দ্রুত উন্নয়নশীল দেশের পথে ভারত
যে সব দেশ পৃথিবীর অর্থনৈতিক মানচিত্রে
নিজেদের অবস্থান পাল্টে শক্তিশালী ও দ্রুত উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশ হিসেবে
প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে তাদের মধ্যে ভারত শীর্ষস্থানীয়।
ভারত পৃথিবীর শীর্ষস্থানীয় উন্নয়নশীল অর্থনীতির তালিকায় দ্বিতীয়। চীনের পর
পরই ভারতের অবস্থান। বিশ্ববিখ্যাত ব্যাংকার গোল্ডম্যান স্যাকসের মতে, দ্রুত
উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলো হলো ব্রিকসভুক্তদেশসমূহ অর্থাৎ ব্রাজিল,
রাশিয়া, ভারত ও চীন। এই প্রতিষ্ঠানের মতে, ২০১৩ সালে ভারতের প্রবৃদ্ধি হবে
৬.৫%। ‘বিশ্বব্যাংকের গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টার্স’ রিপোর্ট অনুযায়ী
মূল্যস্ফীতি ও আর্থিক ঘাটতি থাকা সত্ত্বেও ২০১২-১৩, ২০১৩-১৪, ২০১৪-১৫ সালে
ভারতের প্রবৃদ্ধি দাঁড়াবে যথাক্রমে ৬.৯%, ৭.২% এবং ৭.৪%। যেখানে বৈশ্বিক
অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি মাত্র ২.৫% বৃদ্ধি পাবে। অন্যদিকে দি ইকোনমিক টাইমসের
মতে, ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল নাগাদ ভারত হবে পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুত উন্নয়নশীল
দেশ। এ সময় ভারতের জিডিপি চীনের জিডিপিকে অতিক্রম করবে। এর সমতা তত্ত্ব
অনুযায়ী ভারত পৃথিবীর চতুর্থ বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। আইএমএফ তার সাম্পতিক
অর্থনৈতিক পূর্বানুমানে ভারতকে উন্নয়নশীল দেশগুলোর তালিকায় দ্বিতীয়
অবস্থানে রেখেছে।
ভারতের এ অর্থনৈতিক উন্নতি মূলত শুরু হয়েছিল নব্বইয়ের দশকে। ১৯৯১ সালের অর্থনৈতিক সঙ্কটের পর ভারত তার অর্থনীতি ব্যাপক সংস্কার করে। পরিবর্তন আনে মুদ্রানীতি ও আর্থিক নীতিতেও। এর ফলে ভারতের অর্থনীতি চাঙ্গা হয়। ফলে ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত পরপর তিন বছর ভারতের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭% এবং মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্কের সংখ্যা থেকে এক অঙ্কের সংখ্যায় চলে আসে অর্থাৎ ৭%। তারপর থেকে ভারতের অর্থনীতিতে সুদিন ফিরে আসে। ২০০১-২০০২ সালে ভারতের মুদ্রার মূল্য বৃদ্ধি পেতে থাকে ০.৫% হারে যা তার আগের বছরগুলোতে উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছিল। এই মূল্যবৃদ্ধির প্রধান কারণ ছিল প্রচুর পরিমাণ ডলারের আন্তঃপ্রবেশ। ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়নের চাকাকে গতিশীল করতে সবচেয়ে বেশি যে বিষয়টি কাজ করছে তা হলো- সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ। ভারত পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি বৈদেশিক বিনিয়োগের দেশ হিসেবে পরিচিত। বিশেষ করে টেলিকমিউনিকেশনস্, অটোমোবাইল, ফার্মাসিউটিক্যালস ও তথ্যপ্রযুক্তি ইত্যাদি খাতে সহজ নিবন্ধন ও সরকারী পৃষ্ঠপোষকতার কারণে নতুন নতুন অনেক বিদেশী কোম্পানি ভারতে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করছে। আর তাদের সহায়তা করতেই ভারত সরকার গঠন করেছে বৈদেশিক বিনিয়োগ উন্নয়ন বোর্ড (এফআইপিবি) ও ফরেন ইনভেস্টমেন্ট সেন্টার যারা রাষ্ট্রীয়ভাবে বৈদেশিক বিনিয়োগে সহায়তা প্রদান করে।
ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে মানব সম্পদ। ভারত বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে প্রথম অবস্থান অধিকারী। ২০১১ আর্থিক বছরে ভারত ৬৪ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করেছে। বৈদেশিক আয় ভারতের জিডিপির সিংহভাগ দখল করে আছে। অনেক অর্থনীতিবিদের মতে, আগামী কয়েক বছরে সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগকে পেছনে ফেলে রেমিট্যান্স আয়ই হবে ভারতের অর্থনীতির মূল ভিত্তি। যা ইতোমধ্যে সামগ্রিক অর্থনীতিতে বিশাল ভূমিকা পালন করছে। ভারতের দারিদ্র্য দূরীকরণে রেমিট্যান্স উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। সাধারণত গরিব জনগোষ্ঠী কাজের প্রয়োজনে বিদেশে পাড়ি জমায় বলে ভারত মানব সম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে তার বিপুল জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করেছে।
কৃষি উৎপাদন ভারতের জাতীয় অর্থনীতির তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। বিশ্ব বাজারে কৃষি উৎপাদনে ভারতকে দ্বিতীয় মনে করা হয়। কৃষি উৎপাদন ভারতের সামগ্রিক জিডিপির ১৮.৬%। পাশাপাশি ভারতের ৬০ ভাগ লোকের কর্মসংস্থান আসে এই কৃষি খাত থেকে। কৃষি ফসলের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কাজু বাদাম ও ব্ল্যাক পিপার। অনেক খাদ্য উৎপাদনে ভারত এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ। দেশী চাহিদা মেটানোর সাথে সাথে তা রফতানি করে অনেক বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জন করছে ভারত।
চতুর্থ গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যা ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ভীষণভাবে প্রভাবিত করছে তাহলো তথ্যপ্রযুক্তি। ভারত তথ্যপ্রযুক্তিতে রীতিমত বিপ্লব ঘটিয়েছে। উন্নত দেশগুলোর সাথে পাল্লা দিয়ে ভারত তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করেছে। রেমিট্যান্স আয়ের প্রায় ২৬% আসে সফটওয়্যার উন্নয়নের মাধ্যমে। ভারতের আছে নিজস্ব স্যাটেলাইট, যার সাহায্য নিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি খাত এগিয়ে যাচ্ছে দ্রুতগতিতে।
পঞ্চম গুরুত্বপূর্ণ হলো ব্যাংকিং ও আর্থিক খাত। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতে ভারত ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করেছে। ভারতের শেয়ারবাজার এখন আন্তর্জাতিক পুঁজি বিনিয়োগের অন্যতম বাজার হিসেবে পরিচিত। আর্থিক ও ব্যাংকিং খাতসমূহের প্রয়োজনীয় ও সময়োপযোগী সংস্কার এ খাতের বিস্তারকে ত্বরান্বিত করেছে। বর্তমানে দেশটিতে ব্যাংকিং সেবা প্রায় সবখানে পৌঁছে গেছে। ব্যাংকের প্রদত্ত ঋণের ৪০% কৃষি ও শিল্প খাতে দেয়ার নিয়ম রাখায় সে খাতগুলো দ্রুত বিকশিত হচ্ছে। সামগ্রিকভাবে এটি দেশের বাজেট ইস্যুতেও ব্যাপক ভূমিকা পালন করছে।
অনেক সুসংবাদের পাশাপাশি কিছু দুঃসংবাদও রয়েছে। বিশ্বব্যাংকের মতে, আসছে বছরগুলোতে উন্নয়নশীল দেশগুলো কঠিন অর্থনৈতিক সময় পার করবে। এই বছরগুলোতে অনেক দেশের অর্থনীতির ভিত্তি শক্ত হতে পারে আবার অনেকের অর্থনৈতিক অবস্থা নড়বড়ে হতে পারে। ভারতের প্রবৃদ্ধি সচল রাখতে সবচেয়ে বড় বাধা হলো গ্যাস ও বিদ্যুৎ সঙ্কট। দ্রুত শিল্পায়নের ফলে সে দেশের গ্যাস ও বিদ্যুৎ চাহিদা ব্যাপক বৃদ্ধি পাচ্ছে যা পূরণে ভারত সরকার রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে। শিল্প উন্নয়নের চাকা সচল রাখতে হলে এ সমস্যার সমাধান অতীব জরুরী। তা না হলে প্রত্যাশিত প্রবৃদ্ধি অর্জন ব্যাহত হতে পারে।
নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বলেন, ‘দেশের উন্নয়ন পরিমাপে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনই একমাত্র মাপকাঠি নয়।’ প্রবৃদ্ধির হার বৃদ্ধির পাশাপাশি জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের দিকনির্দেশক। ভারত যে হারে তার জিডিপি বৃদ্ধি করে যাচ্ছে দেশের মানুষের জীবনযাত্রার মান সে হারে উন্নত হচ্ছে না। কিছু জনগোষ্ঠী বিপুল সম্পদের মালিক হলেও বেশিরভাগ অঞ্চলে দারিদ্র্যপীড়িত জনগোষ্ঠীর সংখ্যাই বেশি। আয়-বৈষম্য ভারতে চরম আকারে দেখা যায়। এই অসমতা দূর করতে চাই সম্পদের সুষম বণ্টন ও স্থির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি। আর এটা করা সম্ভব হলে ভারত হয়ে উঠবে নতুন অর্থনৈতিক পরাশক্তি।
লেখক : মোঃ আনিসুর রহমান শ্রাবণ, মোঃ সাকিব চৌধুরী, অনন্যা চৌধুরী, সানজিদা হাওলাদার, সাবরিনা ইসলাম (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বিবিএ ফিন্যান্স ১৭তম ব্যাচ ম্যাক্রো ইকোনমিক ল্যাবের সদস্য)
ভারতের এ অর্থনৈতিক উন্নতি মূলত শুরু হয়েছিল নব্বইয়ের দশকে। ১৯৯১ সালের অর্থনৈতিক সঙ্কটের পর ভারত তার অর্থনীতি ব্যাপক সংস্কার করে। পরিবর্তন আনে মুদ্রানীতি ও আর্থিক নীতিতেও। এর ফলে ভারতের অর্থনীতি চাঙ্গা হয়। ফলে ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত পরপর তিন বছর ভারতের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭% এবং মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্কের সংখ্যা থেকে এক অঙ্কের সংখ্যায় চলে আসে অর্থাৎ ৭%। তারপর থেকে ভারতের অর্থনীতিতে সুদিন ফিরে আসে। ২০০১-২০০২ সালে ভারতের মুদ্রার মূল্য বৃদ্ধি পেতে থাকে ০.৫% হারে যা তার আগের বছরগুলোতে উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছিল। এই মূল্যবৃদ্ধির প্রধান কারণ ছিল প্রচুর পরিমাণ ডলারের আন্তঃপ্রবেশ। ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়নের চাকাকে গতিশীল করতে সবচেয়ে বেশি যে বিষয়টি কাজ করছে তা হলো- সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ। ভারত পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি বৈদেশিক বিনিয়োগের দেশ হিসেবে পরিচিত। বিশেষ করে টেলিকমিউনিকেশনস্, অটোমোবাইল, ফার্মাসিউটিক্যালস ও তথ্যপ্রযুক্তি ইত্যাদি খাতে সহজ নিবন্ধন ও সরকারী পৃষ্ঠপোষকতার কারণে নতুন নতুন অনেক বিদেশী কোম্পানি ভারতে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করছে। আর তাদের সহায়তা করতেই ভারত সরকার গঠন করেছে বৈদেশিক বিনিয়োগ উন্নয়ন বোর্ড (এফআইপিবি) ও ফরেন ইনভেস্টমেন্ট সেন্টার যারা রাষ্ট্রীয়ভাবে বৈদেশিক বিনিয়োগে সহায়তা প্রদান করে।
ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে মানব সম্পদ। ভারত বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে প্রথম অবস্থান অধিকারী। ২০১১ আর্থিক বছরে ভারত ৬৪ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করেছে। বৈদেশিক আয় ভারতের জিডিপির সিংহভাগ দখল করে আছে। অনেক অর্থনীতিবিদের মতে, আগামী কয়েক বছরে সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগকে পেছনে ফেলে রেমিট্যান্স আয়ই হবে ভারতের অর্থনীতির মূল ভিত্তি। যা ইতোমধ্যে সামগ্রিক অর্থনীতিতে বিশাল ভূমিকা পালন করছে। ভারতের দারিদ্র্য দূরীকরণে রেমিট্যান্স উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। সাধারণত গরিব জনগোষ্ঠী কাজের প্রয়োজনে বিদেশে পাড়ি জমায় বলে ভারত মানব সম্পদ উন্নয়নের মাধ্যমে তার বিপুল জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করেছে।
