কৃষি-সিনজেনটার বিচার করবে কে? by পাভেল পার্থ
আর মাত্র দুই মাস বাকি, ভাদ্র মাসের শেষে বীজতলায় টমেটো বীজ বুনতে হবে। কিন্তু দেশের বরেন্দ্রভূমির মাটি ক্ষুব্ধ ও সন্ত্রস্ত। গত বছর সিনজেনটা কোম্পানির হাইব্রিড সবল জাতের টমেটো চাষ করায় ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা এখনো সুবিচার ও ক্ষতিপূরণ পাননি। বরেন্দ্র এলাকার লোকজন চায়, সরকার সিনজেনটার বীজ-প্রতারণার ন্যায্য বিচার করবে।
২০১০ সালে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার হাজারো কৃষক সিনজেনটার হাইব্রিড টমেটো বীজ কিনে নিঃস্ব, প্রতারিত ও রক্তাক্ত হয়েছেন। গত শীত মৌসুমে টমেটো চাষের জন্য স্থানীয় কৃষকেরা সিনজেনটা বাংলাদেশ লিমিটেডের স্থানীয় ডিলার থেকে সবল এফ-১ হাইব্রিড টমেটো বীজ কিনে জমিতে লাগানোর পর গাছে কোনো ফল ধরেনি। প্রতারিত কৃষকেরা গোদাগাড়ী কৃষি উন্নয়ন ঐক্য পরিষদের ব্যানারে ২৩ নভেম্বর গোদাগাড়ী মহিষালবাড়ি পশুরহাটের বিক্ষোভ সমাবেশে এই টমেটো বীজ-প্রতারণার বিচার ও ক্ষতিপূরণের দাবি তোলেন। কৃষকের দাবির সঙ্গে স্থানীয় সাংসদ, জনপ্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী ও নাগরিক সমাজও একাত্ম হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করেছেন, যার অনুলিপি কৃষিমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, কৃষিসচিব ও কৃষি অধিদপ্তরের মহাপরিচালককেও দেওয়া হয়েছে। স্মারকলিপিতে কৃষকেরা জানিয়েছেন, ২০ গ্রাম টমেটো বীজ লাগে এক বিঘা জমির জন্য। সিনজেনটার সবল এফ-১ হাইব্রিড টমেটো বীজ ২০ গ্রামের দাম ৮৫০ টাকা হলেও কৃষকদের কাছ থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত অন্যায়ভাবে নেওয়া হয়েছে। এক বিঘা জমি চাষ করতে প্রায় ২৫ হাজার টাকা খরচ হলেও জমিতে কোনো টমেটো গাছেই কোনো ফল হয়নি। ক্ষতিগ্রস্ত চার কৃষক সিনজেনটা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় পরিবেশকসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ৮ নভেম্বর ২০১০ তারিখে রাজশাহীর অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে মামলা করেন। এ নিয়ে বেশ কয়েকটি সরকারি তদন্ত হয়। রাজশাহী-১ আসনের সাংসদ বেশ জোরেশোরে সিনজেনটার বীজ-প্রতারণার বিষয়টি জাতীয় সংসদে উত্থাপন করেন। কৃষিমন্ত্রী বিষয়টি সুষ্ঠুভাবে সুরাহা করে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। বীজ-প্রতারণার সাক্ষী পাঁচ হাজার কৃষক তাঁদের সুনির্দিষ্ট তথ্য ও স্বাক্ষরসহ সরকারের কাছে স্মারকলিপি পেশ করেন। রাজশাহীতে সিনজেনটার অফিস ঘেরাওয়ের পর সিনজেনটার বিশাল সাইনবোর্ডটি সরিয়ে ফেলা হয়। সিনজেনটার এই বীজ-প্রতারণার বিষয়টি প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারিত হয়েছে। কিন্তু কোনো কিছুতেই কিছু হচ্ছে না।
বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষকেরা বিস্মিত হয়ে প্রশ্ন করেছেন, সিনজেনটা কি বাংলাদেশের সরকারের চেয়ে বেশি শক্তিশালী? তা না হলে সরকার কেন যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ থাকা সত্ত্বেও তার বিচার করতে পারছে না? সিনজেনটার টমেটো চাষ করা বরেন্দ্র অঞ্চলের নিষ্ফল জমিন ও সব হারানো কৃষকের করুণ আহাজারি, সিনজেনটার বিচার করবে কে?
মনসান্টো, ডুপন্ট, সিনজেনটা, গ্রুপই লিমাগ্রেইন, ল্যান্ড ও লেকস, বায়ার, কেডব্লিউএস এজি, সাকাটা, ডিএলএফ-ট্রাইফলিয়াম ও টাকিল এই শীর্ষ ১০ করপোরেট কোম্পানিই সারা দুনিয়ার কৃষিবীজ বাজারের প্রায় ৬৭ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। ২০০৭ সালে সিনজেনটার বীজ-বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল দুই হাজার ১৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বীজের ওপর সিনজেনটার মতো করপোরেট কোম্পানিগুলোর একতরফা দখলদারির প্রতি রাষ্ট্রের যে কোনো ধরনের সুস্পষ্ট নিয়ন্ত্রণ নেই, তা সাম্প্রতিক টমেটো বীজ-প্রতারণার মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন, কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান, বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি থেকে শুরু করে উপজেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটি, উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদ, স্থানীয় বাজার কমিটি, পরিবেশক সমিতি, দোকানদার মালিক সমিতি—কেউ এ ঘটনার দায়দায়িত্ব নিতে চায়নি। যেন আজন্ম কোনো পাপের ফলে ‘কৃষক’ নামের একশ্রেণীর জন্ম হয়েছে। ফসল ফলিয়ে দেশকে বাঁচানোর দায়িত্ব তাঁদের একার, আর সেই ফসল ফলাতে গিয়ে মরা কি বাঁচার দায়দায়িত্বও কৃষকের একার। গোদাগাড়ী উপজেলাতে ২৭ জন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আছেন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের রক্ত জল করা টাকায় তাঁদের বেতন দেয় সরকার। ভয়ংকর এই বীজ-প্রতারণার ঘটনায় তাঁরা কেউ কৃষকের পক্ষে দাঁড়ানোর মতো শক্তি-সাহস ও দক্ষতা অর্জন করতে পারেননি।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা যখন আদালতে বীজ-প্রতারণার মামলা করতে যান, তখন মূলত ৪২০ ধারায় প্রতারণার মামলা হয়েছে। কিন্তু মনে রাখা জরুরি, বীজ হলো এক জীবন্ত প্রাণসত্তা এবং কৃষির চলমান বংশধারা। বীজ বিষয়ে মামলা ও বিচার, বিচার-প্রক্রিয়ার ধরন কেমন হবে, তা কৃষকের পরামর্শে নির্দিষ্ট হওয়া জরুরি। এ বিষয়ে সুস্পষ্ট আইন ও নীতিমালা প্রণয়ন ও কার্যকর করা জরুরি। বীজ-প্রতারণার ঘটনাটিকে ধরে রাষ্ট্র বীজ বিষয়ে তার রাষ্ট্রীয় অবস্থানের অনেক কিছুই স্পষ্ট করতে পারত। কিন্তু এত কিছুর পরও রাষ্ট্রের এই রহস্যময় দীর্ঘ এক বছরের নিশ্চুপতা বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষকের মনে আরও বেশি ক্ষোভ ও হতাশা বাড়িয়ে তুলছে।
বাংলাদেশ কৃষি মন্ত্রণালয় ২৫ জানুয়ারি ১৯৯৩ তারিখে বিজ্ঞপ্তি আকারে জাতীয় বীজনীতি ঘোষণা করে। এর আগে বাংলাদেশে জাতীয় বীজ অধ্যাদেশ, ১৯৭৭, বীজ (সংশোধন) আইন, ১৯৯৭, জাতীয় বীজ বিধিমালা, ১৯৯৮ গৃহীত হয়। ৩০ ডিসেম্বর ২০০৭ তারিখে উদ্ভিদজাত ও কৃষক অধিকার সংরক্ষণ অধ্যাদেশ, ২০০৭ নীতিগতভাবে অনুমোদিত হয়েছে। বীজ-সম্পর্কিত বাংলাদেশে কৃষকের পক্ষে কোনো আইন ও সুস্পষ্ট নীতিমালা না থাকার কারণেই বারবার সিনজেনটার মতো করপোরেট কোম্পানিরা দেশের কৃষকের সঙ্গে একটির পর একটি বীজ-প্রতারণা করে চলেছে।
