টে লি ফো নে না গ রি ক ম ন্ত ব্য-জনগণকে জিম্মি করে হরতাল নয়
প্রিয় পাঠক, আপনাদের সরাসরি মন্তব্য নিয়ে আমাদের নিয়মিত আয়োজনে এবার বিএনপির হরতাল ডাকার ইঙ্গিত: আপনার মন্তব্য কী? প্রশ্নে টেলিফোনের মাধ্যমে মন্তব্য আহ্বান করা হয়েছিল। এ ব্যাপারে আপনারা উৎসাহব্যঞ্জক সাড়া দিয়েছেন। মন্তব্যগুলোর কিছু অংশ আজ ছাপা হলো; বাকি অংশ আগামীকাল প্রকাশিত হবে।
রহিমা আক্তার, লেখক, তেজগাঁও, ঢাকা
বিরোধী দল বিরোধিতা করবে, এটাই স্বাভাবিক। আজ এইচএসসি পরীক্ষার দিন বগুড়ায় হরতাল, এটা খুব নিন্দনীয়। বর্তমানে সরকার ও বিরোধী দলের ক্যাডারদের হাতে যেভাবে দামি অস্ত্র দেখা যায়, এতে করে হরতালের ডাক দিলে জনসাধারণ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে। সরকারি দলে থাকা অবস্থায় জনগণের জন্য কষ্ট হয়, আর বিরোধী দলে গেলেই জনগণের জন্য ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েন।
মঞ্জুর মোর্শেদ চৌধুরী, সাবেক ফুটবলার
পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা
সেই রাবণ নেই, অযোধ্যাও নেই, তাই হরতালের জৌলুশ এখন নেই। তাই বর্তমানে কেউ হরতাল চায় না। গত নির্বাচনে বিএনপি তাদের ব্যর্থতার কারণে হেরে গেছে। এরপর ভোলার উপনির্বাচনেও আওয়ামী লীগের প্রার্থীর জয় প্রমাণ করে, তাদের জনপ্রিয়তা মোটেও কমেনি। তার পরও রাজশাহীর মহাসমাবেশে হরতাল দেওয়ার ইঙ্গিত হলো, অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা। এখানে নেত্রী নিজেই সন্দিহান, হরতাল সফল হবে কি না।
মো. শামসুল আলম কাগজী
ব্যবসায়ী, গোসাইরহাট, শরীয়তপুর
সন্ত্রাস, হত্যা, গুম, নারী নির্যাতন, দখলদারি, গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানিসংকট—এগুলো দেশের নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার, যা জাতীয় জীবনে অতিষ্ঠ হলেও মানুষ সহ্য করে যাচ্ছে। হরতাল একটি অতি দুর্ভোগসৃষ্টিকারী বিষয়। তাই বিএনপিকে বলব এখনই হরতাল নয়, আগে নিজের ঘর গোছান। এখনো ১৮ জেলা কমিটি গঠন বাকি। যেভাবে নীরব আছেন, নীরব থাকুন আরও দুই বছর। প্রতি জেলায় সমাবেশ করে দলকে আরও শক্তিশালী করুন। বিএনপির রাজনীতি যদি জনকল্যাণে হয়, তবে হরতালে হাজার হাজার কোটি টাকার ব্যবসায়িক ক্ষতি ও জনদুর্ভোগের বিষয় বিবেচনা করে আপাতত হরতালের মতো চরম জনভোগান্তিমূলক সিদ্ধান্ত না নেওয়াই ভালো হবে।
মো. মুজাহিদুল ইসলাম খান, শিক্ষার্থী
জেলা পরিষদ মোড়, লালমনিরহাট
শক্তিশালী সংগঠন ছাড়া দুর্বার আন্দোলন অসম্ভব। সাংগঠনিক দিক থেকে বিএনপি এখন বেশ দুর্বল। তা ছাড়া দলটির বর্তমান নেতৃত্ব জিয়াউর রহমানের জাতীয়তাবাদী আদর্শকে কতটুকু ধারণ করে, সে ব্যাপারে বিতর্ক আছে। তাই খালেদা জিয়াকে এ ব্যাপারে অনেক ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
আবুল কালাম, চাকরিজীবী, মিরপুর, ঢাকা
