জামিনের বিধান আইনে আছে by আশরাফ-উল-আলম
আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইন, ২০০২-এ দায়ের করা মামলায় বিরোধী দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর ঘটনা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, এই আইনে জামিনের বিধান আছে কি না। বিষয়টি নিয়ে আইন বিশেষজ্ঞরা মতামত দিয়েছেন।
তাঁরা বলেছেন, দ্রুত বিচার আইনে দায়ের করা এ মামলায় জামিনের বিধান রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০০২ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট এ আইন প্রণয়ন করে। গত ১৬ মে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী আসামিরা নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুলসহ ৩৩ জনকে কারাগারে নেওয়া হয়। গতকাল সোমবার ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনকেও কারাগারে নেওয়া হয় তাঁর জামিনের মেয়াদ না বাড়িয়ে। এর আগে রুহুল কবির রিজভীসহ গ্রেপ্তারকৃত আটজনকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। আগামী ২৩ মে ৩৩ নেতার জামিনের শুনানি হবে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে।
নিম্ন আদালত জামিন না দেওয়ায় মহানগর দায়রা আদালতে আসামিদের পক্ষে জামিনের আবেদন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে মহানগর দায়রা জজ আদালত কারাগারে থাকা আসামি রুহুল কবির রিজভীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন। আসামিপক্ষের আইনজীবীদের ধারণা, অন্য আসামিদের বেলায়ও একই আদেশ হতে পারে। সে ক্ষেত্রে আসামিদের জামিনের আবেদন করা হবে হাইকোর্টে।
আইনজীবীরা জানান, দ্রুত বিচার আইনে রাষ্ট্রপক্ষকে শুনানির সুযোগ দিয়ে আদালত আসামিদের জামিন দিতে পারেন। কারো বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না থাকলে আদালত আসামির জামিন মঞ্জুর করতে পারেন। দ্রুত বিচার আইনে এমন বিধান আছে।
বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে আসামিদের জামিন নামঞ্জুর করে এ মামলার আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। কারণ কোনো আসামির বিরুদ্ধে গাড়ি পোড়ানোর সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট আদালত এবং আপিল আদালত আসামিদের জামিন দিতে পারেন। তিনি অভিযোগ করেন, বিচার বিভাগ স্বাধীন নয় বলেই আসামিরা জামিন পাননি।
বিএনপির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক ও বিশিষ্ট আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার কালের কণ্ঠকে বলেন, দ্রত বিচার আইনের ১৩ ধারায় বলা আছে, রাষ্ট্রপক্ষকে শুনানির সুযোগ দিয়ে বিচারিক আদালত দ্রুত বিচার আইনে দায়ের করা মামলায় আসামিদের জামিন দিতে পারেন। তিনি বলেন, আপিল আদালত (মহানগর দায়রা জজ আদালত) আসামিদের জামিন দিতে পারেন। হাইকোর্টও জামিন দিতে পারেন। আসামিদের জামিন দেওয়া যাবে না- এ ধরনের বিধান সংশ্লিষ্ট আইনে নেই।
মাসুদ আহমেদ বলেন, আশা করা যাচ্ছে, আগামী ২৩ মে মহানগর দায়রা জজ আদালত জামিনের আবেদন শুনানি শেষে সব আসামিকে জামিন দেবেন। তবে বিচারক যদি সরকারি প্রভাবমুক্ত না হতে পারেন, সে ক্ষেত্রে অন্য রকম হতে পারে।
দ্রুত বিচার আইনের ১৩ ধারায় বলা হয়েছে, 'ফৌজদারি কার্যবিধিতে ভিন্নতর যা কিছুই থাকুক না কেন, রাষ্ট্রকে শুনানির যুক্তিসংগত সুযোগ দিয়ে এবং সংশ্লিষ্ট নথি পর্যালোচনা করে আদালত কিংবা আপিল আদালত যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে এই আইনের অধীন অপরাধ সংঘটনের জন্য অভিযুক্ত কিংবা ক্ষেত্রমত, দণ্ডপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তিকে জামিন দেওয়া ন্যায়সংগত হবে, তাহলে তদমর্র্মে কারণ লিপিবদ্ধ করে আদালত কিংবা ক্ষেত্রমত, আপিল আদালত উক্ত ব্যক্তিকে জামিনে মুক্তির আদেশ দিতে পারবেন।'
অ্যাডভোকেট মাসুদ বলেন, মামলার কথিত অপরাধ সংঘটনের জন্য যাঁদের অভিযুক্ত করা হয়েছে, তাঁদের বেশির ভাগই কোনো না কোনো দলের কেন্দ্রীয় নেতা। তাঁদের কারো বিরুদ্ধে গাড়িতে আগুন দেওয়ার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। কাজেই দ্রুত বিচার আইনের ১৩ ধারা প্রয়োগ করতে পারেন আদালত। তিনি বলেন, হাইকোর্ট আগাম জামিন দেননি। অভিযোগপত্র দেওয়ার কারণে আগাম জামিনের বিধান নেই বলে হাইকোর্ট নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলেছেন। তার মানে এই নয় যে হাইকোর্ট নিম্ন আদালতকে জামিন দিতে বারণ করেছেন। মূলত সরকারের প্রভাবেই নেতারা জামিন পাননি।