গ্রামবাসীর সংঘবদ্ধ নৃশংসতা-ছয় ছাত্রের করুণ মৃত্যু
ঢাকার অদূরে আমিনবাজারে শবে বরাতের রাতে ডাকাত সন্দেহে ছয় তরুণকে গ্রামবাসী যেভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে, তা এককথায় রোমহর্ষক। এমন সংঘবদ্ধ নির্মমতার কী মানে হয় আমরা জানি না। ওই তরুণেরা উত্তেজিত গ্রামবাসীর কাছে প্রাণভিক্ষা চেয়েছিল; তারা ডাকাত নয়, ছাত্র—এই কথাও বলেছিল।
তাদের হাতে কোনো অস্ত্র ছিল না, ডাকাতদের যেমন থাকে। তারা গ্রামবাসীর সঙ্গে সংঘাতে লিপ্ত হয়নি, ডাকাতের দল যেমনটি করে থাকে। উত্তেজিত, সংঘবদ্ধ গ্রামবাসীর স্বাভাবিক বিচার-বিবেচনাবোধ কি লুপ্ত হয়েছিল?
নিহত ছয় তরুণের মা-বাবা, ভাইবোন ও অন্যান্য স্বজনকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা খুঁজে পাওয়া কঠিন। ছয়টি তরুণ তাজা প্রাণ এমন নৃশংসতার শিকার হলো কেন? কী জবাব এই মৃত্যুর? এ তো দুর্ঘটনা নয়, দৈব-দুর্বিপাক নয়; বিপুলসংখ্যক মানুষের ঐক্যবদ্ধ হিংস্রতা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন সোমবার বলেছেন, আমিনবাজারে ছয় ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা করার ঘটনা সরকার তদন্ত করবে। দোষীদের শাস্তি দেওয়া হবে। সরকার চায় না মানুষ নিজের হাতে আইন তুলে নিক। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই শেষ বাক্যটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ডাকাত-উপদ্রুত ওই এলাকার মানুষ সেই রাতে ওই ছয় তরুণকে ডাকাত ভেবে তাদের চরম শাস্তি দিতে নিজের হাতে আইন তুলে নিয়েছিল। মানুষ তখনই আইন নিজের হাতে তুলে নেয়, যখন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রতি তাদের আস্থা ভেঙে পড়ে। যখন তাদের মনে হয়, পুলিশ বা আইন-আদালতে অপরাধীর শাস্তি হয় না। শুধু এই একটি ঘটনাই নয়; চোর, ছিনতাইকারী, ডাকাত সন্দেহে এবং সত্যিকারের চোর-ডাকাত-ছিনতাইকারীদের গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করার অনেক ঘটনা অতীতে ঘটেছে, মাঝেমধ্যেই এ ধরনের ঘটনার খবর পাওয়া যায়। এটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা; কোনো সুস্থ-স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক সমাজে এ ধরনের বিপজ্জনক প্রবণতা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আশ্বাস বাস্তবায়িত হোক; তদন্ত করে বের করা হোক সেদিন কী ঘটেছিল। গ্রামবাসী কি সত্যিই বুঝতে পারেনি যে ওই তরুণেরা ডাকাত নয়? নাকি নেশা করতে গিয়েছিল বলে তরুণদের শাস্তি দিতে পিটুনি শুরু করা হয়েছিল, যা শেষ পর্যন্ত প্রাণঘাতী ব্যাপক গণপিটুনিতে রূপান্তরিত হয়েছিল?