গণতন্ত্র ধ্বংস, বিরোধী দলের ওপর নির্যাতন, ছাত্রলীগের সীমাহীন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, আইনশৃঙ্খলার অবনতি, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব—সর্বোপরি মনে হয়, এ সরকার জনগণের সরকার নয়, শুধু আওয়ামী লীগের সরকার। তাই সরকার পতনের জন্য হরতাল কর্মসূচি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
হরিদাস কুমার, শিক্ষার্থী
আইন বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
হরতাল একটি দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তিকে অনেকাংশে দুর্বল করে ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার হুমকিস্বরূপ। কোনো বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সমঝোতা অপরিহার্য। সবকিছু আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে যাওয়া উচিত।
এস ডি রুবেল পলাশ, শিক্ষার্থী, টাঙ্গাইল।
হরতাল জাতীয় অর্থনীতির জন্য অভিশাপ। কিন্তু পরিস্থিতি যদি হরতাল দিতে বাধ্য করে, তবে আমি তা সমর্থন করি।
সুব্রত ঘোষ, চিকিৎসক, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট
মেডিকেল কলেজ, ঢাকা
হরতাল মানেই বিধ্বংসী কার্যকলাপ। এটা দেশকে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করে দেয়। হরতালের বিধ্বংসী কর্মসূচি কখনোই কোনো আন্দোলনের মূল চাবিকাঠি হতে পারে না। বেগম খালেদা জিয়ার কাছ থেকে আমরা এ ধরনের আহ্বান আশা করতে পারি না।
মো. লুৎফর রহমান, ব্যবসায়ী, মির্জাপুর, টাঙ্গাইল।
এখন হরতালের ডাক দিলে তা সফল হবে এবং হরতাল ডাকার মতো বেশ কিছু ইস্যু আছে। কিন্তু আমি মনে করি, বিএনপি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল। এ দেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থেকে জনকল্যাণে কাজ করেছে কয়েকবার। জনগণের কল্যাণই রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। জনগণকে জিম্মি করে হরতাল আমি সমর্থন করি না। আমি চাই, জনগণের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে হরতাল থেকে সরে জনগণকে বুঝিয়ে দেবে যে হরতাল দেশ ও জনগণের কল্যাণ করে না।
কামরুজ্জামান, শিক্ষার্থী, মান্দা, নওগাঁ।
সরকার যদি স্বৈরাচারী মনোভাব ত্যাগ না করে; হত্যা, বিরোধী দলের ওপর দমন-পীড়ন ও নামবদলের রাজনীতি পরিত্যাগ না করে, তবে হরতালের প্রয়োজন আছে।
মো. এনামউদ্দিন এনাম
চাকরজীবী, খোলামোড়া, কেরানীগঞ্জ।
আমার মনে হয়, এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিএনপির নেতা-কর্মীদের এক বিরাট অংশ ছিটকে পড়ায় আন্দোলন সফল হওয়ার বিষয়ে নেত্রীর মনে সংশয় সৃষ্টি হতে পারে। সে জন্যই সমাবেশে সমবেত নেতা-কর্মীদের মতামত চাওয়া হয়ে থাকতে পারে। সরকারি দলের উচিত হবে, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিরোধী দলের প্রতি কিছুটা নমনীয় মনোভাব প্রদর্শন করা, তাহলে তাদের পুনরায় ক্ষমতায় আসার পথ সুগম হতে পারে।
রিপন, শিক্ষার্থী, ভুয়াপুর, টাঙ্গাইল
