পবিত্র কোরআনের আলো-উত্তম সম্প্রদায়ের তিনটি গুণের কথা বর্ণনা করা হয়েছে
১০৭. ওয়া আম্মাল্লাযী নাবইয়াদ্দ্বাত্ উজূহুহুম ফাফী রাহ্মাতিল্লাহি; হুম ফীহা- খা-লিদূন। ১০৮. তিলকা আ-ইয়া-তুল্লাহি নাতলূহা- আ'লাইকা বিলহাক্কি; ওয়ামাল্লাহু ইউরীদু যুলমান লিলআ'-লামীন। ১০৯. ওয়া লিল্লাহি মা-ফিছ্ ছামা-ওয়াতি ওয়ামা- ফিল আরদ্বি; ওয়া ইলাল্লাহি তুরজাউ'ল উমূর।
১১০. কুনতুম খাইরা উম্মাতিন উখরিজাত্ লিন্না-ছি তা'মুরূনা বিল মা'রূফি ওয়া তানহাওনা আ'নিল মুনকারি ওয়া তু'মিনূনা বিল্লাহি; ওয়ালাও আ-মানা আহ্লুল কিতা-বি লাকা-না খাইরান লাহুম; মিনহুমুল মু'মিনূনা ওয়া আকছারুহুমুল ফা-ছিক্বূন। [সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১০৭-১১০]
অনুবাদ : ১০৭. আর যাদের চেহারা উজ্জ্বল হবে তারা সেদিন আল্লাহর অফুরন্ত দয়ার আশ্রয়ে থাকবে, তারা সেখানে থাকবে চিরদিন।
১০৮. এর সব কিছুই হচ্ছে আল্লাহর নিদর্শন, আমি যথাযথভাবে সেগুলো আপনাকে পড়ে শোনাচ্ছি। কারণ আল্লাহ তায়ালার কোনো ইচ্ছা নেই সৃষ্টিকুলের ওপর জুলুম করার। অর্থাৎ তাঁর আয়াতগুলো গোপন রেখে পরে সেগুলোর জন্য বান্দাদের দায়ী করতে চান না।
১০৯. আকাশমণ্ডল ও জমিনে যা কিছু আছে সবই আল্লাহর জন্য। আর সব কিছুকেই একদিন আল্লাহর কাছে ফিরিয়ে নেওয়া হবে।
১১০. তোমরা হলে উত্তম সম্প্রদায়, মানবজাতির জন্য তোমাদের বের করে আনা হয়েছে। তোমরা সমাজের মানুষদের সত্য ও ন্যায়ের আদেশ দেবে এবং অসত্য ও অন্যায় থেকে বারণ করবে, আর তোমরা আল্লাহর ওপর ইমান আনবে। আহলে কিতাব যদি ইমান আনত, তবে কতই না ভালো হতো; তাদের মধ্যে কিছু কিছু ইমানদার ব্যক্তিও রয়েছে, তবে তাদের অধিকাংশই হচ্ছে পাপাচারী লোক।
ব্যাখ্যা : ১০৭ নম্বর আয়াতটি আগে বর্ণিত ১০৬ নম্বর আয়াতের ধারাবাহিকতায় এসেছে। শেষ বিচারের দিন যাদের চেহারা উজ্জ্বল হয়ে উঠবে, তাদের অফুরন্ত সৌভাগ্যের কথা এখানে বলা হয়েছে। আগের আয়াতে বলা হয়েছিল চেহারা মলিন হবে যাদের, তাদের ভয়াবহ পরিণতির কথা।
১০৮ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, এই যে মানুষকে সঠিক পথে চলার পথনির্দেশ এবং বেঠিক পথে চলা থেকে বিরত রাখার জন্য সতর্ক করা হচ্ছে_এ সব কিছুই আল্লাহর নিদর্শন। তিনি তাঁর রাসুলের মাধ্যমে এগুলো মানুষকে জানিয়ে দিচ্ছেন এ জন্য যে মানুষ সত্যকে খুঁজে না পাওয়া বা না জানার জন্য বিপথগামী না হয়। আল্লাহ তায়ালা চান না যে তাঁর দিক থেকে মানুষের ওপর কোনো রকম অবিচার হোক। অর্থাৎ আল্লাহর দেখানো পথ না জানার জন্য সে সৌভাগ্য থেকে বঞ্চিত হোক বা দুর্ভাগ্যের শিকার হোক। আল্লাহর পক্ষ থেকে রাসুল ও কিতাব পাঠানোর এটাই মর্মকথা। ১০৯ নম্বর আয়াতে এই বিশ্বজগতের সর্বত্র যে আল্লাহর একক মালিকানা এবং সব কিছুর জন্যই যে তাঁর কাছে জবাবদিহি করতে হবে, এ কথা পুনরায় ব্যক্ত করা হয়েছে।