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর পিপি মো. আবদুল্লাহ আবু বলেন, নেতাদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ আইনের মামলা জামিনযোগ্য বা অযোগ্য, তা উল্লেখ নেই। তিনি বলেন, আইনের ১৩ ধারায় অপরাধের গুরুত্ব অনুযায়ী জামিনের এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে আদালতকে। তিনি বলেন, যেহেতু মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে, সে কারণে আদালত জামিনের বিষয়টি বিবেচনা করেননি। পিপি আরো বলেন, সাধারণত দ্রুত বিচার আইনে দায়ের করা মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়ার পর আদালত আসামিদের জামিন দেন না। এ ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০০২ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট এ আইন প্রণয়ন করে। গত ১৬ মে হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী আসামিরা নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুলসহ ৩৩ জনকে কারাগারে নেওয়া হয়। গতকাল সোমবার ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনকেও কারাগারে নেওয়া হয় তাঁর জামিনের মেয়াদ না বাড়িয়ে। এর আগে রুহুল কবির রিজভীসহ গ্রেপ্তারকৃত আটজনকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। আগামী ২৩ মে ৩৩ নেতার জামিনের শুনানি হবে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে।
নিম্ন আদালত জামিন না দেওয়ায় মহানগর দায়রা আদালতে আসামিদের পক্ষে জামিনের আবেদন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে মহানগর দায়রা জজ আদালত কারাগারে থাকা আসামি রুহুল কবির রিজভীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন। আসামিপক্ষের আইনজীবীদের ধারণা, অন্য আসামিদের বেলায়ও একই আদেশ হতে পারে। সে ক্ষেত্রে আসামিদের জামিনের আবেদন করা হবে হাইকোর্টে।
আইনজীবীরা জানান, দ্রুত বিচার আইনে রাষ্ট্রপক্ষকে শুনানির সুযোগ দিয়ে আদালত আসামিদের জামিন দিতে পারেন। কারো বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না থাকলে আদালত আসামির জামিন মঞ্জুর করতে পারেন। দ্রুত বিচার আইনে এমন বিধান আছে।
বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে আসামিদের জামিন নামঞ্জুর করে এ মামলার আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। কারণ কোনো আসামির বিরুদ্ধে গাড়ি পোড়ানোর সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট আদালত এবং আপিল আদালত আসামিদের জামিন দিতে পারেন। তিনি অভিযোগ করেন, বিচার বিভাগ স্বাধীন নয় বলেই আসামিরা জামিন পাননি।
বিএনপির ধর্মবিষয়ক সম্পাদক ও বিশিষ্ট আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার কালের কণ্ঠকে বলেন, দ্রত বিচার আইনের ১৩ ধারায় বলা আছে, রাষ্ট্রপক্ষকে শুনানির সুযোগ দিয়ে বিচারিক আদালত দ্রুত বিচার আইনে দায়ের করা মামলায় আসামিদের জামিন দিতে পারেন। তিনি বলেন, আপিল আদালত (মহানগর দায়রা জজ আদালত) আসামিদের জামিন দিতে পারেন। হাইকোর্টও জামিন দিতে পারেন। আসামিদের জামিন দেওয়া যাবে না- এ ধরনের বিধান সংশ্লিষ্ট আইনে নেই।
মাসুদ আহমেদ বলেন, আশা করা যাচ্ছে, আগামী ২৩ মে মহানগর দায়রা জজ আদালত জামিনের আবেদন শুনানি শেষে সব আসামিকে জামিন দেবেন। তবে বিচারক যদি সরকারি প্রভাবমুক্ত না হতে পারেন, সে ক্ষেত্রে অন্য রকম হতে পারে।
দ্রুত বিচার আইনের ১৩ ধারায় বলা হয়েছে, 'ফৌজদারি কার্যবিধিতে ভিন্নতর যা কিছুই থাকুক না কেন, রাষ্ট্রকে শুনানির যুক্তিসংগত সুযোগ দিয়ে এবং সংশ্লিষ্ট নথি পর্যালোচনা করে আদালত কিংবা আপিল আদালত যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে এই আইনের অধীন অপরাধ সংঘটনের জন্য অভিযুক্ত কিংবা ক্ষেত্রমত, দণ্ডপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তিকে জামিন দেওয়া ন্যায়সংগত হবে, তাহলে তদমর্র্মে কারণ লিপিবদ্ধ করে আদালত কিংবা ক্ষেত্রমত, আপিল আদালত উক্ত ব্যক্তিকে জামিনে মুক্তির আদেশ দিতে পারবেন।'
অ্যাডভোকেট মাসুদ বলেন, মামলার কথিত অপরাধ সংঘটনের জন্য যাঁদের অভিযুক্ত করা হয়েছে, তাঁদের বেশির ভাগই কোনো না কোনো দলের কেন্দ্রীয় নেতা। তাঁদের কারো বিরুদ্ধে গাড়িতে আগুন দেওয়ার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। কাজেই দ্রুত বিচার আইনের ১৩ ধারা প্রয়োগ করতে পারেন আদালত। তিনি বলেন, হাইকোর্ট আগাম জামিন দেননি। অভিযোগপত্র দেওয়ার কারণে আগাম জামিনের বিধান নেই বলে হাইকোর্ট নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলেছেন। তার মানে এই নয় যে হাইকোর্ট নিম্ন আদালতকে জামিন দিতে বারণ করেছেন। মূলত সরকারের প্রভাবেই নেতারা জামিন পাননি।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর পিপি মো. আবদুল্লাহ আবু বলেন, নেতাদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ আইনের মামলা জামিনযোগ্য বা অযোগ্য, তা উল্লেখ নেই। তিনি বলেন, আইনের ১৩ ধারায় অপরাধের গুরুত্ব অনুযায়ী জামিনের এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে আদালতকে। তিনি বলেন, যেহেতু মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে, সে কারণে আদালত জামিনের বিষয়টি বিবেচনা করেননি। পিপি আরো বলেন, সাধারণত দ্রুত বিচার আইনে দায়ের করা মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়ার পর আদালত আসামিদের জামিন দেন না। এ ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে।
No comments