পাইপলাইন সমাচার ॥ দাতারা অর্থ ছাড় করে না- জমে পাহাড়?- ১৬শ’ কোটি ডলারের ভাগ্য অনিশ্চিত ॥ বলা হচ্ছে, প্রকল্প প্রক্রিয়াকরণই দায়ী by কাওসার রহমান
প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী দাতারা অর্থছাড় করছে না। বরং তাদের খবরদারি ও অতিমাত্রায় নজরদারির কারণে পাইপলাইনে বিদেশী সাহায্যের পাহাড় জমছে। আবার প্রকল্প প্রক্রিয়াকরণের আগেই ঋণ চুক্তির কারণেও বাড়ছে দাতাদের প্রতিশ্রুতি। কিন্তু প্রকল্প প্রক্রিয়াকরণ ও বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতার কারণে বিলম্বিত হচ্ছে অর্থছাড়।
ফলে স্ফীত হচ্ছে পাইপলাইনে জমা অর্থের পরিমাণ। বর্তমানে পাইপলাইনে জমা বিদেশী সাহায্যের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৬৩৩ কোটি ডলার।অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, গত দুই বছর উন্নয়ন সহযোগীদের বৈদেশিক সহায়তার প্রতিশ্রুতির পরিমাণ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এ দুই বছরে উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতিশ্রুতি এসেছে প্রায় এক হাজার কোটি ডলার। কিন্তু সে অনুপাতে অর্থছাড় না হওয়ার কারণে পাইপলাইনে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ এক হাজার ৬শ’ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে। তারা পাইপলাইনের এ স্ফীতির জন্য দায়ী করেন দেশের প্রকল্প প্রক্রিয়াকরণের সিস্টেমকে। একটি প্রকল্পে অর্থায়নের ঋণচুক্তি স্বাক্ষরের পর দুই বছর লেগে যায় প্রকল্প প্রক্রিয়াকরণে। তারপর আবার প্রকল্প বাস্তবায়নে গিয়ে নানা জটিলতার মুখে পড়ে। ফলে ওই প্রকল্পের অর্থছাড়ও পিছিয়ে পড়ে।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রকল্পের পুরো কাঠামোই পাল্টে ফেলা উচিত। একটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রক্রিয়াকরণ করে তবেই দাতাদের সঙ্গে ঋণচুক্তি করা উচিত। এতে প্রতিশ্রুতি ও অর্থছাড়ের মধ্যকার ব্যবধানটা কমে যাবে। তখন অর্থছাড় আরও বাড়বে। সেই সঙ্গে আমাদের আমলাদের দক্ষতা আরও বাড়াতে হবে।
মূলত গত দুই বছরে পাইপলাইনে মজুদ অর্থের পরিমাণ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সময়ে মজুদ অর্থের পরিমাণ ৯৪৩ কোটি ডলার থেকে ডলার থেকে এক হাজার ৬৩৩ কোটি ডলারে বেড়েছে। অবশ্য ২০১২ সালের মার্চ মাসে পাইপলাইনে মজুদ এ অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল এক হাজার ৬৬১ কোটি ডলার। গত নয় মাসে অর্থছাড় কিছুটা বৃদ্ধি পাওয়ায় এ মজুদের পরিমাণ কমেছে।
পাইপলাইন হচ্ছে বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকা-ে উন্নয়ন সহযোগীদের অর্থ প্রদানের ক্ষেত্রে দেয়া প্রতিশ্রুতির মোট পরিমাণ। কোন একটি প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের পর পরই তা ওই পাইপলাইনে এসে জমা হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় বিদেশী সাহায্য ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে ওই পাইপলাইন থেকে অর্থছাড় হয়। ফলে মজুদ কমে আসে। আবার নতুন ঋণচুক্তি হলে পাইপলাইনের মজুদ বেড়ে যায়। তবে এই পাইপলাইনে নব্বইয়ের দশকে বাস্তবায়িত কিছু প্রকল্পের উদ্বৃত্ত অর্থ এবং স্থগিত বা বাতিল প্রকল্পের অর্থও রয়েছে। এসব অর্থ কিভাবে ব্যবহার হবে তার কোন উপায় উদ্ভাবন না হওয়ায় তা বছরের পর বছর পড়ে আছে। আবার এসব অর্থ উন্নয়ন সহযোগিরা আদৌ দেবে কি না সেটা নিয়েও অনিশ্চয়তা রয়েছে।
