র্যাব কর্মকর্তাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে ডাকাতির মামলা
চট্টগ্রামের তালসরা দরবার থেকে দুই কোটি টাকা লুটের ঘটনায় র্যাব-৭-এর তৎকালীন অধিনায়ক লে. কর্নেল জুলফিকার আলী মজুমদারসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে ডাকাতির মামলা হয়েছে। তালসরা দরবারের গাড়িচালক ইদ্রিস আলী বাদী হয়ে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রামের আনোয়ারা থানায় এ মামলা করেন।
এর আগে লুটের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করে র্যাব। কমিটির চূড়ান্ত প্রতিবেদনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে মামলা করার সুপারিশ করা হয়। এই সুপারিশের ভিত্তিতেই মামলা করা হলো।
মামলার আসামিরা হলেন লে. কর্নেল জুলফিকার আলী মজুমদার, ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট শেখ মাহমুদুল হাসান, সুবেদার আবুল বাশার, এসআই তরুণ কুমার বসু, এএসআই হাসানুজ্জামান, নায়েক জাহাঙ্গীর হোসেন, ল্যান্স নায়েক লিটন মিয়া, নায়েক সুমন চন্দ্র দে, সৈনিক আশরাফ উদ্দিন, ল্যান্স করপোরাল জসিম উদ্দিন, সোর্স দিদার উল ইসলাম ও আনোয়ার মিয়া।
আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহজাহান প্রথম আলোকে বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৯৫/৩৯৭ ধারায় এ মামলা করা হয়। আসামিদের মধ্যে ১০ জন র্যাবের সদস্য ও দুজন র্যাবের সোর্স। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা ১০-১৫ জনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে জুলফিকার আলী মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সঠিক নয়। তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার বলে দাবি করেন।
মামলার ব্যাপারে জানতে চাইলে র্যাবের মহাপরিচালক মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘এ ঘটনা জানার পরপরই আমরা তদন্ত করেছি। এতে সত্যতা পাওয়ার পর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়। এ ছাড়া তদন্ত কমিটি গঠন করে ঘটনার তদন্ত করা হয়। সেই কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে সব ধরনের আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযুক্ত র্যাব সদস্যদের আটক করা হয়েছে।
তালসরা দরবারের পীর আহাম্মদ ছফা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আল্লাহর ঘরের টিয়া হনিকিয়ার হেডত হজম অইতুনু। এ টিয়া আল্লাহর ঘরতই ফিরি আইবু। (আল্লাহর ঘরের টাকা কারও পেটে হজম হবে না। এ টাকা আল্লাহর ঘরেই ফিরে আসবে।)
আনোয়ারা থানার পুলিশ জানায়, লিখিত অভিযোগে তালসরা দরবারের গাড়িচালক ইদ্রিস মিয়া বলেন, ৪ নভেম্বর বিকেলে ২০-৩০ জন কালো ও সাদা পোশাক পরা র্যাবের লোক দরবার শরিফের ভেতরে ঢুকে পড়েন। তাঁরা মূল ফটক বন্ধ করে দেন। এরপর পীর আহাম্মদ ছফা শাহকে দোতলায় মিলাদ পড়ার ঘরে আটক করেন। তাঁর স্ত্রী ও মেয়েদের নিচের তলায় মিলাদঘরের একটি কক্ষে আটক করেন। এ সময় র্যাবের সদস্যরা সশস্ত্র অবস্থায় ছিলেন। তাঁরা আহমদ ছফাকে অস্ত্রের মুখে ভয়ভীতি এবং হুমকি-ধমকি