শ নি বা রে র বিশেষ প্রতিবেদন-লাল গোলাপে রঙিন জীবন by আরিফুল হক
‘জোটে যদি মোটে একটি পয়সা খাদ্য কিনিও ক্ষুধার লাগি, দুটি জোটে যদি তবে একটিতে ফুল কিনে নিও হে অনুরাগী।’ অপার সৌন্দর্যের প্রতীক ফুলের প্রতি মানুষের আগ্রহ চিরন্তন। গ্রাম বা শহরে যেকোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে ফুলের ব্যবহার আলাদা মাত্রা এনে দেয়।
মানুষের আগ্রহের কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে ফুলের বাণিজ্যিক চাষ হচ্ছে। বড় বড় শহরে, বিশেষ করে তরুণ-তরুণীদের আনাগোনা রয়েছে এমন জায়গায় হরেক রকম ফুল নিয়ে বসেন বিক্রেতারা। চলে জমজমাট বিকিকিনিও।
বিভাগীয় শহর রংপুরে বাণিজ্যিকভাবে এই ফুল বিক্রি ও চাষ শুরু হয়েছে একজন ব্যক্তির হাত ধরে। তিনি হলেন আনোয়ারুল ইসলাম। আনোয়ার নামেই পরিচিত তিনি। তাঁর দেখানো পথে রংপুর শহরে এখন ২১ জন ফুলের ব্যবসা করছেন। রংপুরে প্রায় ২৫ একর জমির ১১টি বাগান থেকে প্রতি মাসে ৫০ হাজার ফুল উৎপাদিত হচ্ছে।
শুরুর গল্প: ১৯৮৭ সালের কথা। রংপুর শহরের মাহীগঞ্জের রথবাড়ী এলাকার দরিদ্র যুবক আনোয়ার নিজের বুদ্ধিতেই ফুল সংগ্রহ করে বিক্রি করার চিন্তা করলেন। যেমন ভাবনা তেমনই কাজ। কিন্তু ফুল পাবেন কোথায়? চিন্তা করলেন, শহরের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার বাড়ির বাগান থেকে ফুল সংগ্রহ করা যেতে পারে। এভাবেই ফুল সংগ্রহ করে একদিন দাঁড়ালেন শহরের জেলা পরিষদ সুপার মার্কেটের সিঁড়ির পাশে। কাচের বয়ামে ফুল সাজিয়ে নিয়েছিলেন আনোয়ার। প্রথম দিন ১৩টি গোলাপ বিক্রি করেছিলেন। টুকটাক খরচ বাদে লাভ হয় ৭০ টাকা।
সেই থেকেই শুরু, আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি আনোয়ারকে। ফুলের চাহিদাও বাড়তে থাকে। সেই সময় সিও বাজার এলাকায় একটি বড় বাগান ছিল। ওই বাগান থেকে ফুল সংগ্রহ শুরু করলেন তিনি। বয়ামে ফুল রেখে চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছিল না। তাই বালতিতে পানি দিয়ে তাতে ফুল রেখে বিক্রি শুরু করলেন। ’৯২ সাল পর্যন্ত সিঁড়ির পাশেই তিনি গোলাপ বিক্রি করেছেন। এরপর কোনো এক কারণে তাঁকে সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ১৯৯৩ সালে পলিটেকনিক স্কুল ও কলেজের সামনের ফুটপাত এবং জেলা পরিষদ ভবনের সামনের ফুটপাতে ফুল বিক্রির জায়গা করে নেন আনোয়ার। এর মধ্যে তাঁর দেখাদেখি অনেকেই ফুলের ব্যবসা শুরু করেন। বাগান থেকে সংগ্রহ করা ফুলে চাহিদা মেটাতে না পেরে ফুল চাষের সিদ্ধান্ত নিলেন আনোয়ার। ’৯৩ সালে প্রায় আড়াই একর জমি বর্গা নিয়ে লাল গোলাপ চাষ করলেন। জমিতে শ্রমিকদের সঙ্গে নিজেও কাজ করেন। পরিশ্রম তাঁকে সাফল্যও এনে দেয়। প্রায় দুই যুগ ধরে ফুলের ব্যবসা করছেন আনোয়ার। এটা করেই বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই দিন কেটে যাচ্ছে তাঁর।