আশি ও নব্বইয়ের দশকে প্রতিশ্রুতি ও অর্থছাড়ের পরিমাণ প্রায় কাছাকাছি থাকায় পাইপলাইনে মজুদের পরিমাণ কম ছিল। কিন্তু সম্প্রতি ছাড়কৃত অর্থের দ্বিগুণেরও বেশি প্রতিশ্রুতি হিসেবে আসায় মজুদের পরিমাণ দ্রুত বাড়ছে। গত দুই অর্থবছরে এ যাবতকালের মধ্যে সর্বোচ্চ প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে।
স্বাধীনতা-উত্তরকালে সর্বোচ্চ পরিমাণ প্রতিশ্রুতি এসেছে ২০১০-১১ অর্থবছরে। এ বছর দাতাদের প্রতিশ্রুত অর্থের পরিমাণ ছিল ৫৯৭ কোটি ডলার। যার মধ্যে কেবল পদ্মা সেতুর জন্যই প্রতিশ্রুতি ছিল ২৩৩ কোটি ডলার। পরের বছর ২০১১-১২ অর্থবছরেও উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে বৈদেশিক সহযোগিতা-সংক্রান্ত মোট ৮৮টি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যার মধ্যে ছিল অনুদান চুক্তি ৬৪টি এবং ঋণচুক্তি ২৪টি। এ বছর দাতাদের অর্থ প্রদানের প্রতিশ্রুতি পাওয়া যায় ৪৭৬ কোটি ডলার। চলতি ২০১২-১৩ অর্থবছরেও ৬শ’ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতির আশা করছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের কর্মকর্তারা।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, চলতি ২০১২-১৩ অর্থবছরের নবেম্বর পর্যন্ত পাইপলাইনে জমা হয়েছে উন্নয়ন সহযোগীদের এক হাজার ৬৩৩ কোটি ডলার। শুধু ২০১০-১১ এবং ২০১১-১২ এ দুই অর্থবছরেই যুক্ত হয়েছে এক হাজার ৭৩ কোটি ডলার। ইআরডির কর্মকর্তাদের মতে, কয়েক বছর ধরে ব্যবহার করতে না পারায় এ অর্থের মজুদ বাড়ছে। তবে তারা আশা করছে, আগামী পাঁচ-ছয় বছরের মধ্যে এক হাজার কোটি ডলার ছাড় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এটি নির্ভর করছে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্ম দক্ষতার ওপর।
এ প্রসঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের উপ-সচিব মোস্তাফিজুর রহমান জানান, দাতাদের সঙ্গে বৈদেশিক সহায়তা চুক্তি হওয়ার পরই তা পাইপলাইনে জমা হয়। এরপর শুরু হয় প্রকল্প প্রক্রিয়াকরণের কাজ। একটি প্রকল্প প্রক্রিয়াকরণ করতে প্রায় দুই বছর সময় লেগে যায়। ফলে দুই বছর জমা পড়ে থাকে ওই প্রকল্পের অর্থ। তারপর ছাড় শুরু হয়।
তিনি বলেন, ‘গত দুই বছরে উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে পদ্মা সেতু ও ভারতীয় ঋণ প্রকল্পসহ বেশ কিছু বড় চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। এটা অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সাফল্য। কিন্তু প্রকল্প প্রক্রিয়াকরণে বিলম্বের কারণে সেসব প্রকল্পের কাজ এখনও শুরু হয়নি।’
তিনি ভারতীয় ঋণ প্রকল্পের উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘২০১০ সালে ভারতের সঙ্গে ১০০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি হয়েছে। সেই ঋণের টাকা সবেমাত্র ছাড় শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত এ প্রকল্পের মাত্র তিন কোটি ১০ লাখ ডলার ছাড় হয়েছে।’
বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যবস্থাটাই বিলম্বের। প্রকল্প প্রক্রিয়াকরণের প্রথম থেকেই শুরু হয় বিলম্বের কাজ। একটি প্রকল্প প্রক্রিয়াকরণ করে বাস্তবায়ন পর্যায়ে যেতে দুই বছর লেগে যায়। আবার বাস্তবায়নে গিয়ে শুরু হয় নতুন করে জটিলতা। এই জটিলতা শুরু হয় প্রকল্পের পরামর্শক নিয়োগ থেকে। কোন সংস্থা পরামর্শক নিয়োগের কাজ না পেলেও দাতাদের কাছে অভিযোগ করে। ফলে আটকে যায় প্রকল্পের কাজ। প্রকল্প বাস্তবায়নে সবচেয়ে বেশি জটিলতা সৃষ্টি হয় ভূমি অধিগ্রহণ নিয়ে। জমির স্বল্পতার কারণে জমি পাওয়া যায় না। আবার পেলেও শুরু হয় অধিগ্রহণ নিয়ে নানা জটিলতা। ভূমি অধিগ্রহণে জটিলতায় প্রকল্পের কাজ শুরু করতে না পারার কারণেও দাতাদের অর্থছাড় আটকে যায়।
প্রকল্প বাস্তবায়নের শুরুতে সর্বশেষ জটিলতা দেখা দেয় প্রকল্পের দরপত্র নিয়ে। দরপত্র প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে কোন দরদাতা কাজ না পেলেই দাতাদের কাছে অভিযোগ ঠুকে দেয়। ফলে শুধু বড় প্রকল্পই নয়, ছোট ছোট প্রকল্পেও এ সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে।
সর্বোপরি রয়েছে প্রকল্পে অর্থায়নের ক্ষেত্রে দাতাদের খবরদারি। দাতারা এখন প্রকল্পের অর্থছাড়ের ক্ষেত্রে আগের চেয়ে শর্তের পাশাপাশি নজরদারি বাড়িয়েছে। ছোটখাটো অভিযোগ খতিয়ে দেখার প্রবণতা তাদের বেড়েছে। এতে শুধু অর্থছাড়ই ব্যাহত হচ্ছে না, প্রকল্পের কাজও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। অনেক সময় দাতারা স্বপ্রণোদিত হয়েও প্রকল্পের কার্যক্রম তদন্ত করছে। এতে প্রকল্পের কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অনেক সময় তারা প্রকল্পের কাজ বন্ধ রেখে তদন্ত করে। তখন অর্থছাড়ও বন্ধ হয়ে যায়। আবার অনেক সময় দাতারা নিজ থেকেই অর্থছাড়ের গতি কমিয়ে দেয়। অথবা নানা অজুহাতে ঋণদান স্থগিত বা বন্ধ করে দেয়। এর একটি জলন্ত উদাহরণ হচ্ছে, বাংলাদেশ জুট সেক্টর এ্যাডজাস্টমেন্ট ক্রেডিট চুক্তি। ১৯৯৪ সালে বিএনপি সরকার বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশ জুট সেক্টর এ্যাডজাস্টমেন্ট ক্রেডিট চুক্তি করে। শর্ত ছিল পাটকলগুলো বন্ধ করে দিতে হবে। বিনিময়ে ২৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার ঋণ পাওয়া যাবে। দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, আদমজীর মতো একটি বৃহৎ পাটকল বন্ধ করা হলেও বাংলাদেশ ২৪ কোটি ৭০ লাখ ডলারের মধ্যে পেয়েছে মাত্র পাঁচ কোটি ২০ লাখ ডলার।
মূলত এসব কারণেই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অর্থছাড় হচ্ছে না। ফলে প্রকল্প বাস্তবায়নের গতিও মন্থর থাকছে, আবার বাড়ছে পাইপলাইনের মজুদের পরিমাণ। অন্যদিকে দাতাদের তীক্ষè নজরদারি ও খবরদারির কারণে বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোও বৈদেশিক সাহায্যের পরিবর্তে সরকারী কোষাগারের অর্থ ব্যবহারের ক্ষেত্রে আগ্রহী হচ্ছে। ফলে প্রতিবছরই বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী (এডিপি) সংশোধন করতে গিয়ে বৈদেশিক সাহায্যের পরিমাণ কাটছাঁট করতে হচ্ছে। চলতি অর্থবছরে ২১ হাজার ৫শ’ কোটি টাকার বৈদেশিক সহায়তা এডিপিতে ব্যয়ের জন্য লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সংশোধিত এডিপিতে দুই হাজার কোটি টাকা কমানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