দিতে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁর কাছ থেকে জোর করে চাবি নিয়ে নিচতলায় এসে বিভিন্ন কক্ষে তল্লাশি চালান। সেখানে কোনো রকম আইনবিরোধী সরঞ্জাম না পেয়ে নিচের তলায় বিভিন্ন কক্ষের স্টিলের আলমারি খোলেন। এ সময় তিনটি আলমারির তালা ভেঙে সেখানে রাখা মূল্যবান কাগজপত্র ফেলে দেন। আলমারির ভেতরে ছয়টি ট্রাভেল ব্যাগে দুই কোটি সাত হাজার টাকা ছিল। এসব টাকা ভক্তদের সম্মিলিত সিদ্ধান্তে মসজিদ নির্মাণ ও সংস্কারের জন্য গচ্ছিত ছিল। এ সময় র্যাবের সদস্যরা টাকাভর্তি ব্যাগগুলো নিয়ে র্যাব-৭-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল জুলফিকার আলী মজুমদার পেছনে পেছনে চলে যান।
মামলায় গাড়িচালক বলেন, ‘উপস্থিত সবার সামনে দিয়ে টাকাভর্তি ব্যাগগুলো দরবার শরিফের প্রধান ফটক দিয়ে বের করে র্যাবের গাড়িতে তোলেন। এ সময় বাইরে দুই পাশে গ্রামের ও দরবারের শত শত লোক দাঁড়িয়ে ছিলেন। টাকা নিয়ে যাওয়ার সময় র্যাবের সদস্যদের কাছে টাকার রসিদ চাইলে তাঁরা অস্ত্র উঁচিয়ে ধমক দেন। এরপর সাদা কাগজে আমার ও আমার সঙ্গের দুজনের সই নিয়ে মূল ফটক খুলে চলে যান।’
ইদ্রিস আলী মামলায় আরও বলেন, পরদিন সকালে তিনি আনোয়ারা থানায় হাজির হয়ে এসব ঘটনা নিয়ে সাধারণ ডায়েরি করতে চান। তখন তিনি থানার কর্মকর্তাদের কাছে জানতে পারেন, ওই দিন রাতে ওসি ও কয়েকজন পুলিশ সদস্য সেখানে হাজির হয়েছিলেন। কিন্তু র্যাবের অধিনায়ক ওসিকে ভেতরে ঢুকতে দেননি। ওসি তাঁকে জানান, র্যাব-৭-এর সদস্যরা থানায় একটি মামলা করেছেন। এতে মিয়ানমারের কয়েকজন নাগরিকের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তালসরা দরবার শরিফের বাইরে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করার অভিযোগে তাদের আটক করা হয় বলে উল্লেখ করা হয়।
আনোয়ারা প্রতিনিধি জানান, বিলম্বে অভিযোগ করার ব্যাপারে জানতে চাইলে ইদ্রিস প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা আশা করেছিলেন, র্যাব টাকার উৎস জানার পর সব টাকা ফেরত দেবে। কিন্তু টাকা ফেরত না দেওয়ার কারণে তাঁরা বিলম্বে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তবে ওই ঘটনার পরপরই তিনি টাকা লুটের বিষয়টি মৌখিকভাবে থানার পুলিশকে জানিয়েছিলেন বলে জানান।
মামলা দায়েরের পর দরবারের অনুসারী ফুল মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, মামলা হওয়ার পর দরবারে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। ওই টাকা দিয়ে দরবারের মসজিদ দোতলা করার কথা ছিল। টাকাগুলো উদ্ধার হলে মসজিদের সংস্কার করা হবে।
গত ৪ নভেম্বর চট্টগ্রামের আনোয়ারার তালসরা দরবার শরিফ থেকে দুই কোটি সাত হাজার টাকা লুট করে র্যাবের একটি দল। এ নিয়ে অভিযোগ দেওয়ার পর তদন্ত শুরু করে র্যাব। র্যাবের গোয়েন্দা শাখার প্রধান লে. কর্নেল জিয়াউল আহসানকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি প্রাথমিক তদন্তে এ ঘটনায় জড়িত পাঁচজনকে শনাক্ত করে। পরে তদন্তে আরও বেরিয়ে আসে, র্যাব-৭-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল জুলফিকার আলী মজুমদার এ দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন। এরপর অভিযুক্ত অধিনায়কসহ সবাইকে নিজ নিজ বাহিনীতে ফেরত পাঠানো হয়।
