বাংলাদেশী যুবককে বিএসএফ’র নির্যাতন, ঢাকার প্রতিবাদ
কূটনৈতিক রিপোর্টার: বাংলাদেশী যুবককে বিবস্ত্র করে নির্মমভাবে পেটানোর ঘটনার পূর্ণ তদন্ত চেয়ে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা। গতকাল সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দিল্লিতে পৃষ্ঠা ৫ কলাম ৫
পাঠানো এক প্রতিবাদ পত্রে সীমান্তে এ ধরনের নৃশংস ঘটনা বন্ধে ভারত সরকারকে অনুরোধ জানায়। এদিকে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাই কমিশন সূত্র জানিয়েছে, এ ঘটনার তদন্ত করতে ইতোমধ্যে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)কে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। স্থানীয় বিএসএফ কমান্ডারকে ঘটনাস্থল সরেজমিন পরিদর্শন করে তদন্ত প্রতিবেদ জমা দিতে বলা হয়েছে। বিএসএফের কয়েক জন জওয়ান বাংলাদেশের এক গরু ব্যবসায়ী তরুণকে বিবস্ত্র করে নির্মমভাবে পেটাচ্ছে এমন একটি ভিডিও চিত্র বুধবার ভারতের এনডিটিভিসহ কয়েকটি টেলিভিশনে প্রচারিত হয়। বিষয়টি ফাসের পর বিএসএফ সদর দপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট মহলে হইচই পড়ে যায়। প্রাথমিক অনুসন্ধানে ঘটনার সতত্যা নিশ্চিত হয়ে জড়িত ৮ সদস্যকে জওয়ানকে তাৎক্ষণিক বরখাস্ত করা হয়। অভিযুক্ত বিএসএফ জওয়ানদের বরখাস্তের ঘটনার প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এডভোকেট সাহারা খাতুন জানিয়েছেন, সরকারের পক্ষ থেকে এ ঘটনার প্রতিবাদ পাঠানো হয়েছে। তার দাবি, বাংলাদেশের প্রতিবাদের পরিপ্রেক্ষিতেই জড়িত ৮ বিএসএফ জওয়ানকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনাটি গত ৯ই ডিসেম্বর ঘটেছে বলে গণমাধ্যমে স্বীকার করেছে বিএসএফ কর্তৃপক্ষ। মোবাইল ফোনে ধারণ করা ওই ভিডিও চিত্রকে বিএসএফের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভয়াবহ ও অমানবিক হিসেবে বর্ণনা করে দ্রুত তদন্ত এবং দোষী জওয়ানদের কঠোর সাজা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। স্থানীয় সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে এনডিটিভি বলছে, পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার কাহারপাড়া সীমান্ত তল্লাশি চৌকিতে নির্যাতনের ওই ঘটনা ঘটে। এনডিটিভির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘুষ দিতে রাজি না হওয়ায় ওই বাংলাদেশীকে নির্দয়ভাবে পেটায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফের জওয়ানরা। তার জননাঙ্গে পেট্রোলও ঢেলে দেয়। নির্যাতনের পর ওই তরুণকে বাংলাদেশে পুশব্যাক করা হয়েছে। সীমান্তে বিএসএফের নির্যাতন বন্ধে দীর্ঘদিন ধরেই দাবি জানিয়ে আসছে বাংলাদেশ। বিএসএফের নির্যাতনের প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোও। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-২০১০ সালের ডিসেম্বরে এক প্রতিবেদনে বলেছে, হত্যা এবং অন্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) বিচার হওয়া উচিত। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর হিসেবে, গত এক দশকে প্রায় এক হাজার বাংলাদেশী বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়েছে। নির্যাতনের ঘটনা অসংখ্য। এক বছর আগে ফেলানী নামে এক কিশোরীকে বিএসএফ গুলি চালিয়ে হত্যা করলে তা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। গুলিবিদ্ধ ফেলানীর লাশ দীর্ঘক্ষণ কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলছিল। সীমান্তে নির্যাতন বন্ধে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানোর পর সমপ্রতি বিএসএফকে প্রাণঘাতী নয়- এমন অস্ত্র দিয়েছে ভারত সরকার।
পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিবাদ: এদিকে ঘটনা ফাঁসের প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর গতকাল সন্ধ্যায় দিল্লির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ পাঠিয়েছে ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। প্রতিবাদ পাঠানোর পর সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় পররাষ্ট্র দপ্তরের বহিঃপ্রচার অণুবিভাগের মহাপরিচালক প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, ঘটনার সঙ্গে জড়িত বিএসএফ সদস্যদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির পাশাপাশি ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে দিল্লিকে অনুরোধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে ওই নির্যাতনের পূর্ণ তদন্ত চালানোর অনুরোধ করা হয়েছে। ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন ও দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে বাংলাদেশের এ প্রতিবাদ ভারতের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে পররাষ্ট্র দপ্তর সূত্র জানিয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি: বিএসএফ জওয়ানদের কবলে বাংলাদেশী তরুণ নির্যাতনের ঘটনায় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এডভোকেট সাহারা খাতুন। বৃহস্পতিবার দুপুরে ডেফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সটি অডিটরিয়ামে আয়োজিত ‘বাংলাদেশে তরুণ সমাজের মাদকাশক্তি প্রতিরোধ’ বিষয়ক সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের বিভন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। তবে কবে এ প্রতিবাদ পাঠানো হয়েছে সে বিষয়ে কোনও তথ্য দিতে রাজি হননি তিনি। একইভাবে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয়ভাবে কোন দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে কি না সে বিষয়েও নিশ্চুপ ছিলেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের প্রতিবাদের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি নিয়ে একজন ক্যাপ্টেনের নেতৃত্বে ভারত সরকার ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে। ঘটনাটি বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জানতো কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উত্তর আগে দিয়েছেন বলে তা এড়িয়ে যান। নির্যাতিত যুবকের মুখে নৃশংসতার বর্ণনা
সীমান্তে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষা বাহিনী-বিএসএফ জওয়ানদের নির্যাতনের শিকার বাংলাদেশী যুবকটির সন্ধান মিলেছে। তিনি হলেন- চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার দুর্লভপুর ইউনিয়নের সতের রশিয়া গ্রামের সাইদুর রহমানের ছেলে হাবিবুর রহমান (২২)। গত ৯ই ডিসেম্বর রাজশাহীর পবা উপজেলার খানপুর সীমান্ত দিয়ে গরু আনার সময় বিএসএফের নির্যাতনের শিকার হন। চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মনকষা বিওপিতে দায়িত্বরত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের এক কর্মকর্তাও নিশ্চিত করেছেন, হাবিবুরই সেই যুবক। হাবিবুর গতকাল দুপুরে মনকষা বিওপি’র সামনে জানান, তিনি নিয়মিত গরু আনার জন্য রাজশাহী সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলায় যেতেন। গত ৯ই ডিসেম্বরও হাবিবুর রাজশাহীর পবা উপজেলার খানপুর সীমান্ত দিয়ে গরু আনতে যান। সেখানে গরু না পেয়ে ফিরে আসার সময় ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর মুর্শিদাবাদ জেলার রানীনগর ক্যাম্পের জওয়ানরা তাকে ধরে ফেলে। হাবিবুর জানান, রাত ১১টার দিকে তাকে আটক করে মোবাইল ফোনসেট, টর্চ লাইট ও ১ হাজার টাকা দাবি করে বিএসএফ। এসব দিতে অসম্মতি জানালে জওয়ানরা একটি ট্রাক্টরে তুলে ক্যাম্পে নিয়ে যায়। সেখানে ৬/৭ জওয়ান প্রায় ১ ঘণ্টা ধরে মারধর করে। সকালেও মারধর চলতে থাকে একপর্যায়ে আমার লুঙ্গিও খুলে নেয় তারা। মারের চোটে হাবিবুর জ্ঞান হারিয়ে ফেললে ক্যাম্পের কাছে একটি সরিষা ক্ষেতে হাবিবুরকে ফেলে রাখে বিএসএফ জওয়ানরা। পরে জ্ঞান ফিরলে সীমান্ত পেরিয়ে দেশে ফেরেন হাবিবুর। বাড়িতে এসে গোপনে চিকিৎসা নেন বলে জানান তিনি। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় হাবিবুর তার শরীরের ক্ষতচিহ্নগুলো দেখিয়ে বলেন, এর সবই বিএসএফের নির্যাতনের চিহ্ন। হাবিবুরের ওপর নির্যাতনের জন্য আট জনকে চিহ্নিত করে বরখাস্তের কথা জানিয়েছে বিএসএফ। তারা হলেন, কনস্টেবল বিরেন্দ্রর তিওয়ারি, ভিএস ভিক্টর, ধনঞ্জয় কুমার, আনন্দ সিং, অমর জ্যোতি, সঞ্জীব কুমার, সুরেশ চাঁদ ও সুনীল কুমার।