এত কিছুর পরও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা মানুষের ওপর থেকে তাদের বিশ্বাস, মনোবল ও আস্থা হারিয়ে ফেলেননি। বরেন্দ্র অঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা এখনো প্রবলভাবে বিশ্বাস করেন, কৃষিমন্ত্রী চাইলে কৃষকের পক্ষে দাঁড়িয়ে এক নিমিষেই এ সমস্যার সমাধান করে ফেলতে পারেন। বরেন্দ্র অঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা বিশ্বাস করেন, আগামী টমেটো মৌসুম শুরুর আগেই নৃশংস বীজ-প্রতারণার ন্যায্য বিচার ও সিনজেনটার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চূড়ান্ত করবে রাষ্ট্র। ২০১০ সালে কেবল গোদাগাড়ীতেই চার হাজার হেক্টর জমি ছিল টমেটো চাষের লক্ষ্যমাত্রা। কিন্তু এ বছর যতই সময় ঘনিয়ে আসছে ততই হতাশা এবং উৎকণ্ঠা বাড়ছে বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষকের। বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে কৃষকের জান ও জমি বাঁচানো ছাড়া আর কোনো গতি আছে কি না, তা এখনো আমরা জানি না।
পাভেল পার্থ: গবেষক, প্রতিবেশ ও প্রাণবৈচিত্র্য সংরক্ষণ।
animistbangla@yahoo.com
বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষকেরা বিস্মিত হয়ে প্রশ্ন করেছেন, সিনজেনটা কি বাংলাদেশের সরকারের চেয়ে বেশি শক্তিশালী? তা না হলে সরকার কেন যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ থাকা সত্ত্বেও তার বিচার করতে পারছে না? সিনজেনটার টমেটো চাষ করা বরেন্দ্র অঞ্চলের নিষ্ফল জমিন ও সব হারানো কৃষকের করুণ আহাজারি, সিনজেনটার বিচার করবে কে?
মনসান্টো, ডুপন্ট, সিনজেনটা, গ্রুপই লিমাগ্রেইন, ল্যান্ড ও লেকস, বায়ার, কেডব্লিউএস এজি, সাকাটা, ডিএলএফ-ট্রাইফলিয়াম ও টাকিল এই শীর্ষ ১০ করপোরেট কোম্পানিই সারা দুনিয়ার কৃষিবীজ বাজারের প্রায় ৬৭ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। ২০০৭ সালে সিনজেনটার বীজ-বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল দুই হাজার ১৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বীজের ওপর সিনজেনটার মতো করপোরেট কোম্পানিগুলোর একতরফা দখলদারির প্রতি রাষ্ট্রের যে কোনো ধরনের সুস্পষ্ট নিয়ন্ত্রণ নেই, তা সাম্প্রতিক টমেটো বীজ-প্রতারণার মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন, কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান, বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি থেকে শুরু করে উপজেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটি, উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদ, স্থানীয় বাজার কমিটি, পরিবেশক সমিতি, দোকানদার মালিক সমিতি—কেউ এ ঘটনার দায়দায়িত্ব নিতে চায়নি। যেন আজন্ম কোনো পাপের ফলে ‘কৃষক’ নামের একশ্রেণীর জন্ম হয়েছে। ফসল ফলিয়ে দেশকে বাঁচানোর দায়িত্ব তাঁদের একার, আর সেই ফসল ফলাতে গিয়ে মরা কি বাঁচার দায়দায়িত্বও কৃষকের একার। গোদাগাড়ী উপজেলাতে ২৭ জন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আছেন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের রক্ত জল করা টাকায় তাঁদের বেতন দেয় সরকার। ভয়ংকর এই বীজ-প্রতারণার ঘটনায় তাঁরা কেউ কৃষকের পক্ষে দাঁড়ানোর মতো শক্তি-সাহস ও দক্ষতা অর্জন করতে পারেননি।