বিজেএমসি ২: ০ মুক্তিযোদ্ধা-ইতিহাসের দুয়ারে বিজেএমসি

বিজেএমসি কি নতুন ইতিহাস লিখতে চলেছে? চূড়ান্ত উত্তর মিলবে ২৪ জানুয়ারি। ওই দিন শেখ জামাল বা শেখ রাসেলের বিপক্ষে শেষ লড়াইয়ে জিতলেই প্রথমবার ফেডারেশন কাপ ঘরে তুলবে বিজেএমসি! শিরোপা এখনো না এলেও বিজেএমসি ইতিহাস একটা গড়েই ফেলেছে। ফেডারেশন কাপ তো বটেই, লিগের বাইরে ঢাকার যেকোনো ফটবল টুর্নামেন্টেই প্রথম ফাইনালে উঠল তারা! ১৯৮৩ সালে ফুটবল থেকে হারিয়ে যাওয়া বিজেএমসির প্রত্যাবর্তনটা স্মরণীয়ই হয়ে থাকছে।


গ্রুপে শক্তিশালী মুক্তিযোদ্ধাকে হারিয়েছিল ৩-২ গোলে। কাল তাদেরই সেমিফাইনালে হারাল ২-০ গোলে। মুক্তিযোদ্ধা অনেক সুযোগ তৈরি করেও গোল পায়নি। এমিলি-মিঠুন-সানডে—মুক্তিযোদ্ধার ত্রিমূর্তি অনেক আক্রমণের শেষ টেনেছেন নিদারুণ ব্যর্থতায়।
ম্যাচের পর ‘চ্যাম্পিয়ন’ হওয়ার মতোই আনন্দ করল একসময়ের দাপুটে দল বিজেএমসি। মুক্তিযোদ্ধা কোচ শফিকুল ইসলাম যখন হারের ব্যাখ্যা তুলে ধরছেন সংবাদমাধ্যমের কাছে, কয়েক হাত দূরেই এক কর্তা তাঁকে আপত্তিকর ভাষায় করছেন গালাগাল! মৌসুমে কাগজ-কলমে দ্বিতীয় সেরা দলের এই ব্যর্থতা মানতে নারাজ মুক্তিযোদ্ধার কর্তারা। সেটির কারণও আছে। ফেডারেশন কাপে তিনবারের চ্যাম্পিয়ন, ছয়বারের ফাইনালিস্ট মুক্তিযোদ্ধা ফেবারিট হিসেবেই শুরু করেছিল। সুস্পষ্ট প্রাধান্য ছিল ম্যাচেও। কিন্তু গোলের খেলা ফুটবলে গোল তো করতে হবে!
মুক্তিযোদ্ধা কোচের ছক ছিল আক্রমণাত্মক, ৫-৩-২। ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার মারুফ দলে ছিলেন না। রাইট উইং ব্যাক টিটুর সেই আগের ঝলক আর নেই। আক্রমণে বল জোগান দিতে পারছেন না, যতটা দল আশা করছে। টিটু আবার অধিনায়কও। দলের মধ্যেই এ নিয়ে বিস্তর ক্ষোভ। এবং এসবকেও পরাজয়ের বড় কারণ হিসেবে দেখেন দলের অনেকে।
বল পজেশন মুক্তিযোদ্ধারই ছিল বেশি। কিন্তু যতটা দ্রুত আক্রমণে গেছে তারা, ততটা দ্রুত রক্ষণে যেতে পারেনি। আক্রমণের নেশায় বুদ মুক্তিযোদ্ধা ৬৮ মিনিটে ধারার বিপক্ষেই প্রথম গোল খায়। ইসমাইল বাঙ্গুরার সাজিয়ে দেওয়া বলে দুর্দান্ত ভলিতে লক্ষ্যভেদ করেন আবুল।
এরপর তেড়েফুঁড়ে গোল শোধ করতে চেয়েছে মুক্তিযোদ্ধা। এই সময়ই ঘটে অদ্ভুত এক ঘটনা। এমিলির বদলে শাকিল, মিঠুনের বদলে কাঞ্চন বেরিয়ে এলেন। মুক্তিযোদ্ধার দাবি, তারা মিঠুনকে নয়, তুলেছে আরিফুলকে। চতুর্থ রেফারি জসিমউদ্দিন ইচ্ছাকৃতভাবে মিঠুনকে তুলে দিয়েছেন, মুক্তিযোদ্ধাকে ক্ষতিগ্রস্ত করাই উদ্দেশ্য ছিল চতুর্থ রেফারির! তবে চতুর্থ রেফারির দাবি, তাঁকে যে স্লিপ দেওয়া হয়েছে, সে অনুযায়ীই খেলোয়াড় তুলেছেন।
বিরল এই কাণ্ডে শেষ ১০ মিনিট এমিলি-মিঠুন কেউই মাঠে ছিলেন না। সমতাসূচক গোলটা পায়নি মুক্তিযোদ্ধা, উল্টো বিজেএমসির রনি ইসলামের টোকায় অতিরিক্ত সময়ের প্রথম মিনিটে ব্যবধান হয় ২-০।
মুক্তিযোদ্ধার কোচ শফিকুলের কাছে কোনো সান্ত্বনাই ছিল না, ‘ধারার বিপরীতে গোল খেয়েছি আমরা। নিজেরা অসংখ্য সুযোগ নষ্ট করেছি।’ বিজেএমসির কোচ জাকারিয়া বাবুর মুখে চওড়া হাসি, ‘টিম স্পিরিটই আমাদের এগিয়ে নিচ্ছে।’
বিজেএমসি: হিমেল, বাইবেক, শুভ্র, আশরাফুল, সাইফুল, ফেলিক্স, বাঙ্গুরা, জনি (রমজান), আবুল (রনি), আলফাজ, শরিফ, রশিদ।
মুক্তিযোদ্ধা: মামুন খান, টিটু (নাসির), রাফায়েল, আরিফুল, রেজাউল, ড্যামি, মামুনুল, লিমা, সানডে, মিঠুন (কাঞ্চন), এমিলি (শাকিল)।

No comments

Powered by Blogger.