পুরো সময়ে সেবা খাত প্রসারিত হয়েছে ১ দশমিক ৪ শতাংশ। মূলত চতুর্থ প্রান্তিকে অলিম্পিককে বেশি গুরুত্ব দেয়ার কারণেই এ খাতে স্থবিরতা সৃষ্টি হয়। অলিম্পিক ও রানীর ক্ষমতায় আরোহণের হীরক জয়ন্তীর মতো অনুষ্ঠানেও সেবা খাতের দুর্বল চিত্র দেখা গেছে। তবে অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, গত বছরের তুলনায় এ বছরটা অপেক্ষাকৃত ভাল যাবে। অর্থনীতি প্রসারিত হবে, দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক বন্ধকী ঋণ প্রকল্প চালু করায় পরে ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়ার পরিমাণ বেড়ে যাবে যার ফলে বন্ধকী সুদের পরিমাণও কমে আসবে। আরেকটি উল্লেখযোগ্য ইতিবাচক দিক হচ্ছে এক বছর আগের তুলনায় পাঁচ লাখেরও বেশি লোকের কর্মসংস্থান করা সম্ভব হয়েছে। তবে উৎপাদন খাতে স্থবিরতা চলার কারণে জনপ্রতি শ্রমিকের কাজও কমেছে। অর্থনীতিবিদ ও মুদ্রানীতি নির্ধারকদের মতবিরোধের কারণে ব্রিটেন তৃতীয় দফায় অর্থমন্দায় পড়তে যাচ্ছে কিনা, তা নিয়েও মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। ব্রিটেনের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির স্থবিরতা যদি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব না হয় তবে ব্রিটেনকে আগামী দিনে পার করতে হবে কঠিন সময়। এই সমস্যা থেকে উত্তোরণের জন্য রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদ, ব্যবসায়ী সহ অন্যান্য বিশেষজ্ঞদের উপযুক্ত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরী হয়ে পড়েছে।
মোঃ আরিফুর রহমান
No comments