ফুল চাষ: রংপুরে প্রায় ২৫ একর জমিতে লাল গোলাপের চাষ হচ্ছে; পাশাপাশি অন্য ফুলেরও চাষ চলছে। সদর উপজেলার জলছত্র, শহরের শালবনের বোতলা, মাহীগঞ্জের বালাপাড়া, বাহারকাছনা, মীরবাগ, চকবাজার, দর্শনা, শিরিন পার্কসহ আরও কিছু এলাকায় রয়েছে এসব ফুলের বাগান।
গোলাপের জন্য সাধারণত তিন-চার ইঞ্চি লম্বা চারা রোপণ করা হয়। একটি গাছ ১২ বছর পর্যন্ত ফুল দিয়ে থাকে। প্রথমবারের পর এর পেছনে খরচ খুব একটা হয় না। সাধারণত অক্টোবর মাসের দিকে গাছের ডাল কেটে দেওয়া হয়। এর দুই মাস পর ফুল ফোটে। ৯ থেকে ১০ মাস পর্যন্ত ফুল পাওয়া যায়।
সরেজমিন: শহরের বালাপাড়া এলাকায় প্রায় ৫০ শতাংশ জমিতে লাল গোলাপ চাষ করেছেন হাফিজুল আলম। সবাই তাঁকে ফুলবাবু নামে চেনে। সম্প্রতি তাঁর বাগানে গিয়ে দেখা যায়, বাগানের বেশ কিছু গাছে ফুল ফুটেছে। অধিকাংশ গাছে ফুলের কলি এসেছে। দূর থেকে বাগানটি লাল সবুজের গালিচা বলে মনে হয়। বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছিলেন হাফিজুল। এরই ফাঁকে জানালেন ফুল ব্যবসায় তাঁর জড়িয়ে পড়ার গল্প।
১৯৯৭ সাল থেকে শহরের পলিটেকনিক স্কুল ও কলেজের সামনের ফুটপাতে বালতিতে করে ফুল সাজিয়ে বিক্রি শুরু করেন হাফিজুল। পরের বছর শহরের সাতমাথা এলাকায় ২০ শতাংশ জমি বর্গা নিয়ে গোলাপ চাষ করেন। এরপর জমির পরিমাণ বাড়তে বাড়তে এখন দুটি এলাকায় প্রায় এক একর জমিতে গোলাপ চাষ করছেন তিনি। হাফিজুল বলেন, ‘রংপুরের ফুল এখন আশপাশের জেলায়ও যাচ্ছে। এই ব্যবসার পথ দেখিয়েছেন আমাদের আনোয়ার ভাই। রংপুরের অনেকেই ফুল চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন।’
রংপুর পুলিশ লাইন স্কুল ও কলেজে বেশ কয়েকটি ফুলের দোকান গড়ে উঠেছে। এখানে ফুলের ক্রেতাদের বেশির ভাগই শিক্ষার্থী। কথা হলো ফুল কিনতে আসা রংপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী লায়লা আরজুমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বাড়ি ফেরার সময় প্রায় দিনই কয়েকটি লাল গোলাপ কিনি।’ ‘বাড়িতে সাজিয়ে রাখার জন্যই বেশির ভাগ সময় ফুল কেনা হয়।’—বলছিলেন লায়লার সঙ্গে আসা আয়েশা আক্তার।
নয়ন ফুল ঘরের স্বত্বাধিকারী নয়ন মিয়া জানালেন, এই ব্যবসায় আয় বেশ ভালো। ক্রেতাও দিন দিন বাড়ছে। রিজন ফুল বিতানের স্বত্বাধিকারী রিজন মিয়া বলেন, ‘২০০০ সাল থেকে এই ব্যবসা করছি। ফুল বিক্রি করে পরিবার-পরিজন নিয়ে ভালোই দিন কাটছে।’
