সাম্প্রতিক প্রসঙ্গ-মহাসমাবেশ :জয়-পরাজয়ের খেলা by ইকবাল হাসান
দেশের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে চাটুকার মন্ত্রী-উপদেষ্টাদের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি আর অতিকথনে। মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রীকে ঘিরে থাকা চাটুকার, খয়ের খাঁ আর 'জি আপা' টাইপ তল্পিবাহকরা তার চারপাশে এখনও বুনে চলেছেন স্বপ্নের মায়াজাল
এককথায় এ এক ধরনের রাজনৈতিক পরাজয়। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নিজেই যেন নিজের জন্য এই পরাজয় ডেকে এনেছে। একটি মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা অচল করে দিয়ে, মানুষের জীবনে অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্ট বয়ে এনে, মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সরকার মূলত নিজেদের রাজনৈতিক দেউলিয়াপনা আর অসহায়ত্ব প্রমাণ করল। একটি দেশের নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক আন্দোলন ঠেকাতে আওয়ামী লীগ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মতো একনায়কসুলভ যে ফ্যাসিবাদী আচরণ করল তা এ দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি বিরল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। মহাসমাবেশের দিন হাজার হাজার র্যাব, পুলিশ, বর্ডার গার্ড, চার-পাঁচ ধরনের গোয়েন্দা, ছাত্রলীগ আর যুবলীগের সন্ত্রাসী-পাণ্ডাদের নামিয়ে, লঞ্চ-বাস-ট্রাক-টেম্পো, ট্রেন-স্টিমার, হোটেল-রেস্তোরাঁ সবকিছু বন্ধ করে দিয়ে, সারা ঢাকায় ক্যান্টনমেন্ট টাইপ চেকপোস্ট বসিয়েও জনস্রোত বন্ধ করা যায়নি। তারপরও বিএনপির মহাসমাবেশ সফল হয়েছে। যার পেছনে আওয়ামী লীগেরই কৃতিত্ব; আমি বলি ৬০%। অবশ্য মহাসমাবেশ আটকাতে আওয়ামী লীগ এই অপ্রয়োজনীয় নোংরা খেলা না খেললে ঢাকা শহরে পা রাখার জায়গা থাকত না।
বলা নিষ্প্রয়োজন যে, বিরোধী দলের এই অভূতপূর্ব সাফল্যের কারণ_ সরকার পরিচালনায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে সরকারি দল আওয়ামী লীগের সীমাহীন ব্যর্থতা। পদে পদে আটকে যাচ্ছে অযোগ্য মন্ত্রীদের চালিত সরকার। মন্ত্রীদের অযোগ্যতা ও অন্যান্য কারণে নির্বাচনকালীন অধিকাংশ প্রতিশ্রুতি বাস্তবের মুখ দেখেনি আজতক। জ্বালানিসহ প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অগি্নমূল্যে মানুষের জীবন বিপন্নপ্রায়। দেশে আইনের শাসন নেই বললেই চলে। খুন-খারাবিগুলোর কোনো সুরাহা হচ্ছে না। উপরন্তু আমাদের মহামান্য 'বিগহার্ট' রাষ্ট্রপতি খুনি-ফাঁসির আসামিদের গণহারে কৃপা দেখিয়ে চলেছেন। দুর্নীতি এখন তুঙ্গে। সরকারের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ আওয়ামী লীগের মুখে কালিমা লেপন করেছে। দেশের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে চাটুকার মন্ত্রী-উপদেষ্টাদের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি আর অতিকথনে। মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রীকে ঘিরে থাকা চাটুকার, খয়ের খাঁ আর 'জি আপা' টাইপ তল্পিবাহকরা তার চারপাশে এখনও বুনে চলেছেন স্বপ্নের মায়াজাল।
মনে হচ্ছে, আগামী নির্বাচনে জনগণ এর প্রতিশোধ নেবে। এ সুইট রিভেঞ্জ। অতএব আওয়ামী নেতৃত্বের উচিত এখনও যেটুকু সময় আছে তার সদ্ব্যবহার করা। কিছু কিছু নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণ করা। মন্ত্রিসভা থেকে (আবুল হোসেন, সাহারা খাতুন, আবুল মাল আবদুল মুহিত, ফারুক খান, রাজিউদ্দিন, দীপু মনি, আ ফ ম রুহুল হকসহ) অযোগ্যদের বের করে দেওয়া। মহাসমাবেশে খালেদা জিয়া এবার আর 'সরকারকে ল্যাংড়া-লুলা' করে দেওয়ার মতো রুচিহীন কোনো বাক্য উচ্চারণ করেননি। যে-ই লিখে দিয়ে থাকুন না কেন, খালেদা জিয়ার মহাসমাবেশের বক্তব্য রুচিপূর্ণ, পুরোমাত্রায় রাজনৈতিক এবং যথার্থ যুক্তিযুক্ত। যদিও এটা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট যে, জামায়াত ও যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর জন্য এবং বিশেষ করে গ্রেনেড