জীবনযাত্রার ব্যয়-সংকট উত্তরণের পথ বের করুন
রাজধানীতে যাঁদের বসবাস, তাঁরা জানেন সংসার চালাতে কী সংগ্রাম করতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে দুজনের আয়েও সংসার চলে না। অনেকে বাড়তি আয়ের জন্য বাড়তি কর্মসংস্থানের সুযোগ খোঁজেন। জীবনযাত্রার ব্যয় যে হারে বাড়ছে সে হারে আয় বাড়ছে না। আর এই শ্রেণীর মানুষের সংখ্যাই রাজধানীতে বেশি।
আবার এই শ্রেণীটিই রক্ষা করে সমাজের ভারসাম্য। সমাজের সেই ভরকেন্দ্রে প্রচণ্ড ঝাঁকুনি লেগেছে। নাভিশ্বাস উঠেছে জীবনযাত্রার ব্যয় নির্বাহ করতে গিয়ে। কালের কণ্ঠে ছয় পর্বে প্রকাশিত ধারাবাহিক প্রতিবেদনে সে বিষয়টিই উঠে এসেছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর খানা আয়-ব্যয় জরিপ-২০১০ থেকে উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাঁচ বছরে জাতীয় পর্যায়ে পারিবারিক আয় বেড়েছে ৫৯ শতাংশ, আর খরচ বেড়েছে ৮৪.৫ শতাংশ। জরিপে বলা হয়েছে, ২০০৫ সালে গড় জাতীয় পারিবারিক আয় ছিল সাত হাজার ২০৩ টাকা। ২০১০ সালে তা দাঁড়ায় ১১ হাজার ৪৭৯ টাকায়। বৃদ্ধির হার ৫৯ শতাংশ। শহুরে পরিবারগুলোর গড় মাসিক আয় ১৬ হাজার ৪৭৫ টাকা, গ্রামে ৯ হাজার ৬৪৮ টাকা। সবচেয়ে বেশি দরিদ্র পরিবারের সঙ্গে সমাজের উঁচু স্তরের মানুষের আয়ের বৈষম্য বেড়েছে। সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, প্রতিবছর বাজেটে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা খাতে বরাদ্দ বাড়লেও সেবার মান বাড়ছে না। বরাদ্দের টাকা খরচ হচ্ছে ভবন নির্মাণে, মানোন্নয়নে বিনিয়োগ বাড়ছে না। সরকারি হাসপাতালে ডাক্তার থাকেন না, বেসরকারি ক্লিনিকেও ভালো সেবা পাওয়া যায় না, স্কুলগুলোতে পড়াশোনা হয় না। তদারকিটাও যদি ঠিকমতো সরকার করতে পারত, তা হলে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়ত, এসব খাতে পারিবারিক খরচ কমত। কিন্তু প্রকৃত তদারকির অভাবে ভোক্তার খরচ বাড়ছে। অবস্থাদৃষ্টে এমন মনে হতে পারে, সেবা খাত থেকে সরকার একরকম উঠেই এসেছে। সেবা দেওয়ার সৎ উদ্দেশ্য সরকারের নেই।
শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য, বাসস্থান- সব ক্ষেত্রেই ব্যয় বেড়েছে কয়েক গুণ। আগে বাড়িভাড়ার সংস্থান করতেই অনেকের কষ্ট হয়। অনেকেই রাজধানী থেকে পরিবারের সদস্যদের গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন। গত এক দশকে বাজেটের আকার ৩৮ হাজার কোটি টাকা থেকে বেড়ে এক লাখ ৩৮ হাজার কোটি টাকা হয়েছে। মূল্যস্ফীতি বেড়ে দুই অঙ্কে ঠেকেছে। প্রতিবছর ১২ থেকে ১৪ শতাংশ হারে বাড়ছে জীবনযাত্রার ব্যয় ও দ্রব্যমূল্য। বাড়িভাড়া বাড়ছে ১৫ শতাংশ হারে। এর সঙ্গে সন্তানদের শিক্ষা-ব্যয় যুক্ত হলে জীবনযাত্রার ব্যয় কয়েক গুণ বেড়ে যায়। এক গবেষণায় দেখানো হয়েছে, মাধ্যমিক পর্যায়ে সরকারি স্কুলে শিক্ষার্থীপ্রতি বছরে সরকারের খরচ পাঁচ হাজার ২৩২ টাকা। বেসরকারি স্কুলে দুই হাজার ৪৬১ টাকা। ঢাকার মাধ্যমিক পর্যায়ের একজন শিক্ষার্থীর পেছনে পরিবারের ব্যয় কয়েক গুণ বেশি। অর্থনীতিবিদ ও সমাজ গবেষকদের বরাত দিয়ে কালের কণ্ঠে প্রকাশিত ধারাবাহিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সন্তানের শিক্ষা রাজধানীর মধ্য-আয়ের পরিবারের খরচের অন্যতম প্রধান খাত। প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষা খাতে খরচ মোট সংসার খরচের ২০-২৫ শতাংশের মধ্যে থাকলেও শিক্ষার মাধ্যম ও স্তর অনুযায়ী এটি অনেক পরিবারের খাবারের ব্যয়কে ছাড়িয়ে যায়। স্কুলের বেতন ও উপকরণ খরচের চেয়ে অনেক বেশি খরচ কোচিংয়ে। এর বাইরে রয়েছে স্কুল ও কোচিংয়ে যাতায়াত ব্যয়, সময়ের অপচয়।