সফল যাঁরা: আনোয়ারের পথ ধরে ফুল ব্যবসায় জড়িয়ে যাঁরা সফল হয়েছেন, সম্প্রতি কথা হয় তাঁদের কয়েকজনের সঙ্গে। বাহারকাছনার নজরুল ইসলাম ১৯৯৮ সালে ছোট্ট এক খণ্ড জমিতে ফুল চাষ করেছিলেন। এরপর প্রায় প্রতিবছর আবাদি জমির পরিমাণ বেড়েছে। এবার তিনি প্রায় চার একরে ফুলের চাষ করেছেন। ‘ফুল ব্যবসায় মাঝেমধ্যে মন্দা দেখা দিলেও ক্রেতারাই এ চাষ ধরে রাখার সাহস জুগিয়ে চলেছে।’ বলছিলেন নজরুল। লাভ কেমন জানতে চাইলে তিনি জানান, লাভ না হলে তো ব্যবসা গুটিয়ে ফেলতে হতো।
শহরের বালাপাড়ার সিদ্দিক হোসেন প্রায় ৪৫ শতাংশ জমিতে ফুল লাগিয়েছেন। তিনি জানালেন, রংপুরে উৎপাদিত ফুল দিনাজপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রামসহ অন্য জেলায় পাঠানো হয়।
ফুল চাষ ও ব্যবসা করে সফল হয়েছেন বালাপাড়ার সিদ্দিক হোসেন, জলছত্রের ফিরোজ মিয়া, বোতলা এলাকার মিথুন, চকবাজার সিটি কলেজের পাশের মানিক মিয়া, দর্শনার আনোয়ারুল ইসলাম, শিরিন পার্ক এলাকার মামুন মিয়া, মাহীগঞ্জের রনজু মিয়াসহ অনেকে।
তিনি যা বলেন: আনোয়ার বলেন, ‘কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা করতে না পারলেও মানুষের অনেক ভালোবাসা পেয়েছি। এর চেয়ে বড় আনন্দ আর কী থাকতে পারে।’ কিছুটা দুঃখ নিয়ে বললেন, ‘সুপার মার্কেট থেকে সরে যেতে হয়েছে। এরপর দুই দফায় ফুটপাত থেকে আমাদের সরিয়ে অন্য ব্যবসায়ীদের বসানো হয়েছে।’ আনোয়ার জানালেন, এ বছর সামান্য জমিতে ফুলের চাষ করেছেন। সামনে আরও বাড়াবেন।
বিভাগীয় শহর রংপুরে বাণিজ্যিকভাবে এই ফুল বিক্রি ও চাষ শুরু হয়েছে একজন ব্যক্তির হাত ধরে। তিনি হলেন আনোয়ারুল ইসলাম। আনোয়ার নামেই পরিচিত তিনি। তাঁর দেখানো পথে রংপুর শহরে এখন ২১ জন ফুলের ব্যবসা করছেন। রংপুরে প্রায় ২৫ একর জমির ১১টি বাগান থেকে প্রতি মাসে ৫০ হাজার ফুল উৎপাদিত হচ্ছে।
শুরুর গল্প: ১৯৮৭ সালের কথা। রংপুর শহরের মাহীগঞ্জের রথবাড়ী এলাকার দরিদ্র যুবক আনোয়ার নিজের বুদ্ধিতেই ফুল সংগ্রহ করে বিক্রি করার চিন্তা করলেন। যেমন ভাবনা তেমনই কাজ। কিন্তু ফুল পাবেন কোথায়? চিন্তা করলেন, শহরের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার বাড়ির বাগান থেকে ফুল সংগ্রহ করা যেতে পারে। এভাবেই ফুল সংগ্রহ করে একদিন দাঁড়ালেন শহরের জেলা পরিষদ সুপার মার্কেটের সিঁড়ির পাশে। কাচের বয়ামে ফুল সাজিয়ে নিয়েছিলেন আনোয়ার। প্রথম দিন ১৩টি গোলাপ বিক্রি করেছিলেন। টুকটাক খরচ বাদে লাভ হয় ৭০ টাকা।