গত ১৬ মাসে সরকার দেশ চালাতে ব্যর্থ হয়েছে। এ সময়ে বিএনপি সরকারকে সহযোগিতাই করেছে। সে হিসেবে এখন দেশের স্বার্থে হরতাল সময়োপযোগী পদক্ষেপ বলে আমি মনে করি।
মো. মাসুদ, চাকরিজীবী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা
হরতাল না দেওয়াই সবচেয়ে ভালো। বর্তমানে পরীক্ষা চলছে। বিরোধী দলকে হরতালের বিকল্প কোনো আন্দোলনের চিন্তা করতে হবে। কারণ হরতাল খুবই ক্ষতিকর।
রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী, চাকরিজীবী, চট্টগ্রাম
আমার মনে হয়, হরতালের বিষয়ে বিএনপির আরও একটু চিন্তা করা প্রয়োজন। কারণ হরতাল হলো প্রতিবাদের সর্বশেষ হাতিয়ার। হরতালের কারণে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়ে। এতে সরকারের কোনো ক্ষতি হয় না। বিএনপি প্রতিবাদ করতে চাইলে হরতালের বিকল্প চিন্তা করা উচিত।
মো. তাজুল ইসলাম, চাকরিজীবী
আজিমপুর, ঢাকা
প্রায় দেড় বছরে মহাজোট সরকার প্রতিটি ক্ষেত্রে যে চরম ব্যর্থ হয়েছে, তাতে করে হরতাল আরও আগে দেওয়া উচিত ছিল। কারণ হরতাল রাজনৈতিক দলের গণতান্ত্রিক অধিকার। তদুপরি বিরোধী দলকে শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এ জন্য হরতাল হওয়া উচিত।
মাহফুজ মুজাহিদ, শিক্ষার্থী
ফরেস্ট্রি সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, চট্টগ্রাম
যখন ছাত্রলীগের সংঘর্ষে সাধারণ ছাত্র মারা যায়, তখন বিএনপি হরতালে যেতে পারত। কিন্তু এখন হরতালে যাওয়ার মতো কোনো ইস্যু আছে বলে আমি মনে করি না। এ জন্য আরও কিছুদিন অপেক্ষা করা উচিত।
কায়সারুল আলম, ব্যবসায়ী, ফকিরহাট, চট্টগ্রাম
আমি মনে করি, হরতালের মতো কোনো পরিস্থিতি এখনো তৈরি হয়নি। তবে সরকারকেও খেয়াল রাখতে হবে, বিএনপি যেন হরতালে যেতে বাধ্য না হয়।
নাসির সিকদার, ব্যবসায়ী, সখীপুর, টাঙ্গাইল
আমি হরতালের বিপক্ষে। কোনোভাবেই হরতাল সমর্থন করি না।
মুশফিকুর রহমান, চাকরিজীবী, ভৈরব, কিশোরগঞ্জ
জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলনের বিভিন্ন কৌশলের মধ্যে হরতাল হলো চরম বা শেষ কৌশল। জনগণ অসহযোগিতার মাধ্যমে সরকারকে জানিয়ে দিতে পারে যে সরকারের নির্দিষ্ট কোনো কর্মসূচি বা সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া হচ্ছে না। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় নেতা-কর্মীদের হরতাল পালন করার কর্মসূচি সফল করার কোনো প্রশ্নই আসে না। মনে করেছিলাম, গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আমাদের রাজনৈতিক নেতারা কিছু শিক্ষা নিয়েছেন। এখন দেখছি বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া কোনো শিক্ষাই নেননি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে শুভবুদ্ধি দান করুন।
মো. ছানাউল্লাহ, চাকরিজীবী, লালপুর, নাটোর
হরতাল দেওয়ার সময় এসেছে। এখনই হরতাল দেওয়া উচিত।
সাইফুল ইসলাম শোভন
শিক্ষার্থী, নাখালপাড়া, ঢাকা
হরতাল জাতির জন্য মঙ্গল কিছু বয়ে আনতে পারে না। যে দেশের মেয়ে ব্রিটেনে সাংসদ নির্বাচিত হন, সেই দেশে হরতাল মানায় না। কোনো ধরনের হরতাল না দেওয়ার জন্য খালেদা জিয়াকে অনুরোধ জানাচ্ছি।
