উত্তরা থেকে ৫ সদস্য গ্রেফতার-ব্যর্থ অভ্যুত্থানে উস্কানি ছিল হিযবুত তাহ্রীরের by রাজীব আহাম্মদ
প্রায় আড়াই বছর আগে নিষিদ্ধ করা হলেও বাংলাদেশে থেমে নেই হিযবুত তাহ্রীরের অবৈধ কার্যক্রম। বরং অভ্যুত্থান ঘটিয়ে ক্ষমতা দখলে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে সেনাবাহিনীর এক শ্রেণীর কর্মকর্তাদের উস্কানি দিয়ে আসছে নিষিদ্ধ এ উগ্রবাদী সংগঠনটি। জনসমর্থন না থাকার কারণে সংগঠনটি সেনাবাহিনীকে দিয়ে ক্ষমতা দখল করাতে চায়। কারণ গণতান্ত্রিক শাসনামলে এ সংগঠনের বিকাশ সম্ভব নয় বলে মনে করেন তারা।
একাধিক গোয়েন্দা সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। ২০০৯ সালের ২২ অক্টোবর হিযবুত তাহ্রীরকে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এরপরও তারা প্রকাশ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করার চেষ্টা করে আসছে। শুক্রবারও
রাজধানীর উত্তরা ও চট্টগ্রামে প্রচারপত্র বিলির সময় ধরা পড়ে ৫ কর্মী।
সরকারের একটি গোয়েন্দা সংস্থার জঙ্গিবাদবিরোধী সেলের এক কর্মকর্তা জানান, ধারণা করা হয় সেনাবাহিনীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) শিক্ষার্থীদের মধ্যে হিযবুত তাহ্রীরের কর্মী রয়েছে। সম্প্রতি ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের নায়ক মেজর জিয়াউল নিজেও এমআইএসটির শিক্ষার্থী।
সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও ব্লগ ছাড়াও সাইবার জগতে খুবই সক্রিয় হিযবুত তাহ্রীর। এসব সাইটে সেনাবাহিনীকে অভ্যুত্থানের আহ্বান জানিয়ে নিয়মিত পোস্টার ছাড়া হয়। ২৬ ডিসেম্বর মেজর জিয়াউলের তথাকথিত 'গুম'-এর পোস্টারটিও প্রচার করে হিযবুত তাহ্রীর।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে সেনা কর্মকর্তাদের প্রভাবিত করতে বেশ আগে থেকেই নানারকম উস্কানিমূলক প্রচার চালানো শুরু করে হিযবুতের নেতাকর্মীরা। হিযবুতের প্রচারপত্রে বলা হতে থাকে, সেনাবাহিনীর প্রতি বৈষম্য করছে সরকার। সরকার ইসলাম ধর্মের প্রতি সহানুভূতিশীল নয় ইত্যাদি। এভাবে সেনা কর্মকর্তাদের সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করা হয়।
সেনাবাহিনীর সহানুভূতি আদায়ে ২০০৮ সালে সেনাবাহিনীকে জাতির ত্রাণকর্তা উল্লেখ করে রাজধানীতে পোস্টার লাগায় সংগঠনটি। এর কিছুদিন পরই খেলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য রাজধানীতে ব্যাপক পোস্টারিং করে হিযবুত তাহ্রীর। সেনাবাহিনীকে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তুলে ক্ষমতা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয় হিযবুত তাহ্রীরের পক্ষ থেকে। ২০০৯ সালে পিলখানা ট্র্যাজেডির দ্বিতীয় দিন ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীতে পোস্টার ও প্রচারপ্রত্র বিলি করে হিযবুত তাহ্রীর। সেখানেও সরকারের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রচার করা হয়। সেনা কর্মকর্তাদের উস্কানি দেওয়া হয়।
পিলখানা ট্র্র্যাজেডির প্রথমবর্ষেও একই ধরনের প্রচারণা চালায় হিযবুত তাহ্রীর। রাজধানীতে লাগানো পোস্টার ও প্রচারপত্রগুলোতে পিলখানায় সেনা কর্মকর্তা হত্যার জন্য সরকারকে দায়ী করে ক্ষমতা দখলের জন্য সেনাবাহিনীকে আহ্বান জানানো হয়।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক 'কুইলিয়াম ফাউন্ডেশন' নামে একটি সংগঠন আছে। জঙ্গি সংগঠন ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা লোকদের নিয়ে সংগঠনটি কাজ করে। এশিয়াতেও কাজ করছে সংগঠনটি। সংগঠনটির ওয়েবসাইট (িি.িয়ঁরষষরধসভড়ঁহফধঃরড়হ.