হত্যা মামলায় তারেক জিয়ার সম্পৃক্ততার (সরকার আনীত) গুরুতর অভিযোগের কারণেই পার্লামেন্টের বাইরে রাজপথে সহসা এতটা অস্থির হয়ে উঠেছেন তিনি! কিন্তু বিস্ময়ের ব্যাপার যে, মুক্তি দাবি করা দূরের কথা_ মহাসমাবেশের বক্তৃতায় তিনি একবারও একাত্তরের নরঘাতক, যুদ্ধাপরাধী জামায়াতীদের নাম পর্যন্ত উচ্চারণ করেননি। জামায়াতীরা এতে মনঃক্ষুণ্ন হলেও হতে পারে। এ কথা অনস্বীকার্য, ইদানীং রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা হ্রাস পেলেও, বিরোধীদলীয় নেত্রী জানেন যে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রশ্নে সারাদেশ আজ একতাবদ্ধ। এ ক্ষেত্রে জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি দেশবাসীর সাপোর্ট ১০০%; যে কারণে মহাসমাবেশে খালেদা জিয়া একটিবারও জোটভুক্ত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে কথা বলেননি।
ইকবাল হাসান :কবি
iqbalhasan2003@yahoo.ca
বলা নিষ্প্রয়োজন যে, বিরোধী দলের এই অভূতপূর্ব সাফল্যের কারণ_ সরকার পরিচালনায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে সরকারি দল আওয়ামী লীগের সীমাহীন ব্যর্থতা। পদে পদে আটকে যাচ্ছে অযোগ্য মন্ত্রীদের চালিত সরকার। মন্ত্রীদের অযোগ্যতা ও অন্যান্য কারণে নির্বাচনকালীন অধিকাংশ প্রতিশ্রুতি বাস্তবের মুখ দেখেনি আজতক। জ্বালানিসহ প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অগি্নমূল্যে মানুষের জীবন বিপন্নপ্রায়। দেশে আইনের শাসন নেই বললেই চলে। খুন-খারাবিগুলোর কোনো সুরাহা হচ্ছে না। উপরন্তু আমাদের মহামান্য 'বিগহার্ট' রাষ্ট্রপতি খুনি-ফাঁসির আসামিদের গণহারে কৃপা দেখিয়ে চলেছেন। দুর্নীতি এখন তুঙ্গে। সরকারের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ আওয়ামী লীগের মুখে কালিমা লেপন করেছে। দেশের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে চাটুকার মন্ত্রী-উপদেষ্টাদের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি আর অতিকথনে। মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রীকে ঘিরে থাকা চাটুকার, খয়ের খাঁ আর 'জি আপা' টাইপ তল্পিবাহকরা তার চারপাশে এখনও বুনে চলেছেন স্বপ্নের মায়াজাল।
মনে হচ্ছে, আগামী নির্বাচনে জনগণ এর প্রতিশোধ নেবে। এ সুইট রিভেঞ্জ। অতএব আওয়ামী নেতৃত্বের উচিত এখনও যেটুকু সময় আছে তার সদ্ব্যবহার করা। কিছু কিছু নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণ করা। মন্ত্রিসভা থেকে (আবুল হোসেন, সাহারা খাতুন, আবুল মাল আবদুল মুহিত, ফারুক খান, রাজিউদ্দিন, দীপু মনি, আ ফ ম রুহুল হকসহ) অযোগ্যদের বের করে দেওয়া। মহাসমাবেশে খালেদা জিয়া এবার আর 'সরকারকে ল্যাংড়া-লুলা' করে দেওয়ার মতো রুচিহীন কোনো বাক্য উচ্চারণ করেননি। যে-ই লিখে দিয়ে থাকুন না কেন, খালেদা জিয়ার মহাসমাবেশের বক্তব্য রুচিপূর্ণ, পুরোমাত্রায় রাজনৈতিক এবং যথার্থ যুক্তিযুক্ত। যদিও এটা দিনের আলোর মতো স্পষ্ট যে, জামায়াত ও যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর জন্য এবং বিশেষ করে গ্রেনেড হত্যা মামলায় তারেক জিয়ার সম্পৃক্ততার (সরকার আনীত) গুরুতর অভিযোগের কারণেই পার্লামেন্টের বাইরে রাজপথে সহসা এতটা অস্থির হয়ে উঠেছেন তিনি! কিন্তু বিস্ময়ের ব্যাপার যে, মুক্তি দাবি করা দূরের কথা_ মহাসমাবেশের বক্তৃতায় তিনি একবারও একাত্তরের নরঘাতক, যুদ্ধাপরাধী জামায়াতীদের নাম পর্যন্ত উচ্চারণ করেননি। জামায়াতীরা এতে মনঃক্ষুণ্ন হলেও হতে পারে। এ কথা অনস্বীকার্য, ইদানীং রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা হ্রাস পেলেও, বিরোধীদলীয় নেত্রী জানেন যে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রশ্নে সারাদেশ আজ একতাবদ্ধ। এ ক্ষেত্রে জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি দেশবাসীর সাপোর্ট ১০০%; যে কারণে মহাসমাবেশে খালেদা জিয়া একটিবারও জোটভুক্ত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে কথা বলেননি।
ইকবাল হাসান :কবি
iqbalhasan2003@yahoo.ca
No comments