আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখুন-অপরাধ পর্যালোচনা বৈঠক
সম্প্রতি সারা দেশে যে অপরাধের মাত্রা বেড়ে গেছে, তা খোদ পুলিশ কর্মকর্তারাও অস্বীকার করতে পারেননি। গত শনিবার শুরু হওয়া পুলিশ বিভাগের ত্রৈমাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় যে বিষয়গুলো বিশেষভাবে আলোচনায় এসেছে তা হলো—গুপ্তহত্যা, পুলিশ বিভাগে রাজনৈতিক প্রভাবে বদলি এবং এসআই (উপ-পরিদর্শক) নিয়োগে প্রভাবশালী মহলের তদবির।
যেকোনো বাহিনীর কাছে পেশাদারি দক্ষতা ও উৎকর্ষ দাবি করলে তাকে স্বাধীনভাবে দায়িত্ব পালন করতে দিতে হয়। বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সেই সুযোগ খুব কমই পেয়েছে। যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে, তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জনগণের নিরাপত্তা বিধানের চেয়ে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহারের চেষ্টা করে থাকে। এখনো এর ব্যতিক্রম ঘটছে বলা যাবে না। পুলিশের অপরাধ পর্যালোচনা সভায় জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা বলেছেন, রাজনৈতিক প্রভাবে যেসব ওসি (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) বদলি হয়ে এসেছেন, তাঁরা ঊর্ধ্বতনদের নির্দেশ পালন করেন না। এমনকি অনেক থানায় গুরুতর ঘটনার মামলাও নেওয়া হয় না। তাঁদের খুঁটির জোর কোথায়, বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। আইজিপি (পুলিশের মহাপরিদর্শক) অবশ্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন। টোটকা ওষুধে এ রোগের চিকিৎসা হবে না। এ জন্য রাজনৈতিক নেতৃত্বের চিন্তাভাবনার যেমন পরিবর্তন জরুরি, তেমনি পুলিশ তথা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীরও আমূল সংস্কার প্রয়োজন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে পুলিশ বাহিনী সংস্কারের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, কাদের কারণে তা মাঝপথে থেমে গেল, তাও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তো বটেই, বর্তমান সরকারের প্রথম বছরটিতেও আইনশৃঙ্খলা মোটামুটি ভালো ছিল বলে অনেকের ধারণা। হঠাৎ কেন পরিস্থিতির অবনতি ঘটল, তা বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। মাঝেমধ্যে নীতিনির্ধারকেরা পূর্ববর্তী সরকারের উদাহরণ টেনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো বলে সাফাই গেয়ে থাকেন, কিন্তু বাস্তবে তার বিপরীত। সন্ত্রাসীদের হাতে যখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা খুন হচ্ছেন, তখন সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়? কোনো কোনো বাহিনীর নামে ঘর থেকে মানুষ ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাও উদ্বেগজনক।
একদিকে ‘অপরাধী যে-ই হোক’ তাকে পাকড়াওয়ের জন্য পুলিশ বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া, অন্যদিকে দলীয় লোককে ছাড়িয়ে আনতে চাপ সৃষ্টি কেবল অনৈতিক নয়, বেআইনিও। জনজীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে দল-মতনির্বিশেষে সব অপরাধীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সঙ্গে পুলিশের নিয়োগ-বদলিতেও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, যাঁরা তদবির করে চাকরি নেন, তাঁদের আনুগত্য সরকার বা জনগণের প্রতি থাকে না, থাকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর প্রতি। পুলিশ তথা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে না পারলে আইনশৃঙ্খলার উন্নতি সুদূরপরাহতই থেকে যাবে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে পুলিশ বাহিনী সংস্কারের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, কাদের কারণে তা মাঝপথে থেমে গেল, তাও খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে তো বটেই, বর্তমান সরকারের প্রথম বছরটিতেও আইনশৃঙ্খলা মোটামুটি ভালো ছিল বলে অনেকের ধারণা। হঠাৎ কেন পরিস্থিতির অবনতি ঘটল, তা বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন। মাঝেমধ্যে নীতিনির্ধারকেরা পূর্ববর্তী সরকারের উদাহরণ টেনে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো বলে সাফাই গেয়ে থাকেন, কিন্তু বাস্তবে তার বিপরীত। সন্ত্রাসীদের হাতে যখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা খুন হচ্ছেন, তখন সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়? কোনো কোনো বাহিনীর নামে ঘর থেকে মানুষ ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাও উদ্বেগজনক।
একদিকে ‘অপরাধী যে-ই হোক’ তাকে পাকড়াওয়ের জন্য পুলিশ বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া, অন্যদিকে দলীয় লোককে ছাড়িয়ে আনতে চাপ সৃষ্টি কেবল অনৈতিক নয়, বেআইনিও। জনজীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে দল-মতনির্বিশেষে সব অপরাধীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সঙ্গে পুলিশের নিয়োগ-বদলিতেও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, যাঁরা তদবির করে চাকরি নেন, তাঁদের আনুগত্য সরকার বা জনগণের প্রতি থাকে না, থাকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর প্রতি। পুলিশ তথা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে না পারলে আইনশৃঙ্খলার উন্নতি সুদূরপরাহতই থেকে যাবে।
No comments