এ ঘটনা নিয়ে প্রথম আলো একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি। ওই প্রতিবেদনের পরই কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে। এরপর দ্রুত তদন্ত শেষ করা হয়।
মামলার আসামিরা হলেন লে. কর্নেল জুলফিকার আলী মজুমদার, ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট শেখ মাহমুদুল হাসান, সুবেদার আবুল বাশার, এসআই তরুণ কুমার বসু, এএসআই হাসানুজ্জামান, নায়েক জাহাঙ্গীর হোসেন, ল্যান্স নায়েক লিটন মিয়া, নায়েক সুমন চন্দ্র দে, সৈনিক আশরাফ উদ্দিন, ল্যান্স করপোরাল জসিম উদ্দিন, সোর্স দিদার উল ইসলাম ও আনোয়ার মিয়া।
আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহজাহান প্রথম আলোকে বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৯৫/৩৯৭ ধারায় এ মামলা করা হয়। আসামিদের মধ্যে ১০ জন র্যাবের সদস্য ও দুজন র্যাবের সোর্স। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা ১০-১৫ জনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে জুলফিকার আলী মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সঠিক নয়। তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার বলে দাবি করেন।
মামলার ব্যাপারে জানতে চাইলে র্যাবের মহাপরিচালক মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘এ ঘটনা জানার পরপরই আমরা তদন্ত করেছি। এতে সত্যতা পাওয়ার পর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া শুরু হয়। এ ছাড়া তদন্ত কমিটি গঠন করে ঘটনার তদন্ত করা হয়। সেই কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে সব ধরনের আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযুক্ত র্যাব সদস্যদের আটক করা হয়েছে।
তালসরা দরবারের পীর আহাম্মদ ছফা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আল্লাহর ঘরের টিয়া হনিকিয়ার হেডত হজম অইতুনু। এ টিয়া আল্লাহর ঘরতই ফিরি আইবু। (আল্লাহর ঘরের টাকা কারও পেটে হজম হবে না। এ টাকা আল্লাহর ঘরেই ফিরে আসবে।)
আনোয়ারা থানার পুলিশ জানায়, লিখিত অভিযোগে তালসরা দরবারের গাড়িচালক ইদ্রিস মিয়া বলেন, ৪ নভেম্বর বিকেলে ২০-৩০ জন কালো ও সাদা পোশাক পরা র্যাবের লোক দরবার শরিফের ভেতরে ঢুকে পড়েন। তাঁরা মূল ফটক বন্ধ করে দেন। এরপর পীর আহাম্মদ ছফা শাহকে দোতলায় মিলাদ পড়ার ঘরে আটক করেন। তাঁর স্ত্রী ও মেয়েদের নিচের তলায় মিলাদঘরের একটি কক্ষে আটক করেন। এ সময় র্যাবের সদস্যরা সশস্ত্র অবস্থায় ছিলেন। তাঁরা আহমদ ছফাকে অস্ত্রের মুখে ভয়ভীতি এবং হুমকি-ধমকি দিতে থাকেন। একপর্যায়ে তাঁর কাছ থেকে জোর করে চাবি নিয়ে নিচতলায় এসে বিভিন্ন কক্ষে তল্লাশি চালান। সেখানে কোনো রকম আইনবিরোধী সরঞ্জাম না পেয়ে নিচের তলায় বিভিন্ন কক্ষের স্টিলের আলমারি খোলেন। এ সময় তিনটি আলমারির তালা ভেঙে সেখানে রাখা মূল্যবান কাগজপত্র ফেলে দেন। আলমারির ভেতরে ছয়টি ট্রাভেল ব্যাগে দুই কোটি সাত হাজার টাকা ছিল। এসব টাকা ভক্তদের সম্মিলিত সিদ্ধান্তে মসজিদ নির্মাণ ও সংস্কারের জন্য গচ্ছিত ছিল। এ সময় র্যাবের সদস্যরা টাকাভর্তি ব্যাগগুলো নিয়ে র্যাব-৭-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল জুলফিকার আলী মজুমদার পেছনে পেছনে চলে যান।
