আবেদন খারিজ ॥ গো. আযম, নিজামী, সাঈদী ও কামারুজ্জামানের মামলার পুনর্বিচারের প্রশ্ন- একই আবেদন বার বার করায় কাদের মোল্লাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বৃহস্পতিবার ছিল ঘটনাবহুল দিন। এদিন বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ আদেশ প্রদান করা হয়েছে। জামায়াতের চার শীর্ষ নেতা গোলাম আযম, মতিউর রহমান নিজামী, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ও মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা পুনর্বিচার (রি- ট্রায়ালের) আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ ও ২।
তবে চেয়ারম্যান নতুন আসায় সাঈদীর মামলা উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের দিন সময় বেঁধে দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। অন্যদিকে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর পক্ষে করা চারটি আবেদনের মধ্যে দু’টি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। ১০ জানুয়ারি একটি আবেদনের বিষয়ে আদেশ এবং অন্যটির বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে দ্বিতীয় সাক্ষীর জেরা ১০ জানুযারি নির্ধারণ করেছে ট্রাইব্যুনাল। চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট আন্তাজার্তিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল -১ এ আদেশ প্রদান করেছে।এদিকে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের মামলায় রি-ট্রায়ালের আবেদন খারিজ করেছে ট্রাইব্যুনাল। একই ট্রাইব্যুনালে অপর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কাদের মোল্লার পক্ষে মামলা রি- ট্রায়ালের আবেদন করা হয়েছে। আবেদনের ওপর শুনানি হবে রবিবার। তার পক্ষে একই আবেদন করায় ট্রাইব্যুনাল তাকে ১০ হাজার টাকা জারিমানা করেছে। ট্রাইব্যুনালের এটাই প্রথম কোন আসামির বিরুদ্ধে অর্থদ- প্রদান করা হলো। আলী আহসান মুহাম্মাদ মুজাহিদের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের ১১তম সাক্ষী ফয়েজ উদ্দিন আহমেদকে জেরা শেষ করেছে আসামিপক্ষ। মামলার কার্যক্রম আগামী ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে। চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান শাহীনের নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ বৃহস্পতিবার এই আদেশ প্রদান করেছে।
বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর ট্রাইব্যুনালে হুঙ্কারের পর এবার তাঁর স্ত্রী ও ছেলে ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রারের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন। তাঁর স্ত্রী বলেছেন, এবার আপনাদের বিচার হবে। পাশাপাশি বিএনপি সমর্থিত ২৫/৩০ জন আইনজীবী ট্রাইব্যুনালে প্রবেশ করে হৈ চৈ শুরু করেন। তাঁরা বিভিন্ন ধরনের সেøাগান দিতে থাকেন।
গো-আযম-নিজামী-সাঈদী ॥ মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াত নেতা গোলাম আযম, মতিউর রহমান নিজামী ও মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে মামলা পুনরায় শুরু করতে আনা আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনাল-১ পুনর্গঠিত হওয়ায় সাঈদীর মামলায় যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) পুনরায় উপস্থাপনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ১৩ ও ১৪ জানুয়ারি দুই দিন প্রসিকিউশন পক্ষ এবং ১৫ থেকে ১৭ জানুয়ারি তিন দিন আসামিপক্ষকে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে। আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে আইনী যুক্তি পেশের জন্য ১ ঘণ্টা প্রসিকিউশন সময় পাবে বলে আদেশে বলা হয়েছে।
