বোয়ালিয়া খাল দখল করে নিচ্ছে আশিয়ান সিটি by আপেল মাহমুদ
ষাটের বেশি বয়স ছৈমুদ্দিন মিয়ার। গরুর জন্য ঘাস সংগ্রহ করতে প্রতিদিন পাতিরা গ্রাম থেকে তিনি আসেন বোয়ালিয়া খালের পারে। সেখানে ভ্যানগাড়িতে ঘাস তুলতে তুলতে ছৈমুদ্দিন মিয়া কালের কণ্ঠকে জানান, ছোটবেলায় এ খালে নৌকাবাইচ করেছেন তিনি। তাঁর মতো আরো অনেকের দুরন্ত কৈশোর কেটেছে এ খালে সাঁতার কেটে।
বরুয়া, বাউথার, তলনা, ঢেলনা ও ডুমনী গ্রামের বাসিন্দাদের প্রাণ এ বোয়ালিয়া খাল। একসময়ের সেই খরস্রোতা খালে এখন পানি নেই বললেই চলে। ভরাট হয়ে যাচ্ছে খালের দুই পার। বরুয়া মৌজার বোয়ালিয়া ব্রিজের পশ্চিম তীরের দিকে আঙুল উঁচিয়ে ছৈমুদ্দিন মিয়া বলেন, আশিয়ান সিটি রাতের আঁধারে যেভাবে বোয়ালিয়া খাল ভরাট করে ফেলছে তাতে অদূর ভবিষ্যতে হয়তো খালের অস্তিত্বই থাকবে না।
এলাকায় গিয়ে কথা হয় বরুয়া গ্রামের বাসিন্দা সবদার সিকদার, আনিস দেওয়ান, মুনসুর সিকদার এবং ডুমনী গ্রামের মনোয়ার ও জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে। তাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দেশে এত পরিবেশবাদী সংগঠন, পরিবেশ অধিদপ্তর ও রাজউক থাকার পরও এক মাস ধরে শত শত ট্রাক দিয়ে খাল ভরাট করছে আশিয়ান সিটি। রাতভর মাটি ফেলে সারা দিন সে মাটি সমতল করা হলেও পরিবেশবাদী সংগঠন কিংবা সরকারি সংস্থা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। এলাকাবাসী আরো জানান, আশিয়ান সিটি বোয়ালিয়া খালের পারে একটি বেসরকারি আবাসন কম্পানির সাফ কবালা দলিলে কেনা প্রায় ২৬ বিঘা জমি দখল করে সেখানে আশিয়ান সিটি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সাইনবোর্ড লাগিয়েছে।
এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, দেশের অন্যান্য এলাকায় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান কিংবা রাজনৈতিক দলের কার্যালয় নির্মাণের নামে অন্যের জমি দখল করা হলেও বরুয়া মৌজায় মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সাইনবোর্ডের আড়ালে অন্যের জমি দখল করে নেওয়া হয়। শুধু জমি দখলই নয়, বর্তমানে দখলদারদের পক্ষে প্রচার চালানো হচ্ছে, ওই মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল পরিচালনা করবে সেনাবাহিনী। কিন্তু অনুসন্ধানে জানা যায়, ওই মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের দায়িত্বে রয়েছেন আর্মির মেডিক্যাল কোরের একজন অবসরপ্রাপ্ত ডাক্তার। তিনি মূলত আশিয়ান সিটির বেতনভোগী একজন কর্মকর্তা। এ অবসরপ্রাপ্ত ডাক্তারকে দেখিয়েই আশিয়ান সিটি আর্মির নাম ভাঙিয়ে এলাকাবাসীকে ভয় দেখাচ্ছে। এ কৌশলে ধীরে ধীরে বোয়ালিয়া খাল দখল করে নিচ্ছে আশিয়ান সিটি।