মো. নূর হোসেন, ব্যবসায়ী, আদাবর, ঢাকা।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায় না বলে এ ধরনের কর্মসূচি দেওয়ার চিন্তা করে বিএনপি। তারা যদি দেশের জন্য রাজনীতি করে, তবে সরকারকে আরও সময় দেওয়া উচিত।
বিশ্বজিৎ মৃধা, শিক্ষার্থী, খুলনা।
যেকোনো আন্দোলন সুষ্ঠুভাবে করা যায়। এর জন্য হরতালের কোনো প্রয়োজন নেই। বিএনপির যদি দেশপ্রেম থেকে থাকে, তবে তারা হরতাল দেবে না।
মুক্তা রহমান, সমাজকর্মী, চাঁদপুর।
এক-এগারো থেকে সরকারি ও বিরোধী দল কেউই শিক্ষা নেয়নি। সরকারি দলের টেন্ডারবাজি, সন্ত্রাসমূলক ছাত্ররাজনীতি আর বিরোধী দলের হরতালের ইঙ্গিত এরই প্রমাণ বহন করে।
আসাদউল্লাহ তুষার, চাকরিজীবী
শাহজাদপুর, সিরাজগঞ্জ।
মাত্র ৩০টি আসন নিয়ে বিরোধী দল হরতালে যেতে চাইছে। হরতালের পরিবর্তে তাদের রাজনীতি কী হবে, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করা উচিত।
কামরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর, মানব-উন্নয়নকর্মী
রিকাবীবাজার, মুন্সিগঞ্জ।
যদি নির্বাচিত এই সরকারকে আরও কিছুদিন সময় দিয়ে প্রথমে নিজেদের দল গুছিয়ে এবং আওয়ামী লীগের মতো তুখোড় নেতা-কর্মী তৈরি করে সরকারের ব্যর্থতা—দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি-সমস্যাসহ দখল, টেন্ডার ও সন্ত্রাসের ইস্যু—নিয়ে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেয়, তাহলে তা সফল হবে বলে আমি মনে করি।
শাহ মোহাম্মদ জ্যাকরীন, শিক্ষার্থী
টিলাগঞ্জ, সিলেট।
যেখানে বিরোধী দলের নেত্রীর এ বিষয়ে আত্মবিশ্বাসই নেই, সেখানে কোনোভাবেই সফলতা আশা করা যায় না।
বিরোধী দল বিরোধিতা করবে, এটাই স্বাভাবিক। আজ এইচএসসি পরীক্ষার দিন বগুড়ায় হরতাল, এটা খুব নিন্দনীয়। বর্তমানে সরকার ও বিরোধী দলের ক্যাডারদের হাতে যেভাবে দামি অস্ত্র দেখা যায়, এতে করে হরতালের ডাক দিলে জনসাধারণ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে। সরকারি দলে থাকা অবস্থায় জনগণের জন্য কষ্ট হয়, আর বিরোধী দলে গেলেই জনগণের জন্য ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েন।
মঞ্জুর মোর্শেদ চৌধুরী, সাবেক ফুটবলার
পশ্চিম কাফরুল, ঢাকা
সেই রাবণ নেই, অযোধ্যাও নেই, তাই হরতালের জৌলুশ এখন নেই। তাই বর্তমানে কেউ হরতাল চায় না। গত নির্বাচনে বিএনপি তাদের ব্যর্থতার কারণে হেরে গেছে। এরপর ভোলার উপনির্বাচনেও আওয়ামী লীগের প্রার্থীর জয় প্রমাণ করে, তাদের জনপ্রিয়তা মোটেও কমেনি। তার পরও রাজশাহীর মহাসমাবেশে হরতাল দেওয়ার ইঙ্গিত হলো, অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কারখানা। এখানে নেত্রী নিজেই সন্দিহান, হরতাল সফল হবে কি না।
মো. শামসুল আলম কাগজী
ব্যবসায়ী, গোসাইরহাট, শরীয়তপুর