আসামিপক্ষের আনা পৃথক তিনটি আবেদনের ওপর ১ জানুয়ারি ষষ্ঠ দিনের মতো শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার এই আদেশ প্রদান করা হয়। ট্রাইব্যুনাল তার আদেশে বলেছে, দ্যা ইকোনমিস্ট কোন সংলাপ প্রকাশ করেনি। দৈনিক আমার দেশ কোন নৈতিকতার তোয়াক্কা না করেই হ্যাকিং করা তথ্য প্রকাশ করেছে। এটি ২০০৬ সালের তথ্য-প্রযুক্তি আইনে অপরাধ, আন্তর্জাতিক আইনেও অপরাধ। চুরি করা তথ্যের ভিত্তিতে কোন মামলায় নতুন করে শুনানির সুযোগ নেই, প্রয়োজনও নেই। চুরি করা তথ্যের ওপর কোন নির্ভরতা নয়। চুরি করা তথ্যের কোন উৎসও আসামিপক্ষ জানাতে পারেননি বলেও মন্তব্য করেছে ট্রাইব্যুনাল।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ আদেশের পর রেজিস্ট্রার একেএম নাসির উদ্দিন আহম্মেদ ব্রিফিং প্রদান করেন। এ সময় ডেপুটি রোজিস্ট্রার ব্যারিস্ট্রার মেজবাহ উদ্দিন আহেম্মদ উপস্থিত ছিলেন। ট্রাইব্যুনাল তার আদেশে আরও বলেছে, দৈনিক আমার দেশ সকল নৈতিকতার মানদ- লঙ্ঘন করে ঐ হ্যাকিং-এর বিষয়বস্তু প্রকাশ করেছে। যা অপরাধযোগ্য ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। বিচার স্বচ্ছতার ভিত্তিতে হচ্ছে। বিচার হবে সাক্ষীর গুণাগুণের ওপর নির্ভর করে। বিচারে স্কাইপের সংলাপ প্রভাব ফেলবে না। আইসিটি আইন অনুযায়ী বিচার হবে। এ আইনে রি-ট্রায়ালের বিধান নেই। আইসিটির ৬(৬) ধারার বিধান অনুযায়ী কোন মামলায় বিচারক পরিবর্তন হলে ধারাবাহিকতা ব্যাহত হবে না। যে অবস্থায় আছে সেখান থেকেই শুরু হবে। চার্জ গঠনের আদেশটি সাবেক চেয়ারম্যান এককভাবে প্রদান করেননি। ট্রাইব্যুনালের দু’জন সদস্য ছিলেন। আদেশ প্রদান করা বৈধ।
আদেশে আরও বলা হয়, যেহেতু দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলার সাবেক চেয়ারম্যান পদত্যাগের ফলে নতুন চেয়ারম্যান এসেছেন। ন্যায় বিচারের স্বার্থে উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শুরু হবে। গোলাম আযমের মামলার যুক্তিতর্ক ৭ জানুযারি থেকে শুরু হবে।
এ্যাটর্নি জেনারেল ॥ এ্যার্টনি জেনারেল মাহবুবে আলম আদেশের পর বলেছেন, ট্রাইব্যুনাল তিনটি মামলা রি-ট্রায়ালের আবেদন বৃহস্পতিবার খারিজ করে দিয়েছে। ট্রাইব্যুনালের কোন সদস্য পদত্যাগ করলে রি-ট্রায়ালের আবেদন করা যায় না। এই বিচার কাজকে বিলম্বিত করার জন্যই আসামিপক্ষ মামলা পুনরায় শুরুর আবেদন করেছে। গোলাম আযম, সাঈদী ও নিজামীর বিরুদ্ধে মামলা পুনবির্চারের জন্য গত ১৯ ও ২৩ ডিসেম্বর পৃথক তিনটি আবেদন করে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন বিশেষজ্ঞ প্রবাসী বাংলাদেশী ড. আহম্মেদ জিয়াউদ্দিনের সঙ্গে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর পদত্যাগী চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হকের স্কাইপি সংলাপকে কেন্দ্র করে মামলা তিনটির বিচার কার্যক্রম পুনরায় শুরু করতে আবেদনগুলো দায়ের করেছে আসামিপক্ষ। ১১ ডিসেম্বর ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করায় মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধ বিচারের জন্য দু’টি ট্রাইব্যুনালই পুনর্গঠন করা হয়।
ট্রাইব্যুনাল-১ এ গোলাম আযম, নিজামী ও সাঈদী ছাড়াও বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার বিচার চলছে। এর মধ্যে ৬ ডিসেম্বর সাঈদীর মামলার বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। তার বিরুদ্ধে রায় যে কোন দিন দেয়া হবে উল্লেখ করে মামলাটির রায় ঘোষণা অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখা হয়েছে। নতুন করে যুক্তিতর্ক অনুষ্ঠানের আদেশের ফলে আইন অনুসারে এ যুক্তিতর্ক পেশ শেষে সাঈদীর বিরুদ্ধে মামলার রায় ঘোষণার তারিখ ধার্য করা হবে।