তেজগাঁও উন্নয়ন সার্কেলভুক্ত দক্ষিণখান ইউনিয়নের আওতাধীন বরুয়া ও ডুমনী গ্রামের মাঝ দিয়ে শত শত বছর ধরে প্রবাহিত হচ্ছে বোয়ালিয়া খাল। নগরীর খিলক্ষেত-ইছাপুরা সড়কে বরুয়া মৌজায় বোয়ালিয়া খালের ওপর আছে একটি ব্রিজ। স্থানীয়ভাবে এটি বোয়ালিয়া ব্রিজ নামে পরিচিত। এ ব্রিজের পশ্চিম পাশের খাল ৪০ ফুট পর্যন্ত মাটি দিয়ে ভরাট করার অভিযোগ উঠেছে। সর্বশেষ মহানগর জরিপের নকশায় ওই খাল ১২০ ফুট প্রশস্ত বলে উল্লেখ রয়েছে। মাটি ভরাটের ফলে সে প্রশস্ততা কমে ৮০ ফুটে এসে ঠেকেছে। সরেজমিনে গিয়ে খাল ভরাটের সত্যতা পাওয়া যায়। স্থানীয় লোকজন জানান, প্রাকৃতিক খাল দখলের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী প্রতিবাদ করেও কোনো ফল পাননি। এমনকি খিলক্ষেত থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি কেরামত দেওয়ান খাল ভরাটের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার পরও আশিয়ান সিটি তাদের বে-আইনি কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান বরুয়া গ্রামের আদি বাসিন্দা তালেব হোসেন।
খাল ভরাটের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট এসি ল্যান্ড (ক্যান্টনমেন্ট রাজস্ব সার্কেল) সারোয়ার আহমেদ সালেহীন বলেন, খাল ভরাটের ঘটনা তাঁদের জানা নেই। তবে কেউ এ প্রাকৃতিক খাল ভরাট করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট তহশিল অফিসকে বিষয়টি সরেজমিনে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
দক্ষিণখান ইউনিয়ন তহশিল অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু জাফর বলেন, সরকারি যেকোনো জমির স্বার্থ রক্ষা করা তাঁদের দায়িত্ব। তাই কেউ বোয়ালিয়া খাল দখল করলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে তাৎক্ষণিকভাবে অবহিত করা হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরুয়া মৌজায় ৯০১ নম্বর সিএস দাগে পড়েছে বোয়ালিয়া খাল, যা ভূমি অফিসের রেকর্ডপত্রে সরকারি এক নম্বর খাস-খতিয়ানভুক্ত। পরবর্তী এসএ, আরএস এবং মহানগর জরিপের রেকর্ডেও ওই জমি সরকারের খাস হিসাবে উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, এ দাগের পুরো সম্পত্তি গ্রাস করার জন্য মাটি ভরাট করছে আশিয়ান সিটি। এরই মধ্যে খালের দুই বিঘা খাস জমি ভরাট করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা আশিয়ান সিটির খাল দখল অবিলম্বে বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন। তাঁরা বলেন, খালটি ভরাট করা হলে জলাবদ্ধতার কবলে পড়বে পুরো এলাকা। পুরনো একটি নৌপথও বন্ধ হয়ে যাবে।
সরকারের সংরক্ষিত নিচু জমি ভরাট করার অভিযোগে পরিবেশ অধিদপ্তর আগেও আশিয়ান সিটিকে একাধিকবার জরিমানা করেছে। এ ছাড়া রাজউক থেকেও কোনো অনুমোদন পায়নি আশিয়ান সিটি। অনুমোদন ছাড়া আবাসন প্রকল্পের কাজ চালানোর অপরাধে বারবার সতর্ক করা হয়েছে আশিয়ান সিটিকে। এর পরও তারা প্রভাবশালী লোকজনের ছত্রচ্ছায়ায় বে-আইনি কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে বলে এলাকাবাসী জানান। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ওই প্রভাবশালী মহল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নাম ব্যবহার করে ফায়দা লুটছে। জোরপূর্বক জমি দখল, খাল ভরাট এমনকি বসতবাড়ি থেকে প্রকৃত মালিকদের উচ্ছেদ করার জন্য তারা একটি শক্তিশালী সন্ত্রাসী বাহিনী সৃষ্টি করেছে। তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করছেন দক্ষিণখান থানার ওসি লোকমান হেকিম। আশিয়ান সিটির কর্মকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে কেউ থানায় মামলা করতে গেলে তিনি মামলা নেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে ওসি লোকমান হেকিম কালের কণ্ঠকে বলেন, আশিয়ান সিটির বিরুদ্ধে যে কেউ অভিযোগ করলে মামলা নেওয়া হবে।