সন্ত্রাস, হত্যা, গুম, নারী নির্যাতন, দখলদারি, গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানিসংকট—এগুলো দেশের নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার, যা জাতীয় জীবনে অতিষ্ঠ হলেও মানুষ সহ্য করে যাচ্ছে। হরতাল একটি অতি দুর্ভোগসৃষ্টিকারী বিষয়। তাই বিএনপিকে বলব এখনই হরতাল নয়, আগে নিজের ঘর গোছান। এখনো ১৮ জেলা কমিটি গঠন বাকি। যেভাবে নীরব আছেন, নীরব থাকুন আরও দুই বছর। প্রতি জেলায় সমাবেশ করে দলকে আরও শক্তিশালী করুন। বিএনপির রাজনীতি যদি জনকল্যাণে হয়, তবে হরতালে হাজার হাজার কোটি টাকার ব্যবসায়িক ক্ষতি ও জনদুর্ভোগের বিষয় বিবেচনা করে আপাতত হরতালের মতো চরম জনভোগান্তিমূলক সিদ্ধান্ত না নেওয়াই ভালো হবে।
মো. মুজাহিদুল ইসলাম খান, শিক্ষার্থী
জেলা পরিষদ মোড়, লালমনিরহাট
শক্তিশালী সংগঠন ছাড়া দুর্বার আন্দোলন অসম্ভব। সাংগঠনিক দিক থেকে বিএনপি এখন বেশ দুর্বল। তা ছাড়া দলটির বর্তমান নেতৃত্ব জিয়াউর রহমানের জাতীয়তাবাদী আদর্শকে কতটুকু ধারণ করে, সে ব্যাপারে বিতর্ক আছে। তাই খালেদা জিয়াকে এ ব্যাপারে অনেক ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
আবুল কালাম, চাকরিজীবী, মিরপুর, ঢাকা
গণতন্ত্র ধ্বংস, বিরোধী দলের ওপর নির্যাতন, ছাত্রলীগের সীমাহীন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, আইনশৃঙ্খলার অবনতি, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব—সর্বোপরি মনে হয়, এ সরকার জনগণের সরকার নয়, শুধু আওয়ামী লীগের সরকার। তাই সরকার পতনের জন্য হরতাল কর্মসূচি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
হরিদাস কুমার, শিক্ষার্থী
আইন বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
হরতাল একটি দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তিকে অনেকাংশে দুর্বল করে ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার হুমকিস্বরূপ। কোনো বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সমঝোতা অপরিহার্য। সবকিছু আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে যাওয়া উচিত।
এস ডি রুবেল পলাশ, শিক্ষার্থী, টাঙ্গাইল।
হরতাল জাতীয় অর্থনীতির জন্য অভিশাপ। কিন্তু পরিস্থিতি যদি হরতাল দিতে বাধ্য করে, তবে আমি তা সমর্থন করি।
সুব্রত ঘোষ, চিকিৎসক, হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট
মেডিকেল কলেজ, ঢাকা
হরতাল মানেই বিধ্বংসী কার্যকলাপ। এটা দেশকে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করে দেয়। হরতালের বিধ্বংসী কর্মসূচি কখনোই কোনো আন্দোলনের মূল চাবিকাঠি হতে পারে না। বেগম খালেদা জিয়ার কাছ থেকে আমরা এ ধরনের আহ্বান আশা করতে পারি না।
মো. লুৎফর রহমান, ব্যবসায়ী, মির্জাপুর, টাঙ্গাইল।