আব্দুর রাজ্জাক ॥ ডিফেন্স টিমের প্রধান ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক আদেশের পর সাংবাদিকদের বলেছেন, আমরা এই আদেশের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করব। কারণ আমরা আপীল করতে পারছি না। হাইকোর্টে যেতে পারছি না।
তিনি আরও বলেন, ট্রাইব্যুনাল আমাদের পুনর্বিচারের তিনটি আবেদন খারিজ করেছে। ট্রাইব্যুনালের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি পুনর্বিচারের আদেশ প্রদান করে ট্রাইব্যুনাল প্রাক্তন চেয়ারম্যান এবং বেলজিয়াম প্রবাসী একজন আইনজীবীর অসদাচরণ থেকে একটি দূরত্ব বজায় রাখবেন। আমরা সম্পূর্ণ হতাশ হয়েছি।
মাননীয় বিচারকগণই ভাল জানেন তাঁরা কেন এই দুই ব্যক্তির বোঝা নিজেদের কাঁধে তুলে নিলেন। আমরা শুধু এ টুকু বলার মধ্যে আমাদের বক্তব্য সীমাবদ্ধ রাখতে চাই যেন এর মাধ্যমে না অভিযুক্তদের প্রতি সুবিচার করা হবে, না ভিকটিমের প্রতি। এটা হবে একটা তাড়াহুড়ার বিচার।
কামারুজ্জামান ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গেফতারকৃত জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের মামলা পুনরায় শুরুর (রি-ট্রায়ালের) আবেদন খারিজ করে দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান শাহীনের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এই আদেশ প্রদান করেছে।
ট্রাইব্যুনাল তার আদেশে বলেছে, স্কাইপের এবং ই-মেইল হ্যাকিং থেকে অবৈধভাবে আনা হয়েছে। তার উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে না। প্রসিকিউটর রানা দাসগুপ্ত সাংবাদিকদের বলেন, আসামিপক্ষে আনা এ আবেদন অগ্রহণযোগ্য হওয়ার প্রেক্ষিতে আবেদনটি খারিজ করে দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। আসামিপক্ষের আইনজীবী তাজুল ইসলাম বলেন, কামারুজ্জামানের মামলা যখন ট্রাইব্যুনাল-১ এর পদত্যাগী চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হকের নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনালে ছিল তখন তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করা হয়েছিল। ওই আনুষ্ঠানিক অভিযোগের ভিত্তিতে ট্রাব্যুনাল-২ এ মামলাটিতে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের ১৫তম সাক্ষীকে ১ জানুয়ারি জেরা শেষ করেছে আসামিপক্ষ। ১৫ জুলাই সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হওয়ার পর থেকে কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত প্রসিকিউশনের আরও ১৪জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। পরে আসামিপক্ষ তাঁদের জেরা সম্পন্ন করেছে। গত ৪ জুন কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট ৭টি ঘটনায় অভিযোগ গঠন করা হয়। তার বিরুদ্ধে গত ৩১ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল। ২০১০ সালের ২৯ জুলাই তাকে গ্রেফতার করা হয়। ওই বছরের ২ আগস্ট তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
জরিমানা ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লাকে একই আবেদন বার বার করায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান শাহীনের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জার্তিক ট্রাইব্যুনাল-২ বৃহস্পতিবার এই গুরুত্বপূর্ণ আদেশ প্রদান করে।
৭ জানুয়ারির মধ্যে জরিমানাকৃত টাকা আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামে দান করে তার রশিদ ট্রাইব্যুনালে জমা দিতে বলেছে ট্রাইব্যুনাল। কাদের মোল্লার পক্ষে আরও ৬ জনকে সাক্ষী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে ট্রাইব্যুনালের কাছে আসামিপক্ষ এ আবেদন করে। একই আবেদন এর আগে বেশ কয়েকবার ট্রাইব্যুনাল খারিজ করে দেয়। বৃহস্পতিবার আবারও একই আবেদন করায় তাকে এ জরিমানা করা হয় । তার আইনজীবী ফরিদ উদ্দিন খান এই আবেদন করেছিলেন।
