অপব্যবহার রোধে নতুন আইন জরুরি-খুনিকে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা
সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদের আওতায় রাষ্ট্রপতিকে দেওয়া ক্ষমতার অপব্যবহারের আরেকটি উদ্বেগজনক তথ্য উদ্ঘাটিত হয়েছে। দলীয় লোকদের দিয়ে কমিটি করে তথাকথিত রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের সঙ্গে এ ঘটনা একই সুতায় বাঁধা। বিএনপির আমলে কানাডাপ্রবাসী ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত জিন্টুকে নিতান্ত দলীয় বিবেচনায় ক্ষমা করা হয়েছিল।
ওই সময় এ ঘটনা প্রকাশিত হলে জনমনে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তখন আওয়ামী লীগের নেতারা যে অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছিলেন, ক্ষমতায় এসে সেটাই জায়েজ করলেন। দুটি মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড থেকে রেহাই দেওয়ার সিদ্ধান্ত হঠকারী, ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর হীনস্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। এটা সাংবিধানিক ক্ষমতা অপব্যবহারের গুরুতর দৃষ্টান্তও বটে।
রাষ্ট্রপতির ক্ষমা করার অধিকার কোনো সাধারণ অধিকার নয়। ইংলিশ কমন ল-এর যে ‘রয়্যাল প্রিরোগেটিভ’, সেটাই আমাদের ৪৯ অনুচ্ছেদ ধারণ করেছে। সে কারণেই সংবিধানে বাংলায় ‘অধিকার’ লেখা হলেও এর ইংরেজি কিন্তু সঠিক অর্থেই ‘প্রিরোগেটিভ’। এটা একটা বিশেষ অধিকার। যথেষ্ট নিয়ন্ত্রিত ও সংরক্ষিত অধিকার।
আমাদের নীতিনৈতিকতা-বিবর্জিত জনপ্রশাসন রাষ্ট্রপতির ‘প্রিরোগেটিভ’কে যেভাবে খোলামকুচি করে ফেলছে, তাতে দেশের বিচারব্যবস্থা বড় ধরনের হোঁচট খেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। আইন হাতে তুলে নেওয়ার মারাত্মক ব্যাধি ইতিমধ্যেই সমাজকে সংক্রমিত করছে। এই প্রেক্ষাপটে তথাকথিত রাজনৈতিক বিবেচনায় মামলা প্রত্যাহার ও দণ্ডিত অপরাধীকে ক্ষমা করে দেওয়ার প্রক্রিয়া বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। আমরা এর আগে সংসদ উপনেতার ছেলেকে পলাতক থাকা অবস্থায় দণ্ড মওকুফ পেতে দেখেছি। আর এবার একটি লোমহর্ষক খুনের দণ্ডিত আসামি ১০ বছরের বেশি সময় পালিয়ে থেকে আদালতে আত্মসমর্পণের চার মাস না যেতেই ক্ষমা লাভের ঘটনা ঘটল। উপরন্তু এই হত্যাকাণ্ড রাজনৈতিকভাবেও তাৎপর্যপূর্ণ। লক্ষ্মীপুরের বিএনপির নেতা আইনজীবী নুরুল ইসলামের হন্তারক হলেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের আবু তাহেরের ছেলে, যিনি দলের ভেতরেই সমালোচিত ও বিতর্কিত।
এটা পরিষ্কার যে সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদে দেওয়া রাষ্ট্রপতির অধিকারের অপরিণামদর্শী প্রয়োগ আইনের শাসনের সর্বনাশ ডেকে আনছে। এর আশু প্রতিকারের জন্য আমরা দুটি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাই। প্রথমত, গত দুই দশকে ৪৯ অনুচ্ছেদের আওতায় সুবিধাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের একটি তালিকা প্রকাশ করা হোক। জাতীয় সংসদে বিষয়টি আলোচনা হোক। ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বলেছেন, দণ্ড মওকুফে ‘প্রকৃত যুক্তি’ থাকতে হবে। আদালতের এক নির্দেশে হরিয়ানার স্বরাষ্ট্রসচিবকে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত সময়ে দণ্ড মওকুফের সব তথ্য হলফনামা দিয়ে প্রকাশ করতে হয়েছিল। বাংলাদেশেও এ-সংক্রান্ত তথ্য জানানো জরুরি বলে মনে করি। সংবিধান বিশেষ ও অত্যন্ত বিরল ব্যতিক্রমী পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য রাষ্ট্রপতিকে যে অধিকার দিয়েছে, তার মর্যাদা ও যথাপ্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