এখন হরতালের ডাক দিলে তা সফল হবে এবং হরতাল ডাকার মতো বেশ কিছু ইস্যু আছে। কিন্তু আমি মনে করি, বিএনপি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল। এ দেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থেকে জনকল্যাণে কাজ করেছে কয়েকবার। জনগণের কল্যাণই রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। জনগণকে জিম্মি করে হরতাল আমি সমর্থন করি না। আমি চাই, জনগণের জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে হরতাল থেকে সরে জনগণকে বুঝিয়ে দেবে যে হরতাল দেশ ও জনগণের কল্যাণ করে না।
কামরুজ্জামান, শিক্ষার্থী, মান্দা, নওগাঁ।
সরকার যদি স্বৈরাচারী মনোভাব ত্যাগ না করে; হত্যা, বিরোধী দলের ওপর দমন-পীড়ন ও নামবদলের রাজনীতি পরিত্যাগ না করে, তবে হরতালের প্রয়োজন আছে।
মো. এনামউদ্দিন এনাম
চাকরজীবী, খোলামোড়া, কেরানীগঞ্জ।
আমার মনে হয়, এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিএনপির নেতা-কর্মীদের এক বিরাট অংশ ছিটকে পড়ায় আন্দোলন সফল হওয়ার বিষয়ে নেত্রীর মনে সংশয় সৃষ্টি হতে পারে। সে জন্যই সমাবেশে সমবেত নেতা-কর্মীদের মতামত চাওয়া হয়ে থাকতে পারে। সরকারি দলের উচিত হবে, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিরোধী দলের প্রতি কিছুটা নমনীয় মনোভাব প্রদর্শন করা, তাহলে তাদের পুনরায় ক্ষমতায় আসার পথ সুগম হতে পারে।
রিপন, শিক্ষার্থী, ভুয়াপুর, টাঙ্গাইল
গত ১৬ মাসে সরকার দেশ চালাতে ব্যর্থ হয়েছে। এ সময়ে বিএনপি সরকারকে সহযোগিতাই করেছে। সে হিসেবে এখন দেশের স্বার্থে হরতাল সময়োপযোগী পদক্ষেপ বলে আমি মনে করি।
মো. মাসুদ, চাকরিজীবী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা
হরতাল না দেওয়াই সবচেয়ে ভালো। বর্তমানে পরীক্ষা চলছে। বিরোধী দলকে হরতালের বিকল্প কোনো আন্দোলনের চিন্তা করতে হবে। কারণ হরতাল খুবই ক্ষতিকর।
রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী, চাকরিজীবী, চট্টগ্রাম
আমার মনে হয়, হরতালের বিষয়ে বিএনপির আরও একটু চিন্তা করা প্রয়োজন। কারণ হরতাল হলো প্রতিবাদের সর্বশেষ হাতিয়ার। হরতালের কারণে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়ে। এতে সরকারের কোনো ক্ষতি হয় না। বিএনপি প্রতিবাদ করতে চাইলে হরতালের বিকল্প চিন্তা করা উচিত।
মো. তাজুল ইসলাম, চাকরিজীবী
আজিমপুর, ঢাকা
প্রায় দেড় বছরে মহাজোট সরকার প্রতিটি ক্ষেত্রে যে চরম ব্যর্থ হয়েছে, তাতে করে হরতাল আরও আগে দেওয়া উচিত ছিল। কারণ হরতাল রাজনৈতিক দলের গণতান্ত্রিক অধিকার। তদুপরি বিরোধী দলকে শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এ জন্য হরতাল হওয়া উচিত।
মাহফুজ মুজাহিদ, শিক্ষার্থী
ফরেস্ট্রি সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, চট্টগ্রাম
যখন ছাত্রলীগের সংঘর্ষে সাধারণ ছাত্র মারা যায়, তখন বিএনপি হরতালে যেতে পারত। কিন্তু এখন হরতালে যাওয়ার মতো কোনো ইস্যু আছে বলে আমি মনে করি না। এ জন্য আরও কিছুদিন অপেক্ষা করা উচিত।
কায়সারুল আলম, ব্যবসায়ী, ফকিরহাট, চট্টগ্রাম
আমি মনে করি, হরতালের মতো কোনো পরিস্থিতি এখনো তৈরি হয়নি। তবে সরকারকেও খেয়াল রাখতে হবে, বিএনপি যেন হরতালে যেতে বাধ্য না হয়।