এলাকায় গিয়ে কথা হয় বরুয়া গ্রামের বাসিন্দা সবদার সিকদার, আনিস দেওয়ান, মুনসুর সিকদার এবং ডুমনী গ্রামের মনোয়ার ও জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে। তাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দেশে এত পরিবেশবাদী সংগঠন, পরিবেশ অধিদপ্তর ও রাজউক থাকার পরও এক মাস ধরে শত শত ট্রাক দিয়ে খাল ভরাট করছে আশিয়ান সিটি। রাতভর মাটি ফেলে সারা দিন সে মাটি সমতল করা হলেও পরিবেশবাদী সংগঠন কিংবা সরকারি সংস্থা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। এলাকাবাসী আরো জানান, আশিয়ান সিটি বোয়ালিয়া খালের পারে একটি বেসরকারি আবাসন কম্পানির সাফ কবালা দলিলে কেনা প্রায় ২৬ বিঘা জমি দখল করে সেখানে আশিয়ান সিটি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সাইনবোর্ড লাগিয়েছে।
এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, দেশের অন্যান্য এলাকায় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান কিংবা রাজনৈতিক দলের কার্যালয় নির্মাণের নামে অন্যের জমি দখল করা হলেও বরুয়া মৌজায় মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সাইনবোর্ডের আড়ালে অন্যের জমি দখল করে নেওয়া হয়। শুধু জমি দখলই নয়, বর্তমানে দখলদারদের পক্ষে প্রচার চালানো হচ্ছে, ওই মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল পরিচালনা করবে সেনাবাহিনী। কিন্তু অনুসন্ধানে জানা যায়, ওই মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের দায়িত্বে রয়েছেন আর্মির মেডিক্যাল কোরের একজন অবসরপ্রাপ্ত ডাক্তার। তিনি মূলত আশিয়ান সিটির বেতনভোগী একজন কর্মকর্তা। এ অবসরপ্রাপ্ত ডাক্তারকে দেখিয়েই আশিয়ান সিটি আর্মির নাম ভাঙিয়ে এলাকাবাসীকে ভয় দেখাচ্ছে। এ কৌশলে ধীরে ধীরে বোয়ালিয়া খাল দখল করে নিচ্ছে আশিয়ান সিটি।
তেজগাঁও উন্নয়ন সার্কেলভুক্ত দক্ষিণখান ইউনিয়নের আওতাধীন বরুয়া ও ডুমনী গ্রামের মাঝ দিয়ে শত শত বছর ধরে প্রবাহিত হচ্ছে বোয়ালিয়া খাল। নগরীর খিলক্ষেত-ইছাপুরা সড়কে বরুয়া মৌজায় বোয়ালিয়া খালের ওপর আছে একটি ব্রিজ। স্থানীয়ভাবে এটি বোয়ালিয়া ব্রিজ নামে পরিচিত। এ ব্রিজের পশ্চিম পাশের খাল ৪০ ফুট পর্যন্ত মাটি দিয়ে ভরাট করার অভিযোগ উঠেছে। সর্বশেষ মহানগর জরিপের নকশায় ওই খাল ১২০ ফুট প্রশস্ত বলে উল্লেখ রয়েছে। মাটি ভরাটের ফলে সে প্রশস্ততা কমে ৮০ ফুটে এসে ঠেকেছে। সরেজমিনে গিয়ে খাল ভরাটের সত্যতা পাওয়া যায়। স্থানীয় লোকজন জানান, প্রাকৃতিক খাল দখলের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী প্রতিবাদ করেও কোনো ফল পাননি। এমনকি খিলক্ষেত থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি কেরামত দেওয়ান খাল ভরাটের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার পরও আশিয়ান সিটি তাদের বে-আইনি কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান বরুয়া গ্রামের আদি বাসিন্দা তালেব হোসেন।
