লাশের ওপর পতাকা বৈঠক আর কত? by সোহায়েল হোসেন সোহেল
নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহেই বিএসএফ চারজন বাংলাদেশিকে হত্যা করেছে। ১ জানুয়ারি ঠাকুরগাঁও সীমান্তে দু'জন এবং পরদিন চাঁপাইনবাবগঞ্জে আরও দু'জনকে হত্যা করা হয়। আরও কয়েকজনকে ধরে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এভাবে সীমান্তে বিএসএফের হাতে একের পর এক বাংলাদেশি হত্যার ঘটনা বাড়ছেই। সীমান্তে মানুষ খুন এখন আর নতুন কোনো বিষয় নয়। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী এলাকায় এ খুনের ঘটনা একটার পর একটা ঘটে যাচ্ছে আমাদের চোখের সামনে দিয়ে।
সীমান্তে মানুষ হত্যা সাধারণ একটা ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে, এটি আর আমাদের বিবেককে নাড়া দেয় না। নাড়া দিলেই-বা কী হবে? আমরা এতদিনে বুঝে গেছি, সীমান্তে মানুষ হত্যা বন্ধ করা এ সরকারের পক্ষে অসম্ভব। যদি সম্ভব হতো তবে প্রতিনিয়ত এ খুনের ঘটনা আমাদের দেখতে হতো না।
আমাদের যেন অসহায় অবস্থা! সীমান্তের তারকাঁটার ওপর ফেলানীকে খুন করে ঝুলিয়ে রাখলেও আমরা তার বিচার দাবি করতে পারি না। ঠাকুরগাঁও এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের সীমান্তবর্তী এলাকায় গরু ব্যবসায়ীদের গুলি করে হত্যা করলেও আমরা লোক দেখানো তদন্তের কথা বলা ছাড়া আর কিছুই করতে পারি না। দিনদুপুরে বাংলাদেশের সীমান্তে ঢুকে মাঠের কৃষকদের জোর করে ধরে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার করলেও আমরা তা ঠেকাতে পারি না। এর মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে_ ২০১১ সালে সীমান্তে হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছিল ১৫৫টি। ২০১২ সালে এর মাত্রা দাঁড়ায় ৩১৯-এ। এদের মধ্যে ৪৮ জনকে হত্যা করা হয়েছে। আর ২০১৩ আসতে না আসতেই চারজনের লাশ। এ পরিসংখ্যান কোন জায়গায় গিয়ে দাঁড়াবে তা ভবিষ্যৎই বলে দেবে।
তবে এ রকম ঘটনা বেড়ে চললেও সরকারের তেমন মাথাব্যথা পরিলক্ষিত হচ্ছে না। যদিও সাম্প্রতিক ঘটনায় দিলি্লকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে চিঠি দিয়েছে ঢাকা। ভারতীয়দের পক্ষ থেকে বলা হয়, আত্মরক্ষার্থে গুলি চালানো হয়েছে। একদিকে সীমান্তের এসব ঘটনার কারণ উদ্ঘাটনের জন্য দুই দেশের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, অন্যদিকে গুলি করে নিরীহ মানুষ খুন করা হয়। এ চিত্র আমরা দেখে আসছি বহুদিন ধরে। কিন্তু আর কত দিন? কত দিন এভাবে সীমান্তে মানুষ হত্যা চলতে থাকবে?