নাসির সিকদার, ব্যবসায়ী, সখীপুর, টাঙ্গাইল
আমি হরতালের বিপক্ষে। কোনোভাবেই হরতাল সমর্থন করি না।
মুশফিকুর রহমান, চাকরিজীবী, ভৈরব, কিশোরগঞ্জ
জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলনের বিভিন্ন কৌশলের মধ্যে হরতাল হলো চরম বা শেষ কৌশল। জনগণ অসহযোগিতার মাধ্যমে সরকারকে জানিয়ে দিতে পারে যে সরকারের নির্দিষ্ট কোনো কর্মসূচি বা সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া হচ্ছে না। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় নেতা-কর্মীদের হরতাল পালন করার কর্মসূচি সফল করার কোনো প্রশ্নই আসে না। মনে করেছিলাম, গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আমাদের রাজনৈতিক নেতারা কিছু শিক্ষা নিয়েছেন। এখন দেখছি বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া কোনো শিক্ষাই নেননি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে শুভবুদ্ধি দান করুন।
মো. ছানাউল্লাহ, চাকরিজীবী, লালপুর, নাটোর
হরতাল দেওয়ার সময় এসেছে। এখনই হরতাল দেওয়া উচিত।
সাইফুল ইসলাম শোভন
শিক্ষার্থী, নাখালপাড়া, ঢাকা
হরতাল জাতির জন্য মঙ্গল কিছু বয়ে আনতে পারে না। যে দেশের মেয়ে ব্রিটেনে সাংসদ নির্বাচিত হন, সেই দেশে হরতাল মানায় না। কোনো ধরনের হরতাল না দেওয়ার জন্য খালেদা জিয়াকে অনুরোধ জানাচ্ছি।
মো. নূর হোসেন, ব্যবসায়ী, আদাবর, ঢাকা।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চায় না বলে এ ধরনের কর্মসূচি দেওয়ার চিন্তা করে বিএনপি। তারা যদি দেশের জন্য রাজনীতি করে, তবে সরকারকে আরও সময় দেওয়া উচিত।
বিশ্বজিৎ মৃধা, শিক্ষার্থী, খুলনা।
যেকোনো আন্দোলন সুষ্ঠুভাবে করা যায়। এর জন্য হরতালের কোনো প্রয়োজন নেই। বিএনপির যদি দেশপ্রেম থেকে থাকে, তবে তারা হরতাল দেবে না।
মুক্তা রহমান, সমাজকর্মী, চাঁদপুর।
এক-এগারো থেকে সরকারি ও বিরোধী দল কেউই শিক্ষা নেয়নি। সরকারি দলের টেন্ডারবাজি, সন্ত্রাসমূলক ছাত্ররাজনীতি আর বিরোধী দলের হরতালের ইঙ্গিত এরই প্রমাণ বহন করে।
আসাদউল্লাহ তুষার, চাকরিজীবী
শাহজাদপুর, সিরাজগঞ্জ।
মাত্র ৩০টি আসন নিয়ে বিরোধী দল হরতালে যেতে চাইছে। হরতালের পরিবর্তে তাদের রাজনীতি কী হবে, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করা উচিত।
কামরুল ইসলাম জাহাঙ্গীর, মানব-উন্নয়নকর্মী
রিকাবীবাজার, মুন্সিগঞ্জ।
যদি নির্বাচিত এই সরকারকে আরও কিছুদিন সময় দিয়ে প্রথমে নিজেদের দল গুছিয়ে এবং আওয়ামী লীগের মতো তুখোড় নেতা-কর্মী তৈরি করে সরকারের ব্যর্থতা—দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি-সমস্যাসহ দখল, টেন্ডার ও সন্ত্রাসের ইস্যু—নিয়ে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেয়, তাহলে তা সফল হবে বলে আমি মনে করি।
শাহ মোহাম্মদ জ্যাকরীন, শিক্ষার্থী
টিলাগঞ্জ, সিলেট।
যেখানে বিরোধী দলের নেত্রীর এ বিষয়ে আত্মবিশ্বাসই নেই, সেখানে কোনোভাবেই সফলতা আশা করা যায় না।
No comments