ড়ৎম)। এ সূত্রে জানা যায়, হিযবুত তাহ্রীর বাংলাদেশের মতো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াসহ অধিকাংশ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের তৎপরতা চালাচ্ছে। রাশিয়াতেও তাদের তৎপরতা রয়েছে। ২০০৪ সালে পাকিস্তানে পারভেজ মোশাররফ সরকারের পতন ঘটাতে সেনাবাহিনীকে দিয়ে অভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টা করে হিযবুত তাহ্রীর। সেই যাত্রায় তাদের চেষ্টা সফল হয়নি। এ ঘটনায় কয়েক সেনা কর্মকর্তাকে শাস্তিও দেওয়া হয়। পাক সেনাবাহিনীর তদন্তে হিযবুত তাহ্রীরের সঙ্গে কয়েক সেনা কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা খুঁজে পাওয়া যায়। হিযবুত তাহ্রীর তাদের সেনা অভ্যুত্থান ঘটাতে উস্কানি দিয়েছিল। একইভাবে উজবেকিস্তানের রাষ্ট্রপতি ইসলাম কারিমভের সরকারের পতন ঘটাতে সেদেশেও সেনাবাহিনীকে দিয়ে কয়েক দফা অভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় হিযবুত তাহ্রীর। মধ্যপ্রাচ্যসহ বেশিরভাগ মুসলিম দেশেই হিযবুত তাহ্রীর নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়েছে। রাশিয়া ও জার্মানিতেও সংগঠনটি নিষিদ্ধ। যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকাতেও সংগঠনটির নাম আছে। কুইলিয়াম ফাউন্ডেশনের সমন্বয়ক ও অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মাজিদ নেওয়াজ হিযবুত তাহ্রীর কার্যক্রম সম্পর্কে তথ্য জানান। প্রায় ১৪ বছর ধরে সংগঠনটির সঙ্গে জড়িত পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক মাজিদ নেওয়াজ। পাকিস্তানে ও ডেনমার্কে হিযবুত তাহ্রীরের প্রতিষ্ঠাও তার হাত ধরে। একসময় চরমপন্থা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন তিনি। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী হিযবুত তাহ্রীর গণতন্ত্রকে 'কুফরি' বলে মনে করে। 'খেলাফত রাষ্ট্র' প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংগঠনটি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের চেষ্টা চালায়। এর জন্য সেনাবাহিনীকে ব্যবহারের কৌশল নেয়। কুইলিয়াম ফাউন্ডেশনের আরেক প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ইদি হোসাইন। তিনি নিজেও একসময় হিযবুত তাহ্রীর ও যুক্তরাজ্যে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। তার বক্তব্য অনুযায়ী, হিযবুত তাহ্রীরকে কৌশলগত সহায়তা দিয়ে থাকে জামায়াতে ইসলামী। হিযবুত তাহ্রীরের মতো জামায়াতে ইসলামীরও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শাখা রয়েছে।
রাজধানীর উত্তরা ও চট্টগ্রামে প্রচারপত্র বিলির সময় ধরা পড়ে ৫ কর্মী।
সরকারের একটি গোয়েন্দা সংস্থার জঙ্গিবাদবিরোধী সেলের এক কর্মকর্তা জানান, ধারণা করা হয় সেনাবাহিনীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) শিক্ষার্থীদের মধ্যে হিযবুত তাহ্রীরের কর্মী রয়েছে। সম্প্রতি ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের নায়ক মেজর জিয়াউল নিজেও এমআইএসটির শিক্ষার্থী।
সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও ব্লগ ছাড়াও সাইবার জগতে খুবই সক্রিয় হিযবুত তাহ্রীর। এসব সাইটে সেনাবাহিনীকে অভ্যুত্থানের আহ্বান জানিয়ে নিয়মিত পোস্টার ছাড়া হয়। ২৬ ডিসেম্বর মেজর জিয়াউলের তথাকথিত 'গুম'-এর পোস্টারটিও প্রচার করে হিযবুত তাহ্রীর।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে সেনা কর্মকর্তাদের প্রভাবিত করতে বেশ আগে থেকেই নানারকম উস্কানিমূলক প্রচার চালানো শুরু করে হিযবুতের নেতাকর্মীরা। হিযবুতের প্রচারপত্রে বলা হতে থাকে, সেনাবাহিনীর প্রতি বৈষম্য করছে সরকার। সরকার ইসলাম ধর্মের প্রতি সহানুভূতিশীল নয় ইত্যাদি। এভাবে সেনা কর্মকর্তাদের সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করা হয়।