কৃষি উৎপাদন ভারতের জাতীয় অর্থনীতির তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। বিশ্ব বাজারে কৃষি উৎপাদনে ভারতকে দ্বিতীয় মনে করা হয়। কৃষি উৎপাদন ভারতের সামগ্রিক জিডিপির ১৮.৬%। পাশাপাশি ভারতের ৬০ ভাগ লোকের কর্মসংস্থান আসে এই কৃষি খাত থেকে। কৃষি ফসলের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কাজু বাদাম ও ব্ল্যাক পিপার। অনেক খাদ্য উৎপাদনে ভারত এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ। দেশী চাহিদা মেটানোর সাথে সাথে তা রফতানি করে অনেক বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জন করছে ভারত।
চতুর্থ গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যা ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে ভীষণভাবে প্রভাবিত করছে তাহলো তথ্যপ্রযুক্তি। ভারত তথ্যপ্রযুক্তিতে রীতিমত বিপ্লব ঘটিয়েছে। উন্নত দেশগুলোর সাথে পাল্লা দিয়ে ভারত তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করেছে। রেমিট্যান্স আয়ের প্রায় ২৬% আসে সফটওয়্যার উন্নয়নের মাধ্যমে। ভারতের আছে নিজস্ব স্যাটেলাইট, যার সাহায্য নিয়ে তথ্যপ্রযুক্তি খাত এগিয়ে যাচ্ছে দ্রুতগতিতে।
পঞ্চম গুরুত্বপূর্ণ হলো ব্যাংকিং ও আর্থিক খাত। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতে ভারত ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করেছে। ভারতের শেয়ারবাজার এখন আন্তর্জাতিক পুঁজি বিনিয়োগের অন্যতম বাজার হিসেবে পরিচিত। আর্থিক ও ব্যাংকিং খাতসমূহের প্রয়োজনীয় ও সময়োপযোগী সংস্কার এ খাতের বিস্তারকে ত্বরান্বিত করেছে। বর্তমানে দেশটিতে ব্যাংকিং সেবা প্রায় সবখানে পৌঁছে গেছে। ব্যাংকের প্রদত্ত ঋণের ৪০% কৃষি ও শিল্প খাতে দেয়ার নিয়ম রাখায় সে খাতগুলো দ্রুত বিকশিত হচ্ছে। সামগ্রিকভাবে এটি দেশের বাজেট ইস্যুতেও ব্যাপক ভূমিকা পালন করছে।
অনেক সুসংবাদের পাশাপাশি কিছু দুঃসংবাদও রয়েছে। বিশ্বব্যাংকের মতে, আসছে বছরগুলোতে উন্নয়নশীল দেশগুলো কঠিন অর্থনৈতিক সময় পার করবে। এই বছরগুলোতে অনেক দেশের অর্থনীতির ভিত্তি শক্ত হতে পারে আবার অনেকের অর্থনৈতিক অবস্থা নড়বড়ে হতে পারে। ভারতের প্রবৃদ্ধি সচল রাখতে সবচেয়ে বড় বাধা হলো গ্যাস ও বিদ্যুৎ সঙ্কট। দ্রুত শিল্পায়নের ফলে সে দেশের গ্যাস ও বিদ্যুৎ চাহিদা ব্যাপক বৃদ্ধি পাচ্ছে যা পূরণে ভারত সরকার রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে। শিল্প উন্নয়নের চাকা সচল রাখতে হলে এ সমস্যার সমাধান অতীব জরুরী। তা না হলে প্রত্যাশিত প্রবৃদ্ধি অর্জন ব্যাহত হতে পারে।
নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বলেন, ‘দেশের উন্নয়ন পরিমাপে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনই একমাত্র মাপকাঠি নয়।’ প্রবৃদ্ধির হার বৃদ্ধির পাশাপাশি জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের দিকনির্দেশক। ভারত যে হারে তার জিডিপি বৃদ্ধি করে যাচ্ছে দেশের মানুষের জীবনযাত্রার মান সে হারে উন্নত হচ্ছে না। কিছু জনগোষ্ঠী বিপুল সম্পদের মালিক হলেও বেশিরভাগ অঞ্চলে দারিদ্র্যপীড়িত জনগোষ্ঠীর সংখ্যাই বেশি। আয়-বৈষম্য ভারতে চরম আকারে দেখা যায়। এই অসমতা দূর করতে চাই সম্পদের সুষম বণ্টন ও স্থির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি। আর এটা করা সম্ভব হলে ভারত হয়ে উঠবে নতুন অর্থনৈতিক পরাশক্তি।
লেখক : মোঃ আনিসুর রহমান শ্রাবণ, মোঃ সাকিব চৌধুরী, অনন্যা চৌধুরী, সানজিদা হাওলাদার, সাবরিনা ইসলাম (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বিবিএ ফিন্যান্স ১৭তম ব্যাচ ম্যাক্রো ইকোনমিক ল্যাবের সদস্য)
No comments