স্মরণ-নেরিকা ও বাংলামতির চাষে সাফল্য by বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন
পরিবেশ দূষণ, অতিবৃষ্টি-অনাবৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়াসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক সমস্যার কারণে পৃথিবীব্যাপী কমে যাচ্ছে ফসল উৎপাদন। আমাদের দেশও পরিবেশের এই প্রতিকূল অবস্থার প্রভাব থেকে বিচ্ছিন্ন নয়। প্রকৃতির নানাবিধ প্রতিকূলতার কারণে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় কৃষকরা অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন করতে পারছেন না।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কৃষিজাত পণ্য উৎপাদনে আন্তরিকতার সঙ্গে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করতে দেখা যাচ্ছে। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায় 'নেরিকা' ধানের পরীক্ষামূলক চাষ এবং 'বাংলামতি' ধানের সফল চাষ হয়েছে। খরা-সহিষ্ণু ও উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান নেরিকা। 'নিউ রাইস ফর আফ্রিকা'র সংক্ষিপ্ত নাম নেরিকা। আফ্রিকা রাইস সেন্টার নেরিকা জাতের ধান উদ্ভাবন করে। উচ্চ ফলনশীল জাতের নেরিকা ধান উদ্ভাবন পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বপ্রথম সাফল্য বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের তিনটি প্রদর্শনী প্লটে ৫০ শতক জমিতে নেরিকা ধান বপনের মাধ্যমে পরীক্ষামূলক চাষ শুরু হয়। উপজেলার কালাপুর, ভুনবীর ও শ্রীমঙ্গল ইউনিয়নে তিনটি প্রদর্শনী প্লট করা হয়েছে। শ্রীমঙ্গল ইউনিয়নের উত্তর ভাড়াউড়ার সুমন্ত দেবের ২০ শতক, ভুনবীরের শাসন গ্রামের লিটন অমর দেবের ২০ শতক ও কালাপুর ইউনিয়নের মাজদিহি গ্রামের ফারুক আহমেদের ১০ শতক জমি নির্বাচন করে বীজ বপন করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, প্রদর্শনী প্লটে নেরিকা ধান পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ টন ফলন দেবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুকল্প দাস জানান, সারা বছর চাষাবাদের উপযোগী ও খরা-সহিষ্ণু এ ধানের জীবনকাল মাত্র ৯০ থেকে ১০০ দিন। এ সময়ের মধ্যেই ভালো ফলন পাওয়া যায়। ভাত অত্যন্ত সুস্বাদু। কৃষিনির্ভর চাষাবাদে নেরিকা ধান উৎপাদনের জন্য সারা মৌসুমে পাঁচ দিন ১৫-২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতই যথেষ্ট। তিনি আরো জানান, উপযুক্ত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে নেরিকা ধানের ফলন হেক্টর প্রতি ছয় টন পাওয়া সম্ভব। তা ছাড়া রোগবালাই প্রতিরোধী হওয়ায় কীটনাশক প্রয়োগের প্রয়োজন হয় না বলে স্বল্প খরচে কৃষক নেরিকা চাষ করে লাভবান হতে পারেন।
শ্রীমঙ্গলে বাংলামতি ধানেরও সফল চাষ সম্পন্ন হয়েছে। এ জাতের ধানের প্রধান বৈশিষ্ট্য ধান অত্যন্ত সরু এবং ধান গাছে ফুল আসার সঙ্গে সঙ্গে পুরো এলাকা সুগন্ধে ভরে ওঠে। কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার বোরো মৌসুমে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক নব উদ্ভাবিত সুগন্ধি ব্রি-৫০ বাংলামতি ধানের সিলেট বিভাগের প্রথম দুটি প্রদর্শনী প্লট শ্রীমঙ্গলের ভুনবীর ইউনিয়নের গন্ধর্বপুর এবং সিন্দুরখান ইউনিয়নের দক্ষিণটুক গ্রামে করা হয়। দুই একর জমিতে মোট প্রায় পাঁচ হাজার কেজি ধান উৎপন্ন হয়েছে। যা হেক্টর প্রতি উৎপাদন দাঁড়ায় ছয় মেট্রিক টন। এ দুটি প্রদর্শনী প্লট অত্যন্ত সফল হওয়ায় এলাকার অসংখ্য প্রান্তিক কৃষক এ ধান চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। কৃষিবিদ সুকল্প দাশ জানান, 'সুগন্ধি ব্রি ধান-৫০ (বাংলামতি) দেশের শীতপ্রধান অঞ্চলে অধিক ফলন হওয়ার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। শ্রীমঙ্গল শীতপ্রধান অঞ্চল হওয়ায় এখানে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এ ধানের চাষ সম্ভব। এরই মধ্যে উপজেলার কৃষকরা বাংলামতি চাষে ব্যাপক আগ্রহ দেখিয়েছেন।' প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করলে আগামী বোরো মৌসুমেই শ্রীমঙ্গলে উৎপাদিত বাংলামতি এলাকার চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি করা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান। কৃষিপণ্য উৎপাদনের উজ্জ্বল একটি পটভূমি রচিত হোক এখানে। উৎপাদন সফলতায় ভরে উঠুক প্রতিটি কৃষকের আঙিনা।
বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন
শ্রীমঙ্গলে বাংলামতি ধানেরও সফল চাষ সম্পন্ন হয়েছে। এ জাতের ধানের প্রধান বৈশিষ্ট্য ধান অত্যন্ত সরু এবং ধান গাছে ফুল আসার সঙ্গে সঙ্গে পুরো এলাকা সুগন্ধে ভরে ওঠে। কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার বোরো মৌসুমে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট কর্তৃক নব উদ্ভাবিত সুগন্ধি ব্রি-৫০ বাংলামতি ধানের সিলেট বিভাগের প্রথম দুটি প্রদর্শনী প্লট শ্রীমঙ্গলের ভুনবীর ইউনিয়নের গন্ধর্বপুর এবং সিন্দুরখান ইউনিয়নের দক্ষিণটুক গ্রামে করা হয়। দুই একর জমিতে মোট প্রায় পাঁচ হাজার কেজি ধান উৎপন্ন হয়েছে। যা হেক্টর প্রতি উৎপাদন দাঁড়ায় ছয় মেট্রিক টন। এ দুটি প্রদর্শনী প্লট অত্যন্ত সফল হওয়ায় এলাকার অসংখ্য প্রান্তিক কৃষক এ ধান চাষে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। কৃষিবিদ সুকল্প দাশ জানান, 'সুগন্ধি ব্রি ধান-৫০ (বাংলামতি) দেশের শীতপ্রধান অঞ্চলে অধিক ফলন হওয়ার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। শ্রীমঙ্গল শীতপ্রধান অঞ্চল হওয়ায় এখানে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এ ধানের চাষ সম্ভব। এরই মধ্যে উপজেলার কৃষকরা বাংলামতি চাষে ব্যাপক আগ্রহ দেখিয়েছেন।' প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করলে আগামী বোরো মৌসুমেই শ্রীমঙ্গলে উৎপাদিত বাংলামতি এলাকার চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি করা সম্ভব হবে বলে তিনি জানান। কৃষিপণ্য উৎপাদনের উজ্জ্বল একটি পটভূমি রচিত হোক এখানে। উৎপাদন সফলতায় ভরে উঠুক প্রতিটি কৃষকের আঙিনা।
বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন
No comments