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা যখন আদালতে বীজ-প্রতারণার মামলা করতে যান, তখন মূলত ৪২০ ধারায় প্রতারণার মামলা হয়েছে। কিন্তু মনে রাখা জরুরি, বীজ হলো এক জীবন্ত প্রাণসত্তা এবং কৃষির চলমান বংশধারা। বীজ বিষয়ে মামলা ও বিচার, বিচার-প্রক্রিয়ার ধরন কেমন হবে, তা কৃষকের পরামর্শে নির্দিষ্ট হওয়া জরুরি। এ বিষয়ে সুস্পষ্ট আইন ও নীতিমালা প্রণয়ন ও কার্যকর করা জরুরি। বীজ-প্রতারণার ঘটনাটিকে ধরে রাষ্ট্র বীজ বিষয়ে তার রাষ্ট্রীয় অবস্থানের অনেক কিছুই স্পষ্ট করতে পারত। কিন্তু এত কিছুর পরও রাষ্ট্রের এই রহস্যময় দীর্ঘ এক বছরের নিশ্চুপতা বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষকের মনে আরও বেশি ক্ষোভ ও হতাশা বাড়িয়ে তুলছে।
বাংলাদেশ কৃষি মন্ত্রণালয় ২৫ জানুয়ারি ১৯৯৩ তারিখে বিজ্ঞপ্তি আকারে জাতীয় বীজনীতি ঘোষণা করে। এর আগে বাংলাদেশে জাতীয় বীজ অধ্যাদেশ, ১৯৭৭, বীজ (সংশোধন) আইন, ১৯৯৭, জাতীয় বীজ বিধিমালা, ১৯৯৮ গৃহীত হয়। ৩০ ডিসেম্বর ২০০৭ তারিখে উদ্ভিদজাত ও কৃষক অধিকার সংরক্ষণ অধ্যাদেশ, ২০০৭ নীতিগতভাবে অনুমোদিত হয়েছে। বীজ-সম্পর্কিত বাংলাদেশে কৃষকের পক্ষে কোনো আইন ও সুস্পষ্ট নীতিমালা না থাকার কারণেই বারবার সিনজেনটার মতো করপোরেট কোম্পানিরা দেশের কৃষকের সঙ্গে একটির পর একটি বীজ-প্রতারণা করে চলেছে।
এত কিছুর পরও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা মানুষের ওপর থেকে তাদের বিশ্বাস, মনোবল ও আস্থা হারিয়ে ফেলেননি। বরেন্দ্র অঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা এখনো প্রবলভাবে বিশ্বাস করেন, কৃষিমন্ত্রী চাইলে কৃষকের পক্ষে দাঁড়িয়ে এক নিমিষেই এ সমস্যার সমাধান করে ফেলতে পারেন। বরেন্দ্র অঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা বিশ্বাস করেন, আগামী টমেটো মৌসুম শুরুর আগেই নৃশংস বীজ-প্রতারণার ন্যায্য বিচার ও সিনজেনটার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চূড়ান্ত করবে রাষ্ট্র। ২০১০ সালে কেবল গোদাগাড়ীতেই চার হাজার হেক্টর জমি ছিল টমেটো চাষের লক্ষ্যমাত্রা। কিন্তু এ বছর যতই সময় ঘনিয়ে আসছে ততই হতাশা এবং উৎকণ্ঠা বাড়ছে বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষকের। বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে কৃষকের জান ও জমি বাঁচানো ছাড়া আর কোনো গতি আছে কি না, তা এখনো আমরা জানি না।
পাভেল পার্থ: গবেষক, প্রতিবেশ ও প্রাণবৈচিত্র্য সংরক্ষণ।
animistbangla@yahoo.com
No comments