এক যে আছে বাগাটের দই by পান্না বালা
মাছ, মাংস যেমন-তেমন কিন্তু ভাই দইটা বাগাটেরই দিয়েছি, যাতে এর মান নিয়ে কোনো কথা না ওঠে।’ বিয়ে, অন্নপ্রাশন, মুসলমানি কিংবা অন্য কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে আয়োজকদের মুখ থেকে সচরাচর এ কথাটিই শোনা যায়।এ থেকেই বোঝা যায়, বাগাটের দই এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে কতটা নির্ভরতা আর মর্যাদার জায়গা দখল করে আছে।
বাগাটের সুভাষ ঘোষ জানান, বাগাটের দই জনপ্রিয় হওয়ার কারণ স্বাদে ভালো, জমে ভালো এবং মিষ্টি।
বাগাটের দইয়ের এই খ্যাতি এক দিনে হয়নি। এর পেছনে আছে ইতিহাস।
বাগাট এলাকার ঘোষেরা (দই প্রস্তুতকারী সম্প্রদায়) কবে থেকে দই প্রস্তুত করা শুরু করেন, তার সময়কাল নিশ্চিত করে বলা যাবে না। তবে ইতিহাস ঘেঁটে যতটা জানা যায়, এ অঞ্চলে দই প্রস্তুত শুরু হয় প্রায় ২০০ বছর আগে।
মূলত পাকিস্তান আমলে খ্যাতিমান দই বিক্রেতা নিরাপদ ঘোষের আমলে বাগাটের দই দেশজুড়ে সমাদৃত হতে শুরু করে। এ দই তখন পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন শহর থেকে শুরু করে পশ্চিম পাকিস্তানের করাচি, রাওয়ালপিন্ডিসহ বিভিন্ন শহরে যেত।
নিরাপদ ঘোষের পরিবারের কেউ এখন এ ব্যবসায় নেই। তবে এ গ্রামের প্রায় ২০টি পরিবার দই তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে সুনীল ঘোষই বাগাটের দইয়ের মূল রাজত্ব চালিয়ে যাচ্ছেন।
কী কৌশল আছে বাগাটের দই প্রস্তুতির, যার ফলে এই অঞ্চলে তার এত নামডাক?
জগদীশ ঘোষ জানান, এ এলাকায় প্রচুর দুধ পাওয়া যায়। এখানে দই বানানোর জন্য দুধের ক্রিম ওঠানো হয় না।
জগদীশের মা অন্নদাবালা ঘোষ জানান, দই প্রস্তুত করতে কয়েকবার জ্বাল দিতে হয়। প্রথম দিন কয়েকবার জ্বাল দিয়ে দুধ রেখে দিতে হয়। পরের দিন আবার কয়েকবার জ্বাল দিয়ে তারপর দই পাততে হয়।
নানা রকম দই প্রস্তুত করা হয় বাগাটে। এর মধ্যে মিষ্টি দই, টক দই, হালকা মিষ্টি দই ও ক্ষীরসা দই।
বাগাটের দই গরমকালে তিন দিন এবং শীতকালে সাত দিন ফ্রিজে না রেখেই খাওয়া যায়।
দই বানাতে দইয়ের বীজ খুব প্রয়োজনীয়। এই বীজ বানানোর মধ্যেই দইয়ের স্বাদ নিহিত থাকে।
আড়াই কেজি বীজ দিয়ে শীতকালে আড়াই মণ ও গরমকালে পাঁচ মণ দই তৈরি করা যায়।
দই পাতানোর কৌশল সম্পর্কে বলতে গিয়ে সুনীল ঘোষের ভাগনে প্রদীপ ঘোষ বলেন, দুধ জ্বাল দিয়ে ঠান্ডা করতে হবে। তারপর পরিমাণমতো তাপমাত্রায় বীজ দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। কিছু সময় পর মাটির হাঁড়িতে ঢেলে দিতে হবে। এরপর আট ঘণ্টা ঢেকে রাখতে হবে। এভাবেই প্রস্তুত করা হয় দই।
বাগাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুর রহিম ফকির জানান, বাগাটে ঘোষগ্রাম নামে একটি গ্রাম আছে। এই গ্রামের লোকজন দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ায় এ দই দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। মুক্তিযুদ্ধের আগে ও পরে সত্যচরণ ঘোষ নামের এক ব্যক্তি চারবার এ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হন। তিনি বাগাটের দইকে জনপ্রিয় করার জন্য বিশেষ ভূমিকা রাখেন। তাঁর উদ্যোগে ১৯৭৭ সালে এখানে পশু প্রজননকেন্দ্র গড়ে ওঠে। এ কেন্দ্রের লক্ষ্য ছিল উন্নত মানের গাভি উৎপাদন এবং তা পালনে সহযোগিতা করা। বর্তমানে এ এলাকায় ছোট-বড় ৩৫-৪০টি গরুর খামার আছে। এসব খামারের দুধ দই তৈরির প্রধান উপকরণ।
বাগাটের দই ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশেই। ঢাকা, ফরিদপুর, যশোর, মাগুরা, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বাগাটের দইয়ের শতাধিক দোকান আছে। অনেক জায়গায় বাগাট থেকে দই প্রস্তুত করে পরিবহনের মাধ্যমে নিয়ে যাওয়া হয়। আবার অনেক জায়গায় বাগাটের লোকজনই বসতি স্থাপন করে দই প্রস্তুত করা শুরু করেছে।
