সরল গরল-মনমোহনজি, সুপ্রিম কোর্টের রায়টি পড়ুন by মিজানুর রহমান খান

বাহাত্তরের মূল সংবিধানে বাংলাদেশের সীমানা নির্দিষ্ট ও নিশ্ছিদ্র করা হয়েছিল। কিন্তু সংবিধানের তৃতীয় সংশোধনীর কারণে সেই সীমানায় ছিদ্র তৈরি হয়। ওই সংশোধনীতে এমন একটি বাক্য যুক্ত করা হয়, যার ফলে ১৯৭৪ সালে সম্পাদিত মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি বাস্তবায়নের সঙ্গে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সীমানার ভাগ্য অংশত সম্পৃক্ত হয়ে পড়ে।

এ কথা খুবই আলোচিত যে বাংলাদেশ সংবিধান সংশোধন করে বেরুবাড়ী ভারতকে দিয়েছিল। কিন্তু এর বিনিময়ে তিন বিঘা করিডর স্থায়ীভাবে বাংলাদেশ পায়নি। তবে যেটা আলোচনায় নেই সেটা হলো, ১২ নম্বর বেরুবাড়ী ইউনিয়নের ভাগ্য মুজিব-ইন্দিরা ঠিক করেননি। নেহরু-নুন আধাআধি ভাগ করেছিলেন। সেটা ১৯৫৮ সালের কথা। দুই নেতা শুধু বেরুবাড়ী নয়, পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের স্থলসীমান্ত ঠিক করেছিলেন।
বাংলাদেশের সীমানা প্রসঙ্গ এখন যে কারণে মনে পড়ল তা হলো, দুই দেশের কূটনীতিকদের বক্তব্য। তাঁরা আমাদের জানাচ্ছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের আসন্ন বাংলাদেশ সফরকালে সীমান্ত নিয়ে চুক্তি হবে। কী চুক্তি হবে, তা আমরা জানি না। হলে তা ১৯৮২ সালের মতো কোনো সম্পূরক বা পার্শ্ব চুক্তি হওয়ার কথা। কারণ, এ ক্ষেত্রে নতুন করে বড় ধরনের কোনো চুক্তি সম্পাদনের কোনো অবকাশ নেই। ছোটখাটো চুক্তি যদি হয়, যদি চুয়াত্তরের চুক্তির ৫ নম্বর দফা কার্যকর না হয়, তাহলে সেটা ঢাকঢোল পিটিয়ে বলাটা সত্যি বেমানান। যেমন তিন বিঘা করিডর দিয়ে দহগ্রাম-আঙ্গরপোতার মানুষের অধিকতর অবাধ চলাচল বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হতে পারে। দুই দেশের জরিপকারীরা ছিটমহলে মাথা গণনার কাজ শেষ করেছেন। সাড়ে ছয় কিলোমিটার জায়গা চিহ্নিতকরণের জট খুলতে পারে। কিন্তু হইচই করার কিছু নেই। আমরা চাই, রেটিফিকেশন প্রশ্নটি যেন ঝুলে না থাকে।
আমরা লক্ষ করি, মুজিব-ইন্দিরা চুক্তির রেটিফিকেশন বা অনুসমর্থন যেখানে মুখ্য বিষয়, সেখানে এ নিয়ে আলোচনা নেই। ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা প্রথম যখন সরকার গড়েন, তখন তিনি রেটিফিকেশন নিয়ে ভারতের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। এ বিষয়টি প্রয়াত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুস সামাদ আজাদের কাছ থেকে শুনেছিলাম। কিন্তু এরপর আমাদের অন্য কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রীর বরাতে এই রেটিফিকেশন শব্দটি উচ্চারিত হয়েছে বলে শুনিনি।
সম্প্রতি দিল্লি সফরকালে এ বিষয়ে আমাদের হাইকমিশনারের দৃষ্টি আকর্ষণ করি। তাঁকে বলি যে এইবার রেটিফিকেশনটা সম্পন্ন করে নেওয়ার সম্ভাবনা কতটা? তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে এখানে বলে রাখি, অনেক সময় শুনেছি যে নয়াদিল্লি যুক্তি দেয়, রেটিফিকেশন করতে হলে ভারতের সংবিধানে সংশোধনী লাগবে। সাম্প্রতিককালেও শুনেছি, রেটিফিকেশনের কথা বললে ভারতের কোনো কোনো সরকারি মহল নাকি সংবিধান সংশোধনের দোহাই দেয়।
