সামাজিক সাংবাদিকতা by একরামুল হক শামীম
সামাজিক সাংবাদিকতার ধারণাটি দিন দিন জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। এই জনপ্রিয়তার পেছনে একটি সামাজিক যোগাযোগ সাইটের অবদানকে আমলে নিতেই হবে। সামাজিক যোগাযোগ সাইট ফেসবুক যেভাবে সামাজিক সাংবাদিকতার বিষয়টিকে জনপ্রিয় করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে, তাতে মানুষ তো এ বিষয়ে আগ্রহী হবেই। সামাজিক সাংবাদিকতার ধারণাকে জনপ্রিয় করে তুলতে ফেসবুক বিভিন্ন সময় উদ্যোগ নিয়েছে।
সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে অনেক টার্ম নতুন করে যুক্ত হয়েছে। কেউ কেউ এই নতুন ধারার মিডিয়াকে 'নিউ মিডিয়া' নামে অভিহিত করতে চাচ্ছেন। নতুন টার্মগুলোর মধ্যে রয়েছে সিটিজেন জার্নালিজম, কমিউনিটি জার্নালিজম ও সোস্যাল জার্নালিজম। সিটিজেন জার্নালিজম অর্থাৎ নাগরিক সাংবাদিকতার সঙ্গে অনেকেই কমিউনিটি সাংবাদিকতাকে গুলিয়ে ফেলেন। নাগরিক সাংবাদিকতায় সাংবাদিকতার প্রশিক্ষণবিহীন একজন নাগরিক সংবাদকর্মী হয়ে সংবাদ পরিবেশন করেন। অন্যদিকে কমিউনিটি সাংবাদিকতায় একটি নির্দিষ্ট কমিউনিটিকে ভোক্তা করে সংবাদ পরিবেশন করা হয়। প্রশিক্ষিত সাংবাদিকরাই সেই সংবাদ পরিবেশনের দায়িত্ব নিয়ে থাকেন। নাগরিক সাংবাদিকতায় ব্যবহারকারী উদ্ভূত বিষয়বস্তুর (ইউজার জেনারেটেড কনটেন্ট) প্রাধান্য থাকবে। ব্লগের মতো সিটিজেন মিডিয়া উদ্ভবের মাধ্যমেই নাগরিক সাংবাদিকতার বিষয়টি সামনে চলে আসে। প্রযুক্তির উন্নয়ন এর পেছনে ভূমিকা রেখেছে। এখন ব্যবহারকারী ঘটনার ছবি তোলার জন্য ব্যবহার করতে পারেন হাতে থাকা মোবাইল ফোনের ক্যামেরা, আর সংবাদ পরিবেশনের জন্য ব্যবহার করতে পারেন ইন্টারনেট লাইনযুক্ত কম্পিউটার। ফলে সিটিজেন মিডিয়াগুলোর গুরুত্ব ক্রমশ বেড়েছে। তাহলে এমন প্রশ্ন ওঠা খুবই স্বাভাবিক যে, নাগরিক সাংবাদিকতার বাইরে সামাজিক সাংবাদিকতা কী?
সামাজিক সাংবাদিকতার উদ্ভবের সঙ্গে জড়িত সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলো। শুরুর দিকে মনে করা হতো, অনলাইনে মানুষের যোগাযোগ বৃদ্ধির জন্য এটি কাজ করবে। কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যেই সেই ধারণা পাল্টে গেল। এখন ফেসবুকের মতো সাইটগুলো কেবল যোগাযোগের মাধ্যমই নয়, বরং হয়ে উঠল মতপ্রকাশের মাধ্যম। জনতা এ ধরনের সাইটগুলো ব্যবহার করে নানা বিষয়ে নিজেদের মত তৈরি করতে থাকল। গ্রুপ কিংবা পেজ তৈরির মাধ্যমে নিজেদের সংগঠিতও করল। তার ইতিবাচক ফল পাওয়া গেল তিউনিসিয়ার জেসমিন বিপ্লবে কিংবা পরে মিসর, সিরিয়া, লিবিয়াসহ অন্যান্য দেশের আরব বিপ্লবে। ফলে সামাজিক যোগাযোগ সাইটে সময় দেওয়া মানেই সময় নষ্ট করা_ এমন ধারণা থেকে সরে আসার সময় বোধহয় চলে এসেছে।
সামাজিক সাংবাদিকতা হোক, আর নাগরিক সাংবাদিকতাই হোক_ এসবের বিরুদ্ধে বড় যে অভিযোগটি রয়েছে তাহলো 'বিশ্বাসযোগ্যতার অভাব'। অনেক গুজব এখানে সংবাদ হয়ে ওঠে। ফলে কোনটি গুজব আর কোনটি সংবাদ তা নির্ধারণ করা অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে। এর জন্যই সামাজিক মিডিয়াতে কোনো সংবাদ পরিবেশিত হলে তার সূত্র দাবি করা হয়। গুরুত্বপূর্ণ কোনো ব্রেকিং নিউজ সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলোতে প্রথম কেউ প্রকাশ করতে পারে_ এমন ধারণা এখনও গড়ে ওঠেনি। এর পেছনে ব্যবহারকারীদের যথেচ্ছ ব্যবহার দায়ী। সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলো কিছু ব্যবহারকারী এমনভাবে ব্যবহার করেছেন যে, তাতে এটি বিশ্বাসযোগ্য সামাজিক মিডিয়া হয়ে উঠতে পারছে না।