সেনাবাহিনীর সহানুভূতি আদায়ে ২০০৮ সালে সেনাবাহিনীকে জাতির ত্রাণকর্তা উল্লেখ করে রাজধানীতে পোস্টার লাগায় সংগঠনটি। এর কিছুদিন পরই খেলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য রাজধানীতে ব্যাপক পোস্টারিং করে হিযবুত তাহ্রীর। সেনাবাহিনীকে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তুলে ক্ষমতা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয় হিযবুত তাহ্রীরের পক্ষ থেকে। ২০০৯ সালে পিলখানা ট্র্যাজেডির দ্বিতীয় দিন ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীতে পোস্টার ও প্রচারপ্রত্র বিলি করে হিযবুত তাহ্রীর। সেখানেও সরকারের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রচার করা হয়। সেনা কর্মকর্তাদের উস্কানি দেওয়া হয়।
পিলখানা ট্র্র্যাজেডির প্রথমবর্ষেও একই ধরনের প্রচারণা চালায় হিযবুত তাহ্রীর। রাজধানীতে লাগানো পোস্টার ও প্রচারপত্রগুলোতে পিলখানায় সেনা কর্মকর্তা হত্যার জন্য সরকারকে দায়ী করে ক্ষমতা দখলের জন্য সেনাবাহিনীকে আহ্বান জানানো হয়।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক 'কুইলিয়াম ফাউন্ডেশন' নামে একটি সংগঠন আছে। জঙ্গি সংগঠন ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা লোকদের নিয়ে সংগঠনটি কাজ করে। এশিয়াতেও কাজ করছে সংগঠনটি। সংগঠনটির ওয়েবসাইট (িি.িয়ঁরষষরধসভড়ঁহফধঃরড়হ.ড়ৎম)। এ সূত্রে জানা যায়, হিযবুত তাহ্রীর বাংলাদেশের মতো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াসহ অধিকাংশ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের তৎপরতা চালাচ্ছে। রাশিয়াতেও তাদের তৎপরতা রয়েছে। ২০০৪ সালে পাকিস্তানে পারভেজ মোশাররফ সরকারের পতন ঘটাতে সেনাবাহিনীকে দিয়ে অভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টা করে হিযবুত তাহ্রীর। সেই যাত্রায় তাদের চেষ্টা সফল হয়নি। এ ঘটনায় কয়েক সেনা কর্মকর্তাকে শাস্তিও দেওয়া হয়। পাক সেনাবাহিনীর তদন্তে হিযবুত তাহ্রীরের সঙ্গে কয়েক সেনা কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা খুঁজে পাওয়া যায়। হিযবুত তাহ্রীর তাদের সেনা অভ্যুত্থান ঘটাতে উস্কানি দিয়েছিল। একইভাবে উজবেকিস্তানের রাষ্ট্রপতি ইসলাম কারিমভের সরকারের পতন ঘটাতে সেদেশেও সেনাবাহিনীকে দিয়ে কয়েক দফা অভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় হিযবুত তাহ্রীর। মধ্যপ্রাচ্যসহ বেশিরভাগ মুসলিম দেশেই হিযবুত তাহ্রীর নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়েছে। রাশিয়া ও জার্মানিতেও সংগঠনটি নিষিদ্ধ। যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকাতেও সংগঠনটির নাম আছে। কুইলিয়াম ফাউন্ডেশনের সমন্বয়ক ও অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মাজিদ নেওয়াজ হিযবুত তাহ্রীর কার্যক্রম সম্পর্কে তথ্য জানান। প্রায় ১৪ বছর ধরে সংগঠনটির সঙ্গে জড়িত পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক মাজিদ নেওয়াজ। পাকিস্তানে ও ডেনমার্কে হিযবুত তাহ্রীরের প্রতিষ্ঠাও তার হাত ধরে। একসময় চরমপন্থা ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন তিনি। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী হিযবুত তাহ্রীর গণতন্ত্রকে 'কুফরি' বলে মনে করে। 'খেলাফত রাষ্ট্র' প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংগঠনটি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের চেষ্টা চালায়। এর জন্য সেনাবাহিনীকে ব্যবহারের কৌশল নেয়। কুইলিয়াম ফাউন্ডেশনের আরেক প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ইদি হোসাইন। তিনি নিজেও একসময় হিযবুত তাহ্রীর ও যুক্তরাজ্যে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। তার বক্তব্য অনুযায়ী, হিযবুত তাহ্রীরকে কৌশলগত সহায়তা দিয়ে থাকে জামায়াতে ইসলামী। হিযবুত তাহ্রীরের মতো জামায়াতে ইসলামীরও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শাখা রয়েছে।
No comments