রেলে সেবার মান বাড়ানো হোক by মোঃ আবু রায়হান
বাংলাদেশ রেলওয়ে ঐতিহ্যবাহী একটি নাম। যে নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রায় অনেকটা অংশ। আর দশটা সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রেলওয়ে অন্যতম। সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে যেখানে সেবার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, সেখানে উলেল্গখ করা হচ্ছে তার লাভ-লোকসান, যা পত্রপত্রিকাসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় ফলাও করে প্রকাশ করা হয়েছে জনগণের মাঝে। এমন তো নয় জনগণ বিনা চার্জে রেলের সেবা গ্রহণ করে।
দেশের বিত্তবান থেকে শুরু করে প্রায় সর্বস্তরের জনগণের কাছ থেকেই সরকার রাজস্ব আদায় করে। যেখানে শত ধস্তাধস্তি, লাইনে দাঁড়িয়ে যুদ্ধ করে রেলের একটি টিকিট সংগ্রহ করতে হয়, উপরন্তু ট্রেনে যায়গা পাওয়াও দুষ্কর ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়, সেখানে রেলের লাভ-লোকসানের অঙ্ক কেন কষাকষি হচ্ছে, আমরা ভুক্তভোগীরা তা আজ অবধি বুঝে উঠতে পারছি না। অথচ ভৌগোলিক অবস্থা বিবেচনায় এ দেশে রেল অধিকতর নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারত।
যাতায়াত ও পরিবহন সেক্টরে রেল যে অন্যান্য যানবাহনের চেয়ে কার্যকর এটা পরীক্ষিত। আর স্বল্প খরচে মালপত্র পরিবহনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে সেই প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে যাত্রী ও মালপত্র পরিবহনে রেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। কিন্তু আমাদের দেশে বিরাজ করছে তার বিপরীত অবস্থা। চীন, জাপান, ফ্রান্সের মতো দেশে যখন যোগাযোগ ব্যবস্থায় রেলের উন্নয়ন ও সবচেয়ে দ্রুতগতির ট্রেন তৈরির প্রতিযোগিতা চলছে এমন সময় বাংলাদেশ রেলওয়ের জরাজীর্ণ দশা। অদূরদর্র্শী পরিকল্পনার কারণে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সংকুচিত এবং সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থাকে বৃদ্ধি করা হয়েছে, যা দেশের অর্থনীতি ও পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। বিগত সময়গুলোতে যাতায়াত ব্যবস্থায় সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থাকে অগ্রাধিকার প্রদানের ফলে সড়ক ব্যবস্থাপনার খরচের পাশাপাশি যানবাহনের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। সড়কে যানজট বৃদ্ধির ফলে পরিবেশ দূষণ, দুর্ঘটনাসহ নানাবিধ সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। পাশাপাশি ক্রমাগতভাবে নতুন নতুন সড়ক বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষি জমি হ্রাস পাচ্ছে, সড়ক পথের ব্রিজ ও কালভার্টের কারণে নৌ-যোগাযোগ ব্যাহত এবং জলাবদ্ধতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। নদীমাতৃক বাংলাদেশের নৌপথ ধ্বংস হওয়ার পেছনে অনেকেই অপরিকল্পিত সড়ক তৈরির বিষয়টিকে কারণ হিসেবে চিহ্নিত করে থাকেন। এসব দিক বিবেচনায় যোগাযোগ ও পরিবহন ব্যবস্থায় রেল অগ্রাধিকার পাওয়ার কথা। কিন্তু পাচ্ছে না কেন?