সেই থেকেই শুরু, আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি আনোয়ারকে। ফুলের চাহিদাও বাড়তে থাকে। সেই সময় সিও বাজার এলাকায় একটি বড় বাগান ছিল। ওই বাগান থেকে ফুল সংগ্রহ শুরু করলেন তিনি। বয়ামে ফুল রেখে চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছিল না। তাই বালতিতে পানি দিয়ে তাতে ফুল রেখে বিক্রি শুরু করলেন। ’৯২ সাল পর্যন্ত সিঁড়ির পাশেই তিনি গোলাপ বিক্রি করেছেন। এরপর কোনো এক কারণে তাঁকে সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ১৯৯৩ সালে পলিটেকনিক স্কুল ও কলেজের সামনের ফুটপাত এবং জেলা পরিষদ ভবনের সামনের ফুটপাতে ফুল বিক্রির জায়গা করে নেন আনোয়ার। এর মধ্যে তাঁর দেখাদেখি অনেকেই ফুলের ব্যবসা শুরু করেন। বাগান থেকে সংগ্রহ করা ফুলে চাহিদা মেটাতে না পেরে ফুল চাষের সিদ্ধান্ত নিলেন আনোয়ার। ’৯৩ সালে প্রায় আড়াই একর জমি বর্গা নিয়ে লাল গোলাপ চাষ করলেন। জমিতে শ্রমিকদের সঙ্গে নিজেও কাজ করেন। পরিশ্রম তাঁকে সাফল্যও এনে দেয়। প্রায় দুই যুগ ধরে ফুলের ব্যবসা করছেন আনোয়ার। এটা করেই বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই দিন কেটে যাচ্ছে তাঁর।
ফুল চাষ: রংপুরে প্রায় ২৫ একর জমিতে লাল গোলাপের চাষ হচ্ছে; পাশাপাশি অন্য ফুলেরও চাষ চলছে। সদর উপজেলার জলছত্র, শহরের শালবনের বোতলা, মাহীগঞ্জের বালাপাড়া, বাহারকাছনা, মীরবাগ, চকবাজার, দর্শনা, শিরিন পার্কসহ আরও কিছু এলাকায় রয়েছে এসব ফুলের বাগান।
গোলাপের জন্য সাধারণত তিন-চার ইঞ্চি লম্বা চারা রোপণ করা হয়। একটি গাছ ১২ বছর পর্যন্ত ফুল দিয়ে থাকে। প্রথমবারের পর এর পেছনে খরচ খুব একটা হয় না। সাধারণত অক্টোবর মাসের দিকে গাছের ডাল কেটে দেওয়া হয়। এর দুই মাস পর ফুল ফোটে। ৯ থেকে ১০ মাস পর্যন্ত ফুল পাওয়া যায়।
সরেজমিন: শহরের বালাপাড়া এলাকায় প্রায় ৫০ শতাংশ জমিতে লাল গোলাপ চাষ করেছেন হাফিজুল আলম। সবাই তাঁকে ফুলবাবু নামে চেনে। সম্প্রতি তাঁর বাগানে গিয়ে দেখা যায়, বাগানের বেশ কিছু গাছে ফুল ফুটেছে। অধিকাংশ গাছে ফুলের কলি এসেছে। দূর থেকে বাগানটি লাল সবুজের গালিচা বলে মনে হয়। বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছিলেন হাফিজুল। এরই ফাঁকে জানালেন ফুল ব্যবসায় তাঁর জড়িয়ে পড়ার গল্প।
১৯৯৭ সাল থেকে শহরের পলিটেকনিক স্কুল ও কলেজের সামনের ফুটপাতে বালতিতে করে ফুল সাজিয়ে বিক্রি শুরু করেন হাফিজুল। পরের বছর শহরের সাতমাথা এলাকায় ২০ শতাংশ জমি বর্গা নিয়ে গোলাপ চাষ করেন। এরপর জমির পরিমাণ বাড়তে বাড়তে এখন দুটি এলাকায় প্রায় এক একর জমিতে গোলাপ চাষ করছেন তিনি। হাফিজুল বলেন, ‘রংপুরের ফুল এখন আশপাশের জেলায়ও যাচ্ছে। এই ব্যবসার পথ দেখিয়েছেন আমাদের আনোয়ার ভাই। রংপুরের অনেকেই ফুল চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন।’