ইআরডির অর্থছাড়ের চিত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গত ৪০ বছরে মাত্র তিনটি অর্থবছরে দাতাদের অর্থছাড়ের পরিমাণ ২০০ কোটি ডলার অতিক্রম করেছে। ২০০৭-০৮ সালে দাতারা সবমিলিয়ে ২০৬ কোটি ডলার ছাড় করে। ২০০৯-১০ অর্থবছরে ছাড় করে ২২২ কোটি ডলার। আর সর্বশেষ ২০১১-১২ অর্থবছরে ছাড় করে ২১২ কোটি ডলার। এ ছাড়া কোন অর্থবছরেই অর্থছাড়ের পরিমাণ ২০০ কোটি ডলার অতিক্রম করেনি। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো, ২০০৫-০৬ অর্থবছর থেকে ২০০৯-১০ অর্থবছর পর্যন্ত বৈদেশিক সাহায্য মজুদের প্রারম্ভিক পাইপলাইনের মাত্র ২১ থেকে ২৭ শতাংশ অর্থছাড় হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) এক সমীক্ষায় দেখা যায়, উন্নয়ন প্রকল্পের সুফল প্রাপ্তিতে অন্যতম সমস্যা হলো প্রকল্প বাস্তবায়ন পর্যায়ে অত্যধিক বিলম্ব। সাহায্যপুষ্ট প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে স্থানীয় পর্যায়ে যেমন বিলম্ব হয় তেমনি উন্নয়ন সহযোগী পর্যায়েও সময়ক্ষেপণ হয়ে থাকে। তা ছাড়া সমন্বয়হীনতা, চুক্তির শর্তাবলী নির্ধারণে মেধা ও জ্ঞানের সঠিক ব্যবহার না হওয়ায় বাংলাদেশ সরকারের অবস্থান সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয় না। ফলে প্রকল্প প্রণয়নে বিভিন্ন ধরনের আপত্তি উপস্থাপিত হওয়ায় প্রকল্প গ্রহণ ও অনুমোদনে বিলম্ব হয়। আর এ কারণে অর্থের সঠিক ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না।
আবার প্রকল্প বাস্তবায়নে আমাদের কর্মকর্তাদের দক্ষতারও বেশ অভাব রয়েছে। বার বার দক্ষতা বৃদ্ধির কথা বলা হলেও প্রকল্প বাস্তবায়নে বাড়ছে প্রশাসনিক দক্ষতা। ফলে প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ বিলম্বিত হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ মাহবুব আলী বলেন, প্রথমত বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রকল্পের পুরো কাঠামোই পাল্টে ফেলা উচিত। একটি প্রকল্প অনুমোদনের পর্যায়ে নিয়ে গিয়ে দাতাদের সঙ্গে ঋণচুক্তি স্বাক্ষর করা উচিত। এ জন্য উন্নয়নের প্রকল্পের ব্যবস্থা সংস্কার করা দরকার। এক্ষেতে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী এবং কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসে দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য একটি সহজ কাঠামো প্রণয়ন করে দিতে পারেন। তিনি বলেন, ‘প্রকল্প বাস্তবায়নে আমাদের আমলাদের দক্ষতার বেশ অভাব রয়েছে। বাজেটে যে অর্থ বরাদ্দ রাখা হচ্ছে তা তারা ব্যবহার করতে পারছেন না। ফলে সময়মতো যেমন প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে না, তেমনি বিদেশী অর্থও তেমন আসছে না। এ জন্য প্রশাসনিক সংস্কারের উদ্যোগ নিতে হবে। প্রশাসনকে যুগোপযোগী করে ঢেলে সাজাতে হবে।’
ড. মাহবুব আলী বলেন, ‘প্রশাসনিক সংস্কার বলতে আমাদের দেশে লালফিতার জায়গায় সাদাফিতা হয়েছে। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রতা মোটেই কমেনি।’
উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছরের শুরুতে অর্থাৎ জুলাই মাস পর্যন্ত সরকারের নেয়া বৈদেশিক ঋণের মোট স্থিতির পরিমাণ ছিল দুই হাজার ৩৪৪ কোটি ডলার। এর মধ্যে ২০১১-১২ অর্থবছর পর্যন্ত মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী বৈদেশিক ঋণের মধ্যে সর্বমোট ৯৬ কোটি ৬৩ লাখ ডলারের সমতুল্য সাত হাজার ৮৪৮ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। আশার কথা হলো, স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করতে সক্ষম হয়েছে। এমনকি ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে কিস্তি পুনর্তফসিলকরণের জন্য বাংলাদেশকে কখনও আবেদন করার প্রয়োজন হয়নি।
No comments