ট্রাইব্যুনালের কোন মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে এই প্রথম কাউকে জরিমানা করা হয়েছে। এর আগে কাউকেই কোন কারণে জরিমানা করা হয়নি। এর আগে প্রসিকিউশনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে কাদের মোল্লার পক্ষে ট্রাইব্যুনালের নির্ধারিত করে দেয়া ৬জন সাফাই সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে।
রি-ট্রায়ালের আবেদন ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনােেরল আব্দুল কাদের মোল্লার পক্ষে মামলা পুনরায় শুরু (রি- ট্রায়াল) করার আবেদন করা হয়েছে। ৬ জানুয়ারি রবিবার এ আবেদনের শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে মামলা বর্তমানে বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এই মামলায় প্রসিকিউশনের যুক্তি (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপন শেষ হয়েছে। ৭ জানুয়ারি আসামিপক্ষ তাদের যুক্তি উপস্থাপন করবে।
সাকার আইনজীবীর হৈ চৈ ॥ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর পক্ষে প্রায় ২৫/৩০জন আইনজীবী ও তার পরিবারের সদস্যরা বৃহস্পতিবার মিছিলসহকারে জোরপূর্বক আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে প্রবেশের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। এ সময় তারা ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার একেএম নাসির উদ্দিন ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করে।
দুপুরে ট্রাইব্যুনালের সামনে তাদের হৈ চৈ শুনে রেজিস্ট্রার গেটে গিয়ে তাদের নিবৃত করার চেষ্টা করেন। এ সময় তিনি আইনজীবীদের বলেন, ট্রাইব্যুনালের স্থান স্বল্পতার কারণে একজন আসামির পক্ষে সর্বোচ্চ ১০জন আইনজীবী প্রবেশের নিয়ম করা হয়েছে। রেজিস্ট্রারের বাধার মুখে পরে আইনজীবীরা পুনরায় হৈচৈ করতে থাকে এবং তারা রেজিস্ট্রারকে উদ্দেশ করে নানা অশোভন উক্তি করতে থাকলে রেজিস্ট্রার পুলিশকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের আদেশ দেন। পুলিশ তখন তাদের ট্রাইব্যুনালের গেটের বাইরে চলে যেতে বলে। পুলিশের বাধার মুখে তারা ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে মিছিলসহ গেটের বাইরে চলে যায়।
এ সময় আইনজীবীদের সঙ্গে সাকা চৌধুরীর স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী ও ছোট ছেলে হুমমাম কাদের চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। স্ত্রী ফারহাত কাদের চৌধুরী রেজিস্ট্রারকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনাদেরও বিচার হবে। ছেলেকে ট্রাইব্যুনালের গেট থেকে সরে যেতে বলেন রেজিস্ট্রার। কিন্তু রেজিস্ট্রারের কথায় সায় না দিয়ে তিনি গেটের সামনেই দাঁড়িয়ে থাকেন। আইনজীবীরা চলে গেলে সাকার স্ত্রী ও ছেলে ট্রাইব্যুনালে প্রবেশ করে। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সাকা চৌধুরী এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমকে উদ্দেশ করে বরেছিলেন, ‘দুই বছর জেলে রাখছস, বাইর হইয়া নি।’
সাকার আবেদন খারিজ ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর পক্ষে করা চারটি আবেদনের মধ্যে দুটি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ১০ জানুয়ারি একটি আবেদনের বিষয়ে আদেশ এবং অন্যটির বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যবিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আদেশ প্রদান করেছে।
No comments