২০১০ সালের জানুয়ারিতে শেখ হাসিনা-মনমোহন সিংয়ের যৌথ বিবৃতির ২০ দফায় বলা আছে, ‘উভয় প্রধানমন্ত্রী ১৯৭৪ সালের স্থলসীমান্ত চুক্তির চেতনার ভিত্তিতে সীমান্তসংক্রান্ত সব বকেয়া ইস্যু ব্যাপক ভিত্তিতে নিষ্পন্ন করতে একমত হয়েছেন।’
বাংলাদেশের সংবিধান সংশোধনের ৩৬ বছর পর এই বিবৃতিতে আমাদের সরকার সন্তুষ্ট হতে পারে। ভারতের সরকারি যন্ত্র সন্তুষ্ট হতে পারে। কিন্তু আরও একটি মহান প্রতিষ্ঠান আছে, যার কিন্তু এই বিবৃতিতে সন্তুষ্ট হওয়ার কথা নয়। সেটি ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। কেন, সে কথায় পরে আসছি।
১৯৭৪ সালের ১৬ মে দিল্লিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ইন্দিরা গান্ধী চুক্তিটি সই করেন। এটি আসলে ১৯৫৮ সালের নেহরু-নুন চুক্তির পরিবর্তিত সম্প্রসারণ বা ধারাবাহিকতা। এক অর্থে এটি যথেষ্ট মৌলিক চুক্তি নয়। আমাদের তৃতীয় সংশোধনীর মতো আটান্নর চুক্তির পেছনেও কিন্তু বেরুবাড়ী। মূলত এই বেরুবাড়ীর জন্যই আমাদের সংবিধান সংশোধন করা হয়। স্যার সিসিল রেডক্লিফ ছিলেন সেই বুড়ো খোকা। যিনি তাঁর পেনসিল দিয়ে ভারত ভাগ করেছিলেন। রেডক্লিফ কমিশনের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ভারত ও পাকিস্তানের সীমানা চিহ্নিত হয়। এই রোয়েদাদের ব্যাখ্যা ভারত প্রথমে এমনভাবে করেছিল যাতে তারা পুরো বেরুবাড়ীর দখল নিয়ে নেয়। পাকিস্তানও তাতে আপত্তি করেনি। কিন্তু ১৯৫২ সালের কাছাকাছি সময়ে পাকিস্তান বলা শুরু করে যে রেডক্লিফ রোয়েদাদের প্রকৃত ব্যাখ্যা করলে বেরুবাড়ী ভারতের ভাগে পড়ে না। ওটা পূর্ববঙ্গের মধ্যে পড়ে। এ নিয়ে চিঠি চালাচালি করতে করতেই ১৯৫৮-তে চুক্তি হয়। দুই দেশ বেরুবাড়ী ভাগ করে নেয়। এই চুক্তিতেই কিন্তু ছিটমহল ও অপদখলীয় এলাকার ভাগাভাগি ঘটে। চুয়াত্তরের চুক্তির আওতায় প্রায় ১০ হাজার একরের বেশি জমি যে বিনা মূল্যে বাংলাদেশ পাবে বলে স্থির হয়, সেটাও চূড়ান্ত করেছিলেন নেহরু-নুন।
১৯৫৮ সালের চুক্তি বাস্তবায়ন করতে গিয়ে ভারতীয় নীতিনির্ধারকেরা ধাঁধায় পড়েন। তাঁরা ভাবতে বসেন, এর সঙ্গে সেশন বা চুক্তি মোতাবেক জমি সমপর্ণের প্রশ্ন জড়িত কি না। এই প্রেক্ষাপটে ভারতের রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম কোর্টে একটি রেফারেন্স পাঠান।
সংবিধান সংশোধন করতে হবে কি না, সেই প্রশ্ন ছিল মুখ্য। সুপ্রিম কোর্টের মতের ভিত্তিতে ১৯৬০ সালে ভারত নবম সংশোধনী আনে। এই সংশোধনী পশ্চিম পাকিস্তানে কার্যকর হলেও পূর্ব পাকিস্তানে হয়নি। কারণ তাতে প্রজ্ঞাপন দ্বারা ‘অ্যাপয়ন্টেড ডে’ ঘোষণার কথা ছিল। এটা পশ্চিমে ঘটে ১৭ জানুয়ারি ১৯৬১। পূর্বে ঘটেনি। ১৯৮৩ সালে চুক্তির বৈধতা প্রথম চ্যালেঞ্জ হয় কলকাতা হাইকোর্টে। এক সদস্যের বেঞ্চ রিট নাকচ করে রায় দেন, ‘নবম সংশোধনী ভারতের পূর্বাঞ্চলে কার্যকর হয়নি। চুয়াত্তরের চুক্তি বাস্তবায়নে ভারতীয় ভূখণ্ড বা সার্বভৌমত্ব খোয়ানোর কোনো প্রশ্ন নেই।’ এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টের এক দ্বৈত বেঞ্চে আপিল হয়। এই বেঞ্চ হাইকোর্টের একক বেঞ্চের রায় বহাল রেখেও সংবিধান সংশোধন দরকার বলে মত দেন। ১৯ সেপ্টেম্বর ১৯৮৬ দ্বৈত বেঞ্চের দেওয়া ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল হয় সুপ্রিম কোর্টে।