সীমান্তে আমরা যতগুলো খুনের ঘটনা দেখি তার অধিকাংশই গরু বহনকারী ও নিরীহ সাধারণ মানুষ; কিন্তু সীমান্ত পথ দিয়ে যারা ফেনসিডিলসহ অন্যান্য সর্বনাশা মাদক চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত তারা কিন্তু ঠিকই থেকে যাচ্ছে বহাল তবিয়তে। তাদের খুনের সংবাদ যেমন খুব একটা আমাদের কানে আসে না, তেমনি মাদকের কোনো বড় চালান বিজিবি অথবা বিএসএফের হাতে আটক হয়েছে এটাও শোনা যায় না। সীমান্তে কোনো ধরনের হত্যাকাণ্ড আমরা চাই না। কেবল লাশের ওপর পতাকা বৈঠক সমাধান নয়। জোরালো কূটনৈতিক তৎপরতা প্রয়োজন।
য়সোহায়েল হোসেন সোহেল :মাস্টার্স গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
sonaliakash650@gmail.com
সীমান্তে মানুষ হত্যা সাধারণ একটা ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে, এটি আর আমাদের বিবেককে নাড়া দেয় না। নাড়া দিলেই-বা কী হবে? আমরা এতদিনে বুঝে গেছি, সীমান্তে মানুষ হত্যা বন্ধ করা এ সরকারের পক্ষে অসম্ভব। যদি সম্ভব হতো তবে প্রতিনিয়ত এ খুনের ঘটনা আমাদের দেখতে হতো না।
আমাদের যেন অসহায় অবস্থা! সীমান্তের তারকাঁটার ওপর ফেলানীকে খুন করে ঝুলিয়ে রাখলেও আমরা তার বিচার দাবি করতে পারি না। ঠাকুরগাঁও এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের সীমান্তবর্তী এলাকায় গরু ব্যবসায়ীদের গুলি করে হত্যা করলেও আমরা লোক দেখানো তদন্তের কথা বলা ছাড়া আর কিছুই করতে পারি না। দিনদুপুরে বাংলাদেশের সীমান্তে ঢুকে মাঠের কৃষকদের জোর করে ধরে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার করলেও আমরা তা ঠেকাতে পারি না। এর মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলেছে_ ২০১১ সালে সীমান্তে হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছিল ১৫৫টি। ২০১২ সালে এর মাত্রা দাঁড়ায় ৩১৯-এ। এদের মধ্যে ৪৮ জনকে হত্যা করা হয়েছে। আর ২০১৩ আসতে না আসতেই চারজনের লাশ। এ পরিসংখ্যান কোন জায়গায় গিয়ে দাঁড়াবে তা ভবিষ্যৎই বলে দেবে।
তবে এ রকম ঘটনা বেড়ে চললেও সরকারের তেমন মাথাব্যথা পরিলক্ষিত হচ্ছে না। যদিও সাম্প্রতিক ঘটনায় দিলি্লকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে চিঠি দিয়েছে ঢাকা। ভারতীয়দের পক্ষ থেকে বলা হয়, আত্মরক্ষার্থে গুলি চালানো হয়েছে। একদিকে সীমান্তের এসব ঘটনার কারণ উদ্ঘাটনের জন্য দুই দেশের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, অন্যদিকে গুলি করে নিরীহ মানুষ খুন করা হয়। এ চিত্র আমরা দেখে আসছি বহুদিন ধরে। কিন্তু আর কত দিন? কত দিন এভাবে সীমান্তে মানুষ হত্যা চলতে থাকবে?
সীমান্তে আমরা যতগুলো খুনের ঘটনা দেখি তার অধিকাংশই গরু বহনকারী ও নিরীহ সাধারণ মানুষ; কিন্তু সীমান্ত পথ দিয়ে যারা ফেনসিডিলসহ অন্যান্য সর্বনাশা মাদক চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত তারা কিন্তু ঠিকই থেকে যাচ্ছে বহাল তবিয়তে। তাদের খুনের সংবাদ যেমন খুব একটা আমাদের কানে আসে না, তেমনি মাদকের কোনো বড় চালান বিজিবি অথবা বিএসএফের হাতে আটক হয়েছে এটাও শোনা যায় না। সীমান্তে কোনো ধরনের হত্যাকাণ্ড আমরা চাই না। কেবল লাশের ওপর পতাকা বৈঠক সমাধান নয়। জোরালো কূটনৈতিক তৎপরতা প্রয়োজন।
য়সোহায়েল হোসেন সোহেল :মাস্টার্স গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
sonaliakash650@gmail.com
No comments