বাগাটে দুই শতাধিক পরিবারের প্রায় এক হাজার লোক এই দই বানানোর সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত।
বাগাটের দইয়ের এই খ্যাতি এক দিনে হয়নি। এর পেছনে আছে ইতিহাস।
বাগাট এলাকার ঘোষেরা (দই প্রস্তুতকারী সম্প্রদায়) কবে থেকে দই প্রস্তুত করা শুরু করেন, তার সময়কাল নিশ্চিত করে বলা যাবে না। তবে ইতিহাস ঘেঁটে যতটা জানা যায়, এ অঞ্চলে দই প্রস্তুত শুরু হয় প্রায় ২০০ বছর আগে।
মূলত পাকিস্তান আমলে খ্যাতিমান দই বিক্রেতা নিরাপদ ঘোষের আমলে বাগাটের দই দেশজুড়ে সমাদৃত হতে শুরু করে। এ দই তখন পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন শহর থেকে শুরু করে পশ্চিম পাকিস্তানের করাচি, রাওয়ালপিন্ডিসহ বিভিন্ন শহরে যেত।
নিরাপদ ঘোষের পরিবারের কেউ এখন এ ব্যবসায় নেই। তবে এ গ্রামের প্রায় ২০টি পরিবার দই তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে সুনীল ঘোষই বাগাটের দইয়ের মূল রাজত্ব চালিয়ে যাচ্ছেন।
কী কৌশল আছে বাগাটের দই প্রস্তুতির, যার ফলে এই অঞ্চলে তার এত নামডাক?
জগদীশ ঘোষ জানান, এ এলাকায় প্রচুর দুধ পাওয়া যায়। এখানে দই বানানোর জন্য দুধের ক্রিম ওঠানো হয় না।
জগদীশের মা অন্নদাবালা ঘোষ জানান, দই প্রস্তুত করতে কয়েকবার জ্বাল দিতে হয়। প্রথম দিন কয়েকবার জ্বাল দিয়ে দুধ রেখে দিতে হয়। পরের দিন আবার কয়েকবার জ্বাল দিয়ে তারপর দই পাততে হয়।
নানা রকম দই প্রস্তুত করা হয় বাগাটে। এর মধ্যে মিষ্টি দই, টক দই, হালকা মিষ্টি দই ও ক্ষীরসা দই।
বাগাটের দই গরমকালে তিন দিন এবং শীতকালে সাত দিন ফ্রিজে না রেখেই খাওয়া যায়।
দই বানাতে দইয়ের বীজ খুব প্রয়োজনীয়। এই বীজ বানানোর মধ্যেই দইয়ের স্বাদ নিহিত থাকে।
আড়াই কেজি বীজ দিয়ে শীতকালে আড়াই মণ ও গরমকালে পাঁচ মণ দই তৈরি করা যায়।
দই পাতানোর কৌশল সম্পর্কে বলতে গিয়ে সুনীল ঘোষের ভাগনে প্রদীপ ঘোষ বলেন, দুধ জ্বাল দিয়ে ঠান্ডা করতে হবে। তারপর পরিমাণমতো তাপমাত্রায় বীজ দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। কিছু সময় পর মাটির হাঁড়িতে ঢেলে দিতে হবে। এরপর আট ঘণ্টা ঢেকে রাখতে হবে। এভাবেই প্রস্তুত করা হয় দই।
বাগাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুর রহিম ফকির জানান, বাগাটে ঘোষগ্রাম নামে একটি গ্রাম আছে। এই গ্রামের লোকজন দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ায় এ দই দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। মুক্তিযুদ্ধের আগে ও পরে সত্যচরণ ঘোষ নামের এক ব্যক্তি চারবার এ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হন। তিনি বাগাটের দইকে জনপ্রিয় করার জন্য বিশেষ ভূমিকা রাখেন। তাঁর উদ্যোগে ১৯৭৭ সালে এখানে পশু প্রজননকেন্দ্র গড়ে ওঠে। এ কেন্দ্রের লক্ষ্য ছিল উন্নত মানের গাভি উৎপাদন এবং তা পালনে সহযোগিতা করা। বর্তমানে এ এলাকায় ছোট-বড় ৩৫-৪০টি গরুর খামার আছে। এসব খামারের দুধ দই তৈরির প্রধান উপকরণ।
বাগাটের দই ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশেই। ঢাকা, ফরিদপুর, যশোর, মাগুরা, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বাগাটের দইয়ের শতাধিক দোকান আছে। অনেক জায়গায় বাগাট থেকে দই প্রস্তুত করে পরিবহনের মাধ্যমে নিয়ে যাওয়া হয়। আবার অনেক জায়গায় বাগাটের লোকজনই বসতি স্থাপন করে দই প্রস্তুত করা শুরু করেছে।
বাগাটে দুই শতাধিক পরিবারের প্রায় এক হাজার লোক এই দই বানানোর সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত।
No comments