পুরো ময়মনসিংহ শহর একটি জনসমুদ্র- শেখ হাসিনা চাইলেন নৌকায় ভোট
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা ময়মনসিংহ সার্কিট হাউস ময়দানের বিশাল জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আগামী নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আবারও জনসেবার সুযোগ দেয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন।
বিএনপি-জামায়াত জোটের ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত সম্পর্কে দেশবাসীকে সজাগ ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আপনার (খালেদা জিয়া) হাতে বাংলাদেশ নিরাপদ নয়। আপনি ক্ষমতায় এলে দেশের মানুষ শান্তি পাবে না, নিরাপদে থাকতে পারবে না। দেশ আবারও সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও জঙ্গীবাদের দেশ হবে। বাংলাদেশের মানুষ সে অবস্থা আবারও দেশে ফিরে আসুক তা চায় না।‘সাপকে বিশ্বাস করা যায়, আওয়ামী লীগকে নয়’- বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার এমন মন্তব্যের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ নয়, বিরোধী দলীয় নেত্রীই সাপ নিয়ে চলেছেন। তিনি মাথায় বিষধর সাপের ঝাঁপি নিয়ে চলছেন। একাত্তরে যারা গণহত্যা চালিয়েছে, লাখো মা-বোনের ইজ্জত হরণ করেছে, অগ্নিসংযোগ-লুটতরাজ চালিয়েছে, সেই বিষধর সাপ যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে নিয়ে তিনি চলেছেন। যা কোনদিনই দেশের মানুষ মেনে নেয়নি, নেবেও না।
বৃহস্পতিবার হেলিকপ্টারযোগে ঢাকা থেকে ময়মনসিংহ এসে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এ্যালামনাই অনুষ্ঠানে যোগদান, শহরে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের নবনির্মিত ভবনের উদ্বোধন এবং ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট নবনির্মিত হাসপাতালের উদ্বোধন শেষে সার্কিট হাউস ময়দানে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্মরণকালের এই বিশাল জনসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
লাখো মানুষের জনসমুদ্রে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বিএনপি-জামায়াত জোটকে ইঙ্গিত করে আগামী নির্বাচনে অত্যাচারী, মা-বোনের সম্ভ্রমহরণকারী, খুন-সন্ত্রাস-দুর্নীতি ও জঙ্গীবাদ সৃষ্টিকারীরা আর ক্ষমতায় ফিরে আসতে না পারে সেজন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বানও জানান। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের দুই গুণ, ঘুষ-দুর্নীতি আর মানুষ খুন। আর এটা বিএনপিরও বড় গুণ। ক্ষমতায় থেকে ঘুষ-দুর্নীতি আর মানুষ খুন ছাড়া বিএনপি-জামায়াত জোট দেশের জন্য কিছু করতে পারে না। তারা শুধু নিতে জানে, কিছু দিতে জানে না।
ক্ষমতায় আসার পর চার বছরের মাথায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম ময়মনসিংহ সফরকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছিল বৃহত্তর এই জেলার নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে। প্রত্যাশার চেয়েও দ্বিগুণ মানুষের স্রোতে শুধু সার্কিট হাউস ময়দানই নয়, পুরো ময়মনসিংহ শহরই যেন পরিণত হয়েছিল বিশাল সমাবেশে। দুপুর ১২টার পর থেকেই হাজারো মিছিলের তোড়ে পুরো শহরই যেন থমকে দাঁড়িয়েছিল। যেদিকে চোখ যায় শুধু মানুষ আর মানুষ। আর এ বিশাল জনসমুদ্রে নির্বাচনের এক বছর আগেই নির্বাচনী আমেজ ছিল চোখে পড়ার মতো।
