সেচ খরচ বেড়ে যাওয়ায় চিন্তিত বোরো চাষি

কদিকে ধানের দাম কম, অন্যদিকে জ্বালানি তেলের দাম ও বিদ্যুতের বিল বেড়ে যাওয়ায় সেচ খরচ বেড়েছে। এ কারণে নীলফামারীতে ডিজেল ও বিদ্যুৎচালিত পাম্প দিয়ে যেসব চাষি জমিতে সেচ দেন, তাঁরা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মহসীন রেজা ওরফে রূপম বলেন, এ বছর জেলায় ৭৮ হাজার ২১৮ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।


এরই মধ্যে কৃষকেরা চার হাজার হেক্টর জমিতে বোরো লাগানোর কাজ শেষ করেছেন। আগামী ১৫ মার্চ পর্যন্ত বোরো লাগানোর কাজ চলবে।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আরও জানান, দেশের বৃহত্তর তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্পের অধীন ক্যানেলের মাধ্যমে জেলায় ১০-১২ হাজার হেক্টর জমির সেচ দেওয়া হয়। বাকি জমিতে গভীর নলকূপ, বিদ্যুৎ ও ডিজেলচালিত পাম্প দিয়ে সেচ দেওয়া হয়। এবার জ্বালানি তেল ও বিদ্যুতের দাম বাড়ায় কৃষকদের উৎপাদন খরচ বাড়বে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ধানের দাম না থাকায় এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় কৃষকেরা তাঁদের উৎপাদন খরচ তোলা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। তবে সেচ খালের সুবিধাভোগীরা ডিজেল বা বিদ্যুৎচালিত পাম্পের আওতাধীন কৃষকের তুলনায় অনেক কম খরচে জমিতে সেচ দিতে পারেন। ডিজেল বা বিদ্যুৎচালিত পাম্প দিয়ে জমিতে যাঁরা সেচ দেন, তাঁদের প্রতি বিঘায় এক থেকে দেড় হাজার টাকা খরচ পড়ে। সেচ খালের সুবিধাভোগীদের প্রতি বিঘায় দুই থেকে আড়াই শ টাকা খরচ হয়।
জলঢাকা পৌর এলাকার বগুলাগাড়ী সরকারপাড়ার কৃষক বেলাল হোসেন সরকার বলেন, বিদ্যুৎ, সার, কীটনাশকের দাম ও কৃষকের মজুরি বেশি। কিন্তু ধানের দাম নেই। এ কারণে তিনি এবার ১০ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেন। গত বছর তিনি ১২ বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছিলেন।
কৃষক ও ধান ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখন বাজারে সবচেয়ে ভালো মানের ধানের দাম ৬০০ টাকা। প্রতি বিঘায় বোরো আবাদ করতে এখন ছয় হাজার টাকা খরচ হয়। প্রতি বিঘায় ধান হয় ১৮ মণ। জমির মালিককে তিন ভাগের এক ভাগ দেওয়ার পর ধান থাকে ১২ মণ। সেই ধান বিক্রি করে সাত হাজার ২০০ টাকা পাওয়া যায়। তবে মজুরি খরচ হিসাব করলেও কৃষকের তেমন লাভ থাকে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কৃষি কর্মকর্তা বলেন, কৃষকেরা ধানের দাম পাচ্ছেন না, তাঁদের উৎপাদন খরচ বাড়ছে। কিন্তু তাঁদের কথা কেউ বলেন না, তাঁদের জন্য কেউ আন্দোলন করেন না।

No comments

Powered by Blogger.