নাগরিক সংহতি সমাবেশে সৈয়দ শামসুল হকঃ জামায়াতের অর্থের উৎস বন্ধ করুন
বাংলাদেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ এবং জামায়াত ইসলামীর অর্থের উৎস
বন্ধের দাবি জানিয়েছেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয়
উপদেষ্টা ও সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক।
যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবি জানিয়ে তিনি
বলেন, ‘৭১ সালেও এই দেশের তরুণরা জেগে উঠেছিল। এখন তরুণরা আবার জেগেছে।
বাংলাদেশের মাটিতে তরুণরা স্বাধীনতাকে সুসংহত করবে।’
একাত্তরের ঘাতক
দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা ও সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক
বলেছেন, ‘বাংলাদেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করতেই হবে। বন্ধ করতে হবে
জামায়াত ইসলামীর অর্থের উৎস।’
যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘৭১ সালেও এই দেশের তরুণরা জেগে উঠেছিল। এখন তরুণরা আবার জেগেছে। বাংলাদেশের মাটিতে তরুণরা স্বাধীনতাকে সুসংহত করবে।’
যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘৭১ সালেও এই দেশের তরুণরা জেগে উঠেছিল। এখন তরুণরা আবার জেগেছে। বাংলাদেশের মাটিতে তরুণরা স্বাধীনতাকে সুসংহত করবে।’
বাংলার মাটিতে জামায়াত-শিবিরের স্থান নেই মন্তব্য করে সৈয়দ শামসুল হক বলেন,
৭১ এ অর্জিত বিজয় ছিল আংশিক। সামনে অপেক্ষা করছে আদর্শের যুদ্ধ। সেই যুদ্ধে বিজয় আসবেই।’
বোববার বিকেলে নগরীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জামায়াত ইসলামীসহ সকল ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার অবিলম্বে সম্পন্ন করাসহ পাঁচ দফা দাবিতে সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী তরুণ উদ্যোগ চট্টগ্রাম এ নাগরিক সংহতি সমাবেশের আয়োজন করে।
জিয়া হায়দার রচিত নাট্যাধার’র পরিবেশনা সভা নাটক ‘স্মৃতি একাত্তর’ পরিবেশনার মধ্য দিয়ে সমাবেশটি শুরু হয়। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক শ্যামল ধর ও সদস্য রুবেল দাশ প্রিন্স। সংগঠনের পক্ষ থেকে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন আহ্বায়ক শরীফ চৌহান।
শরীফ চৌহানের সভাপতিত্বে সংহতি সমাবেশে সমাজ বিজ্ঞানী ও প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. অনুপম সেন বলেন, ‘স্বাধীনতার ৪০ বছর পর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দাবি করতে হচ্ছে এটা খুবই দুঃখের বিষয়। এত বড় হত্যাযজ্ঞ পৃথিবীর ইতিহাসে হয়নি। যারা বলেন বিচার স্বচ্ছ হতে হবে তাদের আমি ধিক্কার জানাই।’
ড. আনিসুজ্জামানকে নয় দিন আসামি পরে আইনজীবীরা জেরা করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এরচেয়ে স্বচ্ছ বিচার আর কি হতে পারে। যুদ্ধাপরাধের বিচার না হলে বিশ্ব ইতিহাস কলঙ্কজনক হয়ে থাকবে।’
সমাবেশে কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে এদেশের কিছু মানুষ বিরোধিতা করেছিল। তারা তালিকা তৈরি করে বাংলাদেশের শিল্পী, সাহিত্যিক বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে। স্বাধীন দেশে তারা পতাকা উড়িয়ে শহীদ মিনারে গেছে। কিন্তু তারা তাদের দোষ স্বীকার করেনি।
এখন অনেক মহল বিচার বানচালের চেষ্টা করছে অভিযোগ করে আবুল মোমেন বলেন,‘ যুদ্ধাপরাধের বিচার করে যদি আমরা ইতিহাসের দায় মেটাতে না পারি তবে জাতি ধারাবাহিক অগ্রগতির পথে এগিয়ে যেতে পারবে না।’
সংহতি সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ডা. মাহফুজুর রহমান, নারী নেত্রী নূরজাহান খান, ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সাবেক চেয়ারম্যান প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার, কমিউনিস্ট পার্টির চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আলী আজগর চৌধুরী, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবি সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনতোষ বড়ুয়া, নাট্যজন প্রদীপ দেওয়ানজী ও মোস্তফা কামাল যাত্রা, পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ হায়দার, সাংবাদিক হাসান ফেরদৌস, ওয়ার্ড কাউন্সিলর রেহানা কবির, উদীচীর চট্টগ্রাম জেলা সংসদের সাধারণ সম্পাদক সুনীল ধর, আবৃত্তি শিল্পী রাশেদ হাসান ও মিলি চৌধুরী, খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগরীর সহ-সভাপতি আশীষ সেন, আমরা করব জয় এর প্রধান নির্বাহী শওকত বাঙ্গালি, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম চট্টগ্রামের আহবায়ক নুর নবী দুলাল, গণতন্ত্রী পার্টির নেতা স্বপন সেন বক্তব্য রাখেন।
সিপিবি চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সভাপতি মৃণাল চৌধুরী, বাসদ নেতা অমৃত বড়ুয়া, পটিয়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাজেদা বেগম শিরু, শিক্ষিকা সালমা জাহান মিলি, কমিউনিস্ট পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল, ওর্য়ার্কাস পার্টি, পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ, যুব ইউনিয়ন, যুব মৈত্রী, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ফ্রণ্ট, ছাত্র মৈত্রী, খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগরী, আমরা করব জয়, প্রমা আবৃত্তি সংগঠন, বোধন, পরিবেশ ছাত্র ফোরাম ও চট্টগ্রাম অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট ফোরাম সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করে।
সংগঠনের পাঁচ দফা দাবি হলো- জামায়াত ইসলামীসহ ধর্মভিত্তিক সকল রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার অবিলম্বে সম্পন্ন করে রায় কার্যকর করা, জামায়াত-শিবিরসহ সকল ধর্মভিত্তিক দলের অর্থের উৎস বন্ধ করা, আইন শৃঙ্খলা রাকারী বাহিনী ও দেশের সাধারণ মানুষের উপর হামলাকারীদের শাস্তি প্রদান এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নতুন প্রজন্ম গড়ে তোলা।
সমাবেশ থেকে আগামী জানুয়ারি মাসকে গণসংযোগের মাস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, একই দাবিতে গত ১৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম প্রেস কাব প্রাঙ্গনে মানববন্ধন ও সমাবেশ করে সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী তরুণ উদ্যোগ।
No comments