পাঠানো এক প্রতিবাদ পত্রে সীমান্তে এ ধরনের নৃশংস ঘটনা বন্ধে ভারত সরকারকে অনুরোধ জানায়। এদিকে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাই কমিশন সূত্র জানিয়েছে, এ ঘটনার তদন্ত করতে ইতোমধ্যে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)কে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। স্থানীয় বিএসএফ কমান্ডারকে ঘটনাস্থল সরেজমিন পরিদর্শন করে তদন্ত প্রতিবেদ জমা দিতে বলা হয়েছে। বিএসএফের কয়েক জন জওয়ান বাংলাদেশের এক গরু ব্যবসায়ী তরুণকে বিবস্ত্র করে নির্মমভাবে পেটাচ্ছে এমন একটি ভিডিও চিত্র বুধবার ভারতের এনডিটিভিসহ কয়েকটি টেলিভিশনে প্রচারিত হয়। বিষয়টি ফাসের পর বিএসএফ সদর দপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট মহলে হইচই পড়ে যায়। প্রাথমিক অনুসন্ধানে ঘটনার সতত্যা নিশ্চিত হয়ে জড়িত ৮ সদস্যকে জওয়ানকে তাৎক্ষণিক বরখাস্ত করা হয়। অভিযুক্ত বিএসএফ জওয়ানদের বরখাস্তের ঘটনার প্রায় ১৬ ঘণ্টা পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এডভোকেট সাহারা খাতুন জানিয়েছেন, সরকারের পক্ষ থেকে এ ঘটনার প্রতিবাদ পাঠানো হয়েছে। তার দাবি, বাংলাদেশের প্রতিবাদের পরিপ্রেক্ষিতেই জড়িত ৮ বিএসএফ জওয়ানকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনাটি গত ৯ই ডিসেম্বর ঘটেছে বলে গণমাধ্যমে স্বীকার করেছে বিএসএফ কর্তৃপক্ষ। মোবাইল ফোনে ধারণ করা ওই ভিডিও চিত্রকে বিএসএফের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভয়াবহ ও অমানবিক হিসেবে বর্ণনা করে দ্রুত তদন্ত এবং দোষী জওয়ানদের কঠোর সাজা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। স্থানীয় সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে এনডিটিভি বলছে, পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার কাহারপাড়া সীমান্ত তল্লাশি চৌকিতে নির্যাতনের ওই ঘটনা ঘটে। এনডিটিভির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘুষ দিতে রাজি না হওয়ায় ওই বাংলাদেশীকে নির্দয়ভাবে পেটায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফের জওয়ানরা। তার জননাঙ্গে পেট্রোলও ঢেলে দেয়। নির্যাতনের পর ওই তরুণকে বাংলাদেশে পুশব্যাক করা হয়েছে। সীমান্তে বিএসএফের নির্যাতন বন্ধে দীর্ঘদিন ধরেই দাবি জানিয়ে আসছে বাংলাদেশ। বিএসএফের নির্যাতনের প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোও। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ-২০১০ সালের ডিসেম্বরে এক প্রতিবেদনে বলেছে, হত্যা এবং অন্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) বিচার হওয়া উচিত। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর হিসেবে, গত এক দশকে প্রায় এক হাজার বাংলাদেশী বিএসএফের গুলিতে নিহত হয়েছে। নির্যাতনের ঘটনা অসংখ্য। এক বছর আগে ফেলানী নামে এক কিশোরীকে বিএসএফ গুলি চালিয়ে হত্যা করলে তা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। গুলিবিদ্ধ ফেলানীর লাশ দীর্ঘক্ষণ কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলছিল। সীমান্তে নির্যাতন বন্ধে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানোর পর সমপ্রতি বিএসএফকে প্রাণঘাতী নয়- এমন অস্ত্র দিয়েছে ভারত সরকার।
পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিবাদ: এদিকে ঘটনা ফাঁসের প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর গতকাল সন্ধ্যায় দিল্লির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ পাঠিয়েছে ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। প্রতিবাদ পাঠানোর পর সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় পররাষ্ট্র দপ্তরের বহিঃপ্রচার অণুবিভাগের মহাপরিচালক প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, ঘটনার সঙ্গে জড়িত বিএসএফ সদস্যদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির পাশাপাশি ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে দিল্লিকে অনুরোধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে ওই নির্যাতনের পূর্ণ তদন্ত চালানোর অনুরোধ করা হয়েছে। ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন ও দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে বাংলাদেশের এ প্রতিবাদ ভারতের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে পররাষ্ট্র দপ্তর সূত্র জানিয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি: বিএসএফ জওয়ানদের কবলে বাংলাদেশী তরুণ নির্যাতনের ঘটনায় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এডভোকেট সাহারা খাতুন। বৃহস্পতিবার দুপুরে ডেফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সটি অডিটরিয়ামে আয়োজিত ‘বাংলাদেশে তরুণ সমাজের মাদকাশক্তি প্রতিরোধ’ বিষয়ক সেমিনার শেষে সাংবাদিকদের বিভন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। তবে কবে এ প্রতিবাদ পাঠানো হয়েছে সে বিষয়ে কোনও তথ্য দিতে রাজি হননি তিনি। একইভাবে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয়ভাবে কোন দুঃখ প্রকাশ করা হয়েছে কি না সে বিষয়েও নিশ্চুপ ছিলেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের প্রতিবাদের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি নিয়ে একজন ক্যাপ্টেনের নেতৃত্বে ভারত সরকার ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে। ঘটনাটি বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জানতো কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উত্তর আগে দিয়েছেন বলে তা এড়িয়ে যান। নির্যাতিত যুবকের মুখে নৃশংসতার বর্ণনা
সীমান্তে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষা বাহিনী-বিএসএফ জওয়ানদের নির্যাতনের শিকার বাংলাদেশী যুবকটির সন্ধান মিলেছে। তিনি হলেন- চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার দুর্লভপুর ইউনিয়নের সতের রশিয়া গ্রামের সাইদুর রহমানের ছেলে হাবিবুর রহমান (২২)। গত ৯ই ডিসেম্বর রাজশাহীর পবা উপজেলার খানপুর সীমান্ত দিয়ে গরু আনার সময় বিএসএফের নির্যাতনের শিকার হন। চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মনকষা বিওপিতে দায়িত্বরত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের এক কর্মকর্তাও নিশ্চিত করেছেন, হাবিবুরই সেই যুবক। হাবিবুর গতকাল দুপুরে মনকষা বিওপি’র সামনে জানান, তিনি নিয়মিত গরু আনার জন্য রাজশাহী সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলায় যেতেন। গত ৯ই ডিসেম্বরও হাবিবুর রাজশাহীর পবা উপজেলার খানপুর সীমান্ত দিয়ে গরু আনতে যান। সেখানে গরু না পেয়ে ফিরে আসার সময় ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর মুর্শিদাবাদ জেলার রানীনগর ক্যাম্পের জওয়ানরা তাকে ধরে ফেলে। হাবিবুর জানান, রাত ১১টার দিকে তাকে আটক করে মোবাইল ফোনসেট, টর্চ লাইট ও ১ হাজার টাকা দাবি করে বিএসএফ। এসব দিতে অসম্মতি জানালে জওয়ানরা একটি ট্রাক্টরে তুলে ক্যাম্পে নিয়ে যায়। সেখানে ৬/৭ জওয়ান প্রায় ১ ঘণ্টা ধরে মারধর করে। সকালেও মারধর চলতে থাকে একপর্যায়ে আমার লুঙ্গিও খুলে নেয় তারা। মারের চোটে হাবিবুর জ্ঞান হারিয়ে ফেললে ক্যাম্পের কাছে একটি সরিষা ক্ষেতে হাবিবুরকে ফেলে রাখে বিএসএফ জওয়ানরা। পরে জ্ঞান ফিরলে সীমান্ত পেরিয়ে দেশে ফেরেন হাবিবুর। বাড়িতে এসে গোপনে চিকিৎসা নেন বলে জানান তিনি। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় হাবিবুর তার শরীরের ক্ষতচিহ্নগুলো দেখিয়ে বলেন, এর সবই বিএসএফের নির্যাতনের চিহ্ন। হাবিবুরের ওপর নির্যাতনের জন্য আট জনকে চিহ্নিত করে বরখাস্তের কথা জানিয়েছে বিএসএফ। তারা হলেন, কনস্টেবল বিরেন্দ্রর তিওয়ারি, ভিএস ভিক্টর, ধনঞ্জয় কুমার, আনন্দ সিং, অমর জ্যোতি, সঞ্জীব কুমার, সুরেশ চাঁদ ও সুনীল কুমার।
No comments