তরুণেরা ডাকাত ছিল কি না, তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বা অন্য কোনো ধরনের অপরাধের অভিযোগ ছিল কি না, থানায় তাদের কারও নামে মামলা ছিল কি না—এসব প্রশ্ন এখন দেখা দিচ্ছে। প্রবণতাটি এমন যে তারা যদি সত্যিই ডাকাত বা সন্ত্রাসী-অপরাধী হতো, তাহলে গণপিটুনি দিয়ে তাদের মেরে ফেলায় বড় অন্যায় হতো না। যেহেতু তারা ডাকাত ছিল না, তাই গ্রামবাসী তাদের হত্যা করে গুরুতর অপরাধ করেছে। যেন ডাকাত হলে বিষয়টি জায়েজ হয়ে যেত। এ ধরনের মানসিকতা যে ঠিক নয়, বরং আইনের শাসনের ঠিক উল্টো এবং অতিমাত্রায় বিপজ্জনক—এ উপলব্ধির অভাব রয়েছে। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার কোনো সুযোগ রাখা চলবে না। সে জন্য আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। আইন প্রয়োগকারীদের প্রতি জনসাধারণের আস্থা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে হবে।
নিহত ছয় তরুণের মা-বাবা, ভাইবোন ও অন্যান্য স্বজনকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা খুঁজে পাওয়া কঠিন। ছয়টি তরুণ তাজা প্রাণ এমন নৃশংসতার শিকার হলো কেন? কী জবাব এই মৃত্যুর? এ তো দুর্ঘটনা নয়, দৈব-দুর্বিপাক নয়; বিপুলসংখ্যক মানুষের ঐক্যবদ্ধ হিংস্রতা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন সোমবার বলেছেন, আমিনবাজারে ছয় ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যা করার ঘটনা সরকার তদন্ত করবে। দোষীদের শাস্তি দেওয়া হবে। সরকার চায় না মানুষ নিজের হাতে আইন তুলে নিক। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই শেষ বাক্যটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ডাকাত-উপদ্রুত ওই এলাকার মানুষ সেই রাতে ওই ছয় তরুণকে ডাকাত ভেবে তাদের চরম শাস্তি দিতে নিজের হাতে আইন তুলে নিয়েছিল। মানুষ তখনই আইন নিজের হাতে তুলে নেয়, যখন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রতি তাদের আস্থা ভেঙে পড়ে। যখন তাদের মনে হয়, পুলিশ বা আইন-আদালতে অপরাধীর শাস্তি হয় না। শুধু এই একটি ঘটনাই নয়; চোর, ছিনতাইকারী, ডাকাত সন্দেহে এবং সত্যিকারের চোর-ডাকাত-ছিনতাইকারীদের গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করার অনেক ঘটনা অতীতে ঘটেছে, মাঝেমধ্যেই এ ধরনের ঘটনার খবর পাওয়া যায়। এটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা; কোনো সুস্থ-স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক সমাজে এ ধরনের বিপজ্জনক প্রবণতা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আশ্বাস বাস্তবায়িত হোক; তদন্ত করে বের করা হোক সেদিন কী ঘটেছিল। গ্রামবাসী কি সত্যিই বুঝতে পারেনি যে ওই তরুণেরা ডাকাত নয়? নাকি নেশা করতে গিয়েছিল বলে তরুণদের শাস্তি দিতে পিটুনি শুরু করা হয়েছিল, যা শেষ পর্যন্ত প্রাণঘাতী ব্যাপক গণপিটুনিতে রূপান্তরিত হয়েছিল?
তরুণেরা ডাকাত ছিল কি না, তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বা অন্য কোনো ধরনের অপরাধের অভিযোগ ছিল কি না, থানায় তাদের কারও নামে মামলা ছিল কি না—এসব প্রশ্ন এখন দেখা দিচ্ছে। প্রবণতাটি এমন যে তারা যদি সত্যিই ডাকাত বা সন্ত্রাসী-অপরাধী হতো, তাহলে গণপিটুনি দিয়ে তাদের মেরে ফেলায় বড় অন্যায় হতো না। যেহেতু তারা ডাকাত ছিল না, তাই গ্রামবাসী তাদের হত্যা করে গুরুতর অপরাধ করেছে। যেন ডাকাত হলে বিষয়টি জায়েজ হয়ে যেত। এ ধরনের মানসিকতা যে ঠিক নয়, বরং আইনের শাসনের ঠিক উল্টো এবং অতিমাত্রায় বিপজ্জনক—এ উপলব্ধির অভাব রয়েছে। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার কোনো সুযোগ রাখা চলবে না। সে জন্য আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। আইন প্রয়োগকারীদের প্রতি জনসাধারণের আস্থা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিতে হবে।
No comments