নির্বাচনী বছরের শুরুতেই বৃহস্পতিবার নৌকা তথা শাসক দল আওয়ামী লীগের পক্ষে জনসমর্থন প্রত্যক্ষ করল বৃহত্তর ময়মনসিংহের মানুষ। জনসভায় আসা লাখো মানুষই যেন মেতে উঠেছিল নির্বাচনী আমেজে। ময়মনসিংহ ছাড়াও আশপাশের জেলা কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, শেরপুর থেকে আসা অজস্র্র মিছিলের প্রতিটিতেই ছিল বিশাল বিশাল নৌকার প্রতিকৃতি ও বিশাল বিশাল আসল নৌকা। ঠেলাগাড়িতে বিশাল বিশাল নৌকা তুলে তার ওপর বৈঠা নিয়ে নৌকার মাঝির নৌকা চালানোর অসংখ্য দৃশ্যও প্রত্যক্ষ করেছেন ময়মনসিংহের মানুষ। প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে সত্যিই এক অন্যরকম গণজাগরণের সৃষ্টি হয়েছিল বৃহত্তর ময়মনসিংহকে ঘিরে।
দুপুর আড়াইটায় জনসভার জন্য নির্ধারিত সময়সূচী দেয়া থাকলেও সকাল ১০টা থেকেই আশপাশের জেলা-উপজেলা থেকে বর্ণাঢ্য সাজে সজ্জিত অসংখ্য মিছিল আসতে শুরু করে সার্কিট হাউস ময়দান অভিমুখে। কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের পর ময়মনসিংহ সার্কিট হাউস ময়দানই হচ্ছে দেশের বৃহত্তম মাঠ। লক্ষাধিক লোকের ধারণক্ষমতার এই মাঠটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আসার আগেই কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে।
এক পর্যায়ে জনস্রোত সার্কিন হাউস ময়দান ছাপিয়ে আশপাশের প্রায় এক বর্গকিলোমিটার এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। ময়দান ছাড়াও সিকে ঘোষ রোড, আবুল মনসুর সড়ক, জেলা স্কুল রোড, কাঁচিঝুলি, নতুন বাজার, রামবাবু রোড, প্রধান সড়ক হয়ে টাউন হল মোড় কোথাও যেন তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। লাখো মানুষের ভিড় পেরিয়ে ময়দানে যেতে না পারা হাজার হাজার মানুষকে বিশাল এলাকা জুড়ে লাগানো মাইকের সামনে দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার বক্তব্য শুনতে দেখা গেছে। তবে হাজার হাজার মিছিলে নতুন প্রজন্মের তরুণ-তরুণীদের অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখ করার মতো। সার্কিট হাউসের ময়দানের আশপাশে বাসা-বাড়ি, দোকান-পাট ও গাছের ডালে চড়ে অনেক মানুষকে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে শুনতে দেখা যায়।
বৃহত্তর ময়মনসিংহের ৩৮ আসনেই বিগত নির্বাচনে আওয়ামী লীগসহ মহাজোটের প্রার্থীরা বিজয়ী হন। আর একটি বছর পর নির্বাচন তাই বিজয়ী সংসদ সদস্য এবং আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের হাজার হাজার নেতাকর্মীদের নিয়ে বর্ণাঢ্য মিছিল ছিল দেখার মতো। বাদ্য-বাজনার তালে তালে নেচে গেয়ে লাখো মানুষ আওয়ামী লীগের এ জনসভায় যোগদান করে। প্রধানমন্ত্রী বিকেল সাড়ে তিনটায় জনসভাস্থলে পৌঁছলে লাখো মানুষ সেøাগানে সেøাগানে পুরো এলাকা মুখরিত করে তোলে। প্রধানমন্ত্রী এ সময় উপচেপড়া জনসমুদ্রে হাত নেড়ে অভিনন্দনের জবাব দেন।
এদিকে শেখ হাসিনার আগমনকে সামনে রেখে এক অন্যরকমভাবে সেজেছিল পুরো ময়মনসিংহ জেলা। ভালুকা থেকে শুরু করে ময়মনসিংহ পর্যন্ত দীর্ঘ ৪০ কিলোমিটার পথে পথে অসংখ্য তোরণ আর ডিজিটাল ব্যানার টানিয়ে শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকা- তুলে ধরা হয়। পুরো জেলার এমন কোন গুরুত্বপূর্ণ মোড় নেই যেখানে বিভিন্ন নেতার শুভেচ্ছা সংবলিত ডিজিটাল ব্যানার দিয়ে ঢেকে ফেলা হয়নি।
জনসভাকে কেন্দ্র করে এক অন্যরকম জনবিস্ফোরণের ঘটনা ঘটলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের পর তাঁদের অনেককে হতাশা প্রকাশ করতে দেখা গেছে। কারণ ময়মনসিংহবাসীর প্রত্যাশা ছিল প্রধানমন্ত্রী হয়ত তাদের প্রাণের দাবি অনুযায়ী ময়মনসিংহকে বিভাগ ঘোষণা করবেন। কিন্তু প্রশাসনিক জটিলতার কারণে প্রধানমন্ত্রী প্রাচীন এই জেলাকে বিভাগ ঘোষণা না করলেও আগামীতে ময়মনসিংহ পৌরসভাকে সিটি করপোরেশনে উন্নীত, ফুলপুর তারাকান্দিকে উপজেলায় উন্নীত, কমিউটার ট্রেনের মাধ্যমে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলযোগাযোগ উন্নীতকরণ, ঢাকা-ময়মনসিংহ চার লেনের মহাসড়ক দ্রুত সম্পন্নসহ বিভিন্ন উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় প্রবীণ নেতা অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জনসভায় আরও বক্তব্য রাখেন সভাপতিম-লীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও এলজিআরডি মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দিন খান আলমগীর, স্বাস্থ্য অধ্যাপক ডা. আফম রুহুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, কৃষিবিদ আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, জেলা সাধারণ সম্পাদক আবদুল মতিন সরকার, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব) মজিবুর রহমান ফকির, প্রতিমন্ত্রী এ্যাডভোকেট প্রমোদ মানকিন, জেলা প্রশাসক এ্যাডভোকেট জহিরুল হক, এম আমানউল্লাহ এমপি, মোসলেম উদ্দিন এমপি, আবদুস সাত্তার এমপি, রেজা আলী এমপি, কৃষক লীগের মোতাহার হোসেনসহ স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জেলার নেতারা বক্তব্য রাখেন। সমাবেশ পরিচালনা করেন জেলার তিন সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমেদ খান, এহতেশামুল আলম ও বদরুদ্দিন আহমেদ।
এ সময় মঞ্চে ভূমিমন্ত্রী রেজাউল করিম হীরা, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু, আতিউর রহমান আতিক এমপি, মোশতাক আহমেদ রুহী এমপি, মুরাদ হাসান এমপি, ক্যাপ্টেন (অব) গিয়াস উদ্দিন এমপি, কেএম খালিদ বাবু এমপি, যুব মহিলা লীগের সভানেত্রী নাজমা আখতার এমপি, সাধারণ সম্পাদিকা অধ্যাপিকা অপু উকিল এমপি, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী (মিডিয়া) মাহবুবুল হক শাকিল, প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সহকারী সচিব এ্যাডভোকেট সাইফুজ্জামান শিখর প্রমুখ।
বিশাল জনসভায় প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারের গত চার বছরের উন্নয়ন ও সাফল্যের তথ্য তুলে ধরে বলেন, বিএনপি-জামায়াত মানেই লুটপাট, দুর্নীতি, বিদেশে অর্থ পাচার আর জঙ্গীবাদ সৃষ্টি। আর আওয়ামী লীগ মানেই জনগণের উন্নয়ন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই কেবল জনগণ কিছু পায়, অন্যরা লুটে নিয়ে যায়। আমরা জনগণের জন্য কাজ করি, জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নই বর্তমান সরকারের নীতি।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থেকে সারাবিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে দুর্নীতি, সন্ত্রাসী ও জঙ্গীবাদের দেশ হিসেবে কলঙ্কের তিলক এঁকে দিয়েছিল। আমরা ক্ষমতায় এসে শক্ত হাতে এসব দমন করেছি। বাংলাদেশ এখন আর সন্ত্রাসী বা জঙ্গীবাদের দেশ নয়। সারাবিশ্বের কাছে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোলমডেল। বর্তমান সরকার গত চার বছরে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে সক্ষম হয়েছে।
ঐতিহাসিক সমুদ্র বিজয়ের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ যা কথা দেয় তা পালন করে। ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নিয়ে আমাদের বিরোধ ছিল। আমরা আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করে মিয়ানমারের কাছ থেকে বিশাল সমুদ্রসীমায় বাংলাদেশের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছি। ইনশাল্লাহ ভারতের সঙ্গেও সমুদ্রসীমা নিয়ে বিরোধের নিষ্পত্তি করব।