রেলওয়ের বিপুল সম্ভাবনা থাকার পরও অদক্ষ লোকবল ও অব্যবস্থাপনার কারণে সেই বিপুল সম্ভাবনায় অচিরেই ভাটা পড়ে। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসনামলের পর এ দেশে পাকা রাস্তা ছিল ৬০০ কিলোমিটার, আর বর্তমানে তা দাঁড়িয়েছে ৯০ হাজার কিলোমিটারে। দুর্নীতি আর অব্যবস্থাপনার কারণে স্বাধীনতার ৪০ বছরে রেলপথ বাড়ার চেয়ে উল্টো কমেছে ২৩ দশমিক ৬৯ কিলোমিটার। স্টেশন বন্ধ হতে হতে ৪৫৬ থেকে বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ৪৪০টিতে। আশার কথা, গত ৪ ডিসেম্বর রেলের আলাদা মন্ত্রণালয় গঠন করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর তার দেখভালের দায়িত্ব দিয়েছেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ সুরঞ্জিত সেনকে। তার মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশ রেলওয়েকে স্বরূপে দেখতে চাই। যে প্রতিষ্ঠানকে লাভ-লোকসানের ঘানি টানতে হবে না, থাকবে না কোনো দুর্নীতি। জরাজীর্ণ রেলওয়েকে আবার দেখতে চাই প্রাণবন্ত। কারণ, জনগণ লাভ-লোকসান চায় না, চায় রেলের উন্নয়ন, সেবার মান বৃদ্ধি।
ধানমণ্ডি, ঢাকা
arayhan2010@gmail.com
যাতায়াত ও পরিবহন সেক্টরে রেল যে অন্যান্য যানবাহনের চেয়ে কার্যকর এটা পরীক্ষিত। আর স্বল্প খরচে মালপত্র পরিবহনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে সেই প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে। আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে যাত্রী ও মালপত্র পরিবহনে রেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। কিন্তু আমাদের দেশে বিরাজ করছে তার বিপরীত অবস্থা। চীন, জাপান, ফ্রান্সের মতো দেশে যখন যোগাযোগ ব্যবস্থায় রেলের উন্নয়ন ও সবচেয়ে দ্রুতগতির ট্রেন তৈরির প্রতিযোগিতা চলছে এমন সময় বাংলাদেশ রেলওয়ের জরাজীর্ণ দশা। অদূরদর্র্শী পরিকল্পনার কারণে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সংকুচিত এবং সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থাকে বৃদ্ধি করা হয়েছে, যা দেশের অর্থনীতি ও পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। বিগত সময়গুলোতে যাতায়াত ব্যবস্থায় সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থাকে অগ্রাধিকার প্রদানের ফলে সড়ক ব্যবস্থাপনার খরচের পাশাপাশি যানবাহনের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। সড়কে যানজট বৃদ্ধির ফলে পরিবেশ দূষণ, দুর্ঘটনাসহ নানাবিধ সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। পাশাপাশি ক্রমাগতভাবে নতুন নতুন সড়ক বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষি জমি হ্রাস পাচ্ছে, সড়ক পথের ব্রিজ ও কালভার্টের কারণে নৌ-যোগাযোগ ব্যাহত এবং জলাবদ্ধতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। নদীমাতৃক বাংলাদেশের নৌপথ ধ্বংস হওয়ার পেছনে অনেকেই অপরিকল্পিত সড়ক তৈরির বিষয়টিকে কারণ হিসেবে চিহ্নিত করে থাকেন। এসব দিক বিবেচনায় যোগাযোগ ও পরিবহন ব্যবস্থায় রেল অগ্রাধিকার পাওয়ার কথা। কিন্তু পাচ্ছে না কেন?
রেলওয়ের বিপুল সম্ভাবনা থাকার পরও অদক্ষ লোকবল ও অব্যবস্থাপনার কারণে সেই বিপুল সম্ভাবনায় অচিরেই ভাটা পড়ে। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসনামলের পর এ দেশে পাকা রাস্তা ছিল ৬০০ কিলোমিটার, আর বর্তমানে তা দাঁড়িয়েছে ৯০ হাজার কিলোমিটারে। দুর্নীতি আর অব্যবস্থাপনার কারণে স্বাধীনতার ৪০ বছরে রেলপথ বাড়ার চেয়ে উল্টো কমেছে ২৩ দশমিক ৬৯ কিলোমিটার। স্টেশন বন্ধ হতে হতে ৪৫৬ থেকে বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ৪৪০টিতে। আশার কথা, গত ৪ ডিসেম্বর রেলের আলাদা মন্ত্রণালয় গঠন করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর তার দেখভালের দায়িত্ব দিয়েছেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ সুরঞ্জিত সেনকে। তার মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশ রেলওয়েকে স্বরূপে দেখতে চাই। যে প্রতিষ্ঠানকে লাভ-লোকসানের ঘানি টানতে হবে না, থাকবে না কোনো দুর্নীতি। জরাজীর্ণ রেলওয়েকে আবার দেখতে চাই প্রাণবন্ত। কারণ, জনগণ লাভ-লোকসান চায় না, চায় রেলের উন্নয়ন, সেবার মান বৃদ্ধি।
ধানমণ্ডি, ঢাকা
arayhan2010@gmail.com
No comments