হারুনের জন্য লিখতে হবে কখনো ভাবিনি

একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধা হারুনুর রশিদের মুখে এখন সেই পরিচিত হাসিটি আর কেউ দেখবেন না। মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তীকালে (১৯৭২-১৯৭৫) বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও পরে কোষাধ্যক্ষ হারুনের প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল তাঁর প্রাণখোলা হাসি।


কিন্তু আমরা তো ভাবিনি তাঁর কাছ থেকে এত বড় দুঃসংবাদ শুনতে হবে। তাঁর একমাত্র ছেলে অর্ণব ক্যানসারে আক্রান্ত। মেধাবী অর্ণব রাজউক উত্তরা মডেল কলেজ থেকে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়ে যখন এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্নে বিভোর, তখনই ধরা পড়ল তার বোন ক্যানসার।
হারুন তাঁর যা কিছু সহায়সম্বল ছিল, সব ব্যয় করলেন ছেলে অর্ণবের চিকিৎসায়। অর্ণব কিছুটা ভালোও হলো। অর্ণব এ-লেভেল পরীক্ষা দিল। অসাধারণ সাফল্য। পাঁচ বিষয়ে ৯২ শতাংশ নম্বর পেয়েছে।
কিন্তু কে জানত বড় দুর্ভাগ্য তাঁর জন্য অপেক্ষা করছে। কয়েক দিন ধরে তাঁর একটু একটু জ্বর। জানা গেল, তাঁর দুটি ফুসফুসেই পানি জমেছে।
হারুন ছাত্র ইউনিয়ন করেছেন। কমিউনিস্ট পার্টি করেছেন। মণি সিংহ-ফরহাদ ভাইদের কাছ থেকে দেশপ্রেমের দীক্ষা নিয়েছেন। ধনসম্পদের মোহ তাঁর কোনো দিনই ছিল না। তাই ছেলের চিকিৎসার জন্য ব্যয় করার সংগতিও তাঁর সীমিত। হারুন এখন প্রায় নিঃস্ব। অসহায়।
অর্ণবের বয়স মাত্র ২০। তাঁর অফুরন্ত প্রাণশক্তি ক্যানসারকে নিয়ন্ত্রণে এনেছে, এখন ফুসফুসের ব্যাধির কাছে কি তাঁর পরাজয় ঘটবে? আমরা জানি না, এ ব্যাধি বোন ক্যানসারের বিস্তৃতি কি না। চিকিৎসকেরা তাঁর ফুসফুসে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু এখন তো হারুনের হাত শূন্য। তাই ছেলের চিকিৎসা প্রায় বন্ধ।
হারুনের জন্য কিছু লিখতে হবে, আমরা কখনো ভাবিনি। আমরা যাঁরা হারুনকে খুব ঘনিষ্ঠভাবে জানি, দেশে বা বিদেশে যেখানেই থাকি, আমরা কি আজ এ দুঃসময়ে তাঁর পাশে দাঁড়াতে পারি না? অর্ণবকে বাঁচাতে অন্তত ১৫ লাখ টাকা দরকার।
হারুনুর রশিদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর ০০১২২০০০৩১৩৫১, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, মিরপুর, ঢাকা। তাঁর ফোন নম্বর: +৮৮-০১৭১৫৬৫৮৭৫৬
সত্তর দশকে হারুনের সহকর্মীবৃন্দ
ঢাকা।

No comments

Powered by Blogger.