খাল ভরাটের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট এসি ল্যান্ড (ক্যান্টনমেন্ট রাজস্ব সার্কেল) সারোয়ার আহমেদ সালেহীন বলেন, খাল ভরাটের ঘটনা তাঁদের জানা নেই। তবে কেউ এ প্রাকৃতিক খাল ভরাট করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট তহশিল অফিসকে বিষয়টি সরেজমিনে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।
দক্ষিণখান ইউনিয়ন তহশিল অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু জাফর বলেন, সরকারি যেকোনো জমির স্বার্থ রক্ষা করা তাঁদের দায়িত্ব। তাই কেউ বোয়ালিয়া খাল দখল করলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে তাৎক্ষণিকভাবে অবহিত করা হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরুয়া মৌজায় ৯০১ নম্বর সিএস দাগে পড়েছে বোয়ালিয়া খাল, যা ভূমি অফিসের রেকর্ডপত্রে সরকারি এক নম্বর খাস-খতিয়ানভুক্ত। পরবর্তী এসএ, আরএস এবং মহানগর জরিপের রেকর্ডেও ওই জমি সরকারের খাস হিসাবে উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, এ দাগের পুরো সম্পত্তি গ্রাস করার জন্য মাটি ভরাট করছে আশিয়ান সিটি। এরই মধ্যে খালের দুই বিঘা খাস জমি ভরাট করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা আশিয়ান সিটির খাল দখল অবিলম্বে বন্ধ করার দাবি জানিয়েছেন। তাঁরা বলেন, খালটি ভরাট করা হলে জলাবদ্ধতার কবলে পড়বে পুরো এলাকা। পুরনো একটি নৌপথও বন্ধ হয়ে যাবে।
সরকারের সংরক্ষিত নিচু জমি ভরাট করার অভিযোগে পরিবেশ অধিদপ্তর আগেও আশিয়ান সিটিকে একাধিকবার জরিমানা করেছে। এ ছাড়া রাজউক থেকেও কোনো অনুমোদন পায়নি আশিয়ান সিটি। অনুমোদন ছাড়া আবাসন প্রকল্পের কাজ চালানোর অপরাধে বারবার সতর্ক করা হয়েছে আশিয়ান সিটিকে। এর পরও তারা প্রভাবশালী লোকজনের ছত্রচ্ছায়ায় বে-আইনি কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে বলে এলাকাবাসী জানান। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ওই প্রভাবশালী মহল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নাম ব্যবহার করে ফায়দা লুটছে। জোরপূর্বক জমি দখল, খাল ভরাট এমনকি বসতবাড়ি থেকে প্রকৃত মালিকদের উচ্ছেদ করার জন্য তারা একটি শক্তিশালী সন্ত্রাসী বাহিনী সৃষ্টি করেছে। তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করছেন দক্ষিণখান থানার ওসি লোকমান হেকিম। আশিয়ান সিটির কর্মকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে কেউ থানায় মামলা করতে গেলে তিনি মামলা নেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে ওসি লোকমান হেকিম কালের কণ্ঠকে বলেন, আশিয়ান সিটির বিরুদ্ধে যে কেউ অভিযোগ করলে মামলা নেওয়া হবে।
No comments