রংপুর পুলিশ লাইন স্কুল ও কলেজে বেশ কয়েকটি ফুলের দোকান গড়ে উঠেছে। এখানে ফুলের ক্রেতাদের বেশির ভাগই শিক্ষার্থী। কথা হলো ফুল কিনতে আসা রংপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী লায়লা আরজুমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বাড়ি ফেরার সময় প্রায় দিনই কয়েকটি লাল গোলাপ কিনি।’ ‘বাড়িতে সাজিয়ে রাখার জন্যই বেশির ভাগ সময় ফুল কেনা হয়।’—বলছিলেন লায়লার সঙ্গে আসা আয়েশা আক্তার।
নয়ন ফুল ঘরের স্বত্বাধিকারী নয়ন মিয়া জানালেন, এই ব্যবসায় আয় বেশ ভালো। ক্রেতাও দিন দিন বাড়ছে। রিজন ফুল বিতানের স্বত্বাধিকারী রিজন মিয়া বলেন, ‘২০০০ সাল থেকে এই ব্যবসা করছি। ফুল বিক্রি করে পরিবার-পরিজন নিয়ে ভালোই দিন কাটছে।’
সফল যাঁরা: আনোয়ারের পথ ধরে ফুল ব্যবসায় জড়িয়ে যাঁরা সফল হয়েছেন, সম্প্রতি কথা হয় তাঁদের কয়েকজনের সঙ্গে। বাহারকাছনার নজরুল ইসলাম ১৯৯৮ সালে ছোট্ট এক খণ্ড জমিতে ফুল চাষ করেছিলেন। এরপর প্রায় প্রতিবছর আবাদি জমির পরিমাণ বেড়েছে। এবার তিনি প্রায় চার একরে ফুলের চাষ করেছেন। ‘ফুল ব্যবসায় মাঝেমধ্যে মন্দা দেখা দিলেও ক্রেতারাই এ চাষ ধরে রাখার সাহস জুগিয়ে চলেছে।’ বলছিলেন নজরুল। লাভ কেমন জানতে চাইলে তিনি জানান, লাভ না হলে তো ব্যবসা গুটিয়ে ফেলতে হতো।
শহরের বালাপাড়ার সিদ্দিক হোসেন প্রায় ৪৫ শতাংশ জমিতে ফুল লাগিয়েছেন। তিনি জানালেন, রংপুরে উৎপাদিত ফুল দিনাজপুর, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রামসহ অন্য জেলায় পাঠানো হয়।
ফুল চাষ ও ব্যবসা করে সফল হয়েছেন বালাপাড়ার সিদ্দিক হোসেন, জলছত্রের ফিরোজ মিয়া, বোতলা এলাকার মিথুন, চকবাজার সিটি কলেজের পাশের মানিক মিয়া, দর্শনার আনোয়ারুল ইসলাম, শিরিন পার্ক এলাকার মামুন মিয়া, মাহীগঞ্জের রনজু মিয়াসহ অনেকে।
তিনি যা বলেন: আনোয়ার বলেন, ‘কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা করতে না পারলেও মানুষের অনেক ভালোবাসা পেয়েছি। এর চেয়ে বড় আনন্দ আর কী থাকতে পারে।’ কিছুটা দুঃখ নিয়ে বললেন, ‘সুপার মার্কেট থেকে সরে যেতে হয়েছে। এরপর দুই দফায় ফুটপাত থেকে আমাদের সরিয়ে অন্য ব্যবসায়ীদের বসানো হয়েছে।’ আনোয়ার জানালেন, এ বছর সামান্য জমিতে ফুলের চাষ করেছেন। সামনে আরও বাড়াবেন।
No comments