আওয়ামী লীগের বিগত আমলের বিডিআরের ডিজি মেজর জেনারেল (অব.) আজিজুর রহমান গতকাল জানালেন, ‘বিএসএফের সঙ্গে বৈঠকে আমি রেটিফিকেশনের কথা তুলেছি। তাঁরা এর উত্তরে ভারতের সংবিধান সংশোধনের কথা বলতেন। এ বিষয়ে মামলা বিচারাধীন থাকার যুক্তিও দিয়েছেন।’ জেনারেল রহমান ১৯৯৬ থেকে ১৯৯৯ পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলেন। অথচ ভারতের সুপ্রিম কোর্টের ১৯৯০ সালের ৩ মের রায় থেকে আমরা দেখছি, তাঁরাও দ্বৈত বেঞ্চকে সমর্থন করেন। সুপ্রিম কোর্ট এমনকি বলেন, ‘নবম সংশোধনী বাংলাদেশ সীমানা অর্থে ভারতের সংবিধানের অংশে পরিণতি হয়নি। কারণ “অ্যাপয়ন্টেড ডে” ঠিক হয়নি। সেটা মেনেই দুই সরকার চুয়াত্তরে চুক্তি করে।’ ভারতের সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট রায় দেন যে, সংবিধান সংশোধনের দরকার নেই। এমনকি অ্যাটর্নি জেনারেল সলি সোরাবজিও একই অভিমত রেখে বলেন, মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি বাস্তবায়নে ভারতের সংবিধান সংশোধন লাগবে না।
১৯৭৪ সালের ২৮ নভেম্বর আমাদের সংবিধানের তৃতীয় সংশোধনী কার্যকর হয়। আমাদের দেশের সীমানা-সম্পর্কিত ২ অনুচ্ছেদটি মূল সংবিধানে এভাবে লেখা হয়, ‘প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রীয় সীমানার অন্তর্ভুক্তি হইবে ক. ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ মাসের ২৬ তারিখে স্বাধীনতা ঘোষণার অব্যবহিত পূর্বে যে সকল এলাকা লইয়া পূর্ব পাকিস্তান গঠিত ছিল এবং খ. যে সকল এলাকা পরবর্তীকালে বাংলাদেশের সীমানাভুক্ত হইতে পারে।’ ভারত ও পাকিস্তানের সংবিধানেও একই ধাঁচে লেখা। তবে আমাদের একটি খসড়া সংবিধানে দেখি, বিকল্প ভাবা হয়েছিল। লেখা হয়েছিল, ‘প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রীয় সীমানার অন্তর্ভুক্ত হবে সেসব এলাকা, যা ১৯৪৭ সালের ভারত শাসন আইনে পূর্ববঙ্গ প্রদেশ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল।’ কিন্তু এই বিকল্প বাদ পড়ে।
ওই ২ অনুচ্ছেদে ১৯৭৪ সালের ৭৪ নম্বর আইনের মাধ্যমে সংশোধনী আনা হয়। এতে পূর্ব পাকিস্তান গঠিত ছিল কথাটির পরে যুক্ত করা হয় ‘এবং সংবিধান (তৃতীয় সংশোধন) আইন, ১৯৭৪-এ অন্তর্ভুক্ত এলাকা বলিয়া উল্লিখিত এলাকা, কিন্তু উক্ত আইনে বহির্ভূত এলাকা বলিয়া উল্লিখিত এলাকার তদবহির্ভূত’। তৃতীয় সংশোধনী প্রকৃত অর্থে মুজিব-ইন্দিরা চুক্তিটি শর্ত সাপেক্ষে বাংলাদেশ সংবিধানের অংশে পরিণত করা।
বেরুবাড়ীর হস্তান্তরের বিরুদ্ধে আমাদের সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়েছিল। বাংলাদেশের ভূখণ্ড বিচ্ছিন্ন করার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ রায় দেন, মুজিব-ইন্দিরা চুক্তির সঙ্গে ‘সেশন’ জড়িত। সংবিধান সংশোধন ছাড়া এর বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। কাজী মুখলেসুর রহমান বনাম বাংলাদেশ মামলার রায়ের পরপরই আনা হলো তৃতীয় সংশোধনী।