রাষ্ট্রপতির ক্ষমার অপব্যবহার রোধে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট একটি গাইডলাইন বেঁধে দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনে এ বিষয়ে নির্দিষ্ট আইন রয়েছে। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদেও এ বিষয়ে একটি আইন প্রণয়ন জরুরি বলে আমরা মনে করি।
রাষ্ট্রপতির ক্ষমা করার অধিকার কোনো সাধারণ অধিকার নয়। ইংলিশ কমন ল-এর যে ‘রয়্যাল প্রিরোগেটিভ’, সেটাই আমাদের ৪৯ অনুচ্ছেদ ধারণ করেছে। সে কারণেই সংবিধানে বাংলায় ‘অধিকার’ লেখা হলেও এর ইংরেজি কিন্তু সঠিক অর্থেই ‘প্রিরোগেটিভ’। এটা একটা বিশেষ অধিকার। যথেষ্ট নিয়ন্ত্রিত ও সংরক্ষিত অধিকার।
আমাদের নীতিনৈতিকতা-বিবর্জিত জনপ্রশাসন রাষ্ট্রপতির ‘প্রিরোগেটিভ’কে যেভাবে খোলামকুচি করে ফেলছে, তাতে দেশের বিচারব্যবস্থা বড় ধরনের হোঁচট খেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। আইন হাতে তুলে নেওয়ার মারাত্মক ব্যাধি ইতিমধ্যেই সমাজকে সংক্রমিত করছে। এই প্রেক্ষাপটে তথাকথিত রাজনৈতিক বিবেচনায় মামলা প্রত্যাহার ও দণ্ডিত অপরাধীকে ক্ষমা করে দেওয়ার প্রক্রিয়া বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। আমরা এর আগে সংসদ উপনেতার ছেলেকে পলাতক থাকা অবস্থায় দণ্ড মওকুফ পেতে দেখেছি। আর এবার একটি লোমহর্ষক খুনের দণ্ডিত আসামি ১০ বছরের বেশি সময় পালিয়ে থেকে আদালতে আত্মসমর্পণের চার মাস না যেতেই ক্ষমা লাভের ঘটনা ঘটল। উপরন্তু এই হত্যাকাণ্ড রাজনৈতিকভাবেও তাৎপর্যপূর্ণ। লক্ষ্মীপুরের বিএনপির নেতা আইনজীবী নুরুল ইসলামের হন্তারক হলেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের আবু তাহেরের ছেলে, যিনি দলের ভেতরেই সমালোচিত ও বিতর্কিত।
এটা পরিষ্কার যে সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদে দেওয়া রাষ্ট্রপতির অধিকারের অপরিণামদর্শী প্রয়োগ আইনের শাসনের সর্বনাশ ডেকে আনছে। এর আশু প্রতিকারের জন্য আমরা দুটি পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাই। প্রথমত, গত দুই দশকে ৪৯ অনুচ্ছেদের আওতায় সুবিধাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের একটি তালিকা প্রকাশ করা হোক। জাতীয় সংসদে বিষয়টি আলোচনা হোক। ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বলেছেন, দণ্ড মওকুফে ‘প্রকৃত যুক্তি’ থাকতে হবে। আদালতের এক নির্দেশে হরিয়ানার স্বরাষ্ট্রসচিবকে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত সময়ে দণ্ড মওকুফের সব তথ্য হলফনামা দিয়ে প্রকাশ করতে হয়েছিল। বাংলাদেশেও এ-সংক্রান্ত তথ্য জানানো জরুরি বলে মনে করি। সংবিধান বিশেষ ও অত্যন্ত বিরল ব্যতিক্রমী পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য রাষ্ট্রপতিকে যে অধিকার দিয়েছে, তার মর্যাদা ও যথাপ্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
রাষ্ট্রপতির ক্ষমার অপব্যবহার রোধে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট একটি গাইডলাইন বেঁধে দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনে এ বিষয়ে নির্দিষ্ট আইন রয়েছে। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদেও এ বিষয়ে একটি আইন প্রণয়ন জরুরি বলে আমরা মনে করি।
No comments