আবদুল মোতালেব :একটি নাম, একটি ইতিহাস by পলাশ আহসান
একজন মানুষ ৩শ' শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা! এই মানুষটির নাম আবদুল মোতালেব। বসবাস করতেন সাতক্ষীরার প্রত্যন্ত এলাকায়। তিনি ২০০২ সালের ২ জুন রাজধানীর সিকদার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শেষবারের মতো শ্বাস ছাড়েন।
শিক্ষা প্রসার তার কাছে ছিল আন্দোলন। এই আন্দোলন তিনি শুরু করেছিলেন মুক্তিযুদ্ধের পরই। মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত এর সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন আষ্টেপৃষ্ঠে। পেশায় তিনি ছিলেন সাংবাদিক। বাংলাদেশ অবজারভার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধিত্ব করেছেন দীর্ঘদিন। জেলার প্রথম দৈনিক কাফেলা সম্পাদনা করতেন। ছিলেন বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির পরিচালনা পরিষদের সদস্য। বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন আমৃত্যু।
১৯৬৮ সালে আবদুল মোতালেব নিজেদের পারিবারিক প্রেস থেকে প্রকাশ করেন সাপ্তাহিক কাফেলা। ১৯৯২ সালে সাপ্তাহিক পত্রিকাটি দৈনিকে রূপান্তর করেন। ছাপাখানা ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকার করণে ভালো যোগাযোগ ছিল শিক্ষকদের সঙ্গে। একই কারণে সম্যক ধারণা ছিল তৎকালীন পুরো মহকুমার শিক্ষা পরিস্থিতির ওপর।
সে সময় সাতক্ষীরা ও এর আশপাশ এলাকায় শিক্ষিতের হার ছিল খুবই কম। বিশেষ করে গ্রামে। হাইস্কুল ছিল না পর্যাপ্ত। প্রাইমারি স্কুল ছিল না বহু ইউনিয়নে। কলেজে পড়তে হলে হয় সাতক্ষীরা না হয় খুলনা যেতে হতো। এমনকি মাদ্রাসাও ছিল না বেশিরভাগ এলাকায়। ছেলেমেয়ে একই স্কুলে পড়তে হবে বলে বহু মেয়ে নিরক্ষর থাকত। এ অবস্থা থেকে মুক্তি চাইতেন তিনি। প্রথমে ভেবেছিলেন, পত্রিকায় রিপোর্ট করে বোধ হয় সমস্যার সমাধান হবে। কিন্তু তা যখন হলো না তখন হতাশ হলেন। অবশেষে নামলেন আন্দোলনে। সঙ্গে নিলেন পড়াশোনা শেষ করে বসেছিল এমন বহু তরুণ-তরুণীকে। শিক্ষার হার কম_ এমন এলাকাগুলোতে ঘুরলেন দলে দলে। এলাকার লোকজনকে বোঝালেন। বাড়ি ঘুরে খুঁজে বের করলেন শিক্ষানুরাগী ও শিক্ষার্থী। সারাক্ষণ ছোটাছুটি করলেন বোর্ড, বিশ্ববিদ্যালয়, মন্ত্রণালয়ে। অবশেষে নির্মিত হতে থাকল একের পর এক প্রতিষ্ঠান। শিক্ষার প্রসার হলো।
সরাসরি তার প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কুমিরা মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, সাতক্ষীরা দিবানৈশ কলেজ, ছফুরননেছা মহিলা কলেজ, কুমিরা গালর্স হাইস্কুল, তালতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, এ. করিম মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, নবারুন বালিকা বিদ্যালয় ও আইনুদ্দীন মহিলা মাদ্রাসা। কলেজ ও হাইস্কুলের পাশাপাশি তার প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ছিল মাদ্রাসা, প্রাইমারি স্কুল ও রেজিস্টার্ড প্রাইমারি স্কুল। এ ছাড়া আবদুল মোতালেব সাতক্ষীরা সিটি কলেজ, দাঁতভাঙ্গা কলেজ, কারিমা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ভালুকা চাঁদপুর কলেজ, মাহমুদপুর সীমান্ত আদর্শ ডিগ্রি কলেজ, কলারোয়া সোনার বাংলা কলেজ, শহীদ স্মৃতি কলেজ প্রতিষ্ঠায় নানাভাবে সহায়তা করেছেন।