তৃতীয় সংশোধনীর ৪ নম্বর দফার শিরোনাম হচ্ছে ‘এলাকা অন্তর্ভুক্ত ও বহির্ভূতকরণের বিজ্ঞপ্তি।’ তাহলে সংবিধানের ২ অনুচ্ছেদে ‘অন্তর্ভুক্ত এলাকা’ ও ‘বহির্ভূত এলাকা’ আমরা বুঝব ৪ দফার আলোকে। আর এতে লেখা আছে, ‘চুক্তি অনুসারে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যবর্তী ভূসীমানা নির্ধারণের পর সরকারি গেজেটে বিজ্ঞপ্তি দ্বারা সরকার যে তারিখ বর্ণনা করেন সেই তারিখ হইতে উক্ত বিজ্ঞপ্তিতে বর্ণিত অন্তর্ভুক্ত এলাকা বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সীমানার অংশ হইবে এবং বহির্ভূত এলাকা উভয়ের অংশ হইবে না।’ সুতরাং আমরা দেখি, ‘চুক্তি অনুসারে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যবর্তী ভূসীমানা নির্ধারণের পর’ এই শর্ত এখনো পূরণ হয়নি।
মুজিব-ইন্দিরা চুক্তির ৫ অনুচ্ছেদটি গুরুত্বপূর্ণ। এতে বলা আছে, ‘এই চুক্তি বাংলাদেশ এবং ভারতের সরকারের অনুসমর্থন সাপেক্ষ এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ইনস্ট্রুমেন্ট অব রেটিফিকেশন বিনিময় করা হবে। ইনস্ট্রুমেন্ট অব রেটিফিকেশন যে তারিখে উভয়ের মধ্যে বিনিময় হবে, সেই তারিখে চুক্তি কার্যকর হবে।’
এর সরল মানে দাঁড়াল এই যে মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি আজ পর্যন্ত আইনের চোখে একটি অকার্যকর চুক্তি। পঞ্চদশ সংশোধনী নিয়ে আমরা বিতর্কের ঝড় তুলেছি। বাংলাদেশ-ভারত সুসম্পর্কের একটি উত্তম অধ্যায় আমরা অতিক্রান্ত করছি। কিন্তু ওই চুক্তির ৫ নম্বর দফা, যার সঙ্গে আমাদের সংবিধানের ২ অনুচ্ছেদের কার্যকারিতার প্রশ্ন জড়িত, তা নিয়ে আমাদের গণমাধ্যমেও কোনো আলোচনা নেই। ইতিমধ্যে এই অনুচ্ছেদটিকে আমরা অন্যতম মৌলিক কাঠামো হিসেবে ঘোষণা দিয়েছি। তিন দশকের বেশি সময় ধরে কার্যকর হওয়ার অপেক্ষায় থাকা ২ অনুচ্ছেদটির শর্তাংশের দুর্ভাগ্য আর কাকে বলে। এটিকেও অনাদিকালের জন্য ‘সংশোধন অযোগ্য’ ঘোষণা করা হয়েছে।
আমাদের সীমাবদ্ধতা তো অনেক। তাই সবিনয়ে বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করব ভারতের সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রতি। ১৯৯০ সালের ৩ মে দেওয়া রায়ে সুপ্রিম কোর্ট মুজিব-ইন্দিরা চুক্তির প্রস্তাবনায় ‘উভয় দেশের মধ্যে বিরাজমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের’ বিষয়টি স্মরণ করেন। তিন বিঘা হস্তান্তর যে একটা বেহুদা টালবাহানা ছিল, তার স্বীকৃতি আছে রায়ে। সুপ্রিম কোর্ট বলেছেন এটা একটা ‘নন ইস্যু’। তবে দুই দশক পরেও কিন্তু এটা ইস্যু হয়ে আছে।
ভারতের প্রধান বিচারপতি সব্যসাচী মুখার্জির নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের সুপ্রিম কোর্ট বেঞ্চ বলেন, ‘...তাহলে সংবিধানে কোনো পরিবর্তন আনা ছাড়াই চুক্তিটি (আমাদের সংবিধানের ২ অনুচ্ছেদে বর্ণিত চুয়াত্তরের মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি) সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়িত হওয়া উচিত। এবং আমরা আশা করি যে, সেটা ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক পুনরুজ্জীবনের স্বার্থে করা হবে।’ আমরা আশা করি, ঢাকায় আসার আগে ড. মনমোহনজি দুই দশকের পুরোনো এই রায়টি পড়বেন। তাহলে হয়তো তিনি চুক্তি রেটিফিকেশনে তাঁর দেশের রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক অনীহা (যদি থাকে) কিংবা অন্যবিধ জটিলতা এড়াতে এই রায়কে মোক্ষম ঢাল হিসেবে কাজে লাগাতে পারবেন।
মিজানুর রহমান খান: সাংবাদিক।
mrkhanbd@gmail.com

No comments

Powered by Blogger.