এতক্ষণ তো বলা হলো সামাজিক সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলোর অবদানের কথা। এ ক্ষেত্রে ব্লগের প্রসঙ্গ উল্লেখ না করলে বিষয়টি অসম্পূর্ণ থেকে যায়। যে ব্লগ এক সময় সিটিজেন মিডিয়া ছিল, তা এখন হয়ে উঠেছে সামাজিক মিডিয়া। ব্লগ মিডিয়ার এই যে উন্নয়ন, তার অবদান গর্বের সঙ্গে নিতে পারে বাংলাদেশের ব্লগাররা। 'ইনডিভিজ্যুয়াল ব্লগিং' ধারণা থেকে 'কমিউনিটি ব্লগিং' কিংবা 'সোস্যাল ব্লগিং' ধারণার যাত্রা শুরু বাংলাদেশ থেকেই। এটিও সত্যি যে, অন্য যে কোনো দেশের তুলনায় 'সামাজিক মিডিয়া' হিসেবে ব্লগ বাংলাদেশে
বেশি জনপ্রিয়। ব্লগাররাও 'সামাজিকভাবে' বেশি শক্তিশালী অবস্থান রাখতে পারছে।
সামাজিক সাংবাদিকতার উদ্ভবের সঙ্গে জড়িত সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলো। শুরুর দিকে মনে করা হতো, অনলাইনে মানুষের যোগাযোগ বৃদ্ধির জন্য এটি কাজ করবে। কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যেই সেই ধারণা পাল্টে গেল। এখন ফেসবুকের মতো সাইটগুলো কেবল যোগাযোগের মাধ্যমই নয়, বরং হয়ে উঠল মতপ্রকাশের মাধ্যম। জনতা এ ধরনের সাইটগুলো ব্যবহার করে নানা বিষয়ে নিজেদের মত তৈরি করতে থাকল। গ্রুপ কিংবা পেজ তৈরির মাধ্যমে নিজেদের সংগঠিতও করল। তার ইতিবাচক ফল পাওয়া গেল তিউনিসিয়ার জেসমিন বিপ্লবে কিংবা পরে মিসর, সিরিয়া, লিবিয়াসহ অন্যান্য দেশের আরব বিপ্লবে। ফলে সামাজিক যোগাযোগ সাইটে সময় দেওয়া মানেই সময় নষ্ট করা_ এমন ধারণা থেকে সরে আসার সময় বোধহয় চলে এসেছে।
সামাজিক সাংবাদিকতা হোক, আর নাগরিক সাংবাদিকতাই হোক_ এসবের বিরুদ্ধে বড় যে অভিযোগটি রয়েছে তাহলো 'বিশ্বাসযোগ্যতার অভাব'। অনেক গুজব এখানে সংবাদ হয়ে ওঠে। ফলে কোনটি গুজব আর কোনটি সংবাদ তা নির্ধারণ করা অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে। এর জন্যই সামাজিক মিডিয়াতে কোনো সংবাদ পরিবেশিত হলে তার সূত্র দাবি করা হয়। গুরুত্বপূর্ণ কোনো ব্রেকিং নিউজ সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলোতে প্রথম কেউ প্রকাশ করতে পারে_ এমন ধারণা এখনও গড়ে ওঠেনি। এর পেছনে ব্যবহারকারীদের যথেচ্ছ ব্যবহার দায়ী। সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলো কিছু ব্যবহারকারী এমনভাবে ব্যবহার করেছেন যে, তাতে এটি বিশ্বাসযোগ্য সামাজিক মিডিয়া হয়ে উঠতে পারছে না।
এতক্ষণ তো বলা হলো সামাজিক সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলোর অবদানের কথা। এ ক্ষেত্রে ব্লগের প্রসঙ্গ উল্লেখ না করলে বিষয়টি অসম্পূর্ণ থেকে যায়। যে ব্লগ এক সময় সিটিজেন মিডিয়া ছিল, তা এখন হয়ে উঠেছে সামাজিক মিডিয়া। ব্লগ মিডিয়ার এই যে উন্নয়ন, তার অবদান গর্বের সঙ্গে নিতে পারে বাংলাদেশের ব্লগাররা। 'ইনডিভিজ্যুয়াল ব্লগিং' ধারণা থেকে 'কমিউনিটি ব্লগিং' কিংবা 'সোস্যাল ব্লগিং' ধারণার যাত্রা শুরু বাংলাদেশ থেকেই। এটিও সত্যি যে, অন্য যে কোনো দেশের তুলনায় 'সামাজিক মিডিয়া' হিসেবে ব্লগ বাংলাদেশে
বেশি জনপ্রিয়। ব্লগাররাও 'সামাজিকভাবে' বেশি শক্তিশালী অবস্থান রাখতে পারছে।
No comments