১১০ নম্বর আয়াতে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, তোমরা হচ্ছ উত্তম সম্প্রদায়। এখানে 'তোমরা' বলতে উম্মতে মুহাম্মদীকেই বোঝানো হয়েছে। তবে উম্মতে মুহাম্মদী এমনই উত্তম উম্মত, তা অবশ্যই নয়। এখানে উত্তম উম্মত হওয়ার জন্য মোটা দাগের তিনটি গুণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এক. মানুষকে সত্য ও ন্যায়ের বা সৎ কাজের আদেশ করা। বলাবাহুল্য, মানুষকে আদেশ করার আগে নিজে তা করতে হবে। অর্থাৎ নিজে সত্য, ন্যায় ও সৎ কাজের ওপর দাঁড়াতে হবে। দুই. অসত্য, অন্যায় ও অসৎ কাজ থেকে বারণ করা। এখানেও মানুষকে বারণ করার আগে নিজে অসত্য, অন্যায় ও অসৎ কাজ থেকে দূরে থাকতে হবে। তিন. আল্লাহর ওপর ইমান রাখা। সত্যের ওপর বিশ্বাস হলো আল্লাহর ওপর ইমান আর আত্মবিশ্বাস হচ্ছে ইমানের অন্যতম অংশ। শুধু নামমাত্র মুসলমান হলেই উত্তম উম্মত হওয়া যাবে_এমন ধারণা ভ্রান্ত। উত্তম উম্মত হতে হলে উত্তম কাজগুলো করতে হবে। এ আয়াতের শেষাংশে আহলে কিতাবের মধ্যেও কেউ কেউ ইমানদার বলে বর্ণনা করা হয়েছে। ইমান কোনো সাম্প্রদায়িক ব্যাপার নয়। আর উত্তম উম্মত হওয়াটাও সাম্প্রদায়িক ব্যাপার নয়।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
অনুবাদ : ১০৭. আর যাদের চেহারা উজ্জ্বল হবে তারা সেদিন আল্লাহর অফুরন্ত দয়ার আশ্রয়ে থাকবে, তারা সেখানে থাকবে চিরদিন।
১০৮. এর সব কিছুই হচ্ছে আল্লাহর নিদর্শন, আমি যথাযথভাবে সেগুলো আপনাকে পড়ে শোনাচ্ছি। কারণ আল্লাহ তায়ালার কোনো ইচ্ছা নেই সৃষ্টিকুলের ওপর জুলুম করার। অর্থাৎ তাঁর আয়াতগুলো গোপন রেখে পরে সেগুলোর জন্য বান্দাদের দায়ী করতে চান না।
১০৯. আকাশমণ্ডল ও জমিনে যা কিছু আছে সবই আল্লাহর জন্য। আর সব কিছুকেই একদিন আল্লাহর কাছে ফিরিয়ে নেওয়া হবে।
১১০. তোমরা হলে উত্তম সম্প্রদায়, মানবজাতির জন্য তোমাদের বের করে আনা হয়েছে। তোমরা সমাজের মানুষদের সত্য ও ন্যায়ের আদেশ দেবে এবং অসত্য ও অন্যায় থেকে বারণ করবে, আর তোমরা আল্লাহর ওপর ইমান আনবে। আহলে কিতাব যদি ইমান আনত, তবে কতই না ভালো হতো; তাদের মধ্যে কিছু কিছু ইমানদার ব্যক্তিও রয়েছে, তবে তাদের অধিকাংশই হচ্ছে পাপাচারী লোক।