সব মিলিয়ে রাজধানীতে জীবনযাত্রার ব্যয় এমনভাবে বেড়েছে, যাতে এখানে বসবাস অনেকের জন্য অসম্ভব হয়ে পড়েছে। মধ্যবিত্ত শ্রেণীই সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী। ধনী ও নিম্ন-আয়ের মানুষের মধ্যে ব্যবধান বেড়েছে। বেড়েছে আয় বৈষম্য। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের পথ সরকারকেই খুঁজে বের করতে হবে। সমাজের ভরকেন্দ্র নড়বড়ে হয়ে গেলে সমাজ কি ঠিক থাকবে? সমাজকে রক্ষা করার জন্য জীবনযাত্রার ব্যয় কমিয়ে আনার চেষ্টা করতে হবে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর খানা আয়-ব্যয় জরিপ-২০১০ থেকে উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাঁচ বছরে জাতীয় পর্যায়ে পারিবারিক আয় বেড়েছে ৫৯ শতাংশ, আর খরচ বেড়েছে ৮৪.৫ শতাংশ। জরিপে বলা হয়েছে, ২০০৫ সালে গড় জাতীয় পারিবারিক আয় ছিল সাত হাজার ২০৩ টাকা। ২০১০ সালে তা দাঁড়ায় ১১ হাজার ৪৭৯ টাকায়। বৃদ্ধির হার ৫৯ শতাংশ। শহুরে পরিবারগুলোর গড় মাসিক আয় ১৬ হাজার ৪৭৫ টাকা, গ্রামে ৯ হাজার ৬৪৮ টাকা। সবচেয়ে বেশি দরিদ্র পরিবারের সঙ্গে সমাজের উঁচু স্তরের মানুষের আয়ের বৈষম্য বেড়েছে। সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, প্রতিবছর বাজেটে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা খাতে বরাদ্দ বাড়লেও সেবার মান বাড়ছে না। বরাদ্দের টাকা খরচ হচ্ছে ভবন নির্মাণে, মানোন্নয়নে বিনিয়োগ বাড়ছে না। সরকারি হাসপাতালে ডাক্তার থাকেন না, বেসরকারি ক্লিনিকেও ভালো সেবা পাওয়া যায় না, স্কুলগুলোতে পড়াশোনা হয় না। তদারকিটাও যদি ঠিকমতো সরকার করতে পারত, তা হলে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়ত, এসব খাতে পারিবারিক খরচ কমত। কিন্তু প্রকৃত তদারকির অভাবে ভোক্তার খরচ বাড়ছে। অবস্থাদৃষ্টে এমন মনে হতে পারে, সেবা খাত থেকে সরকার একরকম উঠেই এসেছে। সেবা দেওয়ার সৎ উদ্দেশ্য সরকারের নেই।
শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য, বাসস্থান- সব ক্ষেত্রেই ব্যয় বেড়েছে কয়েক গুণ। আগে বাড়িভাড়ার সংস্থান করতেই অনেকের কষ্ট হয়। অনেকেই রাজধানী থেকে পরিবারের সদস্যদের গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন। গত এক দশকে বাজেটের আকার ৩৮ হাজার কোটি টাকা থেকে বেড়ে এক লাখ ৩৮ হাজার কোটি টাকা হয়েছে। মূল্যস্ফীতি বেড়ে দুই অঙ্কে ঠেকেছে। প্রতিবছর ১২ থেকে ১৪ শতাংশ হারে বাড়ছে জীবনযাত্রার ব্যয় ও দ্রব্যমূল্য। বাড়িভাড়া বাড়ছে ১৫ শতাংশ হারে। এর সঙ্গে সন্তানদের শিক্ষা-ব্যয় যুক্ত হলে জীবনযাত্রার ব্যয় কয়েক গুণ বেড়ে যায়। এক গবেষণায় দেখানো হয়েছে, মাধ্যমিক পর্যায়ে সরকারি স্কুলে শিক্ষার্থীপ্রতি বছরে সরকারের খরচ পাঁচ হাজার ২৩২ টাকা। বেসরকারি স্কুলে দুই হাজার ৪৬১ টাকা। ঢাকার মাধ্যমিক পর্যায়ের একজন শিক্ষার্থীর পেছনে পরিবারের ব্যয় কয়েক গুণ বেশি। অর্থনীতিবিদ ও সমাজ গবেষকদের বরাত দিয়ে কালের কণ্ঠে প্রকাশিত ধারাবাহিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সন্তানের শিক্ষা রাজধানীর মধ্য-আয়ের পরিবারের খরচের অন্যতম প্রধান খাত। প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষা খাতে খরচ মোট সংসার খরচের ২০-২৫ শতাংশের মধ্যে থাকলেও শিক্ষার মাধ্যম ও স্তর অনুযায়ী এটি অনেক পরিবারের খাবারের ব্যয়কে ছাড়িয়ে যায়। স্কুলের বেতন ও উপকরণ খরচের চেয়ে অনেক বেশি খরচ কোচিংয়ে। এর বাইরে রয়েছে স্কুল ও কোচিংয়ে যাতায়াত ব্যয়, সময়ের অপচয়।
সব মিলিয়ে রাজধানীতে জীবনযাত্রার ব্যয় এমনভাবে বেড়েছে, যাতে এখানে বসবাস অনেকের জন্য অসম্ভব হয়ে পড়েছে। মধ্যবিত্ত শ্রেণীই সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী। ধনী ও নিম্ন-আয়ের মানুষের মধ্যে ব্যবধান বেড়েছে। বেড়েছে আয় বৈষম্য। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের পথ সরকারকেই খুঁজে বের করতে হবে। সমাজের ভরকেন্দ্র নড়বড়ে হয়ে গেলে সমাজ কি ঠিক থাকবে? সমাজকে রক্ষা করার জন্য জীবনযাত্রার ব্যয় কমিয়ে আনার চেষ্টা করতে হবে।
No comments