মামলায় গাড়িচালক বলেন, ‘উপস্থিত সবার সামনে দিয়ে টাকাভর্তি ব্যাগগুলো দরবার শরিফের প্রধান ফটক দিয়ে বের করে র্যাবের গাড়িতে তোলেন। এ সময় বাইরে দুই পাশে গ্রামের ও দরবারের শত শত লোক দাঁড়িয়ে ছিলেন। টাকা নিয়ে যাওয়ার সময় র্যাবের সদস্যদের কাছে টাকার রসিদ চাইলে তাঁরা অস্ত্র উঁচিয়ে ধমক দেন। এরপর সাদা কাগজে আমার ও আমার সঙ্গের দুজনের সই নিয়ে মূল ফটক খুলে চলে যান।’
ইদ্রিস আলী মামলায় আরও বলেন, পরদিন সকালে তিনি আনোয়ারা থানায় হাজির হয়ে এসব ঘটনা নিয়ে সাধারণ ডায়েরি করতে চান। তখন তিনি থানার কর্মকর্তাদের কাছে জানতে পারেন, ওই দিন রাতে ওসি ও কয়েকজন পুলিশ সদস্য সেখানে হাজির হয়েছিলেন। কিন্তু র্যাবের অধিনায়ক ওসিকে ভেতরে ঢুকতে দেননি। ওসি তাঁকে জানান, র্যাব-৭-এর সদস্যরা থানায় একটি মামলা করেছেন। এতে মিয়ানমারের কয়েকজন নাগরিকের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তালসরা দরবার শরিফের বাইরে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করার অভিযোগে তাদের আটক করা হয় বলে উল্লেখ করা হয়।
আনোয়ারা প্রতিনিধি জানান, বিলম্বে অভিযোগ করার ব্যাপারে জানতে চাইলে ইদ্রিস প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা আশা করেছিলেন, র্যাব টাকার উৎস জানার পর সব টাকা ফেরত দেবে। কিন্তু টাকা ফেরত না দেওয়ার কারণে তাঁরা বিলম্বে অভিযোগ দায়ের করেছেন। তবে ওই ঘটনার পরপরই তিনি টাকা লুটের বিষয়টি মৌখিকভাবে থানার পুলিশকে জানিয়েছিলেন বলে জানান।
মামলা দায়েরের পর দরবারের অনুসারী ফুল মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, মামলা হওয়ার পর দরবারে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। ওই টাকা দিয়ে দরবারের মসজিদ দোতলা করার কথা ছিল। টাকাগুলো উদ্ধার হলে মসজিদের সংস্কার করা হবে।
গত ৪ নভেম্বর চট্টগ্রামের আনোয়ারার তালসরা দরবার শরিফ থেকে দুই কোটি সাত হাজার টাকা লুট করে র্যাবের একটি দল। এ নিয়ে অভিযোগ দেওয়ার পর তদন্ত শুরু করে র্যাব। র্যাবের গোয়েন্দা শাখার প্রধান লে. কর্নেল জিয়াউল আহসানকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি প্রাথমিক তদন্তে এ ঘটনায় জড়িত পাঁচজনকে শনাক্ত করে। পরে তদন্তে আরও বেরিয়ে আসে, র্যাব-৭-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল জুলফিকার আলী মজুমদার এ দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন। এরপর অভিযুক্ত অধিনায়কসহ সবাইকে নিজ নিজ বাহিনীতে ফেরত পাঠানো হয়।
এ ঘটনা নিয়ে প্রথম আলো একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি। ওই প্রতিবেদনের পরই কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে। এরপর দ্রুত তদন্ত শেষ করা হয়।
No comments