উসকানিমূলক প্রচারপত্র বিলিকালে হিযবুতের পাঁচ সদস্য গ্রেপ্তার

জুমার নামাজের পর মসজিদের সামনে সরকারবিরোধী ও সেনাবাহিনীর প্রতি উসকানিমূলক প্রচারপত্র বিতরণের সময় নিষিদ্ধ ঘোষিত হিযবুত তাহ্রীরের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। তাঁদের কাছ থেকে কয়েক বান্ডিল প্রচারপত্র উদ্ধার করা হয়েছে।


গতকাল শুক্রবার রাজধানীর উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টরের ৮ নম্বর সড়কের বায়তুন নূর মসজিদের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
র‌্যাব সূত্র জানায়, হিযবুত তাহ্রীরের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তারের সময় র‌্যাব-১-এর মেজর মোশতাক আহমেদ আহত হয়েছেন। তাঁকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে
সরকার উৎখাতের চক্রান্তে জড়িত হিযবুত তাহ্রীরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজন সেনা কর্মকর্তার নাম প্রকাশের পরদিনই এ ঘটনা ঘটল।
গতকাল জব্দ করা প্রচারপত্রে শেখ হাসিনা সরকারকে অপসারণ করতে সেনা কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান ছিল। একই প্রচারপত্র চলতি মাসের শুরুতেও হিযবুত তাহ্রীর বিভিন্ন এলাকায় বিতরণ করেছিল বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।
গতকাল প্রচারপত্র বিলির সময় গ্রেপ্তার হওয়া হিযবুত তাহ্রীরের সদস্যরা হলেন: মোসাদ্দেক আলী, মোসাব্বির আলী, ইব্রাহিম খলিল, মো. মিনহাজ ও ফাহিম আকতার ভূঁইয়া। তাঁদের মধ্যে একজন দন্ত চিকিৎসক, একজন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির বিবিএর চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্র, আরেকজন ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য পাস করেছেন। বাকি দুজনের মধ্যে একজন এ লেভেল পাস ও আরেকজন মাদ্রাসায় পড়ছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী একজন মুসল্লি প্রথম আলোকে জানান, মসজিদ থেকে জুমার নামাজ শেষে বের হওয়া মুসল্লিদের কাছে লিফলেট বিতরণ করছিলেন কয়েকজন তরুণ। প্রথমে বোঝা যায়নি তাঁরা কারা। একটি লিফলেট হাতে নিতেই বুঝলেন, এটি হিযবুত তাহ্রীরের। পরে ওই তরুণেরা সরকারবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন। এরই মধ্যে র‌্যাবের বেশ কয়েকজন সদস্য মসজিদের সামনে পৌঁছান। লিফলেট বিতরণকারীরা র‌্যাব সদস্যদের ধাক্কা মেরে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তাঁরা কয়েকজন মিলে র‌্যাবের একজনকে কিল, ঘুষি, লাথি মেরে ফেলে দেন। পরে র‌্যাব সদস্যরা ধাওয়া করে পাঁচজনকে ধরে ফেলেন। বাকি হিযবুত সদস্যরা পালিয়ে যান।
ঘটনার পর র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক এম সোহায়েল, র‌্যাব-১-এর পরিচালক রাশিদুল আলমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আসেন। রাশিদুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ‘র‌্যাবের কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিল, এখানে কিছু হতে পারে। এখানে লিফলেট বিলি হচ্ছে খবর পাওয়ামাত্রই অভিযান চালায় র‌্যাব।’
গত বৃহস্পতিবার সেনাসদরে সংবাদ সম্মেলনে সরকার উৎখাতের সাম্প্রতিক এক চক্রান্তের সঙ্গে হিযবুত তাহ্রীরের সংশ্লিষ্টতার কথা বলা হয়। তাতে বলা হয়, অভ্যুত্থানের ব্যর্থ চেষ্টায় জড়িত ও বর্তমানে পলাতক মেজর জিয়াউল হক হিযবুত তাহ্রীরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন।
চট্টগ্রামেও প্রচারপত্র বিলি: চট্টগ্রাম থেকে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, গতকাল জুমার নামাজ শেষে আন্দরকিল্লা শাহী মসজিদের বাইরে হিযবুত তাহ্রীরের কর্মীরা ব্যানার টানিয়ে মুসল্লিদের কাছে প্রচারপত্র বিলি করতে থাকেন। এ সময় এক কোণে দাঁড়িয়ে গোপন এ সংগঠনটির কিছু কর্মী জমায়েত হয়ে বক্তব্য দেওয়ারও চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে গেলে তাঁরা সাধারণ মুসল্লিদের সঙ্গে মিশে পালিয়ে যান। পুলিশ সেখান থেকে হিযবুতের দুটি ব্যানার এবং বেশ কিছু প্রচারপত্র জব্দ করে।

No comments

Powered by Blogger.