পরিবেশবান্ধব ॥ পরিবেশে বসবাস by ইব্রাহিম নোমান
স্কটল্যান্ডের এক কৃষক অ্যালাসটেয়ার ডসন। গত পাঁচ বছর ধরে চেষ্টা করে অবশেষে তিনি তাঁর ও তাঁর পরিবারের বসবাসের জন্য পরিবেশবান্ধব একটি বাড়তি তৈরি করেছেন। ডসন তঁরা বাড়ির নাম দিয়েছেন ‘আর্থশিপ’। এই ধারণাটার জন্ম গত শতকের সত্তরের দশকে।
এ ধরনের বাড়ি নির্মাণে স্থানীয়ভাবে পাওয়া যায় এমন সব উপকরণ ব্যবহার করা হয়, যা রিসাইকেল্ড বা পুনর্ব্যবহারযোগ্য। এছাড়া বিদ্যুতের জন্য জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। সৌর বা বায়ুচালিত শক্তি, অর্থাৎ বিকল্প জ্বালানি দিয়েই বিদ্যুতের প্রয়োজন মেটানো হয়। ডসন তাঁর বাড়ি তৈরির পরিকল্পনা করেন পাঁচ বছর আগে। তখন থেকেই তিনি রেললাইনের পুরনো সিøপার, স্কুলের ফেলে দেয়া বোর্ড যেটা মেঝে তৈরিতে ব্যবহৃত হয়, রাস্তার খোয়া, গাড়ির পুরনো টায়ার ইত্যাদি যোগাড় করতে শুরু করেন। ডসন যখন এই কাজগুলো করছিলেন তখন তাঁর বন্ধু-বান্ধব আর প্রতিবেশীরা মনে করেন যে, কয়েকদিনের মধ্যে ডসনের এই ঝোঁকটা কেটে যাবে। কিন্তু ডসন সেরকম ব্যক্তি নন। ঠিকই তিনি তাঁর পরিকল্পনামাফিক কাজ করে গেছেন। যার ফল একেবারে নতুন এই বাড়ি। ডসন হলেন পুরাদস্তুর একজন কৃষক। তাই স্বাভাবিকভাবেই বাড়ি তৈরির কোন অভিজ্ঞতা তাঁর ছিল না। সেক্ষেত্রে তিনি স্থপতি আর প্রকৌশলীদের সঙ্গে দিনের পর দিন আলোচনা করেন, তাঁদের সহায়তা নেন। এবং অবশেষে যে বাড়িটি তিনি তৈরি করেছেন, সেখানে বিদ্যুতের ব্যবস্থার জন্য ডসন পাশের পাহাড়ের চূড়ায় দুটি বায়ুচালিত টারবাইন স্থাপন করেন। যাতে পানি আসে পাশের নদী থেকে।বাড়ি তৈরির উপকরণ
ডসনের বাড়ির দেয়াল তৈরি হয়েছে স্থানীয়ভাবে পাওয়া যায় এমন সব উপকরণ দিয়ে। তবে নির্মাণের সময় দেয়ালে কয়েকটা স্তর সৃষ্টি করা হয়েছে, যা তাপমাত্রা ও আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। ঘরে বায়ুচলাচল নিশ্চিত করার জন্য খড়কুটো, ভেড়ার পশম আর গাড়ির পুরনো টায়ার ব্যবহার করেছেন ডসন। মার্কিন সেনারা এই প্রযুক্তি আবিষ্কার করেছিলেন। আর ডসন সেটাই ব্যবহার করেছেন। একদম পরিবেশবান্ধব উপায়ে অনেক কষ্ট করে তৈরি করা এই বাডিতে এখন বাস করছেন ডসন, তাঁর জীবনসঙ্গী লিসা ও তাঁদের দুই সন্তান। ডসনের ভবিষ্যত পরিকল্পনা এ ধরনের আরেকটি বাড়ি তৈরি করা, যেখানে পর্যটকরা থাকতে পারবেন।
সূত্র : ডয়েচ ভেলে
No comments