ব্যাখ্যা : ১০৭ নম্বর আয়াতটি আগে বর্ণিত ১০৬ নম্বর আয়াতের ধারাবাহিকতায় এসেছে। শেষ বিচারের দিন যাদের চেহারা উজ্জ্বল হয়ে উঠবে, তাদের অফুরন্ত সৌভাগ্যের কথা এখানে বলা হয়েছে। আগের আয়াতে বলা হয়েছিল চেহারা মলিন হবে যাদের, তাদের ভয়াবহ পরিণতির কথা।
১০৮ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, এই যে মানুষকে সঠিক পথে চলার পথনির্দেশ এবং বেঠিক পথে চলা থেকে বিরত রাখার জন্য সতর্ক করা হচ্ছে_এ সব কিছুই আল্লাহর নিদর্শন। তিনি তাঁর রাসুলের মাধ্যমে এগুলো মানুষকে জানিয়ে দিচ্ছেন এ জন্য যে মানুষ সত্যকে খুঁজে না পাওয়া বা না জানার জন্য বিপথগামী না হয়। আল্লাহ তায়ালা চান না যে তাঁর দিক থেকে মানুষের ওপর কোনো রকম অবিচার হোক। অর্থাৎ আল্লাহর দেখানো পথ না জানার জন্য সে সৌভাগ্য থেকে বঞ্চিত হোক বা দুর্ভাগ্যের শিকার হোক। আল্লাহর পক্ষ থেকে রাসুল ও কিতাব পাঠানোর এটাই মর্মকথা। ১০৯ নম্বর আয়াতে এই বিশ্বজগতের সর্বত্র যে আল্লাহর একক মালিকানা এবং সব কিছুর জন্যই যে তাঁর কাছে জবাবদিহি করতে হবে, এ কথা পুনরায় ব্যক্ত করা হয়েছে।
১১০ নম্বর আয়াতে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, তোমরা হচ্ছ উত্তম সম্প্রদায়। এখানে 'তোমরা' বলতে উম্মতে মুহাম্মদীকেই বোঝানো হয়েছে। তবে উম্মতে মুহাম্মদী এমনই উত্তম উম্মত, তা অবশ্যই নয়। এখানে উত্তম উম্মত হওয়ার জন্য মোটা দাগের তিনটি গুণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এক. মানুষকে সত্য ও ন্যায়ের বা সৎ কাজের আদেশ করা। বলাবাহুল্য, মানুষকে আদেশ করার আগে নিজে তা করতে হবে। অর্থাৎ নিজে সত্য, ন্যায় ও সৎ কাজের ওপর দাঁড়াতে হবে। দুই. অসত্য, অন্যায় ও অসৎ কাজ থেকে বারণ করা। এখানেও মানুষকে বারণ করার আগে নিজে অসত্য, অন্যায় ও অসৎ কাজ থেকে দূরে থাকতে হবে। তিন. আল্লাহর ওপর ইমান রাখা। সত্যের ওপর বিশ্বাস হলো আল্লাহর ওপর ইমান আর আত্মবিশ্বাস হচ্ছে ইমানের অন্যতম অংশ। শুধু নামমাত্র মুসলমান হলেই উত্তম উম্মত হওয়া যাবে_এমন ধারণা ভ্রান্ত। উত্তম উম্মত হতে হলে উত্তম কাজগুলো করতে হবে। এ আয়াতের শেষাংশে আহলে কিতাবের মধ্যেও কেউ কেউ ইমানদার বলে বর্ণনা করা হয়েছে। ইমান কোনো সাম্প্রদায়িক ব্যাপার নয়। আর উত্তম উম্মত হওয়াটাও সাম্প্রদায়িক ব্যাপার নয়।
গ্রন্থনা : মাওলানা হোসেন আলী
No comments