বিদ্যুত প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট পাঁচ বছর ক্ষমতায় থেকে এক ফোটা বিদ্যুত উৎপাদন করেনি, শুধু লুটপাট করে খেয়ে গেছে। বিদ্যুত না দিয়ে দেশবাসীকে দিয়েছে শুধু খাম্বা। তিনি বলেন, আমরা মাত্র চার বছরে ৪ হাজার ৮শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন করেছি। ক্ষমতায় থেকে বিএনপি-জামায়াত শুধু লুটপাট করে খেয়ে গেছে, বিদ্যুত উৎপাদন করবে কিভাবে। আগামীতে আরও বিদ্যুত উৎপাদন করব। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি। ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত ইন্টারনেট সার্ভিস দিয়েছি, কমদামে ল্যাপটপ ও কম্পিউটারও দিচ্ছি। বছরের প্রথম দিন বিনামূল্যে সারাদেশে মাধ্যমিক পর্যন্ত ছাত্র/ছাত্রীদের হাতে প্রায় ২৭ কোটি নতুন বই তুলে দিয়েছি। কারণ আমরা দেশের আগামী প্রজন্মকে উন্নত শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে চাই।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর ৩৫ মিনিটের শেষাংশে সরকারের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আগামী নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট দেয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আওয়ামী লীগের জন্মই হচ্ছে জনগণের কল্যাণে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশের মানুষ শান্তি ও নিরাপদে থাকে। তাই দেশের উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে আবারও নৌকায় ভোট দিয়ে দেশসেবার সুযোগ দিন। আমরা আপনাদের উন্নয়ন দেব।
কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবর্ণজয়ন্তীর উদ্বোধন ॥ হেলিকপ্টারযোগে ময়মনসিংহ নেমে প্রথমেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ময়মনসিংহ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবর্ণজয়ন্তী ও এ্যালামনাই পুনর্মিলনী উদ্বোধন করেন। সারাদেশ থেকে আগত হাজারো কৃষিবিদ এ্যালামনাইদের উদ্দেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ব্যবসাবাণিজ্য করতে নয়, দেশের উন্নয়ন করতে ক্ষমতায় এসেছি। যেজন্য আমরা দেশকে আমদানিনির্ভর করে রাখতে চাই না। আমাদের লক্ষ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করে দেশকে আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ আর পিছাবে না, এগিয়ে যাবে। আমরা এ বাংলাদেশকে অবশ্যই এগিয়ে নিয়ে যাব। দেশের সবচেয়ে বড় অর্জনই হচ্ছে কৃষি খাত। ঘাটতি দেশ থেকে যাত্রা শুরু করে আমরা আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণনতা অর্জনের পথে। এ জন্য কৃষিবিদদের অবদানের কথা কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী কৃষিখাতের উন্নয়নে বেশি করে গবেষণার ওপর জোর দেন।
কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. রফিকুল হকের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার নজীবুর রহমান। প্রফেসর ড. শামসুল আলম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচিতি ও ৫০ বছরের অসামান্য অর্জনের সচিত্র প্রতিবেদন তুলে ধরেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে উপাচার্য প্রধানমন্ত্রীকে ক্রেস্ট উপহার দেন। প্রধানমন্ত্রীও এ সময় সকল কৃষিবিদের জন্য উপাচার্যের হাতে একটি সুদৃশ্য ক্রেস্ট উপহার দেন। সবার দাবির প্রতি একমত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এ বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও একটি ছাত্রী নিবাস নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন।
এ সময় মঞ্চে কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, এলজিআরডি মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, স্ব^রাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দিন খান আলমগীর, খাদ্যমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী আবদুল লতিফ বিশ্বাস, কৃষিবিদ ও আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা আবদুল মান্নান এমপি, কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনের সভাপতি ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিম, কৃষিবিদ শওকত মোমেন শাজাহান এমপি প্রমুখ।
No comments