মৃত্যুর সময় আবদুল মোতালেবের বয়স হয়েছিল ৬৩। আজও এই মৃত্যুকে অকাল এবং আকস্মিক বলেন সাতক্ষীরাবাসী। সাতক্ষীরাজুড়ে তার প্রতিষ্ঠানগুলো মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। তার জন্ম ১৯৩৯ সালে, পশ্চিমবঙ্গের বসিরহাট জেলার বড়গাছা গ্রামে। বাবা আবদুল হামিদ সাহিত্য রত্ন। মা সফুন্নেসা বেগম। স্ত্রী আমিনা বেগম। ৫ কন্যা ও ২ পুত্রের জনক তিনি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও নানা সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন আবদুল মোতালেব। সাংগঠনিক দক্ষতার জুড়ি ছিল না তার।
palash_ahasan2003@yahoo.com
১৯৬৮ সালে আবদুল মোতালেব নিজেদের পারিবারিক প্রেস থেকে প্রকাশ করেন সাপ্তাহিক কাফেলা। ১৯৯২ সালে সাপ্তাহিক পত্রিকাটি দৈনিকে রূপান্তর করেন। ছাপাখানা ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকার করণে ভালো যোগাযোগ ছিল শিক্ষকদের সঙ্গে। একই কারণে সম্যক ধারণা ছিল তৎকালীন পুরো মহকুমার শিক্ষা পরিস্থিতির ওপর।
সে সময় সাতক্ষীরা ও এর আশপাশ এলাকায় শিক্ষিতের হার ছিল খুবই কম। বিশেষ করে গ্রামে। হাইস্কুল ছিল না পর্যাপ্ত। প্রাইমারি স্কুল ছিল না বহু ইউনিয়নে। কলেজে পড়তে হলে হয় সাতক্ষীরা না হয় খুলনা যেতে হতো। এমনকি মাদ্রাসাও ছিল না বেশিরভাগ এলাকায়। ছেলেমেয়ে একই স্কুলে পড়তে হবে বলে বহু মেয়ে নিরক্ষর থাকত। এ অবস্থা থেকে মুক্তি চাইতেন তিনি। প্রথমে ভেবেছিলেন, পত্রিকায় রিপোর্ট করে বোধ হয় সমস্যার সমাধান হবে। কিন্তু তা যখন হলো না তখন হতাশ হলেন। অবশেষে নামলেন আন্দোলনে। সঙ্গে নিলেন পড়াশোনা শেষ করে বসেছিল এমন বহু তরুণ-তরুণীকে। শিক্ষার হার কম_ এমন এলাকাগুলোতে ঘুরলেন দলে দলে। এলাকার লোকজনকে বোঝালেন। বাড়ি ঘুরে খুঁজে বের করলেন শিক্ষানুরাগী ও শিক্ষার্থী। সারাক্ষণ ছোটাছুটি করলেন বোর্ড, বিশ্ববিদ্যালয়, মন্ত্রণালয়ে। অবশেষে নির্মিত হতে থাকল একের পর এক প্রতিষ্ঠান। শিক্ষার প্রসার হলো।
সরাসরি তার প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কুমিরা মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, সাতক্ষীরা দিবানৈশ কলেজ, ছফুরননেছা মহিলা কলেজ, কুমিরা গালর্স হাইস্কুল, তালতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, এ. করিম মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, নবারুন বালিকা বিদ্যালয় ও আইনুদ্দীন মহিলা মাদ্রাসা। কলেজ ও হাইস্কুলের পাশাপাশি তার প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ছিল মাদ্রাসা, প্রাইমারি স্কুল ও রেজিস্টার্ড প্রাইমারি স্কুল। এ ছাড়া আবদুল মোতালেব সাতক্ষীরা সিটি কলেজ, দাঁতভাঙ্গা কলেজ, কারিমা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ভালুকা চাঁদপুর কলেজ, মাহমুদপুর সীমান্ত আদর্শ ডিগ্রি কলেজ, কলারোয়া সোনার বাংলা কলেজ, শহীদ স্মৃতি কলেজ প্রতিষ্ঠায় নানাভাবে সহায়তা করেছেন।
মৃত্যুর সময় আবদুল মোতালেবের বয়স হয়েছিল ৬৩। আজও এই মৃত্যুকে অকাল এবং আকস্মিক বলেন সাতক্ষীরাবাসী। সাতক্ষীরাজুড়ে তার প্রতিষ্ঠানগুলো মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। তার জন্ম ১৯৩৯ সালে, পশ্চিমবঙ্গের বসিরহাট জেলার বড়গাছা গ্রামে। বাবা আবদুল হামিদ সাহিত্য রত্ন। মা সফুন্নেসা বেগম। স্ত্রী আমিনা বেগম। ৫ কন্যা ও ২ পুত্রের জনক তিনি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও নানা সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন আবদুল মোতালেব। সাংগঠনিক দক্ষতার জুড়ি ছিল না তার।
palash_ahasan2003@yahoo.com
No comments