ভালোবাসার ফুল-কৃষি অর্থনীতির নতুন রঙ

বসন্তের আগমনে নানা রকমের বাহারি ফুলের রঙের সঙ্গে মানুষের মনের রঙ মিলেমিশে একাকার হয়ে আমাদের চারপাশে সৃষ্টি করে আনন্দ আর ভালোবাসার বর্ণিল আবেশ। পহেলা ফাল্গুন আর ভালোবাসা দিবস মিলে গোটা মাস, বিশেষ করে বসন্ত ঋতু বাঙালির স্বপ্নমাখা মুখ আর আবেগঘন হৃদয়ের স্পন্দন হয়ে ওঠে।


এ উপলক্ষে নানা রঙের বাহারি ফুল হয়ে ওঠে একান্ত অনুষঙ্গ। তবে সারা দুনিয়ায় এমনকি বাংলাদেশেও সব বয়সের নারী-পুরুষের হৃদয়ের উচ্ছ্বাস প্রকাশের মাধ্যম লাল গোলাপ। কিন্তু আমাদের দেশে লাল গোলাপের তেমন চাষ হয় না বলে এটি এখনও দুষ্প্রাপ্য। তবে বাঙালি অন্য রঙের ফুল দিয়ে হলেও এই দুটি দিবসকে আপনার মতো করে বরণ করে নিতে ভুলে না। সোমবার সমকালসহ সহযোগী একাধিক পত্রিকায় দেশের ফুল বাজারের সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ পেয়েছে। এই রিপোর্টেই দেখা যায়, বসন্ত বরণ ও ভালোবাসা দিবসের অনুষঙ্গ ফুল কিন্তু এখন আমাদের কৃষি অর্থনীতির অর্থকরী অংশে পরিণত হয়েছে। প্রতি বছরই ফুলের চাষ বাড়ছে। বাড়ছে ফুল উৎপাদনে ব্যাপৃত কৃষকের আয়। কেউ কেউ ফুল উৎপাদনকেই তাদের জীবিকা হিসেবে গ্রহণ করেছেন। আসলে জন্ম থেকেই উৎসবের সমারোহের মধ্যেই বাঙালির বাস। তাই ফুলের চাহিদা শুধু বসন্ত বরণ ও ভালোবাসা দিবস উদযাপনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই, একুশে, স্বাধীনতা দিবসসহ নানা জাতীয়, সামাজিক, পারিবারিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান-উৎসবেও এর চাহিদা ব্যাপক। তাই ফুল চাষের ব্যাপারে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে পরিকল্পিত উদ্যোগকে আরও সম্প্রসারিত করা গেলে বাহারি ফুল দেশের চাহিদা মেটানো ও আরও প্রসারিত করা এবং বিদেশে রফতানি করে বিপুল অঙ্কের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের উৎসে পরিণত হতে পারে। ভালোবাসা দিবসে সারাবিশ্বে লাল গোলাপের চাহিদা থাকে অনেক। এবার আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকা থেকে ইউরোপ বিপুলসংখ্যক লাল গোলাপ আমদানি করেছে। আমরা এই লাল গোলাপ উৎপাদন করে নিজেদের মনের লাল রঙের ক্ষুধা যেমন মেটাতে পারি, তেমনি এটা রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রাও আয় করতে পারি। দেশে দ্রুত প্রসারমান ফুলের বাজার আমাদের কৃষি অর্থনীতিতে নতুন রঙ যোগ করেছে। এই বাজারকে আরও প্রসারিত করার জন্য নানা রঙের বাহারি ফুলের চাষ বৃদ্ধি করতে হবে। এ জন্য অবশ্যই চাই বাড়তি প্রণোদনা।
 

No comments

Powered by Blogger.